১৩. মুখোমুখি
সলীলকে ধরে নাওয়াজ খান আর ওসমান পাশের ঘরে নিয়ে গেল। সলীলকে কি করছে আমি জানি না কিন্তু শব্দ শুনে মনে হল দুই একটা ঘুষি কিল মেরে বসেছে। নাওয়াজ খান হঠাৎ বলল, ওসমান, থাম দেখি।
বদমাইশটাকে জানে মেরে ফেলব। আমার সাথে ফাজলেমি।
ঠিক আছে, যখন সময় হবে মেরো, এখন আমাকে একটু কথা বলতে দাও। এই ছেলে, তুমি এখানে এলে কেন?
সলীল কোন কথা বলল না।
তোমাকে আমি আগে দেখেছি। কয়দিন আগে এসেছিলে আমার সাথে দেখা করতে। সাথে আরেকজন ছিল তোমার। ওসমান বলেছে একটু আগে তুমি দরজায় ঢিল ছুঁড়েছ। এখন তুমি ভিতরে ঢুকেছ। ব্যাপারটা কি?
সলীল তখনো কোন কথা বলল না।
কথা বল ছেলে। না হলে তোমার খুব বড় বিপদ হতে পারে।
সলীল মৃদুস্বরে জিজ্ঞেস করল, কি বিপদ?
আমার মনে হয় না তুমি সেটা শুনতে চাও। আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও, তুমি এখানে কেন এসেছ?
সলীল কোন কথা বলল না।
তুমি কি একা এসেছ না সাথে আর কেউ ছিল?
আমি একা।
তোমার সেই বন্ধু কোথায়?
বাইরে।
বাইরে কেন?
আমার জন্যে অপেক্ষা করছে। আমি যদি ভিতরে আটকা পড়ি, সে খবর দেবে।
কোথায় খবর দেবে?
আমি বলতে চাই না।
কেন বলতে চাও না?
সলীল কোন কথা বলল না।
নাওয়াজ খান ধমক দিয়ে বলল, সত্যি করে বল তোমার সেই বন্ধু কোথায়?
বাইরে। আমরা এত বোকা না যে দুইজন একসাথে দুকব। একজন ভিতরে, আরেকজন বাইরে।
হুম! নাওয়াজ খান অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, ভিতরে ঢুকেছ কেমন করে?
বুদ্ধি খাঁটিয়ে। আমি যখন আপনার ড্রাইভারকে বাগানোর চেষ্টা করছিলাম তখন সে ঢুকে গেছে। তারপর দরজা খুলে দিয়েছে, তখন আমি ঢুকেছি। সে এখন বাইরে অপেক্ষা করছে।
আমার কি মনে হয় জান?
কি? সে ভিতরে কোথাও আছে। খুঁজলেই পাওয়া যাবে।
খুঁজেন তাহলে। সলীল খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, আমরা এত বোকা না।
তোমরা বোকা না?
না।
তার মানে তোমরা অনেক কিছু জান?
সলীল চুপ করে রইল।
তোমরা জয়নালের কথা জান?
জানি।
কেমন করে জান? তার সাথে তো তোমাদের বন্ধুত্ব হওয়ার কথা না।
জয়নাল আমার বন্ধুর পাশের বাসায় কাজ করে। আমার বন্ধু তার চিঠিপত্র লিখে দেয়। সেই জন্যে তার সাথে পরিচয়।
তুমি জয়নালকে চেনো না?
