হালখাতার খাওয়াদাওয়া
টেনিদা বললে, মেরে দিয়েছি কেল্লা। চল একটু মিষ্টিমুখ করে আসা যাক।
মিষ্টিমুখ করতে আপত্তি আছে–এমন অপবাদ প্যালারামের শত্রুরাও দিতে পারবে না। তবে টেনিদার সঙ্গে যেতেই আপত্তি আছে একটু। ওর মিষ্টিমুখ মানেই আমার পকেট ফাঁক। টেনিদা যখনই বলেছে, চল প্যালা বঙ্গেশ্বরী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকে তোকে জলযোগ করিয়ে আনি–তখনই আমার কমসেকম পাঁচটি করে টাকা স্রেফ বরবাদ। মানে রাজভোগগুলো ও-ই খেয়েছে আর আমি বসে বসে দুএকটা যা খেতে চেষ্টা করেছি, থাবা দিয়ে সেগুলো কেড়ে নিয়ে বলেছে, এসব ছেলেপুলের খেতে নেই–পেট খারাপ করে।
অতএব গেলাস দুই জল খেয়েই আমায় উঠে আসতে হয়েছে। একেবারে খাঁটি জলযোগ যাকে বলে। তাই টেনিদার প্রস্তাব কানে যেতেই আমি তিন পা পেছিয়ে গেলাম।
বললাম, আমার শরীর ভালো নেই–আমি এখন মামাবাড়ি যাচ্ছি।
টেনিদা খাঁড়ার মতো নাকটাকে খাড়া করে বললে, শরীর ভালো নেই তো মামাবাড়ি যাচ্ছিস কেন? তোর মামা কি ভেটিরিনারি সার্জন যে তোর মতো ছাগলকে পটাৎ পটাৎ করে ইনজেকসন দেবে? বেশি পাকামি করিসনি প্যালাচল আমার সঙ্গে।
-সত্যি বলছি টেনিদা—
কিন্তু সত্যি-মিথ্যে কিছুই টেনিদা আমায় বলতে দিলে না। আমার পিঠে পনেরো সের ওজনের একটা চাঁটি বসিয়ে বললে, কেন বচ্ছরকার প্রথম দিনটাতে একরাশ মিথ্যে বলছিস প্যালা? কোনও ভাবনা নেই বুঝলি? তোর এক পয়সাও খরচ নেই সব পরম্মৈপদী।
পরস্মৈপদী? কে খাওয়াবে? আমাদের মতো অপোগন্ডকে খাওয়াবার জন্য কার মাথা ব্যথা পড়েছে?
টেনিদা বললে, তোর মগজে আগে গোবর ছিল, এখন একেবারে নিটোল খুঁটে। ওরে গর্দভ, আজযে হালখাতা। দোকানে গেলেই খাওয়াবে।
কিন্তু আমাদের খাওয়াবে কেন? নেমন্তন্ন করেনি তো?
–সেই ব্যবস্থাই তো করেছি। টেনিদা হেঁ-হেঁ করে হেসে বললে, এই দ্যাখ বলেই পকেট থেকে বের করলে একগাদা লাল-নীল হালখাতার চিঠি।
–এসব তুমি পেলে কোথায়?
আরে আমার চিঠি নাকি? সব কুট্টিমামার।
কুট্টিমামা।
–হ্যাঁ-হ্যাঁ–সেই-যে গজগোবিন্দ হালদার? তোকে বলিনি? সেই-যে ভালুকের নাকে টিকের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। সেই কুট্টিমামার অনেক এসেছে। তাই থেকেই কয়েকটা হাতসাফাই করেছি আমি। বিশেষ করে এইটে–
বলে একটা লাল রঙের চিঠি এগিয়ে দিলে। তাতে নতুন খাতা মহরত-হরত এইসব বাঁধা গতের তলায় কালি দিয়ে লেখা আছে : প্রিয় গজগবিন্দবাবু, অবশ্য আসিবেন। মাংস, পোলাও, দই, রসগোল্লার বিশেষ ব্যবস্থা হইয়াছে। ইতি আপনাদের চন্দ্রকান্ত চাকলাদার-প্রোপাইটার, নাসিকামোহন নস্য কোম্পানি।
টেনিদার চোখ চকচক করে উঠল : দেখছিস তো খ্যাঁটের ব্যবস্থাখানা? এমন সুযোগ ছাড়তে নেই। তবে একা খেয়ে সুবিধে হবে না, তাই তোকেও সঙ্গে করে নিয়ে যেতে চাইছি।
–কিন্তু টেনিদা—
টেনিদা মুখটাকে গণ্ডারের মতো করে বললে, আবার কিন্তু কী রে? পটোল দিয়ে শিঙিমাছের ঝোল খেয়ে খেয়ে তুই দেখছি একটা পটোলের দোলমা হয়ে গেছিস। মাংস-পোলাও খেতে পাবি তাতে অত ঘাবড়ে যাচ্ছিস কেন?
