৩. তৃতীয় অধ্যায় (যাত্রাকালে শুভ লক্ষ্মণ – যাত্রার শুভ ও অশুভ নির্দেশ, নক্ষত্রগণনা ও তিথিগণনা – দম্পতির মধ্যে অগ্রপশ্চাৎ মৃত্যুগণনা – জন্মলগ্নের শুভাশুভ – চন্দ্রগ্রহণ ও পরমায়ুগণনা ও প্রশ্নগণনা ইত্যাদি)

তৃতীয় অধ্যায় (যাত্রাকালে শুভ লক্ষ্মণ – যাত্রার শুভ ও অশুভ নির্দেশ, নক্ষত্রগণনা ও তিথিগণনা – দম্পতির মধ্যে অগ্রপশ্চাৎ মৃত্যুগণনা – জন্মলগ্নের শুভাশুভ – চন্দ্রগ্রহণ ও পরমায়ুগণনা ও প্রশ্নগণনা ইত্যাদি)

১.
শূন্য কলসী শুক্ না না।
শুক্ না ডালে ডাকে কা।।
যদি দেখ মাকুন্দ চোপা।
এক পাও না বাড়াও বাপা।।
খনা বলে এরেও ঠেলি।
যদি না দেখি সম্মুখে তেলী।।
ব্যাখ্যা–
যখন কোন স্থানেতে যাত্রা করিবে।
ডাকে শূন্য কুম্ভ, শুষ্ক নৌকা যদি দেখিবে।।
কিংবা শুষ্ক ডালে যদি কাক ডাকে শুন।
মাকুন্দ লোক যদি দেখ ভাই কোন।।
এক পদ না বাড়াবে না যাইবে আর।
মন দিয়া শুন সবে নিষেধ খনার।।
খনা বলে এর চেয়ে তেলী ভয়ঙ্কর।
দেখিলে তাহারে নাহি হবে অগ্রসর।।

২.
ভরা হ’তে শূন্য ভাল যদি ভরতে যায়।
আগে হ’তে পিছে ভাল যদি ডাকে মায়।।
মরা হ’তে জ্যান্ত ভাল যদি মরতে যাবে।
বাঁয়ে হ’তে ডাইনে ভাল যদি ফিরে চাবে।।
বাঁধা হ’তে খোলা ভাল মাথা তুলে চাইলে।
হাসা হ’তে কাঁদা ভাল বামেতে দিলে।।
ব্যাখ্যা–
শূন্য কুম্ভ যাত্রাকালে ঘটে অমঙ্গল।
কিন্তু শুভ তাহাতে আনিতে গেলে জল।।
যাত্রাকালে পশ্চাতে ডাকিলে মন্দ বটে।
মাতায় ডাকিলে কিন্তু শুভ তার ঘটে।।
কি গঙ্গাযাত্রা করে।
যাত্রাকালে মন্দ দেখিলে তাহারে।।
কিন্তু যদি ফিরে চেয়ে যায় যেতে যেতে।
দক্ষিণে শৃগাল ভাল সেই অবস্থাতে।।
ছাড়া গরু যেতে দর্শন করিলে।
বড় অমঙ্গল তাহে বড় মন্দ ফলে।।
কিন্তু ভাল মুখ তুলে বারেক দেখিলে।
তার চেয়ে শুভ আর কিছুতে না ফলে।।
যাত্রাকালে ক্রন্দনের ধ্বনি ভীতিকর।
বামেতে কাঁদিলে কিন্তু সুখের আকর।।

৩.
মঙ্গলের ঊষা বুধে পা।
যেথা ইচ্ছা সেখা যা।।
ব্যাখ্যা–
মঙ্গলের নিশি অবসান যেই মাত্র।
বুধের প্রারম্ভে যাত্রা করহ সর্বত্র।

