উইঙ্ক থ্রি টাইমস – জন চার্টারস

উইঙ্ক থ্রি টাইমস – জন চার্টারস

আমান্ডা উইন্টারটন তার কুমারী জীবনের প্রায় অবসান ঘটাতে চলেছে।

ভাবনাটি তার শরীরে শিহরণ তুলল, ঝিমঝিম করে উঠল মাথা, মুদে এল চক্ষু এবং নিঃশ্বাস হয়ে উঠল ঘন। সে তার টাইপিং ডেস্কের ড্রয়ার খুলে পেন্সিল খোঁজার ভান করল পাছে অফিসের অন্য মেয়েরা তার জ্বলজ্বলে চেহারাটা দেখে ফেলে এবং তাকে নিয়ে নিতান্তই অবাচীন ও নিষ্ঠুর তামাশায় মেতে ওঠে। ওরা তাকে পেছনে কুমারী বুড়ি বলে ঠাট্টা করে, কখনও কখনও সামনে বলতেও কসুর করে না।

যেহেতু ওরা বয়সে তরুণী এবং সুন্দরী, ছোট ছোট স্কার্ট পরে যেসব সেলসম্যান আসে তাদের প্রত্যেককে সুঠাম পায়ের ঝলক দেখিয়ে দেয় এবং আপত্তিকর সব কথা বলে যা শুনলে ঝাঁ ঝাঁ করে কান, কাজেই তারা যে আমাকে পাত্তা দেবে না এবং কুষ্ঠরোগীর চোখে দেখবে সেটাই স্বাভাবিক।

আমার বয়স আটত্রিশ, একুট বেশিই রোগা, লম্বাটে গড়নের সিরিয়াস চেহারা এবং আঁখিজোড়া বড়বড়। সে তার চুল সবসময় খোঁপা করে রাখে কারণ চুল খুলে দিলে কেশরাজি লুটিয়ে পড়বে তার টাইপরাইটারের ওপর।

গত সতের বছর ধরে, মায়ের মৃত্যুর পর থেকে আমাকে তার পঙ্গু বাপের সমস্ত দেখাশোনা করতে হচ্ছিল। দরদহীন এ সমাজে যারা গ্রাহ্যই করে না আমান্ডার বাপ বাঁচল কী মরল, সামান্য পেনশনের ওপর নির্ভরশীল মানুষটা আঁকড়ে ধরেছিলেন তাঁর মেয়েকে। লোকটার জীবন হুইলচেয়ারে আটকে ছিল, মেয়ে ছাড়া তাঁর কেউ নেই।

ছোট একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকে তারা। প্রতিদিন একই রুটিন: বাবার নাস্তা তৈরি করে আমান্ডা, লাঞ্চ রেডি করে রাখে, তারপর ছোটে অফিসে। অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফিরতে হয় ডিনার বানাতে। তারপর বাপকে সময় দিতে হয়, তার সঙ্গে কথা বলতে হয়, মাঝে মধ্যে সাদা কালো টিভিতে অনুষ্ঠান দেখে, পয়সার অভাবে রঙিন টেলিভিশন কেনা হয়নি, অতপর বিছানায় গমন; পরদিন একই রুটিনের পুনরাবৃত্তি।

মাঝে মধ্যে দুএকটি শনিবারে সে স্থানীয় সিনেমা হলে মুভি দেখতে যাওয়ার প্রস্তাব পায়। তবে আমান্ডা দেখতে সুন্দরী নয় এবং বাসায় গিয়ে বাবার সেবা যত্ন করতে হবে, এরকম অজুহাতে বিরক্ত হয়ে যায় বন্ধুরা। তারা ওর কথা বিশ্বাস করুক বা না-ই করুক, এর ফলে বন্ধুত্ব ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ফলে আমাকে পরবর্তী আরও বহুদিন অপেক্ষায় থাকতে হয় যদি কোনো পুরুষ ওকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে।

তবে এসব ঘটনা ঘটনা আমাকে না হতাশ করে না তিক্ততায় ভরিয়ে তোলে মন। সে তার বাবাকে ভালবাসে এবং তার বোধে এসেছে কোনো মানুষই সারাক্ষণ সুখে থাকে পারে না; তার জীবনের এ বোঝ সে খুশি মনেই মেনে নিয়েছে, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ সে অন্তত সুস্থ এবং নিরোগ আছে, লাফ দিয়ে চলন্ত বাসে উঠতে পারে, এক দৌড়ে সিঁড়ি বাইতেও তার সমস্যা। নেই, যে কাজগুলো তার বাবা আর কোনদিন করতে পারবেন না। অনেক। বছর পরে আমান্ডা বুঝতে পেরেছে তার শাদী হওয়ার কোনো চান্সই নেই; কোনো পুরুষ চলৎশক্তিহীন একজন মানুষকে তার শ্বশুর হিসেবে মেনে। নেবে না। এতেও কিছু মনে করছে না আমান্ডা। এক চোখ বন্ধ করে কেউ কেউ সেক্স এবং বিয়ে ছাড়া থাকতে পারে এবং ভান করতে পারে এসবের কোনো অস্তিত্ব নেই, যদিও কোনো উষ্ণ মধ্য রাত্তিরে ঘুম ভেঙে গেলে যৌবন জ্বালায় কাউকে কাউকে খুব জ্বলতে হয় এবং কামনার গলা টিপেও হত্যা করতে হয়।

