হিন্দু বিবাহ-বিধান
গত শতাব্দীতে হিন্দু মেয়েরা পেয়েছে বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার। আর পুরুষ বঞ্চিত হয়েছে তার একাধিক বিবাহ করবার অধিকার। এছাড়া বিবাহের ন্যূনতম বয়স এখন বর্ধিত করা হয়েছে। এ সবই বিবাহের ওপর গণতান্ত্ৰিক চিন্তাধারার ফসল। এ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনার পূর্বে দেখা যাক বিবাহ সম্বন্ধে আমাদের আগে কি প্রথা ও নিয়মকানুন ছিল।
আর্যরা এদেশে আসবার আগে যে সব বর্গের বিবাহপ্রথা প্রচলিত ছিল তা হল যথাক্রমে রাক্ষস, গন্ধব ও অসুর বিবাহ। কেননা এই সব বর্গের বিবাহের কোন উল্লেখ ঋগ্বেদে নেই, অথচ এগুলি বর্তমানের আদিবাসী সমাজে প্রচলিত আছে। বৈদিক যুগে মাত্ৰ এক রকম বর্গের বিবাহই (ব্রাহ্ম বিবাহ) প্রচলিত ছিল, এবং তারপ্রাপ্তবয়স্ক যুবক যুবতীদের মধ্যেই হত। এছাড়া তাদের অধিকাংশই নিজের পতি নিজেই নিবাচন করতে পারত। এটা আমরা জানতে পারি ঋগ্বেদের সপ্তম মণ্ডলে বর্ণিতে ‘সমন’ উৎসব থেকে। এই উৎসবে যুবতীরা মনোমত পতি লাভের আশায় সুসজ্জিত হয়ে যোগদান করত। পরে দিদিষুর (মধ্যগ বা ঘটকের) আবির্ভাব ঘটে। তখন থেকেই ‘সমন’ উৎসবে পতিনির্বাচনের প্রচলন কমে যায়।
বৈদিক যুগে বিবাহ কোন বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে হত না, হত তার সমস্ত ভ্ৰাতাদের সঙ্গে। অন্তত আপস্তম্ভধমসূত্রে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে, কন্যাকে দান করা হয় কোন এক বিশেষ ভ্রাতাকে নয়, বংশের সমস্ত ভ্ৰাতাকে। এজন্য পরবর্তীকালে মনু বিধান দিয়েছিলেন যে, কলিযুগে কন্যার বিবাহ যেন সমগ্র পরিবারের সঙ্গে যৌথভাবে দেওয়া না হয়। ঋগ্বেদ এবং অথবা বেদে কয়েকটি স্তোত্ৰ আছে যা থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, যদিও বধুকে জ্যেষ্ঠভ্ৰাতাই বিবাহ করত, তা হলেও তার কনিষ্ঠ সহোদরদের তার ওপর যৌনমিলন বা রমণের অধিকার থাকত। এই দুই গ্রন্থেই স্বামীর কনিষ্ঠ ভ্রাতাকে ‘দেবৃ’ বা দেবর বলা হয়েছে। কেননা, ‘দেবর’ মানে ‘দ্বিবর’ বা দ্বিতীয় বর। ঋগ্বেদের এক সাহানে বর্ণিত হয়েছে যে বিধবা বৌদি দেবৃকে তার দাম্পপত্য শয্যায় নিয়ে যাচ্ছে।
ঋগ্বেদে যম-যমীর কথোপকথনে দেখা যায় যে যমের যমজ-ভগনী যমী। যমের সঙ্গে যৌনমিলন প্ৰার্থনা করছে। বৌদ্ধ জাতক গ্রন্থেও সহোদরসহোদরা বিবাহের বহু দৃষ্টান্ত আছে। পরবর্তী কালে যখন গোত্র-প্রবর-সপিণ্ড বিধানের উদ্ভব হয়, তখন এটা বন্ধ হয়ে যায়। তবে দক্ষিণ ভারতে পিসততো বোন ও মামাতো বোনের সঙ্গে বিবাহ এখনও বাঞ্ছনীয়। বর্তমানে উত্তর ভারতে নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে বিবাহ নিষিদ্ধ, যদিও আদিবাসী সমাজে এটার প্রচলন আছে। যেমন উত্তর-পূর্ব সীমান্তের আদিবাসী সমাজভুক্ত লাখের, বাগনী ও ডাফলা জাতির লোকরা বিধবা বিমাতাকে বিবাহ করে। আসামের গারো জাতির লোকেরা বিধবা শাশুড়িকে বিবাহ করে। ওড়িশার আদিবাসী সমাজে শবর জাতির লোকেরা বিধবা খুড়িকে বিবাহ করে।
মহাভারতীয় যুগে আমরা চার রকমের বিবাহের উল্লেখ পাই, যথা ব্রাহ্ম, গান্ধব, অসুর ও রাক্ষস। কিন্তু সূত্ৰগ্রন্থসমূহে আট রকম বিবাহের উল্লেখ আছে। উপরোক্ত চার রকম ছাড়া, আর্য, প্রাজাপত্য, দৈব ও পিশাচ। এই সকল বিবাহের বর্ণনা আমার ‘ভারতের বিবাহের ইতিহাস’ বইয়ে দেওয়া আছে। তবে এখানে মাত্র একথাই বলতে চাই যে মহাভারতীয় ও রামায়ণী যুগের স্বয়ম্বরা বিবাহ রাক্ষস বিবাহেরই একটা সুষ্ঠ সংস্করণ।
বেদোত্তর যুগে নিষ্ঠাবান হিন্দুসমাজে বিবাহ নিয়ন্ত্রিত হয়েছিল স্মৃতিশাস্ত্রসমূহ দ্বারা। তাদের মধ্যে প্রাধান্য লাভ করে মনুর মানবধর্মশাস্ত্র। মনুর বিধানসমূহের ভিত্তিতে যে আদর্শ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল, সে আদর্শ গঠিত হয়েছিল নিম্নলিখিত বিধানসমহ নিয়ে।
(১) বিবাহ নিম্পন্ন হবে মন্ত্রপাঠ, যজ্ঞ সম্পাদন ও সপ্তপদীগমন দ্বারা।
(২) জাতি নির্বিশেষে সকলকেই পুত্র উৎপাদনের জন্য বিবাহ অবশ্যই করতে হবে।
(৩) কন্যার বিবাহ দিতে হবে সে ঋতুমতী হবার পূর্বে।
(৪) বিবাহ সংঘটিত হবে জাতির মধ্যে।
(৫) বিবাহ সগোত্রে, সপ্রবরে ও সপিণ্ডদের মধ্যে হতে পারবে না।
(৬) বিবাহিতা নারীকে সতীত্বের সমস্ত বিধান অনসরণ করে পতিব্ৰতা হয়ে থাকতে হবে।
(৭) স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবাকে সধবার ভূষণ পরিহার করে ব্রহ্মচর্য পালন করতে হবে (পরে সহমরণ অনুসৃত হত)।
(৮) পরাস্ত্রীগমন ব্যাভিচার বলে গণ্য হবে এবং তার জন্য ব্যভিচারীকে গুরুদন্ড পেতে হবে।
।।দুই।।