৪.
রবি গুরু মঙ্গলের ঊষা।
আর সমস্ত ফাসাফুসা।।
ব্যাখ্যা–
রবি, বৃহস্পতি আর কুজের ঊষার।
নির্ভয়ে যাইতে পার বাসনা যথায়।।
দেখিতে হবে শুভক্ষণ এই তিনে।
সদা শুভ জানো ইহা খনার বচনে।।

৫.
ডাকে পাখী না ছাড়ে বাসা।
উড়িয়ে বৈসে খাবে হেন আশা।।
ফিরে যায় বাসে না পায় দিশা।
উড়ে পাখী খায় না।
তখনি কেন যায় না।।
ব্যাখ্যা–
রাত্রি শেষ সময় বিহঙ্গমুকুল।
নীড়ে বসি ছাড়ে স্বর খাইতে ব্যাকুল।।
উড়িতে বাসনা নাহি উড়িবারে পারে।
চারিদিকে তখনো আবৃত অন্ধকারে।।
যদি উড়ে ফিরে পুনঃ হারাইয়া দিশা।
খনা বলে সেই সময় ঊষা।।

৬.
দ্বাদশ অঙ্গুলী কাঠি।
সূৰ্য্যমন্ডলে দিয়া দিঠি।।
রবি কুড়ি সোমে ষোল।
পঞ্চদশ মঙ্গলে ভাল।।
বুধ এগার বৃহস্পতি বার।
শুক্র চৌদ্দ শনি তের।।
হাঁচি জেঠী পড়ে যবে।
অষ্টগুণ লভ্য হবে।।
ব্যাখ্যা–
সূর্যকিরণে অনাবৃত স্থানে
পোঁত কাঠি দ্বাদশ অঙ্গুলী পরিমাণে
দেখ ক’ অঙ্গুলী পরিমিত ছায় পড়ে
তা বুঝে করহ যাত্রা এক একবারে
রবিবারে বিশাল পরিমিত হলে
ষোড়শ আঙ্গুল সোমবারে যাত্রাকালে
মঙ্গলে পনের আঙ্গুল বুধে একাদশ
বৃহস্পতিবারে বারো শুক্রে চতুর্দশ
শনিবারে ত্রয়োদশ হ’লে তবে যাও
মনের আনন্দে শুভফল গিয়া পাও
যাত্রাকালে হাঁচি জেঠী পড়ে যদি আর
অষ্টগুণ লভ্য তাহে জানিবে তোমার।।

৭.
তিথি বার স্ব-নক্ষত্র মাসের যতদিন।
একত্র করিয়া তারে সাত কর হীন।।
একে শুভ দুয়ে লাভ তিনে শত্রুক্ষয়।
চতুর্থেতে কার্যসিদ্ধি পঞ্চমে সংশয়।।
ষষ্ঠে মৃত্যু শূন্য হলে পায় বহু দুঃখ।
খনা বলে যাত্রায় কভু নহে সুখ।।
ব্যাখ্যা–
যে দিন করিতে যাত্রা সঙ্কল্প করিবে।
যে তিথি যে বার দিন সংখ্যা যোগ দিবে।।
আপন জন্মনক্ষত্রের সংখ্যা যত হয়।
করহ সমস্ত এক সংখ্যা সমুদয়।।
সাত দিয়া ভাগ করি দেখো তারপর।
এক ভাগশেষে হয় অথি শুভকর।।
দুই হ’লে লভ্য তার শত্রুক্ষয় তিনে।
চার হ’লে কার্যসিদ্ধি সংশয় পঞ্চমে।।
ছয় ভাগশেষে মৃত্যু নিকটে তো জানি।
শূন্যে বহু দুঃখ পায় দিবস রজনী।।
মনে কর ফাল্গুনমাস চৌদ্দ তারিখেতে।
বুধবার যাবে কেহ অষ্টমী তিথিতে।।
জন্মতারা অশ্বিনী তাহার আছে জানা।
শুভ কি অশুভ তা কর দেখি গণনা।।
মাস সংখ্যা একাদশ বার তিথি দিরে।
তারিখের চৌদ্দ তায় নক্ষত্র মিলায়ে।।
যোগফল আটত্রিশ পেতেছি যখন।
সাত দিয়া কেন বা না করিব হরণ।।
ভাগশেষ তিন অতএব শত্রুক্ষয়।
এ যাত্রায় মঙ্গল নাহিক সংশয়।।
হিসাব :—
মাসের সংখ্যা – ১১ + তারিখ সংখ্যা – ১৪ + বারের সংখ্যা – ৪ + তিথি সংখ্যা – ৮ + জন্মনক্ষত্র অশ্বিনী সুতরাং – ১ = ৩৮
৩৮/৭ = ৫, ভাগশেষ ৩, ফল শুভ, শত্ৰু ক্ষয়।