আমান্ডা ম্যানেজারের সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করে। কাজটি সে উপভোগও করে তবে মুশকিল হলো প্রকান্ড অফিসটি আরও চার জনের সঙ্গে শেয়ার করতে হয়। আর সেই চারজনের প্রত্যেকেই তরুণী, আকর্ষণীয় এবং যথেষ্ট সফিসটিকেটেড। তারা ওকে ঘৃণা করে না, ভৎর্সনাও করে না। তাদের কাছে ও স্রেফ কুমারী বুড়ি, বসের সেক্রেটারি, তাকে ওরা পাত্তাই দেয় না তবে মাঝে মধ্যে মজা করার ইচ্ছে হলে ওরা। চার অক্ষরের শব্দটি নিয়ে নিজেদের মধ্যে হাসাহাসি করে আর সেই শব্দটি শুনে লজ্জায় লাল হয়ে যায় আমান্ডা এবং ভান করে কিছু শোনেনি।

আমান্ডা ডেস্কের ড্রয়ার থেকে মুখ তুলে চাইতে দেখল ওর দিকে তাকিয়ে আছে লাল চুলের, লম্বা লম্বা পায়ের অধিকারিণী অকালপকৃ আইরিন।

কী হয়েছে, আমান্ডা, তোমার মুখচোখ কেমন গনগন করছে। আমাদের বাজে কথাটা শুনে ফেললে নাকি?

এইলিন, ছিপছিপে এবং সফিসটিকেটেড, সারাক্ষণই বিরক্তিতে কুঁচকে থাকে চেহারা, নিজের ডেস্ক থেকে মুখ তুলে চাইল।

বুঝতে বোধহয় একটু দেরিই করে ফেলেছ, তাই না? আমি তো ভাবলাম তোমার মাসিক টাসিক বন্ধ হয়ে গেছে বোধহয়।

ওদের কথা শুনে চটে গেল আমান্ডা।

তোমাদের মুখে দেখছি কিছুই আটকায় না। অনেক পড়াশোনা করে এই-ই শিখেছ বুঝি? নাকি জীবনে কোনোদিন স্কুলেই যাওনি? পিথাগোরাসের সূত্র কী জানো?

না, তবে আমি ওর শিশ্ম দেখেছি! আইরিনের চটাস জবাবে মেয়েগুলো হাসিতে ফেটে পড়ল। এমনকী আমান্ডাও হাসল। আজ তাকে কিছুই আপসেট করতে পারবেন না। ঘড়ি দেখল। প্রায় পাঁচটা বাজে। ঘুরতে থাকো ঘড়ির কাঁটা, ঘোয়রা আমার নিয়তির দিকে, আমার কুমারীত্বনাশের দিকে। যে কাজটি করে অবশেষে আমি পরিপূর্ণ নারী হবো।

.

মাস তিনেক আগে মাঝে রাতে ঘুম ভেঙে আমান্ডার বাপ চিৎকার চেঁচামেচি করে তাকে ডাকছিলেন, অনুযোগের সুরে বলছিলেন তাঁর খুব মাথা ব্যথা করছে। ড্রেসিং গাউন গায়ে চড়িয়ে আমান্ডা ছুটে যায় বাবার বেডরুমে। তারপর ডাক্তারকে ফোন করে। আধঘন্টা বাদে ডাক্তার এসে হাজির হন। কিন্তু ততক্ষণে মারা গেছেন আমান্ডার বাবা। ব্রেইন হেমারেজ, বলেন ডাক্তার।

পরের দুটো মাস নিদারুণ এক শূন্যতার মাঝে কেটে যায় আমান্ডার, জীবনে এই প্রথম অনুভব করে সে বড় একা, তাকে আর ছুটতে ছুটতে অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে হবে না, রাতের খাবার রান্না করার প্রয়োজন। নেই, শনিবার সকালে মুদি দোকানে যাওয়ার দরকার নেই। এখন সে বাইরে ঘুরতে যেতে পারে, যা খুশি দেখতে পারে, মাঝ রাতে কিংবা রাত তিনটার সময় বাসায় ফিরলেও কিছু আসে যায় না। সে এখন একা।

