ছোটাচ্চু তার ঘরে মেঝেতে পা ছড়িয়ে বসে গভীর মনোযোগ দিয়ে হলুদ বইটা পড়ছে, তার চারপাশে কাগজপত্র ছড়ানো। পড়তে পড়তে মাঝে মাঝেই ছোট একটা নোটবইয়ে কিছু একটা লিখছে। এ রকম সময়ে টুনি এসে ঘরে ঢুকল।
এই বাসার অসংখ্য বাচ্চার সবার পরিচয় দেওয়া সম্ভব নয়, কিন্তু মনে হয় টুনির কথা আলাদা করে বলে রাখা ভালো। টুনির বয়স এগারো, ছোটখাটো সাইজ, তাই দেখে মনে হয় বয়স বুঝি আরও কম। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে তার মুখের দিকে তাকালে সবাই ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়, সেখানে এমন এক ধরনের গাম্ভীর্য আছে যে দেখে মনে হয় সে বুঝি বয়স্ক একজন মানুষ। এই বাসার বাচ্চাকাচ্চাদের লেখাপড়ায় বেশি আগ্রহ নাই তাই তাদের কারও চোখে চশমা নাই—টুনি ছাড়া। তার চশমাটি মোটেও বাচ্চাদের চশমা নয়, চশমার দোকান থেকে বেছে বেছে সে বুড়াে মানুষের গোল গোল মেটাল ফ্রেমের চশমা কিনেছে, সেই চশমায় তাকে আরও বয়স্ক দেখায়। সে কথা বলে কম, যখন বলে তখন অল্প দুই-চারটা শব্দ দিয়ে সবকিছু বলে ফেলে। যখন কথা বলে না তখন ঠোঁট দুটি চেপে রাখে, যেন মুখের ভেতর থেকে তার অজান্তে কোনো কথা বের না হয়ে যায়। টুনির চুলগুলো অনেকটা পুতুলের চুলের মতো, মাথার দুই পাশে দুটি ঝুঁটি এবং সেগুলো লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা।
ছোটাচ্চুর ঘরে ঢুকে টুনি নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে রইল। তাকে কিছু জিজ্ঞেস করা পর্যন্ত সে কোনো কথা বলে না। ছোটাচ্চু তার হলুদ বইয়ে এত বেশি ডুবে ছিল যে প্রথমে টুনিকে লক্ষই করেনি। যখন লক্ষ করল তখন মুখ তুলে বলল, টুনটুনি!
মন মেজাজ ভালো থাকলে ছোটাচ্চু মাঝে মাঝেই টুনিকে টুনটুনি ডাকে কিন্তু টুনির নাম যেহেতু টুনটুনি না, তাই তাকে টুনটুনি ডাকা হলে সে সাধারণত উত্তর দেয় না। এবারও সে উত্তর দিল না। তার গোল গোল চশমার ভেতর দিয়ে ছোটাচ্চুর দিকে তাকিয়ে রইল। ছোটাচ্চু তখন একটু গতমত খেয়ে বলল, কিছু বলবি?
টুনি মাথা নেড়ে জানাল যে, সে কিছু বলতে চায়। কিন্তু কিছু না বলে সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল। ছোটাচ্চু তখন বলল, কী বলবি? বল।
টুনি কম কথার মানুষ, তাই সে কম কথায় বলল, আমিও ডিটেকটিভ হব।
ছোটাচ্চু একটু হকচকিয়ে গেল, বলল, কী হবি?
টুনি উত্তর দিল না, সে কী বলেছে ছোটাচ্চু ভালো করে শুনেছে, তাই আরও একবার একই কথা বলার কোনো অর্থ নেই। সে কখনো বাড়তি কথা বলে না।
ছোটাচ্চু তখন বলল, তুই ডিটেকটিভ হবি? ডিটেকটিভ হওয়া এত সোজা!
টুনি বলল, তুমি যদি হতে পারো এটা নিশ্চয় সোজা। ছোটাচ্চু কেমন জানি চিড়বিড় করে জ্বলে উঠল, কী বললি, কী বললি
তুই?
টুনি কোনো কথা বলল না, তার হিসাবে ছোটাচ্চুর এই কথাটার উত্তর দেওয়ার দরকার নেই। সে যে কথাটা বলেছে সেটা না বোঝার কোনো কারণ নাই। ছোটাচ্চু তখন গলা উঁচিয়ে বলল, তোরা ভেবেছিস কী? আমি একটা খেলা খেলছি? ডিটেকটিভ ডিটেকটিভ খেলা?
টুনি ডানে-বাঁয়ে মাথা নাড়ল, বুঝিয়ে দিল যে সে এটাকে খেলা ভাবছে না।
ছোটাচ্চু আরও গলা উঁচিয়ে বলল, তাহলে? তাহলে তুই ডিটেকটিভ হবি এই কথাটার মানে কী?