সাম্প্রতিককালে, গণতন্ত্রের প্রভাবে হিন্দুরর বিবাহ জীবনে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে। এর সূচনা করেছিলেন রাজা রামমোহন রায়। সনাতনী হিন্দু সমাজের ঘোর বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি সক্ষম হয়েছিলেন সতীদাহ প্রথা নিবারণ করতে। তিনি বড়লাট লর্ড উইলিয়াম বেনটিঙ্ককে সম্মত করেন ১৮২৯ সালে ২৭ নং আইন বিধিবদ্ধ করতে। এই আইন দ্বারা সতীদাহ চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আন্দোলনের ফলে ১৮৫৬ সালে ১৫ নং আইন বিধিবদ্ধ হয়। এই আইন দ্বারা বিধবার বিবাহ বৈধ করা হয়। তারপর ১৮৭২ সালের ৩ নং আইন দ্বারা অসবৰ্ণ বিবাহের বাধাও দূর করা হয়। তবে এই আইন অনযায়ী বিবাহ করতে হলে বিবাহ ইচ্ছুক উভয় পক্ষকেই শপথ করতে হত যে তারা হিন্দু নন। কিন্তু ১৯২৩ সালের ৩০ নং আইন দ্বারা বিধান দেওয়া হয় যে অহিন্দু বলে ঘোষণা না করেও অসবৰ্ণ বিবাহ করা যাবে। ১৮৯১ সালের ‘এজ অফ কনসেন্ট অ্যাক্ট’ দ্বারা বিবাহে সঙ্গমের ন্যুনতম বয়স নিদর্ধারিত হয়। এরপর বর্তমান শতাব্দীর বিশের দশকে রায় বাহাদুর হরবিলাস সরদা বদ্ধপরিকর হন হিন্দু সমাজে বাল্যবিবাহ রোধ করবার জন্য। ১৯২৯ সালের ১৯ নং আইনে নিদেশ দেওয়া হয় যে হিন্দু বিবাহে ছেলের উপযুক্ত বয়স ন্যূনপক্ষে ১৮ ও মেয়ের বয়স ১৫ হওয়া চাই। (বর্তমানে ইহা বৃদ্ধি করে ২১ ও ১৮ করা হয়েছে)।
হিন্দ বিবাহ সংস্কারের জন্য দুটি বড় রকমের আইন বিধিবদ্ধ হয় ১৯৪৬ সালে। ওই বৎসর ১৯ নং আইন দ্বারা, স্ত্রীকে অধিকার দেওয়া হয় অবস্থাবিশেষে স্বামী ত্যাগের জন্য। স্বামী যদি কুৎসিত ব্যাধিতে ভোগেন, বা স্বামী স্ত্রীর প্রতি এমন নিষ্ঠুর ব্যবহার করেন যাতে স্ত্রীর নিরাপত্তার অভাব ঘটে, বা স্ত্রীকে পরিত্যাগ করেন অথবা আবার বিবাহ করেন বা নিজ বাসগহে রক্ষিতা এনে রাখেন, বা ব্যভিচারে লিপ্ত হন কিংবা ধর্মান্তর গ্রহণ করেন, তাহলে ওই আইনের বলে স্ত্রী স্বচ্ছন্দে স্বামী ত্যাগ করে স্বতন্ত্র বসবাস করতে পারে। আর ২৮ নং আইনে নির্দেশ দেওয়া হয় যে সগোত্রে ও সমপ্রবারে বিবাহ বৈধ। স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৪৯ সালের ২১ নং আইন দ্বারা বিবাহ ক্ষেত্রে জাতিগত বর্ণগত, শ্রেণীগত ও সম্প্রদায়গত যত রকম বাধা-বৈষম্য ছিল, তা দূরীভূত করা হয়।
বিবাহ সম্পর্কে শেষ আইন বিধিবদ্ধ হয়েছে ১৯৫৫ সালে। এটাই হচ্ছে বিবাহ সম্বন্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপণ আইন। এই আইনটিকে হিন্দু বিবাহ বিধি বা ১৯৫৫ সালের ২৫ নং আইন বলা হয়। বৈধ বিবাহের যে সকল শর্ত এতে নির্দিষ্ট হয়েছে সেগুলি হচ্ছে—
(১) বিবাহকালে স্বামীর স্ত্রী বা স্ত্রীর অন্য স্বামী জীবিত থাকবে না।
(২) উভয়পক্ষের কেহই পাগল বা জড়বুদ্ধিসম্পন্ন হবে না।
