2 of 2

প্রত্যাদেশ ১৯

১ এরপর আমি স্বর্গে এক বিশাল জনতার কলরব শুনলাম। সেই লোকরা বলছে:‘হাল্লিলুইয়া! জয়, মহিমা ও পরাক্রম আমাদের ঈশ্বরেরই,
২ কারণ তাঁর বিচারসকল সত্য ও ন্যায়। তিনি সেই মহান গণিকার বিচার নিষ্পন্ন করেছেন, য়ে তার য়ৌন পাপ দ্বারা পৃথিবীকে কলুষিত করত। ঈশ্বরের দাসদের রক্তপাতের প্রতিশোধ নিতে ঈশ্বর সেই বেশ্যাকে শাস্তি দিয়েছেন।’
৩ তারপর স্বর্গের সেই লোকেরা বলে উঠল:‘হাল্লিলুইয়া! সেই বেশ্যা ভস্মীভূত হবে এবং যুগ যুগ ধরে তার ধোঁয়া উঠবে।’
৪ এরপর সেই চব্বিশজন প্রাচীন ও চারজন প্রাণী সিংহাসনে যিনি বসেছিলেন, সেই ঈশ্বরের চরণে মাথা নত করে তাঁর উপাসনা করে বললেন:‘আমেন, হাল্লিলুইয়া!’
৫ পরে সিংহাসন থেকে এক বাণী নির্গত হল, কে য়েন বলে উঠল:‘হে আমার দাসরা, তোমরা যাঁরা তাঁকে ভয় কর, তোমরা ক্ষুদ্র কি মহান, তোমরা সকলে ঈশ্বরের প্রশংসা কর!’
৬ পরে আমি বিরাট জনসমুদ্রের রব, প্রবল জলকল্লোল ও প্রচণ্ড মেঘগর্জনের মতো এই বাণী শুনলাম:‘হাল্লিলুইয়া! আমাদের প্রভু যিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তিনি রাজত্ব শুরু করেছেন।
৭ এস, আমরা আনন্দ ও উল্লাস করি, আর তাঁর মহিমা করি, কারণ মেষশাবকের বিবাহের দিন এল। তাঁর বধূও বিবাহের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছে।
৮ তাকে পরিধান করতে দেওয়া হল শুচি শুভ্র উজ্জ্বল মসীনার বসন।’সেই মসীনার বসন হল ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সত্‌কর্মের প্রতীক।
৯ এরপর তিনি আমায় বললেন, ‘তুমি এই কথা লেখ। ধন্য তারা, যাঁরা মেষশাবকের বিবাহে নিমন্ত্রিত হয়েছে।’ তারপর দূত আমায় বললেন, ‘এগুলি ঈশ্বরের সত্য বাক্য।’
১০ আমি তাঁকে উপাসনা করার জন্য তাঁর চরণে মাথা নত করলাম। কিন্তু স্বর্গদূত আমায় বললেন, ‘আমার উপাসনা করো না! আমি তোমারই মত এবং তোমার য়ে ভাইরা যীশুর সাক্ষ্য ধরে রয়েছে তাদের মতো এক দাস। ঈশ্বরেরই উপাসনা কর, কারণ ভাববাদীর আত্মাই হল যীশুর সাক্ষ্য।’
১১ এরপর আমি দেখলাম, স্বর্গ উন্মুক্ত, আর সেখানে সাদা একটা ঘোড়া দাঁড়িয়ে আছে। তার ওপর যিনি বসে আছেন, তাঁর নাম ‘বিশ্বস্ত ও সত্যময়’ আর তিনি ন্যায়সিদ্ধ বিচার করেন ও যুদ্ধ করেন।
১২ আগুনের শিখার মতো তাঁর চোখ, আর তাঁর মাথায় অনেকগুলি মুকুট আছে; সেই মুকুটগুলির উপর এমন এক নাম লেখা আছে, যার অর্থ তিনি ছাড়া অন্য আর কেউ জানে না।
১৩ রক্তে ডোবানো পোশাক তাঁর পরণে; তাঁর নাম ঈশ্বরের বাক্য।
১৪ স্বর্গের সেনাবাহিনী সাদা ঘোড়ায় চড়ে তাঁর পেছনে পেছনে চলেছিল। তাদের পরণে ছিল শুচিশুভ্র মসীনার পোশাক।
১৫ একটি ধারালো তরবারি তাঁর মুখ থেকে বেরিয়ে আসছিল, যা দিয়ে তিনি পৃথিবীর সমস্ত জাতিকে আঘাত করবেন। লৌহ যষ্টি হাতে জাতিবৃন্দের ওপর তিনি শাসন পরিচালনা করবেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধের কুণ্ডে তিনি সব দ্রাক্ষা মাড়াই করবেন।
১৬ তাঁর পোশাকে ও উরুতে লেখা আছে এই নাম:‘রাজাদের রাজা ও প্রভুদের প্রভু।’
১৭ পরে আমি দেখলাম, একজন স্বর্গদূত সূর্যের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি উঁচু আকাশ পথে য়ে সব পাখি উড়ে যাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যে খুব জোরে চিত্‌কার করে বললেন: ‘এস, ঈশ্বর য়ে মহাভোজের আযোজন করেছেন, তার জন্য এক জায়গায় জড়ো হও।
১৮ এক, রাজাদের, প্রধান সেনাপতিদের ও বীরপুরুষদের মাংস, ঘোড়া ও ঘোড়-সওয়ারদের মাংস, স্বাধীন অথবা ক্রীতদাস, ক্ষুদ্র অথবা মহান সকল মানুষের মাংস খেয়ে যাও।’
১৯ তখন আমি দেখলাম ঐ ঘোড়ার ওপর যিনি বসেছিলেন, তিনি ও তাঁর সৈন্যদের সঙ্গে সেই পশু ও পৃথিবীর রাজারা তাদের সমস্ত সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধ করার জন্য একত্র হল।
২০ কিন্তু সেই পশু ও ভণ্ড ভাববাদীকে ধরা হল। এই সেই ভণ্ড ভাববাদী, য়ে পশুর জন্য অলৌকিক কাজ করেছিল। এই অলৌকিক কাজের দ্বারা ভণ্ড ভাববাদী তাদের প্রতারণা করেছিল যাদের সেই পশুর চিহ্ন ছিল এবং যাঁরা তার উপাসনা করেছিল। ভণ্ড ভাববাদী এবং পশুটিকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল।
২১ যাঁরা বাকী থাকল তারা সকলে সেই সাদা ঘোড়ার সওয়ারীর মুখ থেকে বেরিয়ে আসা ধারালো তলোয়ারের আঘাতে মারা পড়ল; আর সমস্ত পাখি তাদের মাংস খেয়ে তৃপ্ত হল।