একদিন বাসে চড়ে কাজে যাওয়ার সময় সে খবরের কাগজের ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপনে পাতায় একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পায় :

এসকর্ট সার্ভিস। মেয়েরা তোমাদের কি সুদর্শন সঙ্গী প্রয়োজন যে তোমাদের বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাবে, তোমাদের সঙ্গে ডিনার করবে, তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে যাকে স্বচ্ছন্দে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবে? আমাদের পুরুষ মডেলরা ভদ্র এবং শিক্ষিত। বিস্তারিত লিখে পাঠানোর ঠিকানা…।

আমান্ডা ওই বিজ্ঞাপনটি বেশ কয়েকবার পড়েছে, ভাবছিল সে তার। নামটা পাঠিয়ে দেবে কি-না কিংবা কীভাবে ওদের ব্যাখ্যা করবে যে সে সিডিউসড হতে চায়। এক রাতে দুই গ্লাস শেরী পান করার পরে চিঠিটি লিখেই ফেলল আমান্ডা।

প্রিয় মহাশয়,

আপনাদের বিজ্ঞাপন অনুসারে, আমি আগামী শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরে আসব এবং আমার একজন এসকর্টের প্রয়োজন হবে। তাকে কমবয়েসী কিংবা খুব বেশি সুদর্শন না হলেও চলবে কারণ আমার নিজেরই বয়স আটত্রিশ। তাকে রাত নয়টায় বিলটন টাওয়ার্স হোটেলে আসতে বলবেন এবং ডেস্কে আমার খোঁজ করতে বলবেন। আমি এ চিঠির সঙ্গে ত্রিশ ডলার পাঠিয়ে দিলাম।

একান্ত আপনার
(মিস) আমান্ডা উইন্টারটন

বেশ কয়েকবার কাটাকুটির পরে চিঠিটি পড়ে সন্তুষ্ট হলো ও। সহজ সরল, ব্যবসায়িক টাইপের চিঠি। একবার ভেবেছিল ছদ্মনাম দেবে পরক্ষণে নাকচ করে দিয়েছে চিন্তাটা ওটা জটিল এবং অপ্রয়োজনীয় ভেবে। এরমধ্যে কোনো দুনম্বরী নেই। ও একটি সন্ধ্যার জন্য একজন সঙ্গী চাইছে, ব্যস। তবে লোকটি আসার পরে ঘটনা কোন্ দিকে মোড় নেয় তা দেখা যাবে।

কয়েকদিন পরেই এজেন্সি থেকে চলে এল জবাব। অ্যাপয়েন্টমেন্টের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা হয়েছে জনৈক মি. চার্লস হ্যাকফোর্থ শুক্রবার রাত নটা নাগাদ নির্দেশিত হোটেলে পৌঁছে যাবেন। ভদ্রলোকের পরনে থাকবে ডার্ক সুট, তবে টুক্সেডো বা ডিনার জ্যাকেটের প্রয়োজন হলে তিনি তা পরিধান করবেন। সেক্ষেত্রে ফী একটু বেশিই দিতে হবে। চিঠির শেষে, মিস উইন্টারটনকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে এসকর্ট সার্ভিসে যারা কাজ করেন তাঁরা যথার্থ ভদ্রলোক এবং তিনি নিশ্চয় অত্যন্ত সন্তুষ্টিবোধ করবেন।

সেটা পরদিন সকালে তোমাকে জানাতে পারব, মনে মনে বলল আমন্ডা।

আমান্ডা ভাবছে কত টাকা সঙ্গে নেবে। ১০০ ডলারে চলবে? লোকটাকে অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে এলে খরচা কমে যেত তবে তার বাবার স্মৃতি এখনো বড় জ্বলজ্বলে, তাছাড়া আমান্ডার ধারণা এসব কাজের জন্য হোটেল সুইটই ভালো হবে।

টেলিফোনে বিলটন টাওয়ার্সের সুইট বুক করল ও। একটু কেমন যেন অপরাধবোধ হচ্ছে। তবে পাত্তা দিল না আমান্ডা। আজ শুক্রবার রাত। এখন অফিস ত্যাগ করার সময় হলো। অন্য মেয়েগুলোর দিকে আদুরে চোখে তাকাল আমান্ডা। সোমবার সকালে ওদের সঙ্গে যখন দেখা হবে তখন ও ওদেরই একজন হবে আর কুষ্ঠরোগী হয়ে থাকবে না, কুমারীও রইবে না। তবে ওরা ব্যাপারটা খেয়াল করবে কিনা কে জানে।

.

শহরের উদ্দেশ্যে গাড়ি চালাচ্ছে চার্লি চমৎকার মুড নিয়ে। যদিও মাঝেমধ্যে নিজেকে গাল দিচ্ছে পথ চিনতে না পেরে ভুল রাস্তায় ঢুকে পড়ার জন্য। কী করে মানুষ এই ইস্পাত কাঠ পাথর আর কাঁচের জঞ্জালের মধ্যে বাস করে ভেবে পায় না সে। যাক তবু এরা চার্লির নিসর্গ ঘেরা গায়ে যে ভিড় জমায়নি তাই ই ঢের।

চার্লির ভাগ্যই বলতে হবে বুড়োটা হঠাৎ করেই তাকে টেল ট্রাক্টর কন্ট্রাক্টের কাজটা পাইয়ে দিয়েছে। এসব কাজ সাধারণত বেনই করে, কিন্তু শেষ মুহূর্তে বেন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে পড়ল আর বুড়ো এরকম বড় একজন মক্কেলকে হারাতে চায়নি। কাজেই চার্লিকে তার চেনাজানা গণ্ডি থেকে টেনে বের করে এনে অচেনা শহরে পাঠানো হয়েছে। ওরা ওর জন্য নামী দামী বিলটন টাওয়ার্স হোটেলে রুমও ভাড়া করেছে। এরকম দামী কোনো হোটেলে আগে কখনো থাকেনি চার্লি।

ড্রাইভিং মিররের দিকে তাকিয়ে হাসল চার্লি। তার মুখটা ভাঙাচোরা, মাথার চুল পাতলা হয়ে এসেছে। তবে চেহারা নিয়ে কখনো মাথা ঘামায়নি চার্লি। যদিও গত দুই বছর ধরে প্রতিদিন সকালে সে অনিচ্ছাসত্বেও ব্যায়াম করার চেষ্টা করছে ঠেলে ওঠা মধ্যবয়স্ক ভুড়িটাকে বাগে আনতে। কিন্তু লাভ হচ্ছে না তেমন।

সে একজন ভালো সেলসম্যান এবং নিজের কাজটিকে ভালোবাসে। চাষাভুষো মক্কেলদের অনেকেই তার বন্ধু। সে প্রচুর খায়, প্রচুর মদ পান। করে এবং মাগিবাজিও করে। বিয়েশাদী করেনি কারণ তার বিশ্বাস একজন ভালো সেলসম্যানকে কখনো বাড়ির মায়ায় জড়াতে নেই।

সে ফুটপাত ঘেঁষে দাঁড় করাল গাড়ি। এক পথচারীকে জিজ্ঞেস করল বিলটন টাওয়ার্সটা কোনদিকে। লোকটা তার দিকে তাকাল এবং চার্লি গ্রাম থেকে এসেছে বুঝতে পেরে বিরক্ত গলায় রাস্তার ওপাশে চোখ তুলে চাইতে বলল, আমার সঙ্গে ইয়ার্কি করেন নাকি, মিয়া? ঝাঁঝাল সুর তার কণ্ঠে।

চার্লি মুখ তুলে তাকাল। সত্যিই তো রাস্তার ওপাশে আকাশ ছোঁয়া। ভবনটির প্রবেশপথে নিয়ন বাতিতে জ্বলজ্বল করছে নাম দ্য বিলটন টাওয়ার্স। সমস্যা হলো এখানে আসতে তাকে অন্তত আটবার ট্রাফিক জ্যামে পড়তে হয়েছে।

লোকটাকে ধন্যবাদ দিল চার্লি। ইন্ডিকেটর বাতি নিভিয়ে রোদে পোড়া হাতটা বের করে তার শেভ্রলে ঢুকিয়ে দিল কতগুলো গাড়ির সারির মধ্যে।

সঙ্গে সঙ্গে গাড়িগুলো ব্রেক কষল, তারস্বরে হর্ন বাজাতে লাগল। একটা বিশ্রী অবস্থার সৃষ্টি হলো। অবিচলিত চার্লি কোনাকুনিভাবে গাড়ি চালাতে লাগল। গাড়ি নিয়ে এসে থামল পেভমেন্টের সামনে। ইউনিফর্ম পরা এক নিগ্রো দারোয়ান ওকে দেখে মজা পেয়ে হাসছিল।

বাহ, দেখালেন বটে। আপনি নিশ্চয় শহুরে লোক নন, স্যার। মুখ টিপে হেসে চার্লির গাড়ির দরজা খুলে দিল দারোয়ান। চাবিটা রেখে যান। আমি আপনার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করছি। আপনার মালপত্র পাঠিয়ে দেব, স্যার। কী নাম আপনার?