-আমি বলছিলাম হালখাতায় গেলে নাকি টাকা-ফাকা দিতে হয়
-না দিলেই হল। দোকানদারেরা এসময় ভারি জব্দ থাকে জানিস তো? যত টাকাই পাওনা থাক না কেন–মুখ ফুটে চাইতে পারে না। যত খুশি খেয়ে আয়, হাসিমুখে বলবে, আর দুটো মিহিদানা দেব স্যার? চল প্যালা–এমন মওকা ছাড়তে নেই।
ভেবে দেখলাম, ছাড়া উচিতও নয়। আমি টেনিদার সঙ্গই নিলাম।
প্রথম দু-একটা জায়গায় খুচরো খাওয়া-দাওয়া হল।
এক গ্লাস ঘোলের শরবত-দুটো-একটা মিষ্টি–এই সব। দোকানদারেরা অবশ্য আড় চোখে টাকার থালার দিকে তাকিয়ে দেখছিল আমরা কী দিই। আমরা ও-সবে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজেদের কাজ ম্যানেজ করে গেলাম, অর্থাৎ যতটা পারা যায় রসগোল্লা, ঘোলের শরবত, ডাবের জল এসব সেঁটে নিলাম। এক-আধজন বেশ ব্যাজার হল, একজনের গলা তো স্পষ্টই শোনা গেল : দুশো সাতাশ টাকা বাকি–গজগোবিন্দবাবু একটা পয়সা ছোঁয়ালেন না–আবার দুটো ছোকরা এসে তিন টাকার খাবার সাবড়ে গেল!–ওসব তুচ্ছ কথায় আমরা কান দিলাম না–দেওয়ার দরকারই বোধ হল না। উপরন্তু দুজনে চারটে করে পান নিয়ে নেমে এলাম রাস্তায়।
আমি টেনিদাকে বললাম, এসব ঘোল-ফোল খেয়ে পেট ভরিয়ে লাভ কী? তোমার সেই নাসিকামোহন নস্য কোম্পানিতেই চলো না!–বলতে বলতে আমার নোলায় প্রায় আধ সের জল এসে গেল : পোলাওটা যদি ঠাণ্ডা হয়ে যায়, তা হলে খেতে জুত লাগবে না। তা ছাড়া বেশি দেরি হলে মাংসও আর থাকবে না–কেবল খানকয়েক পাঁঠার হাড় পড়ে থাকবে।
টেনিদা বললে, আঃ–এই পেটুকটা দেখছি জ্বালিয়ে খেল! এইসব টুকটাক খেয়ে খিদেটা একটু জমিয়ে নিচ্ছি, তা এটার কিছুতেই আর তর সইছে না।
-মানে আমি বলছিলাম, যদি ফুরিয়ে-টুরিয়ে যায়–
–হুঁ, সেও একটা কথা বটে!–টেনিদা নাক চুলকে বললে, আচ্ছা চল-যাওয়া যাক—
ঠিকানা বাগবাজারের। তাও কি এক গলির মধ্যে। অনেক খুঁজে খুঁজে বের করতে হল।
এই নাকি নাসিকামোহন নস্য কোম্পানি! দেখে কেমন যেন খটকা লেগে গেল। একটু পুরনো একতলা ঘর। ভেতরে মিটিমিট করে আলো জ্বলছে। বাইরে একটা সাইনবোর্ড–তাতে প্রকাণ্ড নাকওলা লোক এক জালা নস্যি টানছে এমনি একটা ছবি। সাইনবোর্ডটা কেমন কাত হয়ে ঝুলছে। এরাই খাওয়াবে মাংসপোলাও!
বললাম, টেনিদা-পোলাও-টোলাওয়ের গন্ধ তো পাচ্ছি না!
টেনিদা বললে, আছে–সব আছে। চল–ভেতরে যাই।
ঘুরে ঢুকে দেখি একটা ময়লা চাদর পাতা তক্তপোশে দুটো ষণ্ডামতন লোক কেলে হাঁড়ির মতোমুখ করে বসে আছে। পাশে একটা কাঁচ ভাঙা আলমারি–তাতে গোটা কয়েক শিশি-বোতল। আর কিছু নেই।
আমরা কী রকম ঘাবড়ে গেলাম। জায়গা ভুল করিনি তো। কিন্তু তাই বা কী করে। বাইরে স্পষ্টই সাইনবোর্ড ঝুলছে। ওই তো আলমারির গায়ে সাঁটা এক টুকরো কাগজে লেখা রয়েছে : নাসিকামোহন নস্য কোম্পানি–প্রোঃ চন্দ্রকান্ত চাকলাদার।
আমাদের দেখেই একটা লোক বাঘাটে গলায় বললে, কী চাই?