না।
নাওয়াজ খান মনে হল একটা লম্বা নিঃশ্বাস ফেললেন। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, তুমি একটু আগে বলেছ যে তুমি বোকা না। আসলে সেটা সত্যি না। আসলে তুমি বোকা। অসম্ভব বোকা। মানুষ বোকা না হলে একজন মানুষ যাকে চিনে না তার জন্যে নিজের জীবন শেষ করে না। তুমি শেষ করেছ। জয়নালকে কেন এনেছি তুমি মনে হয় জান। সেটা যারা জানে তাদের নিয়ে আমি কোন ঝুঁকি নেই না।
আমার বন্ধু এতক্ষণে পুলিশের কাছে চলে গেছে। এক্ষুনি পুলিশ আসবে।
আমার মনে হয় তুমি মিথ্যা কথা বলছ। তোমাদের মাঝে কোন বড় মানুষ নেই। তোমরা ছোট বাচ্চারা অনেক বড় ব্যাপারে নাক গলিয়েছ। সেটার ফল তোমরা পাবে–
আমার বন্ধু–
তোমার কোন বন্ধু নেই। যদি থেকেও থাকে, তার কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। বিশেষ করে যদি আমার বিরুদ্ধে বলে। তাও এরকম উদ্ভট একটা গল্প। কিন্তু আমি তবু কোন ঝুঁকি নেব না। সত্যিই যদি তোমার বন্ধু পুলিশের কাছে যেয়ে থাকে, সত্যিই যদি পুলিশ তার কথা বিশ্বাস করে এখানে আসে, তার জন্যে একটু সময় দরকার। কম করে হলেও এক ঘণ্টা। আমি আধ ঘণ্টার মাঝে সব কাজ শেষ করে ফেলব।
কি কাজ?
সেটা জানতে চেয়ো না ছেলে। তোমার শুনতে ভাল লাগবে না। মেরে ফেলার কথা শুনতে কারো ভাল লাগে না।
সলীল কি একটা বলতে যাচ্ছিল, নাওয়াজ খান তাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, ওসমান।
জী।
এই পুরো ঝামেলাটা হল তোমার বোকামির জন্যে। যদি এই ছেলেটা ভিতরে না ঢুকতে পারত এই ঝামেলাটা হত না।
আমি বুঝি নাই স্যার। আমি মনে করেছি—
থাক। আমাদের হাতে সময় নেই। খুব তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে হবে। দুইটা কুলার রেডি কর।
দুইটা?
হ্যাঁ। একটাতে জয়নালের কিডনি, আরেকটা বোনাস, এই মাথামোটা ছেলের কিডনি। আর দুইটা বড় প্লাস্টিকের ব্যাগ বের কর। এদের ডেডবডি মনে হয় সাথে নিয়ে যেতে হবে। সত্যিই যদি পুলিশে খবর দিয়ে থাকে, কোন প্রমাণ রাখা ঠিক হবে না। আমি অপারেশন থিয়েটার রেডি করছি, তুমি মাইক্রোবাসটাও রেডি কর। আধ ঘন্টার মাঝে সব কাজ শেষ করে আমরা রওনা দেব।
ঠিক আছে স্যার। আর এই ছেলেটা?
এখন বেঁধে রাখ। মুখে সার্জিক্যাল টেপ লাগিয়ে দাও যেন শব্দ করতে না পারে।
সলীল আবার কিছু একটা বলতে চেষ্টা করল কিন্তু মনে হয় বলতে পারল না। খানিকক্ষণ ধস্তাধস্তির মত শব্দ হল, তারপর এক সময় আমাদের এই ঘরটাতে সলীলকে ফেলে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে গেল।
নাওয়াজ খান আর ওসমানের পায়ের শব্দ মিলিয়ে যেতেই আমি বিছানার নিচ থেকে বের হয়ে সলীলের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম, সলীল!
সলীল কোন শব্দ করতে পারল না, মুখ দিয়ে কেমন জানি গো গো করে শব্দ করল। আমি তার মুখের টেপটা খুলে দিতেই সে ফিসফিস করে বলল, মুনীর, তুই এখানে কি করিস? পালিয়ে গেলি না কেন?
একা একা কোথায় যাব! কি করব? কেউ কি আমার কথা বিশ্বাস করবে?
তাহলে?