টুনি বলল, সব ডিটেকটিভের একটা অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকে। আমি তোমার অ্যাসিস্ট্যান্ট হব।
ছোটাচ্চুর মুখটা কেমন জানি অল্প হাঁ হয়ে গেল, সেই হাঁ অবস্থায় বলল, অ্যাসিস্ট্যান্ট?
টুনি মাথা নাড়ল। ছোটাচ্চু তখন ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে লল, মনে কর আমি তোকে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট বানালাম। তারপর মনে কর একটা ক্লায়েন্ট আমাকে একটা অ্যাসাইনমেন্ট দিতে এল, এসে দেখল আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট হচ্ছে আট বছরের একটা বাচ্চা–
টুনি গম্ভীর গলায় বলল, আমার বয়স মোটেও আট বছর না।
কত? তোর বয়স কত? নয়? বড়জোর দশ?
আমার বয়স এগারো বছর তিন মাস।
ঠিক আছে। তোর বয়স এগারো বছর তিন মাস। আট বছর আর এগারো বছর তিন মাসের মাঝে কোনো পার্থক্য আছে? নাই। যদি আমার কোনো ক্লায়েন্ট এসে দেখে আমার অ্যাসিস্ট্যান্টের বয়স এগারো বছর তিন মাস তাহলে আমাকে সিরিয়াসলি নেবে? নেবে সিরিয়াসলি?
টুনি কোনো কথা না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল। ছোটাচ্চু তখন ফোঁস করে আরেকটা বড় নিঃশ্বাস ফেলে বলল, শোন টুনি। তোদের নিয়ে আমি অনেক কিছু করি। নাটক করি, ছাগল রং করি। ভূতের ভয় দেখাই। সেগুলো হচ্ছে মজা। সেগুলো হচ্ছে খেলা। কিন্তু এটা খেলা না। আমার ডিটেকটিভ এজেন্সি মোটেও খেলা না। এটা সিরিয়াস বিজনেস। এটা বাচ্চাকাচ্চার বিষয় না। এটা হচ্ছে বড়দের ব্যাপার। বুঝেছিস?
টুনি মাথা নেড়ে জানাল সে বুঝেছে। ছোটাচ্চু তখন হাসি হাসি মুখ করে বলল, গুড।
টুনি বলল, আমি তোমার অ্যাসিস্ট্যান্ট।
ছোটাচ্চু এবার রীতিমতো চমকে উঠে বলল, কী বললি? তুই আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট? এতক্ষণ ধরে আমি তাহলে কী বললাম?
টুনি গলায় এখন আরও জোর দিয়ে বলল, তোমার একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট দরকার। আমি তোমার অ্যাসিস্ট্যান্ট।
ছোটাচ্চু রেগে উঠে বলল, তোকে কে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট বানিয়েছে? আমি বানিয়েছি?
টুনি খুব শান্ত গলায় বলল, ছোটাচ্চু। তোমার ডিটেকটিভ এজেন্সি ঠিক করে চালানোর জন্য ভালো একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট দরকার। আমি হচ্ছি সেই অ্যাসিস্ট্যান্ট। তোমাকে এখন কোনো বেতন দিতে হবে না। আমি ফ্রি তোমাকে সব কাজ করে দেব।
ছোটাচ্চু আরও রেগে উঠল, আমার সাথে ঠাট্টা করছিস? রং-তামাশা করছিস?
টুনি বলল, তুমি শুধু শুধু রাগ করছ ছোটাচ্চু। সত্যিকারের ডিটেকটিভরা কখনো রাগ হয় না। তুমি এখনো আসল ডিটেকটিভ হও নাই। সেই জন্য তোমার একজন ভালো অ্যাসিস্ট্যান্ট দরকার। আমি হচ্ছি সেই অ্যাসিস্ট্যান্ট।
ছোটাচ্চু কী একটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু টুনি সেটা শুনতে দাঁড়াল না, হেঁটে হেঁটে চলে গেল।
পরের কয়েকটা দিন ছোটাচ্চুর জন্য মোটেও ভালো গেল না। তার এক নম্বর কারণ, এই বাসার যার সাথেই তার দেখা হলো সে-ই তাকে একই প্রশ্ন করতে লাগল। প্রথমে দাদি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, এই! তুই নাকি একটা ডিটেকটিভ এজেন্সি খুলেছিস আর টুনি নাকি তোর অ্যাসিস্ট্যান্ট?