৮.
মাস নক্ষত্রে তিথি যুতা।
তা দিরে হয়রে পুতা।।
কৃষ্ণে দশে শুক্লে এগারো।
ইহা দিয়া নক্ষত্র সারো।।
ব্যাখ্যা–
বৈশাখের ষটক নক্ষত্রেসে বিশাখা।
জ্যৈষ্ঠে জ্যৈষ্ঠা, মাঘে মঘা, কার্তিকে কৃত্তিকা।।
ফাল্গুনে পূর্ব ফাল্গুনী, চৈত্রে চিত্রা আর।
পৌষে পুষ্য, অগ্রহায়ণে মৃগশিরা তার।।
ভাদ্রে পূর্বভাদ্রপদ, আশ্বিনে অশ্বিনী।
আষাঢ়ে পূর্বাষাঢ়া, শ্রাবণে শ্রাবণী।।
নক্ষত্র গণনা সাধ যদ্যপি মতির।
ষটক নক্ষত্র অগ্রে করিবেক স্থির।।
মাসের ষটক নক্ষত্রের সংখ্যা যত।
তিথি সংখ্যা তার সহ করহ মিলিত।।
কৃষ্ণ পক্ষ হলে দশ যোগ কর পুনঃ।
একাদশ ও শুক্লেতে যুক্ত হবে জেনো।।
সমষ্টি সাত দিয়া করিবে হরণ।
অবশিষ্ট থাকিবে যা নক্ষত্র গণন।।
মনে কর বিশাখা সংখ্যা ষোল।
সপ্তমীর সাত তাহে যোগ দিয়া ফেল।।
শুক্লপক্ষে সুতরাং আর এগার নাও।
একত্র করিয়া মোট চৌতিরিশ পাও।।
পরে সাতাইশ দিয়া ভাগ তারে করো। বাকী সাত পুনর্বসু নক্ষত্র সে ধরো।।
ত্র সে ধরো।।
হিসাব
বৈশাখের ষটক বিশাখার সংখ্যা – ১৬ + সপ্তমী তিথি – ৭ + শুক্লপক্ষ হেতু অতিরিক্ত – ১১ + = মোট ৩৪
৩৪/২৭ = ১ ভাগশেষ ১, অতএব পুনৰ্ব্বসু নক্ষত্র।