দাঁড়া, আগে তোদের তাড়াতাড়ি খুলে দিই। মাথা ঠাণ্ডা রাখ। আমার তিনজন, তারা দুইজন, আর কিছু যদি না হয় গায়ের জোরে বের হয়ে যাব।
খুব শক্ত করে বেঁধেছে। অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে হাতের বাধন খুলতে অনেকক্ষণ সময় লাগল। বাইরে নিচে নাওয়াজ খান আর ওসমানের নানারকম কাজকর্মের শব্দ পাচ্ছিলাম। শুধু ভয় হচ্ছিল, ওদেরকে খুলে দেয়ার আগেই না চলে আসে। কিন্তু এল না। আমি প্রথমে সলীলের এবং পরে সলীল আর আমি মিলে জয়নালের বাধন খুলে দিলাম।
জয়নাল তার কজ্জিতে হাত বুলাতে বুলাতে বলল, শুওরের বাচ্চাদের জান যদি আমি শেষ না করি!
আমি বললাম, আস্তে জয়নাল, আস্তে–
জয়নাল হিসহিস করে বলল, গলা ছিঁড়ে ফেলব আমি। কলজে টেনে বের করে ফেলব।
আমি আবার বললাম, আস্তে জয়নাল! আস্তে।
জিব টেনে ছিঁড়ে ফেলব। জন্মের মত লুলা করে দেব।
মাথা গরম করিস না জয়নাল, খুব ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করতে হবে। যখন ওরা ঢুকবে তখন তোরা মেঝেতে শুয়ে থাকিস মুখে টেপ লাগিয়ে, যেন বুঝতে না পারে তোদের হাত খোলা। তারপর যেই কাছে আসবে–
লাফিয়ে পড়ব! জয়নাল দাঁত কিড়মিড় করে বলল, গলা ছিঁড়ে ফেলব।
সলীল একটু ইতঃস্তত করে বলল, খালি হাতে? একটা লাঠিসোটা পেলে হত।
আমরা ঘরে খোজাখুজি করতে থাকি, লাঠি জাতীয় কিছু পাওয়া গেল না। পাশে একটা ছোট বাথরুম আছে, সেখানে কয়েকটা বোতল পাওয়া গেল। দড়ি দিয়ে সেগুলো। বেঁধে নেয়া হল। ঘুরিয়ে যদি ঠিকমত মারা যায় একজনকে ঘায়েল করতে কোন। অসুবিধা হওয়ার কথা না।
সলীল আবার বলল, একটা সিগন্যাল দিতে পারলে হত, ঠিক তখন লাফিয়ে পড়তাম!
আমি বললাম, এক কাজ করলে কি হয়?
কি কাজ?
বাথরুমে একটা লাইট সুইচ আছে।
হ্যাঁ। সলীল ঠিক বুঝতে পারল না, জিজ্ঞেস করল, লাইট সুইচ দিয়ে কি হবে?
যদি লাইট বাল্বটা খুলতে পারি তাহলে সেটার পিছনে একটা পয়সা দিয়ে বাল্বটা আবার লাগিয়ে দিতে পারি। তারপর যেই সুইচ অন করা হবে, ফিউজ কেটে পুরো বাসা অন্ধকার হয়ে যাবে। তারা একেবারে কিছু বুঝতে পারবে না –তোরা তখন অন্ধকারে লাফিয়ে উঠে —
সলীল হাতে কিল দিয়ে বলল, ভেরী গুড! বাথরুমের লাইট বাল্বটা খোলা খুব সহজ হল না। প্রথমে এক মুহূর্তের জন্যে জ্বালিয়ে দেখে নিলাম সেটা কোথায়, তারপর অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে সেটা খুলে ফেললাম। তার জন্যে খুব সাবধানে বেসিনের উপর দাঁড়াতে হল। শুধু মনে হচ্ছিল
সবকিছু ভেঙে বুঝি হুড়মুড় করে নিচে পড়ব। বান্দ্রের পিছনে পয়সা দেয়ার পর বাটা আবার লাগাতে খুব কষ্ট হল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা লাগিয়ে ফেললাম। আমাদের। প্রস্তুতি এখন শেষ।
সলীল আর জয়নাল তাদের মুখে সার্জিক্যাল টেপটা লাগয়ে নিয়ে হাত পিছনে করে শুয়ে রইল। দেখে মনে হয় তাদের হাত পিছমোড়া করে বাধা। তাদের হাতে দড়ির এক মাথা, অন্য মাথায় একটা বোতল। ঘুরিয়ে ঠিকমত মারলে সেটা রীতিমত একটা ভয়ংকর অস্ত্র। আমি বাথরুমে লাইটের সুইচটায় হাত দিয়ে বসে রইলাম। সুইচটা অন করতেই লাইট বাল্বের পিছনে রাখা পয়সাটা শর্ট সার্কিট করে মেইন সুইচে ফিউজ কেটে দেবে। ঘুটঘুঁটে অন্ধকার হয়ে যাবে তখন ঘরটা।
আমরা তিনজন চুপচাপ অপেক্ষা করছি। বুকের ভিতরে এক ধরনের ধুকপুকুনি। সব কিছু ভালয় ভালয় কাজ করবে তো? সত্যি আমরা পালাতে পারব তো? এরা ভয়ংকর মানুষ, যদি পালাতে না পারি আমাদের জানে মেরে ফেলবে। যেভাইে হোক। আমাদের পালাতে হবে। যেভাবেই হোক।
ঠিক এই সময় আমার সিঁড়িতে পায়ের শব্দ শুনতে পেলাম। নাওয়াজ খান আর ওসমান কথা বলতে বলতে এসে ছিটকিনি খুলে ঘরে এসে ঢুকে বাতি জ্বালালো। আমি দরজার ফাঁক দিয়ে দেখছি, দুইজন মাঝামাঝি এসে দাঁড়িয়েছে। ওসমান জিজ্ঞেস করল, প্রথমে কোনটাকে?
নাওয়াজ খান কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখন আমি বাথরুমের সুইচটা অন করে দিলাম, কোথায় জানি ভট করে একটা শব্দ হল আর সাথে সাথে সমস্ত ঘর অন্ধকার হয়ে গেল। সলীল আর জয়নাল বিদ্যুগতিতে লাফিয়ে উঠে, দড়িতে বাধা বোতলটা ঘুরিয়ে প্রচণ্ড জোরে আঘাত করে দুজনকে, ঠাস করে একটা শব্দ হল আর আমি প্রথমে নাওয়াজ খান তারপর ওসমানের চিৎকার শুনতে পেলাম। ধড়াস করে। কেউ একজন পড়ে গেল, আমি সাথে সাথে প্রচণ্ড লাথি আর ঘুষির শব্দ শুনতে পেলাম। আমি বাথরুম থেকে বের হয়ে এসে হাত লাগালাম, অন্ধকারে ভাল দেখা যায় না, দুজন মনে হয় উবু হয়ে পড়ে আছে, প্রচণ্ড জোরে লাথি হাকালাম, কঁক করে শব্দ করে উঠল একজন। সলীল বলল, এখন বাইরে চল, কাজ শেষ–
জয়নাল লাথি মারতে মারতে বলল, আমি জানে মেরে ফেলব শুওরের বাচ্চাদের–
মাথা গরম কর না জয়নাল, সলীল জয়নালকে ধাক্কা দিয়ে বের করতে করতে বলল, আগে নিজের জান বাচাও।
আমরা ছুটে বাইরে এসে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে ছিটকিনিটা টেনে দিলাম। হঠাৎ মনে হল, আর পায়ে জোর নেই, হাটু ভেঙে বসে পড়লাম তিনজন! বড় বড় নিঃশ্বাস নিতে থাকি, মনে হয় বুক একেবারে ফাঁকা হয়ে আছে বাতাসের জন্যে। কি ভয়ংকর বিপদের হাত থেকেই না বেঁচে এসেছি!
ঘরের ভিতর থেকে নাওয়াজ খানের গলা শুনতে পেলাম। কেমন যেন ভাঙা গলায় বললেন, ওসমান! কি হল এটা ওসমান? কি হল?
ওসমান কোন কথা বলল না, কেমন যেন গোঙানোর মত শব্দ করল। ভিতর থেকে তারা দরজায় ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে, শক্ত ভারি দরজা, কিছু করতে পারবে মনে হয় না।
আমি ফিসফিস করে বললাম, চল পালাই।
জয়নাল বলল, যদি পালিয়ে যায়?
নাওয়াজ খান ভিতর থেকে বলল, এই যে ছেলেরা তোমরা দরজাটা খুলে দাও, প্লীজ! যদি খুলে দাও তাহলে–
তাহলে কি?
তোমাদের এত টাকা দেব যে তোমরা—
জয়নাল হিসহিস করে বলল, তোর টাকায় আমি পিশাব করে দিই।
আমি জয়নাল আর সলীলকে টেনে কোন মতে নিচে নামিয়ে আনি। পিছনে নাওয়াজ খান তখনো আমাদের ডাকাডাকি করে যাচ্ছে।
.
বাইরে তখনো বৃষ্টি পড়ছে টিপটিপ করে। আমরা চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। পুলিশকে বলতে হবে কিন্তু ঠিক কিভাবে বলব বুঝতে পারছি না। পুলিশ কি আমাদের কথা শুনবে? শুনলেও কি বিশ্বাস করবে?
ঠিক তখন দেখি ছাতা মাথায় লম্বা লম্বা পা ফেলে একজন আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। মানুষটি কাছে এসে দাঁড়িয়ে গেল। হাতে একটা টর্চলাইট, সেটা। আমাদের পায়ের কাছে জ্বালিয়ে বলল, কে? মুনীর? সলীল?
আমরা আনন্দে চিৎকার করে উঠলাম, জারুল স্যার! জারুল স্যার!
ভাল আছ তো তোমরা?
জি স্যার! ভাল আছি! চিঠি পেয়েছেন আমাদের?
হ্যাঁ, চিঠি পেয়েই তো আসছি! চিঠিতে লিখেছ—
ধরে ফেলেছি স্যার!
ধরে ফেলছে? জারুল চৌধুরী অবাক হয়ে বললেন, কি ধরে ফেলেছ?
নাওয়াজ খান আর ওসমানকে। জয়নালকে বেঁধে রেখেছিল, ছুটিয়ে এনেছি! সলীলকেও ধরে ফেলেছিল–
কি বলছ তোমরা?
খোদার কসম! আমি হড়বড় করে কথা বলতে থাকি, সলীল আমাকে থামিয়ে কথা বলতে চেষ্টা করে, জয়নাল তার মাঝে হুংকার দিয়ে বলে, জবাই করে ফেলব। বদমাইশের বাচ্চাদের। জবাই করে ফেলব।
জারুল চৌধুরী কি হয়েছে বোঝার চেষ্টা করতে থাকেন। আমাদের চেঁচামেচিতে দেখতে দেখতে আমাদের ঘিরে একটা ভিড় জমে উঠে। অন্য সময় হলে কেউ আমাদের কথা শুনত কিনা জানি না, কিন্তু এখন সবাই শুনছে। জারুল চৌধুরী খুব মন দিয়ে শুনছেন, সে জন্যেই হয়তো।
বুকটা হঠাৎ হালকা হয়ে যায়, আর আমাদের কোন ভয় নেই। জানে বেঁচে গেছি আমরা।
আহ! বেঁচে থাকা কি আনন্দের ব্যাপার!