ত্রিপুর

ত্রিপুর

দেবতাদের সঙ্গে অসুরদের ভয়ানক শক্রতা ছিল। দিনরাতই কেবল ইহাদের মারামারি চলিত, তাহাতে অনেক সময় অসুরেরাও হারিত, অনেক সময় দেবতারাও হারিতেন। দেবতারা অসুরদের জ্বালায় অস্থির থাকিতেন, আবার অসুরেরা তপস্যা করিলে তাহাদিগকে বর না দিয়াও পারিতেন না। বর দিয়া তারপর তাহার ধাক্কা সামলাইতে তাঁহাদের প্রাণান্ত হইত।

একটা অসুর ছিল তাহার নাম ময়। জাদু, মায়া, ভেলকিবাজি যত আছে, ময় তাহার সকলই জানিত, আর তাহার জোরে সময় সময় দেবতাদিগকে ভারি নাকাল করিত।

একবার যুদ্ধে হারিয়া ময় তপস্যা করিতে লাগিল; বিদ্যুন্মালী আর তারক নামে আর দুইটা অসুরও তাহার দেখাদেখি তপস্যা আরম্ভ করিল। তাহারা উপবাস করিয়া শীতে ভুগিয়া, বৃষ্টিতে ভিজিয়া এমনি আশ্চর্য তপস্যা করিল যে, ব্রহ্মা আর তাহাদের কাছে না আসিয়া থাকিতে পারিলেন না।

ব্রহ্মা বলিলেন, “বাপুসকল, আমি তোমাদের তপস্যায় বড়ই তুষ্ট হইয়াছি, এখন, কি বর লইবে বল।”

তখন ময় জোড়হাতে মিষ্ট কথায় তাহকে বিনয় করিয়া বলিল, “প্রভু, দেবতারা আমাদিগকে মারিয়া ধরিয়া তাড়াইয়া দিয়াছে, এখন আমরা কোথাও একটু থাকিবার জায়গা পাইতেছি না। দয়া করিয়া আমাকে এমন বর দিন, যাহাতে আমি একটি খুব ভালো দুর্গ প্রস্তুত করিতে পারি। সে দুর্গের ভিতরে বসিয়া থাকিলে আর কেহই যেন আমাকে কিছু করিতে না পারে।”

ব্রহ্মা বলিলেন, “একেবারে কেহই কিছু করিতে পারিবে না, এমন কি হয়?”

ময় বলিল, “তাহা যদি না হয়, তবে এই বর দিন, যে একমাত্র শিব ছাড়া আর কেহ সে দুর্গ নষ্ট করিতে পারবে না; আর শিবকেও একটিমাত্র বাণ মারিয়া সে কাজ করিতে হইবে।”

তখন ব্রহ্মা বলিলেন, “আচ্ছা তাহাই হইবে।” এই বলিয়া ব্রহ্মা চলিয়া গেলেন, ময়ও যারপরনাই খুশি হইয়া দুর্গ প্রস্তুত করিতে লাগিল।

ময় বলিল, “আমি এমন দুর্গ বানাইব যে, তাহা তিন ভাগ হইয়া তিন জায়গায় থাকিবে। তাহা হইলে আর এক বাণে তাহাকে নষ্ট করা যাইবে না। খালি, একদিন সেই তিনটি ভাগ একত্র হইবে— যেদিন চন্দ্র আর সূর্য একসঙ্গে পুষ্য নক্ষত্রে থাকিবেন। সেইদিন যদি শিব আসিয়া বাণ মারেন, তবেই আমার এই দুর্গ তিনি নষ্ট করিতে পারিবেন, নহিলে নয়।”

এমনি করিয়াই সে তাহার দুর্গ প্রস্তুত করিল। পৃথিবীর উপরে করিল একটি লোহার দুর্গ; সেটা তারকের জন্য। স্বর্গে করিল একটা রূপার দুর্গ; সেটা বিদ্যুন্মালীর জন্য। আর স্বর্গেরও উপরে একটা সোনার দুর্গ, সেটা করিল তাহার নিজের থাকিবার জন্য। এইরূপে তিনটি পুরী মিলিয়া দুর্গটি প্রস্তুত হইল, তাই তাহার নাম হইল ত্রিপুর।