৯.
খালি ছাগলা বৃষে চাঁদা।
মিথুনে পুরিয়ে বেদা।।
সিংহে বসু কর কি ব’সে।
আর সব পুরিয়ে দ্বাদশে।।
ব্যাখ্যা–
বৎসরের প্রথমেতে যে তিথি হইবে।
মাসের যে তারিখেতে তিথিটি জানিবে।।
করহ একত্র পরে বৈশাখ হইলে।
শূন্য সংখ্যা যোগ তাতে আট তাহা হ’লে।।
জ্যৈষ্ট হ’লে এক আষাঢ়েতে সংখ্যা চার।
ভাদ্র মাসেতে আট সঙ্কেতে তাহার।।
অন্যান্য মত তাহার দশ সবে দিবে।
এইরূপ যোগ করি সমষ্টি যা হবে।।
প্রতিপদ হ’তে তিথি আছয়ে যে যত।
এক হতে তিরিশ যাবৎ গণ তত।।
বর্ষের প্রথম দিন যে পক্ষেতে রয়।
সেই পক্ষ ধরি হয় তিথির নির্ণয়।।
পহেলা বৈশাখ কৃষ্ণা সপ্তমী আছিল।
দশই ভাদ্রেতে বল কি তিথি হইল।।
প্রথম দিনের সপ্তমীর সংখ্যা সাত।
দশই ভাদ্রের সংখ্যা কর পাত।।
সাত দশ সতের একুনে যদি পাই।
ভাদ্রমাস হেতু আট যোগ তাতে চাই।।
একুশে পঁচিশ পুনঃ হইল এবার।
পক্ষের পনের বাদে দশ থাকে আর।।
উত্তর দশমী তিথি বুঝ মতিমান।
খনার বচন ইহা নাহি হয় আন ।।
প্রথম বৈশাখ কৃষ্ণপক্ষেতে আছিল।
শুক্লপক্ষীয় দশমী কাজেই হইল।।
কৃষ্ণপক্ষের পনেরো দিন দিছি বাদ।
শুক্লপক্ষ সুতরাং কি তার প্রমাদ।।
ছাগলার মেঘ বুঝি বৈশাখের মাসে।
খালি অর্থে শূন্য বুঝি জ্যৈষ্ঠ বুঝি বৃষে।।
চাঁদা এক মিথুন আষাঢ় বেদা চার।
সিংহ অর্থে ভাদ্র বসু আট বুঝ সার।।
হিসাব :—
প্রথম দিনের সপ্তমীর সংখ্যা – ৭ + দশই ভাদ্রের – ১০ + ভাদ্রমাস হেতু অতিরিক্ত – ৮ = মোট ২৫
২৫ – কৃষ্ণপক্ষীয় ১৪ দিবস = ১১, অতএব শুক্লপক্ষীয় দশমী উত্তর

১০.
অক্ষয় দ্বিগুণ চৌগুণ মাত্রা।
নামে মানে করি সমতা।।
তিন দিরে হরে আন।
তাহে মরা বাঁচা জান।।
এক শূন্যে মরে পতি।।
দুই রহিলে মরে যুবতী।।
ব্যাখ্যা–
দম্পতির মধ্যে কে মরে আগে কে পিছে।
শুনহ জানিতে সাধ যাহার হয়েছে।।
উভয়ের নামের অক্ষর সংখ্যা দুনো।।
চতুগুণ মাথা, নাহি কম হয় জেনো।।
একত্র করিয়া তিন দিয়া আন হরে।
ভাগশেষ এক হলে পতি আগে মরে।।
দুই যদি হয় স্ত্রীর মৃত্যু আগে হয়।
খনার বচন মিথ্যা হইবার নয়।।
পতি সৃষ্টিধর যেন, স্ত্রী কুন্দননন্দিনী।
কে আগে মরিবে তব বল দেখি শুনি।।
অক্ষরের সংখ্যা নয় দ্বিগুণ আঠার।
মাত্রা পাঁচ মোট চতুগুণ বিশ ধর।।
আঠার বিশেতে আটতিরিশ তো হয়।
তিন দিয়া ভাগ কর দুই বাকী রয়।।
অতএব অগ্রে হবে স্ত্রীর মরণ।
অকাট্য জানিবে মনে খনার বচন।।
হিসাব;—
সৃষ্টিধর + কুন্দনন্দিনী = নয়টি অক্ষর দ্বিগুণ করিয়া ১৮,
অ—অ—-অ—ই—ঈ—-পাঁচ মাত্রা চতুগুণ করিয়া ২০ =মোট ৩৮
৩৮/৩ = ১২, ভাগশেষ ২, অতএব পত্নী অগ্রে মরিবে

১১.
সূৰ্য কুজে রাহু মিলে।
গাছের দড়ি বন্ধন গলে।।
যদি রাখে ত্রিদশনাথ।
তবু সে খায় নীচের ভাত।।
ব্যাখ্যা–
জন্মলগ্ন সূর্য কুজে রাহু মিলে যার।
নিঃসংশয় উদ্বন্ধনে মৃত্যু হয় তার।।
দেবরাজ ইন্দ্রও যদ্যপি রক্ষা করে।
তথাপি নীচের অন্ন খেতে হবে তারে।।
দুঃখের তাহার নাহি অবধি থাকিবে।
এমন দুঃখেতে সেই কাল কাটাইবে।।

১২.
খনা কয় বরাহেরে কেন লগ্ন দেখ।
লগ্নে সপ্তম ঘরে গ্রহ কোন এক।।
আছে শনি সপ্তম ঘরে।
অবশ্য তারে খোঁড়া করে।।
থাকয় রবি ভ্ৰমায় ভূমন্ড।
চন্দ্র থাকয়করে নব খন্ড।।
মঙ্গল থাকে করে খন্ড খন্ড।
অস্ত্রাঘাতে যায় তার মুন্ড।।
থাকে বুধ বিষয় করায়।
গুরু শুক্র থাকে বহু ধন পায়।।
অগ্নে আঁকা লগ্নে বাঁকা।
লগ্নে দি ভানুতনুজা।।
লগ্নের সপ্তম অষ্টমে থাকে পাপ।
মরে জননী পীড়ে বাপ।।
ব্যাখ্যা–
লগ্নের সপ্তম ঘরে থাকে যদি শনি।
অবশ্য খোঁড়া সে হয় স্থির ইহা জানি।।
রবি যদি সপ্তমেতে পর্যটক হবে।
উদাসীন প্রায় সেই পৃথিবী ঘুরিবে।।
থাকে শশী রাজদন্ড করিবে ধারণ।
মঙ্গল সপ্তমে অস্ত্রে যাইবে জীবন।।
বুধ যার সম্পত্তি বিস্তর তার হবে।
গুরু শুক্র সপ্তমেতে বহু ধন দিবে।।
কভু ভাল কভু মন্দ লগ্নে থাকে শনি।
অবস্থা বিশেষে তার ব্যবস্থা তো জানি।।
সপ্তমে অষ্টমে কেতু কিংবা থাকে রাহু।
মরে মাতা পিতা তার পায় দুঃখ বহু।।

১৩.
যে যে মাসে যে যে রাশি।
তার সপ্তমে থাকে শশী।।
সেই দিনে হয় পৌর্ণমাসী।
অবশ্য রাহু গ্রাসে শশী।।
দুই তিন পাঁচ ছয়।
একাদশে দেখতে হয়।।
ব্যাখ্যা–
মেষ বৈশাখের রাশি বৃষ সে জ্যৈষ্ঠের।
আষাঢ়ের মিথুন রাশি কর্কট শ্রাবণের।।
ভাদ্রে সিংহ রাশি জানা কন্যা আশ্বিনে।
কার্তিকের তুলা রাশি বৃশ্চিক অঘ্রাণে।।
মাঘ মাসে মকর রাশির অধিকার।
ফাল্গুনে কুম্ভ চৈত্রে মীন জান সার।।
যে রাশির মাস চন্দ্র সে রাশি হইবে।
থাকে যদি দেখ ইহা সপ্তম ঘরেতে।।
সেই পূর্ণিমার হবে চন্দ্রর গ্রহণ।
নিশ্চয় কে হেন নর করয়ে বারণ।।
দ্বিতীয় চন্দ্র হইবেক যার।
পঞ্চম কি ষষ্ঠ কিংবা একাদশ আর।।
সে সেই বার দেখিবেক সে গ্রহণ।
অন্যে কদাচন নাহি করিবে দর্শন।।

১৪.
কিসের তিথি কিসের বার।
জন্ম নক্ষত্র করি সার।।
কি করো শ্বশুর মতিহীন।
পলকে জীবন পাবে যেদিন।।
ব্যাখ্যা–
যে নক্ষত্রে ভূমিষ্ট হইবে সে হাস্যানন।
তদবধি বাকী তার যত পরিমাণ।।
প্রতি পলে বারো দিন ধরিয়া তাহার।
পায় আয়ু নহে মিথ্যা বচন খনার।।
মনে কর দশ দন্ড মাত্র আর আছে।
বিশাখা নক্ষত্রে এক জন্মেছে।।
ষাট পলে এক দন্ড পুরো দশ ষাটে।
গুণফল ছয়শত বটে কিনা ঘটে।।
প্রতি পল বারো দিয়া পুরো।
সাত হাজার দু’শত গুনফল ধরো।।
তিনশত ষাটি দিন বৎসরেতে।
বিশ বৎসর শিশু জীয়িবে ধরাতে।।
হিসাব;—-
৬০ পলে এক দন্ড, অতএব ১০ X ৬০ = ৬০০০ পল
প্রতি পলে বারো দিন, অতএব ৬০০ X ১২ = ৭২০০ দিন।
৩৬০ দিনে বৎসর, অতএব ৭২০০ / ৩৬০ = ২০
২০ বৎসর বালকের পরমায়ু হইবে

১৫.
সাত পাঁচ তিন কুশল বাত।
নয়ে একে হাতে হাত।।
কি করবে ছটে চটে।
কাৰ্যনাশ দুয়ে আটে।।
ব্যাখ্যা–
প্রশ্নকর্তা শ্রোতা দুইজনের নামাক্ষর।
তিথি দশ দিন যার সংখ্যা একত্রিত কর।।
নক্ষত্রের সংখ্যা শূন্য যোগ তার দিয়া।
কত বাকী দেখ শেষে বিভাগ করিয়া।।
সাত পাঁচ তিন যদি থাকে ভাগশেষ।
সংবাদ মঙ্গল তারা জানিবে বিশেষ।।
এক কিংবা নয় যদি বাকী থাকিবেক।
অচিরে প্রত্যক্ষ ফল প্রাপ্ত হইবেক।।
ছয় চারি অবশেষে বুঝিবে বিফল।
দুই আটে কার্য নষ্ট হইবে সকল।।
অরিন্দম জিজ্ঞাসিল শ্রীমধুসূদনে।
কার্য মম শুভ কি অশুভ দেহ গণে।।
দোসরা বৈশাখ, তিথি প্রতিপদ জেনো।
অশ্বিনী নক্ষত্র আর সোমবার গণণা।।
নমের অক্ষর সংখ্যা দশ দু’জনার।
দাও মাস তিথি তারা আর বার।।
মাস এক তিথি এক তারা এক পাই।
বার দুই একুনেতে পাঁচ সংখ্যা পাই।।
নামাক্ষর সংখ্যা দশে যোগ ইহা করো।
যোগফল তাহলেই হইল পনেরো।।
দশ দিয়া পনেরোয় করিলে হরণ।
ভাগশেষ পাঁচ হলো করহ দর্শন।।
অতএব সংবাদ মঙ্গল — কার্য শুভ।
ইহাতে নিশ্চয় কিছু হইবেক লভ্য।।
হিসাব :—
অরবিন্দ ও শ্রীমধুসূদনের অক্ষর – ১০ + মাস বৈশাখ, অতএব – ১ + তিথি প্রতিপদ, অতএব -১ + নক্ষত্র অশ্বিনী, অতএব -১ + সোমবার, অতএব – ২ = মোট ১৫ জন
১৫/১০ = ১ ভাগশেষ ৫, অতএব শুভ

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *