2 of 2

প্রত্যাদেশ ১৪

১ এরপর আমি সিযোন পর্বতের ওপর এক মেষশাবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে ১,৪৪,০০০ জন লোক। তাদের প্রত্যেকের কপালে তাঁর নাম ও তাঁর পিতার নাম লিখিত।
২ পরে আমি স্বর্গ থেকে শুনতে পেলাম প্রবল জলকল্লোলের মতো, প্রচণ্ড মেঘগর্জনের মতো এক কন্ঠস্বর; য়ে স্বর আমি শুনলাম তাতে মনে হল য়েন একটা বীণাবাদক দল তাঁদের বীণা বাজাচ্ছেন।
৩ তাঁরা সকলে সিংহাসনের সামনে ও সেই চারজন প্রাণী ও প্রাচীনদের সামনে এক নতুন গীত গাইছিলেন। পৃথিবী থেকে যাদের মূল্য দিয়ে কেনা হয়েছিল সেই ১,৪৪,০০০ জন লোক ছাড়া আর অন্য কেউই সেই গান শিখতে পারল না।
৪ এই ১,৪৪,০০০ জন লোক হলেন তাঁরা যাঁরা স্ত্রীলোকদের সংসর্গে নিজেদের কলুষিত করেন নি, কারণ তাঁরা খাঁটি। তাঁরা মেষশাবক য়েখানে যান সেখানেই তাঁকে অনুসরণ করেন। পৃথিবীর লোকদের মধ্য থেকে এই ১,৪৪,০০০ জন লোককে মুক্ত করা হয়েছে। ঈশ্বর ও মেষশাবকের উদ্দেশ্যে তাঁরা মনুষ্যদের মধ্য থেকে অগ্রিমাংশরূপে গৃহীত হয়েছেন।
৫ তাঁদের মুখে কোন মিথ্যা কথা পাওয়া যায় নি। তাঁরা নির্দোষ।
৬ পরে আমি আর একজন স্বর্গদূতকে আকাশপথে উড়ে য়েতে দেখলাম। পৃথিবীবাসী লোকদের কাছে, পৃথিবীর সকল জাতি, উপজাতি, সকল ভাষাভাষী লোকের কাছে ঘোষণা করার জন্য এই স্বর্গদূতের কাছে ছিল অনন্তকালীন সুসমাচার।
৭ স্বর্গদূত উদাত্ত কন্ঠে এই কথা বললেন, ‘ঈশ্বরকে ভয় করো ও তাঁর প্রশংসা করো, কারণ সময় হয়েছে, যখন ঈশ্বর সমস্ত লোকদের বিচার করবেন। যিনি স্বর্গ, পৃথিবী, সমুদ্র ও সমস্ত জলের উত্‌স সৃষ্টি করেছেন, সেই ঈশ্বরেরই উপাসনা করো।’
৮ এরপর প্রথম স্বর্গদূতদের পিছন পিছন দ্বিতীয় স্বর্গদূত উড়ে এসে বললেন, ‘পতন হল! মহানগরী বাবিলের পতন হল! সে সমস্ত জাতিকে ঈশ্বরের ক্রোধের ও তার ব্যভিচারের মদিরা পান করিয়েছে।’
৯ এরপর ঐ দুজন স্বর্গদূতের পেছনে আর এক স্বর্গদূত এসে চিত্‌কার করে বললেন, ‘যদি কেউ সেই পশু ও তার প্রতিমার আরাধনা করে আর কপালে অথবা হাতে তার ছাপধারণ করে
১০ তবে সেও ঈশ্বরের সেই রোষ মদিরা পান করবে, যা ঈশ্বরের ক্রোধের পাত্রে অমিশ্রিত অবস্থায় ঢালা হচ্ছে। পবিত্র স্বর্গদূতদের ও মেষশাবকের সামনে জ্বলন্ত গন্ধকে ও আগুনে পুড়ে তাকে কি নিদারুণ যন্ত্রণাই না পেতে হবে।
১১ তাদের যন্ত্রণার ধোঁয়া যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে উপরে উঠতে থাকবে। যাঁরা সেই পশু ও তাঁর মূর্তির আরাধনা করে অথবা য়ে কেউ তার নামের ছাপ ধারণ করে, তারা দিনে কি রাতে কখনও বিশ্রাম পাবে না।’
১২ এখানেই ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের ধৈর্য্যের প্রযোজন, যাঁরা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করবে ও যীশুর প্রতি বিশ্বাসে স্থির থাকবে।
১৩ এরপর আমি স্বর্গ থেকে একটা রব শুনলাম, ‘তুমি এই কথা লেখ; এখন থেকে মৃত লোকেরা ধন্য, যাঁরা প্রভুর সঙ্গে যুক্ত থেকে মৃত্যুবরণ করেছে।’আত্মা একথা বলছেন, ‘হ্যাঁ, এ সত্য। তারা তাদের কঠোর পরিশ্রম থেকে বিশ্রাম লাভ করবে, কারণ তাদের সব সত্‌কর্ম তাদের অনুসরণ করে।’
১৪ পরে আমি তাকিয়ে দেখলাম, আমার সামনে একখণ্ড সাদা মেঘ। সেই মেঘের ওপর মানবপুত্রেরমতো একজন বসে আছেন। তাঁর মাথায় সোনার মুকুট ও তার হাতে একটা ধারালো কাস্তে।
১৫ এরপর মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বের হয়ে এলেন। যিনি মেঘের ওপরে বসে আছেন তাঁকে তিনি বললেন, ‘আপনার কাস্তে লাগান ও শস্য সংগ্রহ করুন, কারণ শস্য সংগ্রহের সময় হয়েছে। পৃথিবীর সব শস্য পেকেছে।’
১৬ তাই যিনি সেই মেঘের ওপর বসেছিলেন তিনি পৃথিবীর ওপর কাস্তে চালালেন আর পৃথিবীর ফসল তোলা হল।
১৭ এরপর স্বর্গের মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বেরিয়ে এলেন। এই স্বর্গদূতের হাতে এক ধারালো কাস্তে ছিল,
১৮ আর যজ্ঞবেদী থেকে অন্য এক স্বর্গদূত উঠে এলেন, য়াঁর আগুনের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতা ছিল। তিনি ঐ ধারালো কাস্তে হাতে য়ে স্বর্গদূত ছিলেন তার উদ্দেশ্যে চিত্‌কার করে এই কথা বললেন, ‘তোমার ধারালো কাস্তে লাগাও, পৃথিবীর সমস্ত আঙ্গুর ক্ষেতের আঙ্গুরের থোকাগুলি কাট, কারণ সমস্ত আঙ্গুর পেকে গেছে।’
১৯ তখন সেই স্বর্গদূত পৃথিবীর ওপর কাস্তে চালিয়ে পৃথিবীর সমস্ত আঙ্গুর সংগ্রহ করে ঈশ্বরের ক্রোধের মাড়াইকলে ঢেলে দিলেন।
২০ নগরের বাইরে মাড়াইকলে আঙ্গুরগুলি মাড়াই করা হলে পরে সেই মাড়াইকল থেকে রক্ত নিঃসৃত হল। সেই রক্ত উচ্চতায় ঘোড়ার এক বলগা পর্যন্ত এবং দুরত্বে ২০০ মাইল প্রবাহিত হল।