ছোটাচ্চু মুখ শক্ত করে বলল, আমি একটা ডিটেকটিভ এজেন্সি খুলেছি কিন্তু টুনি মোটেও আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট না।
তাহলে সবাই যে বলছে তুই নাকি টুনিকে অ্যাসিস্ট্যান্ট বানিয়েছিস। বাচ্চা একটা মানুষ–
আমি টুনিকে অ্যাসিস্ট্যান্ট বানাই নাই। যে বলেছে সে ভুল বলেছে।
দাদি উল দিয়ে সোয়েটার বুনতে বুনতে বললেন, সেটাই ভালো। বাচ্চাকাচ্চাদের নিয়ে টানাটানি কেন? আর ডিটেকটিভ এজেন্সি জিনিসটা
কী? কী করবি সেখানে? এটা কি কোনো ধরনের খেলা?
ছোটাচ্চুর মুখ আরও শক্ত হয়ে গেল। বলল, এটা মোটেও খেলা না। এটা সিরিয়াস বিজনেস। মানুষজন প্রবলেম নিয়ে আসবে, আমি সেই প্রবলেম সলভ করে দেব।
দাদি একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, জানি না বাপু। তুই তোর নিজের প্রবলেমই সলভ করতে পারিস না, মানুষের প্রবলেম সলভ করবি কেমন করে?
ছোটাচ্চু ফোঁস করে বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল, তুমি খালি দেখো। আগেই এত নেগেটিভ হয়ে যেয়ো না।
বড় মামার সাথে যখন দেখা হলো তখন বড় মামা বলল, তই নাকি প্রাইভেট ডিটেকটিভ আর টুনি নাকি তোর অ্যাসিস্ট্যান্ট?
ছোটাচ্চু গম্ভীর গলায় বলল, আমি প্রাইভেট ডিটেকটিভ হওয়ার চেষ্টা করছি। সেই জন্য একটা ডিটেকটিভ এজেন্সি খুলেছি। রেজিস্ট্রেশনের জন্য অ্যাপ্লাই করেছি।
টুনিকে নিলে তোর রেজিস্ট্রেশন হবে? আমি টুনিকে নেই নাই। বড় মামা একটু অবাক হয়ে বলল, তাহলে সবাই যে বলছে- কে বলছে? তোর ভাবি বলল। টুম্পা বলল। শান্ত বলল। প্রমি বলল।
টুম্পা, শান্ত, প্রমি এরা এই বাসার বিভিন্ন চরিত্র, এদের সবার নাম মনে রাখা সোজা নয়, দরকারও নেই। ছোটাচ্চু মুখ শক্ত করে বলল, সবাই তোমাকে ভুল বলেছে। আমি মোটেও টুনিকে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট বানাই নাই।
বড় মামা একটু অবাক হয়ে বলল, ও।
ঠিক তখন ভাবি ঘরে এসে ঢুকল, ছোটাচ্চুকে দেখে বলল, এই যে তোমাকে খুঁজছিলাম। তুমি নাকি–
ভাবি কথা শেষ করার আগেই ছোটাচ্চু বলল, না।
ভাবি অবাক হয়ে বলল, কী না?
তুমি যেটা জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছ।
আমি কী জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছি?
টুনি আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট কি না।
ভাবি আরও অবাক হয়ে বলল, তুমি কেমন করে বুঝলে আমি এটা জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছি?
ছোটাচ্চু মুখ শক্ত করে বলল, আমি একটা ডিটেকটিভ এজেন্সি খুলছি। কে কী বলবে সেটা আমার অনুমান করতে হয়।
তাই বলে টুনির মতো ছোট একটা বাচ্চাকে তোমার সাথে নেবে?
ছোটাচ্চু মুখ শক্ত করে বলল, আমি মোটেও টুনিকে নিচ্ছি না।
তাহলে সবাই যে বলছে—
ছোটাচ্চু হিংস্র গলায় বলল, কে বলছে?
ওই তো রনি, পিকু, টুশি, শায়লা—
রনি, পিকু, টুশি, শায়লা–এরা এই বাসার মানুষজন। এদের নামও মনে রাখা সম্ভব না। দরকারও নেই।
ছোটাচ্চু মুখ আরও শক্ত করে বলল, সবাই মিলে পেয়েছে কী? আমি সবগুলোকে খুন করে ফেলব।
ভাবি হেসে বলল, তুমি ডিটেকটিভ মানুষ, নিজেই যদি খুন করে ফেলো, তাহলে কেমন করে হবে? অন্যরা খুন করবে, তুমি সেটা বের করবে। বইয়ে তো সে রকমই লেখে। কথা শেষ করে ভাবি টেনে টেনে আরও কিছুক্ষণ হাসল।
ছোটাচ্চু বলল, ভাবি তুমি এভাবে হাসবে না। এটা মোটেও ঠাট্টার বিষয় না।
কিছুক্ষণের মাঝে অনেকগুলো বাচ্চা ছোটাচ্চুকে ঘিরে ফেলল, তারা সবাই এক সাথে কথা বলতে লাগল। কথাগুলো ছিল এ রকম—যদিও সবাই এক সাথে কথা বলার কারণে কেউ কিছু শুনতে পারছিল না, বুঝতেও পারছিল না।
একজন বলল, তুমি বলেছিলে এটা ছোটদের জন্য না, তাহলে টুনিকে কেন নিলে? আমাকে কেন নিলে না?