সঙ্গে সঙ্গে আমি প্রায় দরজার বাইরে। টেনিদা ঢোক গিলে বললে, আমরা হালখাতার নেমন্তন্ন পেয়ে আসছি।
–হালখাতার নেমন্তন্ন!–লোকটা তেমনি বাঘা গলায় কী বলতে যাচ্ছিল, দুনম্বর তাকে থামিয়ে দিলে।
বললে, কে পাঠিয়েছে তোমাদের?
ব্যাপারটা কী রকম গোলমেলে মনে হল। আমি ভাবছিলাম কেটে পড়া উচিত, কিন্তু টেনিদা হাল ছাড়ল না। পকেট থেকে সেই চিঠিটা বের করে বলল, এই তো-মামা আমাদের পাঠিয়েছেন। মামা-মানে গজগোগাবিন্দ হালদার
–গজগোবিন্দ হালদার?–প্রথম লোকটা এবারে ঝাঁটা গোঁফের পাশ দিয়ে মিটিমিটি হাসল : ওহো–তাই বলো! আগে বললেই বুঝতে পারতাম। আমাদের এখানে আজ স্পেশ্যাল ব্যবস্থা কিনা–তাই বেছে বেছে মাত্র জন জনকয়েককে নেমন্তন্ন করা হয়েছে। তা গজগোবিন্দবাবু কোথায়? তিনি যে বড় এলেন না?
–তিনি একটু জরুরি কাজে আসানসোলে গেছেন–টেনিদা পটাং করে মিথ্যে কথা বলে দিলে : তাই আমাদের এখানে আসতে বিশেষ করে বলে দিয়েছেন।
শুনে প্রথম লোকটা দ্বিতীয় লোকটার মুখের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে রইল। তারপরে তেমনি হাসি-হাসি মুখে বললে, তা তোমরা এসেছ–তাতেও হবে। এসো এসো
লোকটা উঠে দাঁড়াল।
ভেতরের ঘরে। সেখানেই বিরিয়ানি পোলাও আর মোগলাই কালিয়ার ব্যবস্থা হয়েছে কিনা। এসো–চলে এসো–নইলে ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।
টেনিদা বললে, আয় প্যালা—
আসতে বলার দরকার ছিল না। তার অনেক আগেই এসে পড়েছি আমি। জিবের ডগাটা সুড়সুড় করে উঠছে! শরবত টরবতগুলো এতক্ষণ পেটের মধ্যেই ছিল হঠাৎ সেগুলো হজম হয়ে গিয়ে খিদেয় নাড়ি-ভুড়ি ছুঁই ছুঁই করতে লাগল।
সেই লোকটার পেছনে পেছনে আমরা এগিয়ে চললাম। একটা অন্ধকার বারান্দা–তারপরে আর-একটা ঘর। তার মধ্যেও আলো নেই। লোকটা বললে, ঢুকে পড়ো এখানে।
অন্ধকার যে–টেনিদার গলায় সন্দেহের সুর। আমারও কী রকম যেন বেয়াড়া লাগল। যে-ঘরে পোলাও কালিয়া থাকে সে-ঘর অন্ধকার থাকবে কেন? পোলাওয়ের জলুসেই আলো হয়ে থাকবার কথা।
লোকটা বললে, ঢোকো না–আলো জ্বেলে দিচ্ছি। টেনিদা ঢুকল, পেছন পেছন আমিও। আর যেই ঢুকেছি অমনি পটাং করে লোকটা দরজা বন্ধ করে দিলে।
একী একী–দোর বন্ধ করছেন কেন? দরজার ওপাশ থেকে সেই লোকটার পৈশাচিক অট্টহাসি শোনা গেল : পোলাও কালিয়া খাওয়াব বলে।
শেকল আটকে দিলেন কেন?–আমি চেঁচিয়ে উঠলাম : ঘরে তো পোলাওকালিয়া কিছু নেই। এ যে কয়লার ঘর মনে হচ্ছে! ঘুঁটের গন্ধ আসছে
লোকটা আবার বাজখাই গলায় বললে, ঘুঁটের গন্ধ! শুধু ঘুঁটের গন্ধেই পার পেয়ে যাবে ভেবেছ? এর পরে তিনটি বাছা বাছা গুণ্ডা আসবে–দেবে রাম ঠ্যাঙানি যাকে বলে আড়ং-ধোলাই। প্রাণ খুলে পোলাও-কালিয়া খাবে।
শুনে আমার হাত-পা সোজা পেটের মধ্যে সেঁধিয়ে গেল। আমি ধপাস করে সেই অন্ধকার কয়লার ঘরের মেজেতেই বসে পড়লাম। নাকমুখের ওপর দিয়ে ফুড়কফুড়ক করে গোটাচারেক আরশোলা উড়ে গেল।
টেনিদা কাঁপতে কাঁপতে বললে, আমাদের সঙ্গে এ রসিকতা কেন স্যার? আমরা কী করেছি?
কী করেছ?–লোকটা সিংহনাদ ছাড়ল : তোমরা–মানে, তোমার মামা গজগোবিন্দ আমাদের কোম্পানি থেকে তিনশো তিপান্ন টাকার নস্যি কিনেছ তিন বছর ধরে সব বাকিতে। একটা পয়সা ছোঁয়ায়নি। তারপর আর এ-পাড়া সে মাড়ায়নি।
–আর আমাদের কোম্পানি তারই জন্যে লাল বাতি জ্বেলেছে। আজ তাকে ঠ্যাঙাবার জন্যেই পোলাও-মাংসের টোপ ফেলেছিলাম। সে আসেনি–তোমরা এসেছ। টাকা তো পাবই না কিন্তু তোমাদের রাম ঠ্যাঙানি দিয়ে যতটা পারি–সুখ করে নেব। একটু দাঁড়াও–গুণ্ডারা এল বলে
টেনিদা হাঁউমাউ করে উঠল : দোহাই স্যার আমাদের ছেড়ে দিন স্যার। আমরা নেহাত নাবালক, নস্যি-টস্যির ধার ধারিনে–আমাদের ছেড়ে দিন
কিন্তু লোকটার আর সাড়া পাওয়া গেল না। দরজায় শেকল দিয়ে বেমালুম সরে পড়েছে। গুণ্ডা ডাকতেই গেছে খুব সম্ভব।
আমার পালা জ্বরের পিলেতে গুরগুর করে শব্দ হচ্ছে। বুকের ভেতর ঠাণ্ডা হিম! চোখের সামনে কেবল পটোল-ধুঁদুল কাঁচকলা এই সব দেখতে পাচ্ছি। হালখাতার পোলাও খেতে গিয়ে পটলডাঙার প্যালারামের এবার পটল তোলবার জো।
টেনিদা বললে, প্যালা রে মেরে ফেলবে যে! গলা দিয়ে কেবল কুঁই কুঁই করে খানিকটা আওয়াজ বেরুল।
–ওরে বাবা–পায়ের ওপর দিয়ে ছুঁচো দৌড়চ্ছে।
এর পরে লাঠি দৌড়বে–অনেক কষ্টে আমি বলতে পারলাম।
টেনিদা দরজাটার ওপর দুম দুম করে লাথি ছুড়তে লাগল : দোহাই স্যার–ছেড়ে দিন স্যার–আমরা কিছু জানিনে স্যার আমরা নেহাত নাবালক স্যার
কটাৎ। আমার কপালে কিসে ঠোকর মারল। তারপরেই কী একটা প্রাণী নাকের ওপর একটা নোংরা পাখার ঘা দিয়ে উড়ে গেল। নির্ঘাত চামচিকে।
বাপরে বলে আমি লাফ মারলাম। এক লাফে একটা জানালার কাছে! আর সঙ্গে সঙ্গেই আবিষ্কার করলাম, জানালার দুটো গরাদ ভাঙা। অর্থাৎ গলে বেরিয়ে যাওয়া যায়। টেনিদা তখনও প্রাণপণে ধাক্কাচ্ছে! বললাম, টেনিদা, এখানে একটা ভাঙা জানালা।
-কই কোথায়?
এই তো বলেই আমি জানালা দিয়ে দুনম্বর লাফ। আর সঙ্গে সঙ্গে–একেবারে ডাস্টবিনে রাজ্যের দুর্গন্ধ আবর্জনার ভেতর।
টেনিদাও আমার ঘাড়ের ওপরে এসে পড়ল পর মুহূর্তেই। আর তক্ষুনি উলটে গেল ডাস্টবিন! আমাদের গায়ে মাথায় পৃথিবীর সব রকম পচা আর নোংরা জিনিস একেবারে মাখামাখি। হালখাতার খাওয়া-দাওয়াই বটে। অন্নপ্রাশন থেকে শুরু করে যা কিছু খেয়েছিলাম–সব ঠেলে বেরিয়ে আসছে গলা দিয়ে।
কিন্তু বমি করারও সময় নেই আর। পেছনে একটা কুকুর তাড়া করেছে কারা যেন বললে, চোর–চোর। সর্বাঙ্গে সেই পচা আবর্জনা মেখে প্রাণপণে ছুটতে আরম্ভ করেছি আমরা। সোজা বড় রাস্তার দিকে। সেখান থেকে একেবারে গিয়ে গঙ্গায় নামতে হবে–পুরো দুঘণ্টা চান না করলে গায়ের গন্ধ যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।