তেমন দুর্গ আর কেহ কখনো দেখে নাই। যেমন বড়, তেমনি মজবুত, তেমনি সুন্দর! মাঠ, বাগান, পথ ঘাট, হাট বাজার, নদী পুকুর সকলই তাহার ভিতর আছে, কোনো জিনিসের জন্যই দুর্গের বাহিরে যাইতে হয় না। অসুরেরা যে যেখানে ছিল, খবর পাইয়া সকলে আসিয়া সেই দুর্গে বাস করিতে লাগিল। তাহাদের আর আনন্দের সীমা নাই। আর তাহাদের কিসের ভয়?

 তখন তাহাদের সাহস বাড়িয়া গেল। এতদিন দেবতাদের ভয়ে ঝোপে জঙ্গলে লুকাইয়া ছিল, এখন আবার সুবিধা পাইয়া তাঁহাদের সঙ্গে খোঁচাখুঁচি আরম্ভ করিল। কোনোদিন স্বর্গের বাগান ভাঙ্গে, কোনদিন দেবতাদের বাড়িতে গিয়া ঝগড়া করে, কোনোদিন মুনি-ঋষিদিগের তপস্যা মাটি করিয়া দেয়।

 ময় নিজে তেমন মন্দ লোক ছিল না কিন্তু অসুরেরা তাহার কথা শুনিলে তো? তাহারা দল বাঁধিয়া সংসারময় ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিল। যাহাকে পায়, তাহাকেই ধরিয়া মারে; তাহাদের ভয়ে লোকে স্থির হইয়া ঘরে থাকিতে পারে না।

 তখন সকলে ব্রহ্মার নিকটে গিয়া জোড়হাতে বলিল, “হে পিতামহ। আপনি তো অসুরদিগকে বর দিয়াছেন, এখন আমাদের কি উপায় হইবে? অসুরের জ্বালায় আমাদের প্রাণে বাঁচাই যে ভার হইয়াছে। আপনি যদি ইহাদের শাসন না করেন, তবে আর সংসারে দেবতা, মানুষ বা জীবজন্তু কিছুই থাকিবে না।”

ব্রহ্মা বলিলেন, “তোমরা ব্যস্ত হইও না। আমি বর দিয়াছি বটে কিন্তু উপায়ও রাখিয়া দিয়াছি। উহাদের ঐ দুর্গ একটি বাণেই ভাঙ্গিয়া ফেলা যায়। কিন্তু তাহা তোমরা পারিবে না। চল শিবের কাছে যাই। তিনিই এ কাজের উপযুক্ত লোক।”

 শিব তাহার ঘরে বসিয়া আছেন, এমন সময় তেত্রিশ কোটি দেবতা সকলে মিলিয়া তাঁহার নিকটে আসিয়া জোড়হাতে তাঁহার স্তব করিতে লাগিলেন।

 শিব বলিলেন, “তোমরা কি জন্য আসিয়াছ? বল আমি তোমাদের কি উপকার করিতে পারি; এখনি তাহা করিব।”

 দেবতারা বলিলেন, “অসুরেরা তো আর আমাদের কিছু রাখিল না, এখন আপনি আমাদিগকে রক্ষা করুন। আমাদের বাড়ি বাগান সব ভাঙ্গিয়া দিয়াছে, হাতি ঘোড়া ধরিয়া নিয়াছে, ধনরত্ন লুট করিয়াছে, এরপর প্রাণে মারিবে। দোহাই ঠাকুর। আমাদিগকে রক্ষা করুন।”

 তাহা শুনিয়া শিব বলিলেন, “তোমাদের কোনো ভয় নাই, আমি ত্রিপুর দুর্গ পোড়াইয়া দিতেছি। একখানা ভালোরকম রথ আন তো।”

 এ কথায় দেবতারা সকলে মিলিয়া সংসারের সকল ভয়ংকর আর আশ্চর্য জিনিস দিয়া, এমনি চমৎকার এক রথ প্রস্তুত করিলেন সে কি বলিব। রথের দিকে চাহিয়া শিব অনেকক্ষণ ধরিয়া খালি ‘বাঃ! বাঃ!’ এইরূপই কবিতে লাগিলেন। তারপর তিনি বলিলেন, “বেশ রথ হইয়াছে। এখন ইহার উপযুক্ত একটি সারথি চাই।”

 দেবতারা তো বড়ই সংকটে পড়িলেন। এমন রথের সারথি তো যেমন তেমন হইলে চলিবে না—হায় এখন সারথি কোথায় পাই?