পার্কার। চার্লি পার্কার। ধন্যবাদ। সে লোকটার কালো হাতে একখানা নোট গুঁজে দিয়ে পা বাড়াল লবি অভিমুখে।

.

আমান্ডা উইন্টারটন ধীরে সুস্থে ঘুরে দেখছে জমকালো সুইটটি।

দামী দামী আসবাব, মেঝেতে পুরু কার্পেট, দেয়ালে ঝোলানো চিত্রকর্ম, আলোকিত কুলুঙ্গিতে রাখা ছোট ছোট ভাস্কর্য সব খুঁটিয়ে দেখল।

বেডরুমে, যেখানে সাঙ্গ হবে তার অনাঘ্রাতা যৌবন, আগ্রহ এবং আনন্দ নিয়ে নীল মখমলের বেড কাভারে ঢাকা বিছানা, নীল কার্পেট এবং পর্দায় চোখ বুলাল। সবকিছু কী সুন্দর পরিপাটি এবং গোছানো।

আমান্ডা আশা করছে মি. চার্লস হ্যাকফোর্থকে বিছানায় নিতে বিশেষ ঝামেলা হবে না; ও বইটই পড়ে এ সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা নিয়েছে। তাছাড়া নিজেরও কিছু কৌশল খাটাবে আমান্ডা।

এখন কাজে লাগাতে হবে পরিকল্পনার কুশলী অংশ। ও শেরাটন স্টাইলের লেখার টেবিলে বসে ড্রয়ার থেকে হোটেলের অলংকৃত একখন্ড সাদা কাগজ বের করল। তারপর মুক্তোর মতো হস্তাক্ষরে লিখল :

প্রিয় মি. হ্যাকফোর্থ,

আমার পরিকল্পনায় সামান্য রদবদল ঘটেছে। আপনি যখন এখানে আসবেন তখন আমি থাকব না। আপনি অনুগ্রহ করে আমার ২১২২ নম্বর সুইটের চাবি নিয়ে সোজা সেখানে চলে গিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করবেন। আপনার জন্য ওখানে হুইস্কি এবং বরফের ব্যবস্থা করা আছে। আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরব।

ইতি
আমান্ডা উইন্টারটন

একটি সুদৃশ্য খামে চিঠিখানা ভরে ওটা বন্ধ করল আমান্ডা। বড় বড় অক্ষরে লিখল চার্লস হ্যাকফোর্থ। সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়ে শুধু সাইডবোর্ডের একটি ডিম লাইট জ্বালিয়ে রাখল আমান্ডা। মিটমিটে আলো হলেও দেখা যাচ্ছিল স্কচের বোতলটি কোথায় রাখা আছে।

সে এলিভেটরে চেপে লবিতে চলে এল এবং চিঠিখানা ও ২১২২ নম্বর সুইটের চাবি হেড পোর্টারের হাতে তুলে দিল। নটা বাজতে আর কয়েক মিনিট বাকি। আমান্ডা বুফে বারে পা বাড়াল, খানিকটা সময় কাটাতে।

.

কোম্পানির খরচে পেট পুরে ডিনার সারল চার্লি পার্কার। উদার চিত্তে ড্রাই মার্টিনি এবং আধ বোতল ওয়াইন শেষ করল। ঈর্ষা নিয়ে ভাবল এই তো জীবন যে জীবন বেন এ এলাকায় এসে দারুণ উপভোগ করে। অথচ চার্লিকে কিনা কাজ করতে গিয়ে থাকতে হয় চাষাভুষোদের কোনো মফস্বলের এক তারা হোটেলে যেখানে শুধু স্থানীয় ড্রাগস্টোরেই খাবার মেলে। খেতে হয় গরুর মাংস অথবা আলুভাজা, এক ক্যান বিয়ার এবং আন্ট ম্যাবেলের বিখ্যাত আপেল পাই।

নটা প্রায় বাজে। লম্বা সফরে বড় ক্লান্ত চার্লি। টেল ট্রাক্টরস এর ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কাল সকাল দশটায় তার অ্যাপয়েন্টমেন্ট। [কাঁটায় কাঁটায় দশটায় ওখানে তোমার উপস্থিত থাকতে হবে, খোকা। পই পই করে বলে দিয়েছে বুড়ো। কারণ উনি শনিবার সকালে আসছেন শুধুমাত্র এই কন্ট্রাকটা সই করতে!] এখন মখমলের চাদর বিছানো বিছানায় শুয়ে পড়লেই ঘুমিয়ে যাবে চার্লি। সে উঠে দাঁড়াল, বিলে সই করল, বুঝতে পারছে আজ একটু বেশিই গিলে ফেলেছে। তারপর সাবধানে বেরিয়ে এল প্রকাণ্ড ডাইনিং রুম থেকে।

লবিতে অনেক ভিড়। পোর্টারের ডেস্কের সামনে এসে দাঁড়াল চারি। বিধ্বস্ত চেহারার দুই অ্যাটেনডেন্ট হোটেলের বোর্ডারদের চাবি বুঝিয়ে দিচ্ছে, আবার একই সঙ্গে লিখে রাখছে স্পেশাল ফোনকলগুলোর কথা এবং ইস্ট্রাকশনগুলো। ঘুম ঘুম চোখে লোকের ভিড়টাকে লক্ষ করছিল চার্লি। হঠাৎ পোর্টার তাকে জিজ্ঞেস করল :

জি, স্যার। কত নম্বর রুম?

কী? ওহ্, ২১২২ প্লিজ।

পোর্টার চাবির দঙ্গল থেকে চার্লির চাবিটি খুঁজে নিয়ে ওকে দিল। এক মুটকি মহিলা ওকে পাশ কাটাতে গিয়ে ধাক্কা খেল এবং ওরা পা মাড়িয়ে দিল। চলে যেতে যেতে অগ্নিদৃষ্টিতে দেখল সে চার্লিকে। চার্লি বিনীত ভঙ্গিতে ক্ষমা প্রার্থনা করে এলিভেটরের দিকে পা বাড়াল।

আকাশ ছোঁয়া প্রকাণ্ড ভবনটির উপরের কোনো এক তলায় পুরু কার্পেটে মোড়া করিডরের সামনে এসে ওকে উগরে দিল এলিভেটর।

লম্বা করিডর। অসংখ্য সাইন পোস্ট দেখতে দেখতে বিভ্রান্ত চার্লি। সে হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিল কত মাইল লম্বা কার্পেট পাতা হয়েছে সৃষ্টিকর্তাই জানেন। প্রতিটি করিডরের দৈর্ঘ, ভবনের উচ্চতা আর ফ্লোরের সংখ্যা মাপার চেষ্টা করছিল ও। মাথা গুলিয়ে যাওয়ার মতো সংখ্যা। ও তালায় চাবি ঢুকিয়ে খুলে ফেলল দরজা।

ঘরে একটি মাত্র বাতি জ্বলছে। হয়তো মেইড এসে জ্বালিয়ে দিয়ে গেছে। এর আগে যখন ও গোসল করছিল তখন সুন্দরী মেয়েটির সঙ্গে ওর দেখা হয়ে যায়। মেয়েটি ক্ষমাপ্রার্থনার সুরে বলেছিল পরের বার এসে সে পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে যাবে। চার্লি মেয়েটির আচরণে মুগ্ধ। তার মনে হয়েছে সে যতবার হাত ধোবে ততবারই কোনো না কোনো সুন্দরী মেইড পরিষ্কার তোয়ালে নিয়ে আসবে।

বাতির আলোয় সাইডবোর্ডে এক বোতল স্কচ চোখে পড়ল চার্লির। হোটেল সার্ভিসের দাক্ষিণ্য। চার্লি ভাবল হোটেল কর্তৃপক্ষ কি প্রতিটি রুমেই একটি করে ফ্রি স্কচের বোতল দেয় নাকি শুধু এরকম জমকালো সুইটগুলোতে। ও গ্লাসে হুইস্কি ঢেলে পান করল। বেডরুমের বাতি জ্বেলে নিয়ে কাপড় খুলতে লাগল। ওর পাজামা খুঁজে পেল না। তবে ও নিয়ে মাথা ঘামাল না। প্রচণ্ড ক্লান্ত শরীরে রাজ্যের ঘুম নেমে এলো।

.

প্রসন্ন, ভাবগম্ভীর চেহারা নিয়ে ঘরের কিনারে বসে ধীরে ধীরে দুটো ব্রান্ডি পান করল আমান্ডা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে উত্তেজনা। ভাবছে। ব্যাপারটা কীরকম হবে।

প্রথমবার বলে কি খুব ব্যথা পাবে? লোকটা কি ওর ওপর হামলে পড়বে নাকি আদর করবে? লোকটার হয়তো ওকে দেখে পছন্দ হলো না। চলেও যেতে পারে। কিন্তু এ ভাবনা মাথা থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করে দিল আমান্ডা। এটা কখনোই সম্ভব নয়। বিশেষ করে একজন এসকর্টের পক্ষে, কারণ এ কাজটির জন্যই তাকে ভাড়া করা হয়েছে, সে ক্লায়েন্টদের প্রতিটি নির্দেশ পালন করতে বাধ্য। তবে আমাকে তার অপছন্দ না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ও মোটা, কুৎসিত কিংবা বুড়ি কোনোটাই নয়, শুধু বয়সটা আটত্রিশ, তাও কোমর সমান চুল ছেড়ে দিলে ওকে আরও তরুণী লাগে…

এখন সময় হলো যাওয়ার। ওয়েটারকে বিল মিটিয়ে দিল। বুকের মধ্যে ধড়ফড় করছে আমান্ডার। লবি দিয়ে হাঁটছে, ঘড়িতে দেখল সাড়ে নটা বাজে।

মি. হ্যাকফোর্থ আধঘণ্টা আগেই নিশ্চয় ওর মেসেজ এবং চাবি পেয়েছে। ও পোর্টারের কাছে ২১২২ নম্বর রুমের চাবি চাইলে লোকটা ওকে স্বস্তি দিয়ে জানাল চাবিটি ইতিমধ্যে একজন নিয়ে গেছে। আমান্ডা ক্ষমাপ্রার্থনা করে এলিভেটরের দিকে এগিয়ে গেল।

লম্বা করিডর পার হয়ে ওর ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। লক্ষ করল তালায় ঝুলছে চাবি। বেশ। আস্তে করে দরজা খুলল আমান্ডা। আশা করল দেখতে পাবে লোকটি বসে আছে, তাকে স্বাগত জানাবে, সেই মানুষটা যে কেড়ে নেবে ওর সতীত্ব। কিন্তু হতাশ হলো আমান্ডা।

ঘর খালি। একমাত্র বাতিটি এখনো জ্বলছে। তবে আমান্ডা সন্তষ্ট হয়ে দেখল হুইস্কির বোতল অনেকখানি ফাঁকা হয়ে আছে। লোকটা কি বাথরুমে গেছে?

বেডরুমে ঢুকল আমান্ডা। বিস্ময় নিয়ে দেখল এক লোক শুয়ে আছে ওর বিছানায়। ওর খিলখিল করে হেসে উঠতে ইচ্ছে করল। এ যেন সেই তিন ভল্লুকের গল্পের মতো। লোকটা তো দেখছি বেয়াদব! হয়তো এরকমই হয়ে থাকে যখন ওদেরকে সরাসরি বেডরুমে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়। হয়তো আমার ছোট্ট চালবাজিটি কাজে লাগেনি, পুরানো হয়ে গেছে। লোকটা তার চিঠি পড়ে গুঙিয়ে উঠে মনে মনে বলেছে, ওহ্, আবার সেই একই চালাকি! লোকটাকে দেখে মনে হচ্ছে গভীর নিদ্রামগ্ন।

ওকে ঘুম থেকে তুলবে কী তুলবে না দোটানায় পড়ল আমান্ডা। শেষে ভাবল কাপড়চোপড় ছেড়ে সরাসরি বিছানায় উঠে গেলেই হলো। তাহলে আর পরে তি হওয়ার সুযোগ থাকবে না।

ও নিশব্দে বাথরুমে ঢুকে বন্ধ করে দিল দরজা। দ্রুত জামা খুলে সঙ্গে আনা কালো রঙের স্বচ্ছ নাইটিটি পরে নিল। ঘণ্টাখানেক আগেই ও গোসল সেরে অকৃপণ হস্তে সুগন্ধী ছড়িয়েছে গায়ে।

দীর্ঘ কেশের খোঁপাটি খুলে দিল আমান্ডা। চুলে ব্রাশ চালাতে চালাতে লম্বা আয়নায় দেখল নিজেকে। রোগা তবে মোটামুটি আকর্ষণীয় চেহারা, কোমর ছাপানো সিল্কি কালো চুল, নাইটগাউনের আড়ালেও ফর্সা, ধবধবে শরীরটি দৃষ্টিগোচর হয়, বড় বড় বাদামী চোখ, একটু ভীত সন্ত্রস্ত চাউনি তবে একই সঙ্গে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। বাথরুমের বাতি নিভিয়ে ও ফিরে এল বেডরুমে।

.

ঘুমের মধ্যে নড়ে উঠল চার্লি পার্কার। ঘুমের ঘোরেই ভাবল বিছানাটা হেব্বি, নরম এবং স্প্রিংয়ের মতো লাফায়। একটি মেয়েকে স্বপ্ন দেখছিল ও, স্বপ্নটা কী নিয়ে তা অবশ্য মনে নেই, তবে জায়গাটা ছিল সুন্দর কোনো হোটেল।

তবে তার অবিশ্বাস্য লাগল যখন টের পেল বেডক্লথ তুলে একটি শরীর আলগোছে ঢুকে পড়েছে বিছানায়, নারী দেহের মাদকতাময় গন্ধ, সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে পারফিউমের সুঘ্রাণ। চার্লি বসার ঘরের ছোট বাতিটি জ্বালিয়ে রেখেছে। পাশ ফিরে শুতে মৃদু আলোয় দেখতে পেল ম্যাডোনার মতো একখানা মুখ ডাগর চোখ মেলে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

নিশ্চয় কোথাও কোনো ভুল হয়েছে, ভাবছে চার্লি, এ মেয়েটি যে কোনো মুহূর্তে চিৎকার করে উঠবে। কিন্তু একজোড়া নরম হাত জড়িয়ে ধরল ওর গলা।

আমি দুঃখিত, তোমাকে আমি অপেক্ষায় রেখেছি, চার্লস। এই যে আমি এসেছি। আমি রেডি, প্রিয় চার্লস…

.

রুম নং ২১২২ এবং ২২১২ মধ্যেকার পার্থক্য বিরাট কিছু না হলেও এটি অনেকের জীবন বদলে দিতে পারে। একই ফ্লোরে, করিডরের শেষ মাথায় জনৈক মি. হ্যাকফোর্থ অধৈর্য হয়ে বসে আছেন একটি আর্মচেয়ারে। তিনি অবাক হয়ে ভাবছেন বিছানার ওপর কেন পুরুষদের পাজামা পরে আছে। অবশ্য নারী স্বাধীনতার এ যুগে, চিন্তা করলেন তিনি, আজকাল শুদ্ধতা বা পবিত্রতা বলে কিছু নেই।

.

পরদিন সকালে মুখে তীব্র রোদের ঝলকে ঘুম ভেঙে গেল চার্লির। এক চোখ মেলল সে। এক মুহূর্তের জন্য মনে করল গতরাতের অবিশ্বাস্য স্বপ্ন এবং তার পরবর্তী ঘটনাটি। ঝট করে উঠে বসল সে। ওটা কোনো স্বপ্ন ছিল না কারণ এখনো সে পারফিউমের গন্ধ পাচ্ছে। বেডক্লথের বেশিরভাগ লুটিয়ে আছে মেঝেয়।

ঘড়ি দেখল চার্লি। নটা বাজে। টেন ট্রাক্টরস এর ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে দেরিই হয়ে যায় কিনা এ আতঙ্কে সে লাফ মেরে নামল বিছানা থেকে এবং কাপড় পরতে লাগল। নিচতলায় নাপিতের দোকানে বসে দাড়ি কামাতে কামাতে সে এক কাপ কফি খেয়ে নেবে।

মেয়েটির কোনো চিহ্ন নেই। সেই দারুণ মেয়েটি নিজেকে যে ভার্জিন বলে দাবি করছিল।

মেয়েটি খেলেছে বেশ, চার্লিও দারুণ খেলা দেখিয়েছে। বলা উচিত এমন চমৎকার খেলা আগে সে কখনো খেলেনি। মেয়েটি বারবারই ওকে চাইছিল এবং চার্লিও একান্ত অনুগতের মতো তার দাবি পূরণ করে চলছিল। বসার ঘরে যেতে যেতে চার্লি মনে মনে বলল, যীশাস, মেয়েটা ছিল দারুণ সংবেদনশীল। আমিও তাই। বিনয়ের অবতার যেন চার্লি।

ম্যান্টলপিসের ওপরে, হুইস্কির বোতলের পাশে একটি চিঠি নজরে এল চার্লির। চিঠির সঙ্গে একটি একশো ডলারের নোট।

প্রিয়তম চার্লস,

তোমার ঘুম ভাঙার আগেই আমাকে চলে যেতে হলো বলে দুঃখিত। আমি চাকরি করি কাজেই নটার মধ্যে আমাকে অফিসে পৌঁছতে হয়। তুমি আমাকে একটি নতুন জীবন দিয়েছ এবং জীবনের নতুন একটি মানে উপহার দিয়েছ। তোমার জন্য সামান্য কিছু টাকা রেখে গেলাম। বলে কিছু মনে কোরো না, লক্ষ্মীটি। তুমি ছিলে দারুণ এবং চমৎকার।

তোমার কথা আমার সবসময় মনে থাকবে।

এ. ডব্লু

অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে মাথা নাড়তে নাড়তে এলিভেটরে পা বাড়াল চার্লি। ভাবছিল হোটেলে ওর বিল কত আসবে। যতই আসুক সব উসুল হয়ে গেছে। কী দারুণ ওদের সার্ভিস, এমনকী মহিলা আমার নাম পর্যন্ত জানে! আর টাকাটা পেয়ে চার্লি বেশ ফুর্তি বোধ করছে।

হেব্বি! জোরে জোরে বলল চার্লি। এই আধুনিক হোটেলগুলো সত্যি হেব্বি!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *