সেই একটা রাতই রুনুর রুমে কাটিয়ে ছিল সুমি।
তার পরদিন থেকে রাতেরবেলা নূরজাহান থাকে তার রুমে। সুমি তার বিছানায়, নূরজাহান নীচে। মেঝেতে।
আগে বেশ টিভি দেখার শখ ছিল সুমির।
নিজের রুমে টেলিভিশন একটা আছে। চৌদ্দইঞ্চি সনি টেলিভিশন। গত দুআড়াই মাস ধরে সেভাবে টেলিভিশন আর দেখা হয় না তার। দেখতে ভাল লাগে না।
টেলিভিশনের কারণে আগে ঘুমাতে ঘুমাতে বারোটা সাড়ে বারোটা বেজে যেত। আজকাল দশটা সাড়ে দশটার মধ্যেই শুয়ে পড়ে।
সুমির আরেকটা অভ্যেস হচ্ছে, আলোতে সে একদমই ঘুমোতে পারে না। সেই আলো যতই মৃদু হোক, যতই মোলায়েম হোক। এজন্য ডিমলাইট থাকার পরও কখনও ডিমলাইট জ্বালানো হয় না তার। অন্ধকারে নিজের বিছানায় শুয়ে মগ্ন হয়ে যে কোনও কিছু ভাবতেই ভাল লাগে সুমির। কিন্তু ভাবতে সে আজকাল চায় না। এজন্য শুয়ে পড়ার পর যতক্ষণ ঘুম না আসে নূরজাহানের সঙ্গে টুকটাক কথা বলে।
সেদিনের পর থেকে নূরজাহানের সঙ্গে যেন আলাদা একটা ভাব হয়ে গেছে তার।
আজও শুয়ে পড়ার পর অনেকক্ষণ কথা বলেছিল।
মিলার ব্যাপারটা জানার পর থেকে অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে তার। মিলার ওপর থেকে যাবতীয় রাগ অভিমান চলে গেছে। আশ্চর্য এক মায়া হচ্ছে মিলার জন্য। ও রকম ঘটনা কোনও মেয়ের জীবনে ঘটলে সেই মেয়ের সব কিছুই উলট পালট হয়ে যাওয়ার কথা। মিলারও তাই হয়েছিল। তার ওপর পুরো ব্যাপারটাই সে চেপে গিয়েছিল। কারও সঙ্গে শেয়ার করেনি বলে মনের ওপর চাপটা তার বেশি পড়েছিল। এজন্যই সুমি এবং জয়ের সঙ্গে এলোমেলো আচরণগুলো সে করেছে।
সবচে’ আনন্দের কথা মাস তিনেকের মধ্যে নিজেকে সে সামাল দিয়ে ফেলেছে। ভেতরে ভেতরে আশ্চর্য এক শক্তি সঞ্চয় করেছে। জয়ের কাছ থেকে নিজেকে ফিরিয়েছে। প্রিয়তম বন্ধুর কাছে ফিরে এসেছে।
কিন্তু কে এই সর্বনাশটা করল মিলার?
এইসব ব্যাপার কি তাহলে গোপন প্রেমের মতোই এমন এক গোপন ক্ষত, জীবন দিয়ে হলেও মেয়েরা তা চেপে রাখে!
তারপরই একটা কথা ভেবে দম বন্ধ হয়ে এল সুমির।
গল্প উপন্যাস এবং সিনেমা নাটকে যে দেখা যায় এই ধরনের ঘটনা ঘটলেই মেয়েটি প্রগন্যান্ট হয়ে যায়। মিলার সেই ধরনের কোনও সমস্যা হয়নি তো?
সর্বনাশ!
একথা তো মিলাকে জিজ্ঞেস করা হয়নি!
যদি তেমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে তো ভয়াবহ রকমের বিপাকে পড়বে মিলা।
সুমির ইচ্ছে হলো উঠে গিয়ে এখুনি ফোন করে মিলাকে। পরিষ্কার জেনে নেয় ব্যাপারটি।
তারপরই অন্য একটা কথা ভেবে ভেতরে ভেতরে শান্ত হলো সে।
না তেমন ব্যাপার নিশ্চয় হয়নি।
তিনমাস হয়ে গেছে।
তেমন কিছু হলে এর মধ্যেই টের পেয়ে যেত মিলা। সুমিকে বলতো।
এসব ভেবে সুমি কেমন একটা হাঁপ ছাড়ল।
ঠিক তখুনি মেঝেতে শোয়া নূরজাহান বলল, কী হলো?
সুমি অবাক হলো। কী?
ঘুমান নাই?
না।
ক্যান?
ঘুম আসছে না।
নূরজাহান হাসল। তেলাপোকার ডর না বদজীনের?
কোনটারই না।
তাহলে?
এমনি।
তারপর আবার কিছুক্ষণ চুপচাপ। এই ফাঁকে সুমি ভাবল একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রেপ সম্পর্ক নূরজাহানের কাছ থেকে কিছু জানা যায় কী না দেখা যাক। ব্যাপারটা ঘটে যাওয়ার পর কী কী ধরনের সমস্যা হতে পারে মেয়েদের! শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা। হয়তো মানসিক সমস্যার কথা তেমন বলতে পারবে না নূরজাহান, শারীরিকগুলো নিশ্চয় পারবে।
সুমি তারপর মেঝের দিকে কাত হলো। বুয়া?
জী।
তোমার কি ঘুম পাচ্ছে?
না।
কয়েকটা কথা জিজ্ঞেস করি?
জ্বী করেন।
তুমি কি রেপ বোঝ?
জ্বী না।
শব্দটা ইংরেজি। হয়তো এজন্য বুঝতে পারছ না। বাংলায় বললে বুঝবে। শ্লীলতাহানি। সহজ বাংলায় ধর্ষণ।
জ্বী বুঝছি। বদমাইসা ব্যাটাগুলি জোর জবরদস্তি মাইয়া মানুষের ইজ্জত নষ্ট করলে সেইটারে বলে ধর্ষণ।
হ্যাঁ।
হঠাৎ এই কথাটা আপনার মনে আসল ক্যান?
তেমন কোনও কারণ নেই। পেপারে প্রায়ই এসব নিয়ে পড়ি তো, এজন্য তোমাকে জিজ্ঞেস করলাম।
হ এই হগল কাম দেশ গেরামে বেশি হয়।
শহরেও হয়।
শহরে মনে হয় কম হয়।
না, আমার ধারণা শহরেই বেশি হয়। শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে বেশি হয়। কিন্তু সেসব কথা তেমন বাইরে আসে না। কেউ জানতে পারে না।
হইতে পারে। দেশ গেরামের ঘটনাগুলি মাইনষে জাইনা যায়। শহরেরগুলি মাইনষে জানে না। কেউ পোয়াতি হইয়া গেলেও অন্যে টের পায় না।
হ্যাঁ। কারণ শহরে এগুলো তেমন কোনও সমস্যা নয়।
কিন্তু দেশ গেরামের মাইয়াগুলির বড় সমস্যা হয়। এইসব কারণে আত্মহত্যাও করে কোনও কোনও মাইয়া।
এমন ঘটনা জানা আছে তোমার?
থাকব না ক্যান? আমাগ গেরামের রাবি, মানে রাবেয়াই তো আত্মহত্যা করছিল।
সে রেপড হয়েছিল?
জী?
মানে তাকে কেউ ওসব করেছিল?
হ।
বল তো ঘটনাটা।
রাবি আছিল বাড়ির কামের মাইয়া। আমাগ গেরামে সর্দার বাড়ি বহুত বড়বাড়ি। ওই বাড়িতে কাম করতো সে। রাবিগ বাড়ি আছিল পদ্মার চরে। গরিব মানুষের মাইয়া। তেরো চৌদ্দ বছর বয়সে চর থিকা কাজের আশায় আইছিল আমাগ গেরামে। সর্দার বাড়িতে ঝিয়ের কাম লইলো। চুপচাপ ধরনের ভাল মাইয়া। কাম ছাড়া কিছু বোঝে না। ওই বয়েসি মাইয়াগ লাহান শয়তানি বদমাইসি নাই।
দেখতে কেমন ছিল?
ভাল না।
কী?
হ একদমই ভাল না। পাতিলের তলার লাহান গায়ের রং। চেহারাও ভাল না। তয় শইলখান বড় সোন্দর। ওই রকম শইলের মাইয়াগ পুরুষ পোলারা বহুত পছন্দ করে। সর্দার বাড়িতে তাগড়া জুয়ান লোকজন আছিল ম্যালা। সর্দারগ ভাই বেরাদর, পোলাপান সব মিলা ম্যালা পুরুষপোলা। রাবি থাকত রান্ধন ঘরে। এক রাইতে ঘরের ঝাঁপ কেমনে কেমনে খুইলা কে একজন ঢুইকা গেল সেই ঘরে। তারপর রাবির মুখ চাইপা ধইরা, পুরুষপোলাগুলি যা করে আর কি? রাবির সর্বনাশ হইয়া গেল। কিন্তু মাইয়াডা বুঝতেই পারল না কামডা কে করল! ঘুটঘুইটা আন্ধারে রাবি চিনতেই পারল না তারে। যাওনের সময় বেড়া আবার কইয়া গেল এই কথা কেউরে কইলে জান যাইব তোর। রাবি কেউরে কয় নাই। দুই তিনমাস পর তো পেট ফুইলা উঠল রাবির। বাড়ির মহিলারা টের পাইয়া গেল। ধরল রাবিরে। ক কার লগে নষ্টামি করছস? রাবি লজ্জায় মরে। কইতে চায় না, কইতে চায় না। শেষ পর্যন্ত বলল ঘটনাটা, কিন্তু কেউ বিশ্বাস করল না। কইলো, এই ঘটনা তুই বানাইছস। সত্য না। সত্য হইলে ঘটনা ঘইটা যাওনের পর আমাগ কছ নাই ক্যান? রাবি বলল, ডরে কই নাই। কেউ বিশ্বাস করল না। রাবিরে বাড়িত থিকা বাইর কইরা দিতে চাইল। সেই রাইতেই সর্দার বাড়ির বাগানে গিয়া আমগাছের লগে গলায় দড়ি দিল রাবি।
কিন্তু এই ঘটনা তোমরা জানলে কী করে? মানে গেরামের অন্যান্য লোকে জানল কী করে?
এইসব ঘটনা কি আর চাপা থাকে নাকি? কোনও না কোনওভাবে লোকে জাইনা যায়।
কিন্তু এই কাজগুলি পুরুষ মানুষরা করে কেন?
পুরুষ মানুষরা আসলে মানুষ হিসাবে ভাল হয় না। মাইয়া মানুষের লগে জোর দেখাইতে তারা পছন্দ করে।
অথচ মেয়েরা মায়ের জাত। মেয়েদের পেট থেকেই পুরুষরা জন্মায়। এই কথা তারা মনে রাখে না।
হ্যাঁ। রাখলে এসব করা সম্ভব নয়। অথচ নারী পুরুষের সত্যিকার মিলন পৃথিবীর সবচে’ আনন্দের বিষয়। যদি সেই মিলনে প্রেম থাকে, ভালবাসা থাকে।
এইটা ঠিক বলছেন। প্রেম ভালবাসা থাকলে দুইজন দুইজনরে পাওয়ার জন্য পাগল হয়।
তার মানে ভালবাসা থাকলে ব্যাপারটা গভীর আনন্দের আর ভালবাসা না থাকলে ব্যাপারটা চরম ঘৃণার এবং বেদনার।
হ।
জোর করে ব্যাপারটা হলে সাধারণত কী কী অসুবিধা হয় মেয়েদের? তুমি জানো বুয়া?
শরীরের অসুবিধা হয়। বাচ্চা হইয়া যাইতে পারে। আর যেইটা সবচে’ বড় ক্ষতি হয়, এত আনন্দের ব্যাপারটার মধ্যে বিরাট একটা ভয় ঢুইকা যায়। অনেক মাইয়া সারাজীবনেও আর এই ব্যাপারটার স্বাদ বোঝে না।
সুমি মনে মনে বলল, ঠিক।
নূরজাহান বলল, তয় আপনেরে একটা কথা কই। বেশির ভাগ পুরুষ মানুষই কইলাম মাইয়া মানুষের লগে জোর জবরদস্তি করে। মাইয়াগ মন না বুইঝা, শরীল না বুইঝা কামডা করে। প্রেম ভালবাসা ওই টাইমে বোঝতে চায় না। বিয়া কইরা পুরুষপোলাগুলি কী করে? পয়লা রাইতেই বউডার লগে জোর করে। বউডার মনও বোঝে না, শইলও বোঝে না। আপনেরা যে ধর্ষণ ধর্ষণ বলেন, দুনিয়ার বেশির ভাগ পুরুষ মাইয়াগ আসলে ধর্ষণই করে।
সুমি কথা বলল না।
নূরজাহান বলল, তয় প্রেম ভালবাসা থাকলে, দুইজনে দুইজনরে বুইঝা যদি মিলিত হয় সেইটা দুনিয়ার সবচে’ আনন্দের।
একথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে জয়ের কথা মনে পড়ল সুমির। শরীরের খুব ভেতরে কেমন একটা কাঁপন লাগল। সুমি যেন কেমন দিশেহারা হলো। নূরজাহান ঘুমিয়ে পড়ার পরও অনেকক্ষণ জেগে রইল সে।
গভীর রাতে ঘুমের ভেতর সে রাতের পর আজ আবার সেই অনুভূতিটা হলো সুমির। প্রথমে মনে হলো পায়ের পাতায় কে যেন খুব আলতো ভঙ্গিতে সুরসুরি দিচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গেই ঘুমটা সুমির ভাঙল। প্রথমে পা দুটো সে টেনে নিল। তারপর অপেক্ষা করতে লাগল ব্যাপারটা আবার ঘটে কি না!
কয়েক মুহূর্তের মধ্যে আবার সেই অনুভূতি।
অনুভূতিটা এবার ওপর দিকে উঠছে। শরীর কাঁটা দিচ্ছে সুমির। কী রকম হিম হয়ে আসছে।
তবু দম বন্ধ করে পড়ে রইল সুমি।
কিন্তু হাঁটুর ওপর আর উঠল না অনুভূতিটা। আচমকাই থেমে গেল। তারপরও সেই অনুভূতির জন্য অপেক্ষা করতে লাগল সুমি। কারণ ঘুম ভাঙার পর পরই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাপারটা আসলে কী হচ্ছে তাকে আজ বুঝতে হবে।
দম বন্ধ করে পড়ে রইল সুমি।
কয়েক মুহূর্ত পর টের পেল তার নাভিমূলে সে রাতের সেই অনুভূতি হচ্ছে। কে যেন আলতো করে মুখ ঘষছে। ফলে শরীরের ভেতর অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে তার। একেবারেই অচেনা এক অনুভূতি। অস্থির লাগছে তার, ভীষণ অস্থির লাগছে।
তরপর আচমকাই থেমে গেল অনুভূতিটা।
কিন্তু তারপরও অপেক্ষা করতে লাগল সুমি। শেষ অবস্থাটা বোঝার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল।
কিছুক্ষণের মধ্যেই যা আশা করেছে সুমি তাই হলো। তার গলার কাছে, ঘাড়ের কাছে এবং গালে কে যেন খুবই আলতো এবং আদুরে ভঙ্গিতে মুখ ঘষতে লাগল। সঙ্গে সেই পারফিউমের গন্ধটাও পেল সুমি। ওয়ান ম্যান শো।
কয়েক মুহূর্ত মাত্র। তারপরই ধরফর করে বিছানায় উঠে বসল সুমি। বেডসুইচ টিপে লাইট জালল।
কই রুমে কেউ নেই। ওই তো মেঝেতে গভীর ঘুমে ডুবে আছে নূরজাহান।
আজ আর সেই রাতের মতো ভয় পেল না সুমি। নূরজাহানকে ডাকল।
চোখ ডলতে ডলতে উঠে বসল নূরজাহান। কী হইছে?
ঘটনাটা বলল সুমি। শুনে ঘুম ভাঙা চোখে তার দিকে খানিক তাকিয়ে রইল নূরজাহান। তারপর বলল, আপনেরে কিছু কথা জিজ্ঞাসা করি?
করো।
আপনার সঙ্গে কী কারও মনের সম্পর্ক আছে?
কেন একথা বলছ?
কারণ আছে।
কী কারণ?
থাকলে আমারে বলেন। তাইলে ঘটনাটা বুঝতে আমার সুবিধা হইব।
হ্যাঁ।
নূরজাহান উৎফুল্ল হলো। আছে?
এখন নেই।
তাইলে?
ছিল।
এখন নাই ক্যান?
ওসব শুনে তোমার লাভ কী?
লাভ আছে।
কী লাভ?
আমিও তো মাইয়া মানুষ। আমি আপনের সমস্যাটা বুঝতে পারুম।
ওসব আমি আসলে কাউকে বলতে চাই না। যা শেষ হয়ে গেছে তা বলে আর লাভ কী?
সুমির মুখের দিকে তাকিয়ে নূরজাহান বলল, আপনে কইতাছেন শেষ হইয়া গেছে কিন্তু আমার মনে হয় শেষ হয় নাই।
কেন?
আমার মনে হয় আপনের মনের মইধ্যে, অন্তরের মইধ্যে এখনও রইয়া গেছে সে।
সুমি কথা বলল না।
নূরজাহান বলল, আপনি এখনও তার কথা ভাবেন?
না একদম ভাবি না।
নূরজাহান হাসল। ভাবেন কিন্তু আপনি বুঝতে পারেন না। আপনার মনে হয় আপনি তার কথা ভাবতাছেন না। তার কথা আপনে ভুইলা গেছেন। আসলে ভোলেন নাই।
সুমি চুপ করে রইল।
নূরজাহান বলল, যখন ভাব ছিল তখন তার লগে আপনের কী কী হইছে?
কী কী হয়েছে মানে?
টান ভালবাসা থাকলে দুইজন মানুষে যা যা হয় আমি তা বলতাছি।
ধুৎ ওসব কিছুই আমাদের হয়নি।
সে আপনের হাত ধরছে? জড়াইয়া ধরছে কোনওদিন। চুমা দিছে?
না। এসবের কিছুই হয়নি তার সঙ্গে আমার। শুধু কথা হয়েছে।
খালি কথা? দেখা সাক্ষাৎ হয় নাই?
একদিন মাত্র হয়েছিল। তারপরই…।
তারপর কী হইছে?
বাদ দাও ওসব কথা। বলতে ভাল লাগছে না।
সুমি অন্যদিকে মুখ ফেরাল।
নূরজাহান তখন চিন্তিত চোখে সুমির দিকে তাকিয়ে আছে।
খানিক তাকিয়ে থেকে বলল, যখন কথা হইত তখন কী ধরনের কথা হইত?
একথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে সুমি কী রকম কেঁপে উঠল। কী যেন কী কথা মনে পড়ল তার। মুখটা উজ্জ্বল হয়ে গেল। নূরজাহানকে সে বলল, ঠিক আছে। তুমি শুয়ে পড়। আমি লাইট অফ করে দিচ্ছি। যা বোঝার আমি বুঝে গেছি।
সুমি লাইট অফ করে শুয়ে পড়ল।
কিন্তু সুমির আচরণের মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারল না নূরজাহান। সুমি শুয়ে পড়ার পরও অন্ধকার বিছানায় অনেকক্ষণ বসে রইল সে।