 তখন ব্রহ্মা বলিলেন, “চিন্তা কি? আমিই সারথি হইব।” এই বলিয়া ব্রহ্মা যখন রথে উঠিয়া রাশ ধরিয়া বসিলেন তখন সকলের কী আনন্দই হইল। শিবও তখন যারপরনাই সুখী হইয়া বলিলেন, “এইবার ঠিক সারথি হইয়াছে।”

 সেই রথে চড়িয়া শিব যুদ্ধ করিতে চলিলেন, সঙ্গে দেবতা গন্ধর্ব সকলে জয় জয় শব্দে ছুটিয়া চলিল। ষাঁড়ে চড়িয়া নন্দী চলিল, ময়ুরে চড়িয়া কার্তিক চলিলেন, ঐরাবতে চড়িয়া ইন্দ্র চলিলেন, সাপে চড়িয়া বরুণ চলিলেন, মহিষে চড়িয়া যম চলিলেন। শিবের যত ভূত, তাহারাও শিবের রথ ঘিরিয়া গর্জন করিতে করিতে চলিল, হাতির মতো, পাহাড়ের মতো তাহাদের শরীর, মেঘের মতো তাহাদের ডাক।

 এদিকে অসুরেরা এ সকল দেখিয়া শুনিয়া বড়ই ব্যস্ত হইয়া উঠিয়াছে। ময় তাড়াতাড়ি অসুরদিগকে ডাকিয়া বলিলেন, “সাবধান, সাবধান। ঐ দেখ দেবতারা যুদ্ধ করিতে আসিতেছে। দেখিয়ো, যেন উহাদিগকে সহজে ছাড়িয়ো না।”

 এমনি করিয়া ক্রমে দেবতা আর অসুরদিগের ঘোরতর যুদ্ধ আরম্ভ হইল। অসুরগুলি দেখিতে যেমন ভয়ংকর, শিবের ভূত সকলও তেমনি বিকট; আর তাহাদের যুদ্ধও হইল বড়ই সাংঘাতিক। অসুরেরা মনে করে যে তাহারা দেখিতে ভারি সুন্দর, তাই ভূতগুলির জানোয়ারের মতো মুখ দেখিয়া, তাহারা আর হাসি রাখিতে পারে না।

 সেই ভূতদের সঙ্গে খানিক যুদ্ধ করিলেই আবার তাহাদের সে হাসি শুকাইয়া যায়। তবুও অসুরেরা যেমন তেমন যুদ্ধ করে নাই। ময় আর তারক দুজনে নানারূপ মায়া খেলাইয়া ভূত আর দেবতা সকলকেই যারপরনাই ব্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিল। কোথা হইতে যে তাহারা যত রাজ্যের আগুন, আর বৃষ্টি, আর ঝড়, আর বাঘ, আর সাপ, আর কুমীর আনিয়া দেবতাদের উপর ফেলিতে লাগিল, তাহা কেহই বুঝিতে পারিল না। তথাপি ক্রমে দেবতাদেরই জয় হইতে লাগিল, নন্দীর হাতে বিদ্যুম্মালী মারা গেল, আর সকল অসুরই কাবু হইয়া পড়িল। তখন ময় দেখিল যে এখন একবার দুর্গের ভিতরে গিয়া একটু বিশ্রাম না করিলে আর চলিতেছে না।

 দুর্গের ভিতরে আসিয়া ময় ভাবিতেছে, এখন উপায় কি হয়? এমন দুর্গ করিয়াও দেবতাদের হাতে শেষে এত নাকাল হইতে হইল। বলিতে বলিতে চট্‌ করিয়া তাহার মাথায় বুদ্ধি জোগাইয়াছে, আর অমনি সে মায়ার বলে দুর্গের ভিতরে এক আশ্চর্য পুকুর তৈয়ীর করিয়া ফেলিয়াছে। সে পুকুরের জল অমৃত, সে জল একবার খাইলে বা তাহাতে স্নান করিলে মরা যে সেও বাঁচিয়া উঠে।