(৩) ন্যূনপক্ষে বরের ১৮, (এখন ২১) ও কনের ১৫ (এখন ১৮) বৎসর বয়স হওয়া চাই।
(৪) উভয়পক্ষের কেহই নিষিদ্ধ নিকট আত্মীয়ের মধ্যে হবে না।
(৫) উভয়ের কেহই সপিণ্ড হবে না।
(৬) যেখানে কনের বয়স ১৫ (এখন ১৮) বছরের কম, সেখানে অভিভাবকের সন্মতির প্রয়োজন হবে।
এই আইনে আরও বলা হয়েছে যে সিদ্ধ বিবাহ অসিদ্ধ বলে সাব্যস্ত হবে–
(১) যদি স্বামী পুরুষত্বহীন হয়।
(২) যদি বিবাহের সময় কোন পক্ষ পাগল বা জড়বুদ্ধিসম্পন্ন হয়।
(৩) যদি প্রতারণা দ্বারা বা বলপূর্বক অভিভাবক দ্বারা দরখাস্তকারীর সম্মতি নেওয়া হয়ে থাকে।
(৪) যদি বিবাহের পূর্বে স্ত্রী স্বামী ব্যতীত অন্য কারোর দ্বারা গর্ভবতী হয়ে থাকে।
(৫) যদি অন্য স্ত্রী বা স্বামী বিদ্যমান থাকায় বিবাহ হয়ে থাকে।
(৬) যদি নিষিদ্ধ নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিবাহ হয়ে থাকে।
এছাড়া নিম্নলিখিত কারণগুলির মধ্যে যে কোন একটি কারণ দেখাতে পারলে আদালত বিবাহ বিচ্ছেদের আদেশ দিতে পারে–
(১) স্বামী বা স্ত্রী কেউ ব্যভিচারে লিপ্ত হয়।
(২) ধর্মান্তর গ্রহণের ফলে যদি আর হিন্দু না থাকে।
(৩) আদালতের কাছে বিবাহ ভঙ্গের জন্য দরখাস্ত করবার পূর্বে ক্ৰমান্বয়ে তিন বৎসর স্বামী বা স্ত্রী কেউ যদি বিকৃত মস্তিষ্ক হয়।
(৪) ওই রকম তিন বৎসর কাল যদি স্বামী বা স্ত্রী অনারোগ্য কুষ্ঠব্যাধিতে আক্ৰান্ত হয়ে থাকে।
(৫) ওই রকম তিন বৎসর কাল স্বামী বা স্ত্রী কেউ যদি কোন সংক্ৰামক যৌন ব্যাধিতে আক্ৰান্ত হয়।
(৬) স্বামী বা স্ত্রীর কেউ যদি অন্য কোন ধর্ম সম্প্রদায়ে যোগদান করে সংসার ত্যাগ করে।র
(৭) স্বামী বা সস্ত্রীর মধ্যে কেউ যদি ক্ৰমান্বয়ে সাত বৎসর নিরুদিষ্ট থাকে।
(৮) যেখানে জুডিশিয়াল সেপারেশনের ডিক্রির পর উভয়পক্ষ আর স্বামী-স্ত্রীরূপে সহবাস করেনি
(৯) যদি রেস্টিটিটিউশন অভ কনজুগাল রাইটস-এর ডিক্রি হবার পর কোন একপক্ষ সেই ডিক্রি অমান্য করে অপর পক্ষ থেকে ক্ৰমান্বয়ে দু’বৎসর পৃথক বসবাস করে।
এছাড়া আরও দু’টি কারণে স্ত্রী আদালতের কাছে বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য প্রার্থনা করতে পারে। এ দলটি কারণের প্রথমটি হচ্ছে—যদি এক স্ত্রী বিদ্যমান থাকতে স্বামী অন্য স্ত্রী গ্রহণ করে থাকে এবং আদালতে প্রার্থনা করবার সময় সেই স্ত্রী জীবিত থাকে। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে–স্বামী যদি বলাৎকরণ, পুংমৈথুন বা কোনরূপে অস্বাভাবিক যৌনকর্মে লিপ্ত হয়ে থাকে।
১৯৫৫ সালের বিবাহ আইন সম্পর্কে তিনটি কথা বলা প্রয়োজন। প্রথম, বিবাহ সিদ্ধ হবার সময় থেকে তিন বৎসরের পূর্বে কোন পক্ষ আদালতে বিবাহ-বিচ্ছেদের কোন দরখাস্ত করতে পারবে না, দ্বিতীয়, আদালত কর্তৃক বিবাহ-বিচ্ছেদের নির্দেশ দেবার পর যদি তার বিপক্ষে কোন আপীল না করা হয়ে থাকে তাহলে এক বছর অপেক্ষা করে উভয় পক্ষই পুনরায় বিবাহ করতে পারে। (যদি বিবাহ না করে তাহলে আদালত খোরপোষের দাবি গ্রাহ্য করতে পারে), এবং তৃতীয়, আদালত কর্তৃক বিবাহ-বিচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও ওই নিদেশের পাবে স্ত্রী যে সন্তান গর্ভে ধারণ করেছে সে সন্তান বৈধ বলে গণ্য হবে।
আশা করা হয়েছিল যে এই আইন প্রণয়নের ফলে হিন্দু-বিবাহ যে শুধু গণতান্ত্রিকতা লাভ করবে তা নয়, বিবাহিতা হিন্দু নারী সামাজিক ও পারিবারিক নিষ্ঠুরতা ও অন্যায়ের হাত থেকে নিষ্কৃতি লাভ করবে। কিন্তু আমাদের সে আশা আজ বিনষ্ট। নারী-মুক্তির পরিবর্তে এসেছে নারী নির্যাতন। প্রতিদিনই খবরের কাগজে একটি-দু’টি বধূ নিধনের খবর প্রকাশিত হয়। আদিম বর্বরতার বশীভূত হয়ে শ্বশুর শাশুড়ি, ননদ-দেবর, এমন কি স্বামী সকলেই হয় আগুনে পুড়িয়ে নয়তো গলায় ফাঁস লাগিয়ে বা বিষ খাইয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শিক্ষিত, অশিক্ষিত সব ধরনের মেয়েই এর শিকার। তাই আজ অধিকাংশ মেয়ের কাছে পবিত্র বিবাহবন্ধন একটা বিভীষিকা হয়ে উঠেছে।
অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গেই বধূ হত্যার সংখ্যা ভয়াবহভাবে বেড়ে যাচ্ছে। বধূনিধন যেন একটা খেলাধূলার সামিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রতিশ্রুত বা প্রত্যাশিত পণ দিতে না পারাই বধ হত্যার প্রধান কারণ। তবে সমাজ থেকে পণপ্রথা উঠছে না! আইন হয়েছে, কিন্তু সে আইন কেউ মানছে না। পণ দেওয়ানেওয়া পুর্ণোদ্যমেই চলেছে। কেবল তার জন্য কিছ নিরীহ মেয়ের জীবনাবসান ঘটছে।
বধূহত্যা না করে, বনিবনা না হলে অনায়াসেই বিবাহ-বিচ্ছেদের পথ বেছে নেওয়া যায়। তার জন্য আইনও রয়েছে। কিন্তু সে রাস্তায় কেউ পা বাড়বে না। কারণ সেটা ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। তার চেয়ে অনেক সুবিধাজনক ও সস্তা হচ্ছে মেয়েটিকে মেরে ফেলা। আজ স্ত্রী শিক্ষার প্রসার যতটা ঘটেছে, তার চেয়ে বেশি প্রবল হয়েছে বধূ নিধনের মত অমানুষিক নৃশংসতা।