আরেকজন বলল, টুনি কি ছোট না? টুনি আমার থেকে ছোট।
অন্যরা বলল।
টুনি তোমার অ্যাসিস্ট্যান্ট? কেন? কেন? কেন?
তোমার সাথে আমরা কোনোদিন খেলব না। তুমি টুনিকে নিলে আর আমরা এত করে বললাম আমাদের নিলে না।
অন্যায়। অন্যায়। ঘোরতর অন্যায়।
মানি না। মানি না।
ধ্বংস হোক। ধ্বংস হোক।
জ্বালো জ্বালো। আগুন জ্বালো।
ছোটাচ্চু যদিও কারও কথাই স্পষ্ট করে শুনতে পারছিল না, তবু বুঝে গেল সবাই কী নিয়ে কথা বলছে। সে চিৎকার করে বলল, চোপ। সবাই চোপ। এক্কেবারে চোপ।
একজন মিনমিন করে বলল, চোপ বলে কোনো শব্দ নাই। শব্দটা হচ্ছে চুপ।
আরেকজন বলল, চুপ থেকে পাওয়ারফুল হচ্ছে চোপ। তাই না। ছোটাচ্চু?
ছোটাচ্চু তাদের কারও কথার উত্তর না দিয়ে বলল, আমি তোদের সবাইকে খুব স্পষ্ট করে একটা কথা বলতে চাই। আমার আলটিমেট ডিটেকটিভ এজেন্সি মোটেও পোলাপানের খেলা না। এটা বড় মানুষদের দিয়ে তৈরি বড় মানুষের সমস্যা সমাধানের একটা সিরিয়াস এজেন্সি। এখানে কোনো বাচ্চাকে নেওয়া হয় নাই। টুনিকেও নেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
একজন বলল, তাহলে টুনি যে বলল সে তোমার অ্যাসিস্ট্যান্ট?
সে মোটেও আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট না। ডাক টুনিকে।
টুনিকে ডাকতে হলো না, ঠিক তখন দেখা গেল টুনি তার স্টিলের তৈরি গোল গোল চশমা চোখে হেঁটে হেঁটে আসছে। মুখে একেবারে ঘন মেঘ কিংবা কংক্রিটের দেয়ালের মতো গাম্ভীর্য। ছোটাচ্চু হুংকার দিল, টু-নি।
টুনি দাঁড়িয়ে গিয়ে চশমার ফাক দিয়ে ছোটাচ্চুর দিকে তাকাল, কোনো কথা বলল না, বলা প্রয়োজন মনে করল না। ছোটাচ্চু আরও জোরে হুংকার দিয়ে বলল, তুই নাকি সবাইকে বলে বেড়াচ্ছিস যে তুই আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট?
টুনি না-সূচকভাবে মাথা নাড়ল। ছোটাচ্চু তখন তার গলা আরও এক ধাপ ওপরে তুলে বলল, সবাই বলছে তুই এটা বলেছিস—
টুনি প্রথমবার মুখ খুলল, বলল, আমি সবাইকে বলেছি, তুমি তোমার বুদ্ধি দিয়ে কখনো তোমার ডিটেকটিভ এজেন্সি চালাতে পারবে না। এটা চালাতে হলে আমাকে তোমার অ্যাসিস্ট্যান্ট বানাতে হবে।
ছোটাচ্চু চিৎকার করে বলল, কী বললি? কী বললি তুই?
টুনি কোনো উত্তর না দিয়ে হেঁটে হেঁটে চলে গেল। ছোটাচ্চু আরও জোরে চিৎকার করে বলল, দেখলি, টুনির সাহসটা দেখলি তোরা? সে নিজেকে ভেবেছে কী? মাদাম কুরি নাকি হাইপেশিয়া?
বাচ্চাকাচ্চারা মাদাম কুরিকে চেনে না, হাইপেশিয়া কি মানুষ না একটা রোগের নাম, সেটাও ধরতে পারল না। শুধু অনুমান করল ছোটাচ্চু খুব রেগেছে। তবে ছোটাচ্চুর রাগ নিয়ে বাচ্চাকাচ্চারা বেশি মাথা ঘামায় না। তাই তারা এবারও এটা নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করল না।
তবে মজার ব্যাপার হলো, এক সপ্তাহের মাঝে সবাই আবিষ্কার করল টুনির কথা একেবারে অক্ষরে অক্ষরে সত্যি!