 তখন আর কিসের ভয়? যত অসুর মরে, সকলকেই আনিয়া সেই পুকুরে স্নান করায়। এমনি করিয়া তাহারা বিদ্যুন্মালীকে আবার বাঁচাইয়া তুলল আর কত মরা অসুর যে বাঁচাইল তাহার তো লেখা জোখাই নাই। বাঁচিয়া উঠিয়াই তাহারা আবার বলিল, “কোথায় গেল শিব? কোথায় নন্দী? কোথায় দেবতা? কোথায় ভূত? মার তাহাদের সকলকে।”

 এবারে দেবতারা বড়ই সংকটে পড়িলেন। যত অসুর মারেন, সকলেই খানিক পরে আবার আসিয়া যুদ্ধ করিতে থাকে। একি আশ্চর্য ব্যাপার। মরিয়াও মরে না, বরং তাহাদের গায়ের জোর যেন আরো বাড়িয়া যায়। দেবতাগণ আর ভাবিয়া পথ পাইতেছেন না।

 এমন সময় শিবের একটা ভূত ছুটিয়া আসিয়া বলিল, “কর্তা, অসুর মারিয়া আর কি হইবে? এদের ঘরে পুকুর আছে, তাহর জলে চোবাইলে মরাটি চাঙ্গা হয়।”

 অসুরেরা তখন বড়ই ভয়ানক যুদ্ধ করিতেছিল। দেবতারা একে ইহাদের জ্বালায় অস্থির, তাহাতে আবার শিবের রথের চাকা মাটিতে বসিয়া গিয়াছে, সকলে প্রাণপণে টানাটানি করিয়া তাহাকে তুলিতে পারিতেছেন না। তখন যদি বিষ্ণু তাড়াতাড়ি এক বিশাল ষাঁড় সাজিয়া শিং দিয়া সেই রথ না উঠাইতেন, তবে না জানি সেদিন কি সর্বনাশই হইত। ইহারই মধ্যে তারকাসুর ঝড়ের মতো ছুটিয়া আসিয়া ব্রহ্মাকে এমনি গুঁতা মারিয়াছিল যে, তিনি হাতের রাশ রথে ফেলিয়া কেবলই হাঁপাইতেছিলেন।

 এদিকে বিষ্ণু রথখানিকে শিং দিয়া উঠাইয়া দিয়াই অসুরদিগের দুর্গের দিকে ছুটিয়া চলিয়াছে। অসুরেরা তাহার বিশাল দেহ আর শিং নাড়া দেখিয়া আর গর্জন শুনিয়া, আর তাঁহাকে আটকাইতে সাহসই পাইল না। তিনি ছুটিতে ছুটিতে সেই পুকুরে গিয়া চোঁ চোঁ শব্দে তাহার সমস্ত জল খাইয়া ফেলিলেন।

 ইহার পর আর অসুরেরা ভূতদের সঙ্গে কিছুতেই পারিয়া উঠিল না; তাহারা ঢিপ্‌ ঢাপ্‌ ভূতের কিল খাইতে খাইতে ছুটিয়া দুর্গের ভিতরে ঢুকিয়া গেল। তাহা দেখিয়া সকলে হাততালি দিয়া হাসিতে লাগিল।”

 তখন আর অসুরেরা ভূতের ভয়ে স্থির থাকিতে না পারিয়া তাহাদের দুর্গসুদ্ধ সমুদ্রের উপরে চলিয়া গেল। কিন্তু দেবতারা তাহাদিগকে এত সহজে ছড়িবেন কেন? তাঁহারা সেইখানে গিয়া আবার তাহাদের সঙ্গে বিষম যুদ্ধ আরম্ভ করিলেন। দেখিতে দেখিতে তারকাসুর নন্দীর হাতে মারা গেল, বিদ্যুন্মালীরও সেই দশা হইতে আর অধিক বিলম্ব হইল না।

