নরোত্তমদাস ঠাকুর (১৫৩১ – ১৫৮৭) খেতুরী-গরেরহাট। পরগনা-রাজশাহী। রাজা কৃষ্ণানন্দ দত্ত। ১৮ বছর বয়সে তিনি গৃহত্যাগ করে বৃন্দাবনে জীব গোস্বামীর আশ্রয়ে যান। সেখানে লোকনাথ গোস্বামীর কাছে দীক্ষা নিয়ে আজীবন ব্ৰহ্মচর্য পালন করেন। জীব গোস্বামীর কাছে তিনি বৈষ্ণব শাস্ত্ৰ অধ্যয়ন করে ‘ঠাকুর মহাশয়’ উপাধি লাভ করেন। বাঙলাদেশে বৈষ্ণব গ্রন্থগুলির প্রচারের জন্য জীব গোস্বামী শ্ৰীনিবাস আচাৰ্য, কৃষ্ণানন্দ ও নরোত্তমকে গ্ৰন্থসহ বাঙলাদেশে পাঠান। পথে গ্রন্থগুলি অপহৃত হয়। নরোত্তম দেশে ফেরেন। কিন্তু সংসারী হন না। খেতুরীতে তার অনুষ্ঠিত বৈষ্ণব-সম্মেলনে তিনি কীর্তনগানে রস-কীর্তনের যে পদ্ধতি প্রবর্তন করেন তা সমগ্ৰ বৈষ্ণবমণ্ডলী অনুমোদন করেন। এই সম্মেলনেই প্ৰথম প্ৰণালীবদ্ধভাবে গৌরচন্দ্ৰিক গানের পর লীলাকীর্তন গানের প্রথা প্রবর্তিত হয়। তাঁর সৃষ্ট সুরের রস-কীর্তনকে গড়েরহাটী বা গড়ানহাটী কীর্তন বলা হয়। তিনি বাংলা ভাষায় সর্বসাধারণের উপযোগী করে বহু গ্ৰন্থ রচনা করেন। রাজশাহী, পাবনা, মালদহ, রঙ্গপুর, বহরমপুর প্রভৃতি স্থানে তার বহু শিষ্য ছিল। মণিপুরের রাজারা তারই শিষ্য হয়েছিলেন।
Leave a Reply