 তারপর ক্রমে সেই সময় আসিয়া উপস্থিত হইল, যখন চন্দ্র আর সূর্য একসঙ্গে পুষ্যা নক্ষত্রে আসিবেন। সেই পুণ্যযোগে ত্রিপুর দুর্গের তিনটি ভাগও এক জায়গায় আসিয়া মিলিবার কথা। তখন তাহার উপরে শিবের বাণ পড়িলে, এক বাণেই সেই দুর্গ নষ্ট হইয়া যাইবে। শিব তাহার জন্যই ধনুর্বাণ লইয়া প্রস্তুত আছে। ঠিক সময়টি উপস্থিত হইবামাত্র ভীষণ শব্দে তিনি সেই বাণ ছড়িয়া দিলেন, অমনি তাহা আকাশ পাতাল আলো করিয়া অসুরদিগের দুর্গের উপর গিয়া পড়িল। সে বাণের তেজ এমনি ছিল যে দুর্গের উপরে তাহা পড়িবামাত্রই দেখিতে দেখিতে সেই দুর্গ পুড়িয়া ছাই হইয়া গেল।

 এইরূপে ত্রিপুর দুর্গের শেষ হইল। অসুরেরা আর সকলেই তাহার সঙ্গে পুড়িয়া মরিয়াছিল, কেবল ময় মরে নাই। সে শিবের ভক্ত ছিল, তাই শিব দয়া করিয়া নন্দীকে পাঠাইয়া আগেই তাহাকে সাবধান করিয়া দেন।নন্দীর কথায় সে তাহার থাকিবার ঘরখানি সুদ্ধ পলাইয়া প্রাণ বাঁচাইয়াছিল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ত্রিপুর

ত্রিপুর

.. ত্রিপুরোপনিষত্ ..

ত্রিপুরোপনিষদ্বেদ্যপারমৈশ্বর্যবৈভবম্ .
অখণ্ডানন্দসাম্রাজ্যং রামচন্দ্রপদং ভজে ..
ॐ বাঙ্মে মনসি প্রতিষ্ঠিতা | মনো মে বাচি প্রতিষ্ঠিতম্ |
আবিরাবীর্ম এধি | বেদস্য ম আণীস্থঃ | শ্রুতং মে মা প্রহাসীঃ |
অনেনাধীতেনাহোরাত্রান্ সংদধামি | ঋতং বদিষ্যামি |
সত্যং বদিষ্যামি | তন্মামবতু | তদ্বক্তারমবতু | অবতু মাম্ |
অবতু বক্তারম্ | অবতু বক্তারম্ |
ॐ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ ||

ॐ তিস্রঃ পুরাস্ত্রিপথা বিশ্বচর্ষণা অত্রাকথা অক্ষরাঃ
সন্নিবিষ্টাঃ |
অধিষ্ঠাযৈনা অজরা পুরাণী মহত্তরা মহিমা দেবতানাম্ || ১||

নবযোনির্নবচক্রাণি দধিরে নবৈব যোগা নব যোগিন্যশ্চ |
নবানাং চক্রা অধিনাথাঃ স্যোনা নব মুদ্রা নব ভদ্রা মহীনাম্ ||
২||

একা সা আসীত্ প্রথমা সা নবাসীদাসোনবিংশাদাসোনত্রিংশত্ |
চত্বারিংশাদথ তিস্রঃ সমিধা উশতীরিব মাতরো মা বিশন্তু ||
৩||

ঊর্ধ্বজ্বলজ্বলনং জ্যোতিরগ্রে তমো বৈ তিরশ্শ্চীনমজরং
তদ্রজোঽভূত্ |
আনন্দনং মোদনং জ্যোতিরিন্দো রেতা উ বৈ মণ্ডলা মণ্ডযন্তি || ৪||

তিস্রশ্চ [যাস্তিস্রো ]রেখাঃ সদনানি
ভূমেস্ত্রিবিষ্টপাস্ত্রিগুণাস্ত্রিপ্রকারাঃ .
এতত্পুরং [এতত্ত্রযং ]পূরকং পূরকাণামত্র [
পূরকাণাং মন্ত্রী ]প্রথতে মদনো মদন্যা || ৫||

মদন্তিকা মানিনী মংগলা চ সুভগা চ সা সুন্দরী সিদ্ধিমত্তা |
লজ্জা মতিস্তুষ্টিরিষ্টা চ পুষ্টা লক্ষ্মীরুমা ললিতা লালপন্তী
|| ৬||

ইমাং বিজ্ঞায সুধযা মদন্তী পরিসৃতা তর্পযন্তঃ স্বপীঠম্ |
নাকস্য পৃষ্ঠে বসন্তি পরং ধাম ত্রৈপুরং চাবিশন্তি || ৭||

কামো যোনিঃ  কামকলা ব্রজপাণির্গুহা হসা মাতরিশ্বাভ্রমিন্দ্রঃ |
পুনর্গুহা সকলা মাযযা চ পূরূচ্যেষা বিশ্বমাতাদিবিদ্যা || ৮||

ষষ্ঠং সপ্তমমথ বহ্নিসারথিমস্যা মূলত্রিক্রমা দেশযন্তঃ |
কথ্যং কবিং কল্পকং কামমীশং তুষ্টুবাংসো অমৃতত্বং
ভজন্তে || ৯||

ত্রিবিষ্টপং ত্রিমুখং বিশ্বমাতুর্নবরেখাঃ স্বরমধ্যং তদীলে  |
[পুরং হন্ত্রীমুখং বিশ্বমাতূ রবে রেখা স্বরমধ্যং
তদেষা . ]
বৃহত্তিথির্দশা পঞ্চাদি নিত্যা সা ষোডশী পুরমধ্যং বিভর্তি
|| ১০||

যদ্বা মণ্ডলাদ্বা স্তনবিংবমেকং মুখং চাধস্ত্রীণি গুহা সদনানি |
কামী কলাং কাম্যরূপাং বিদিত্বা [চিকিত্বা ]নরো জাযতে
কামরূপশ্চ কাম্যঃ [কামঃ ]|| ১১||

পরিসৃতম্ ঝষমাদ্যং [ঝষমাজং ]ফলং চ
ভক্তানি যোনীঃ
সুপরিষ্কৃতাশ্চ .
নিবেদযন্দেবতাযৈ মহত্যৈ স্বাত্মীকৃতে সুকৃতে সিদ্ধিমেতি || ১২||

সৃণ্যেব সিতযা বিশ্বচর্ষণিঃ পাশেনৈব প্রতিবধ্নাত্যভীকাম্ |
ইষুভিঃ পঞ্চভির্ধনুষা চ বিধ্যত্যাদিশক্তিররুণা
বিশ্বজন্যা || ১৩||

ভগঃ শক্তির্ভগবান্কাম ঈশ উভা দাতারাবিহ সৌভগানাম্ |
সমপ্রধানৌ সমসত্বৌ সমোজৌ তযোঃ শক্তিরজরা বিশ্বযোনিঃ ||
১৪||

পরিস্রুতা হবিষা ভাবিতেন প্রসঙ্কোচে গলিতে বৈমনস্কঃ |
শর্বঃ সর্বস্য জগতো বিধাতা ধর্তা হর্তা বিশ্বরূপত্বমেতি || ১৫||

ইযং মহোপনিষত্ত্রৈপুর্যা যামক্ষরং পরমো গীর্ভিরীট্টে |
এষর্গ্যজুঃ পরমেতচ্চ সামাযমথর্বেযমন্যা চ বিদ্যা || ১৬||

ॐ হ্রীম্ ॐ হ্রীমিত্যুপনিষত্ ||

ॐ বাঙ্মে মনসি প্রতিষ্ঠিতা | মনো মে বাচি প্রতিষ্ঠিতম্ |
আবিরাবীর্ম এধি | বেদস্য ম আণীস্থঃ | শ্রুতং মে মা প্রহাসীঃ |
অনেনাধীতেনাহোরাত্রান্ সংদধামি | ঋতং বদিষ্যামি |
সত্যং বদিষ্যামি | তন্মামবতু | তদ্বক্তারমবতু | অবতু মাম্ |
অবতু বক্তারম্ | অবতু বক্তারম্ |
ॐ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ ||
|| ইতি  ত্রিপুরোপনিষত্  ||

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *