2 of 2

সেই লোকটা

সেই লোকটা

আমাকে কেউ দেখতে পারে না। আমার চেহারা সুন্দর। আমি লেখাপড়া নেহাত কম জানি না। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছি। ভালো চাকরি করতুম। বিয়েও করেছি। আমার সব আছে; কিন্তু আমাকে কেউ ভালোবাসে না। আমার একটা গর্ব ছিল—চেহারা যখন সুন্দর, রোজগার যখন। ভালো, তখন আমাকে আমার বউ ভালোবাসবে, অন্য মেয়েরা আমার প্রেমে পড়বে। কর্মস্থানে বছর বছর আমার প্রোমোশান হবে। জুনিয়ার থেকে সিনিয়ার। সিনিয়ার থেকে চিফ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যাব। আমার বাড়ি হবে, আমার গাড়ি হবে, আমার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বছর বছর বাড়বে। জীবনটা আমার সুখে ভরে যাবে। মানুষ ভাবে এক হয় আর এক।

আমার সঙ্গে আমার বউয়ের বয়সের পার্থক্য একটু বেশি। এমনটা হওয়া উচিত ছিল না, তবু হয়েছে। আমি ভালোবাসা করে বিয়ে করিনি। দেখাশোনার পর যেমন হয়েছে, সেইটাই আমি মেনে নিয়েছি। এই বিয়ের সম্বন্ধ করেছিলেন আমার দিদি আর জামাইবাবু। বড় ঘরের মেয়ে। তাকে মিষ্টি দেখতে। শ্যামলা। হাসিটি ভারি সুন্দর। চিরকালই আমি একটু বড়সড় দেখতে। আমার বাবা জেলা আদালতে ওকালতি করতেন। জায়গাজমিও ছিল। প্রাচুর্যে মানুষ হবার ফলে দেহটা বেশি বেড়ে গেছে। বউয়ের সামনে আমার লজ্জা করত। আয়নায় পাশাপাশিদুজনের। প্রতিফলন দেখলে মনে হত, আমি স্বামী নই, বাবা। হিন্দুসমাজে এইরকমই নাকি হয়!

জোর দিয়ে বলতে পারব না, তবে আমার মনে হয়, এই বিয়েতে মেয়েটার বোধহয় মত ছিল না। হয়তো অন্য কোনও ছেলের সঙ্গে আলাপ ছিল। বিয়ের পর স্ত্রীর ওপর স্বামীর যে সব অধিকার খাটে, সেই সব অধিকার ফলাতে গিয়ে পদে পদে ধাক্কা খেয়েছি। জোর করে কাছে টানতে হয়। ছেড়ে দিলে এত দূরে সরে যায়, যেন বিপরীত মেরুতে বসবাস। এইরকম একটা সম্পর্কের জন্যে আমি প্রস্তুত ছিলাম না। একেই বলে সুখে থাকতে ভূতে কিলানো। কেউ কোনওদিন শুনেছে অনুমতি নিয়ে বউয়ের গায়ে হাত দিতে হয়!

অনেক চেষ্টা করলুম, যদি সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়, হল না। একদিন জোর করে একটু ঘনিষ্ঠ হবার চেষ্টা করলাম, খেঁকিয়ে উঠল। বলল, দামড়া। মনটা একেবারে বিগড়ে গেল। যেমন আমার বরাত! কাকে ঠোকরানো ফল। বিয়ে না হলে ছিল একরকম। এখন আর কোথায় নৈবেদ্য সাজাব! কে আর আমাকে নেবে? মনকে শক্ত করার চেষ্টা করলাম, এ আর কী এমন সমস্যা! চাকরি বাকরি করছি। রোজগারপাতি ভালো, একটা মেয়ে দামড়া বললে কী এসে-যায়!

এইরকম একটা সময়ে, হঠাৎ আমাকে বাইরে বদলি করে দিলে। পদোন্নতি হল। ভালো কোয়ার্টার পেলাম। ফলের বাগান। চব্বিশ ঘণ্টা দেখাশোনা করার একজন লোক, আবার একটা গাড়ি। ব্যাপারটা বেশ জমে গেল। জায়গাটাও বেশ সুন্দর। সুন্দর পরিবেশ। সহকর্মীরাও বেশ ভালো। শুধু ওই, একবালতি দুধে একটা মাছি। জীবন একঘেয়ে সুরে বাঁধা পড়ে গেল। ভোরবেলা বেরোই। দুপুরে খেতে আসি। আবার বেরোই। আবার আসি। বইপত্তর ওলটাই। রেডিয়ো শুনি। স্পেয়ার চালাই। ঘুমিয়ে পড়ি। জীবনের এই রুটিন। কোনও নড়চড় নেই।

রক্তমাংসের মানুষ এভাবে ক’দিন চালাতে পারে! আমি তো রামকৃষ্ণ নই। আমার একটা গাড়ি আছে। দূরে একটা পাহাড় আছে। পাহাড়ের পাশে একটা জঙ্গল আছে। তার পাশে একটা নদী আছে। সব কিছুর পাশেই একটা না একটা কিছু আছে। আমার পাশে আছে শীতল একটা স্ত্রী। ছুটির দিন যদি বলি, চলো না কোথাও বেড়িয়ে আসি। উত্তরে প্রথমে মুখ বাঁকায়। যেন পরপুরুষ কোনও কু-প্রস্তাব দিয়েছে! বেশি জেদাজেদি করলে বলে, ‘তোমার সঙ্গে কোথাও যেতে আমার। ইচ্ছে করে না’।

‘তাহলে বিয়ে করলে কেন?’

‘আমি তো করিনি। তুমি করেছ।’

আমি গুন্ডা নই, বদমাইশ নই, মাতাল নই, লম্পট নই। আমার একটা আত্মসম্মান আছে। আমি কোনও জোর খাটাতে পারি না। আমি জানি, আমার গায়ের জোরের কাছে ওকে হার মানতেই। হবে। গায়ের জোরে তো সম্পর্ক তৈরি হয় না। সম্পর্ক মনের ব্যাপার। গায়ের জোরে দেহ পাওয়া যায়, মন পাওয়া যায় না। আমি মন পেতে চাই, দেহনয়। বিয়ে করে আমি একটা দেহ পেয়েছি। যার মন পড়ে আছে অন্য জায়গায়। সেই জায়গাটা কোথায়! আমার বউ তো আর মীরাবাঈ নয়! যে বলবে, ‘মেরে তো গিরিধর গোপাল দুসরোন কই। জাকে শির মোর মুকুট মেরে পতি সোই।।’ খাচ্ছে দাচ্ছে, চুল বাঁধছে, ভালো শাড়ি পরছে, গুনগুন গান গাইছে, ফুলের বাগানে প্রজাপতি হয়ে উড়ছে, অথচ আমার ব্যাপারেই অদ্ভুত একটা ঘৃণা। যার কোনও কারণ নেই।

কলকাতায় গিয়ে এক সাইকোলজিস্টের সঙ্গে দেখা করলুম। বিরাট ব্যক্তি। বড়-ফি। ভদ্রলোক ভেবেছিলেন আমি বোধহয় রোগী। অনেকক্ষণ আমাকে জ্বলন্ত দৃষ্টিতে দেখলেন। একটা টেবিল, এপাশে আমি, ওপাশে সাইকোলজিস্ট। তিনি বসে আছেন আরামদায়ক একটা চেয়ারে। যে চেয়ার গোল হয়ে ঘোরে। সামনে-পেছনে দোলে।

হঠাৎ আদেশ করলেন, ‘ডান হাতটা সামনে বাড়িয়ে উঁচু করে ধরে রাখুন, যেভাবে অয়েল। পেন্টাররা ছবি আঁকে।’ আমি আমার ডান হাতটা সামনে উঁচু করলুম। সেইভাবে ধরে রাখলুম কিছুক্ষণ। মাথার ওপর আলো ঝুলছে। হাতের ছায়া পড়েছে টেবিলের ওপর। ভদ্রলোক সেই ছায়ার দিকে তাকিয়ে আছেন। মিনিট দুয়েক ওইভাবে রাখার পর বললেন, ‘নামান।’

হাত নামালুম। তিনি চেয়ারের পেছনে এলিয়ে পড়লেন। সেই আয়েশি অবস্থায় প্রশ্ন করলেন, ‘রাতে ভালো ঘুম হয়?’

‘কার কথা বলছেন?’

‘আপনার। আপনার ভালো ঘুম হয়?’

সাইকোলজিস্টরা সাধারণত মিষ্টি গলায় কথা বলেন। কারণ মনোরোগের তো কোনও ওষুধ নেই। শুধু কথা। কথা দিয়ে, কথা দিয়ে রোগীর ভেতরে যা জমে আছে সব বের করে আনেন। আমি বললুম, আমার ঘুম হওয়া, না হওয়ার ওপর, আমার স্ত্রীর ভালোমন্দ নির্ভর করে কি?’

‘কেন করবে না। বিছানায় সারারাত ছটফট করলে পাশে যে শুয়ে থাকে তার অসুবিধে হবে না! ভীষণ অসুবিধে হয় ভাই! আমি প্রথমে আপনাকে ঘুম পাড়াতে চাই।’

প্রেসক্রিপশান লেখার জন্যে ডাক্তারবাবু প্যাড টেনে নিলেন। আমি বললুম, ‘আমার বেশ ভালোই ঘুম হয়। গভীর নিদ্রা। বিছানায় পড়ামাত্রই আমার নাক ডাকতে শুরু করে।’

প্যাড থেকে কলম তুলে ডাক্তারবাবু বললেন, ‘নিজের নাক ডাকা শুনতে পান? তার মানে ঘুমে লিক আছে।’

‘ঘুমে লিক মানে? ঘুম কি চৌবাচ্চা?’

‘ঘুম হল চাদর। মানুষ মারা গেলে চাদর চাপা দেয় জানেন তো? সেই চাদরকে বলে ‘শ্রাউড’। ঘুম হল সেই চাদর। সেই চাদরে ফাঁকফোকর থাকলেই মানুষ স্বপ্ন দেখবে, নাক ডাকার শব্দ শুনবে।’

‘আমার নাক ডাকে না। আমি বললুম কথার কথা।’

‘স্বপ্ন দেখেন?’

‘দেখি।’

‘কী জাতীয় স্বপ্ন?’

মনে থাকে না।’

‘তার মানে স্মৃতি কাজ করছে না। স্মৃতিটাকে মেরামত করতে হবে। তাহলে ওইদিক থেকে শুরু করা যাক। একটা ওষুধ থাকছে, সাত দিন খাবেন।’

আমি ভীষণ উত্তেজিত হয়ে বললুম, ‘আমার স্মৃতি চাই না। জীবনের সব পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। আমি ভুলতে চাই।’

‘বুঝেছি, বুঝেছি, এই সব অসুখের পেছনে সবসময় একটা বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা থাকে। রোগী আপ্রাণ চেষ্টা করে ভোলার। ভুলতে পারে না। ছটফট করে, তখন সে ভেতর থেকে ভেঙে দু-খণ্ড হয়ে যায়। একে আমাদের ভাষায় বলে প্লিট পারসোন্যালিটি। এর পর তো আপনি মশাই ক্রিমিন্যাল হয়ে যাবেন। কোনদিন মার্ডার করে ফেলবেন।’

‘আপনি ধরেছেন ঠিক, সত্যিই আমি একদিন খুন করে ফেলব। একদিন ধরব আর গলায় চালিয়ে দোব।’

‘অ্যায়, এই সন্দেহটাই করেছিলুম। প্রথম প্রথম এই রকম ইচ্ছেই হবে। পরের স্টেজে ইচ্ছে করবে আত্মহত্যা করতে।’

‘আপনি কার কথা বলছেন?’

‘কেন আপনার কথা!’

‘ধুর মশাই, আমি রোগী হতে যাব কেন? রোগী আমার বউ।

সাইকোলজিস্ট তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন, ‘আপনার বউ যদি রোগী হয়, আপনি এসে মরেছেন কেন? যান তাঁকে নিয়ে আসুন।’

‘সে যদি আনতে পারতুম, তাহলে আপনার কাছে আসব কেন?’

‘পাগলামির চিকিৎসা বকলমে হয় না। রোগীকে যদি আনতে পারেন হবে, না হলে হবে না।’

বয়স্ক মানুষ। রেগে গেছেন। এই এতটা সময় আমার সঙ্গে বৃথাবকবক করলেন। এই বকবক করাকে এঁদের ভাষায় বলে সিটিং। আমি অসহায়ের মতো বসে আছি। তিনি আমার দিকে নয়, তাকিয়ে আছেন সিলিং-এর দিকে। হঠাৎ মনে হয় দয়া হল, জিগ্যেস করলেন, ‘কেসটা কী?’

আমি যেন হালে পানি পেলুম। সেই কোথা থেকে কোথায় এসেছি কত আশা নিয়ে। বেশ গুছিয়ে বললুম, আমার কেসটা কী! বেশ মন দিয়ে শুনলেন। শুনে বললেন, ‘আপনার স্ত্রীর এইরকম ব্যবহারের কারণ অতীতের তিক্ত স্মৃতি।’

‘অতীতে তার সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল না। এই তো সবে বছর তিনেক বিয়ে হয়েছে আমাদের।’

‘খোঁজ নিয়ে দেখুন আপনার মতো দেখতে আর একজন কেউ আছে!’

‘তা কী করে হয়! আমার কোনও যমজ নেই। এই এক পিস আমিই পৃথিবীতে ঘুরছি।’

‘পথিবী সম্পর্কে আপনার ধারণা এত কম! ভালো করে মন দিয়ে শুনুন, অনেকটা আপনার মতো। দেখতে আর একজন লোক অতীতে কোনও একসময় আপনার স্ত্রীকে রেপ করেছিল।’ আমি চমকে উঠলুম, ‘অ্যাঁ, সে কী! বলেন কী? কোথায় সে, আমি তাকে খুন করব।’

‘উত্তেজিত হবেন না! খুন করলে মানুষকে জেলে যেতে হয়। বিচারে ফাঁসি হয়। এতে আপনার লাভ কিছু হবে না, নিজের জীবনটাইনষ্ট হবে।’

‘তাহলে! তাহলে কী হবে?’

‘কী আবার হবে! কিছুই হবে না। এইভাবেই সারা জীবন চালাতে হবে। চেহারা তো আর পালটাতে পারবেন না। ভগবানের ওয়ার্কশপ থেকে যা বেরিয়ে এসেছে তার ওপর আর কারিকুরি চলবে না।’

‘তার মানে অন্যের পাপের বোঝা সারাজীবন আমাকে বয়ে বেড়াতে হবে?

‘হবে! কী আর করবেন! আপনার স্ত্রীর দিকে আপনি যেই এগোচ্ছেন তাঁর চোখের সামনে নেমে আসছে কুয়াশার পর্দা। তাঁর অতীত। তিনি দেখছেন, এগিয়ে আসছেন আপনি নয়, সেই রেপিস্ট। দুটো হাত যেন দুটো থাবা। মুখটা হায়নার মতো, ভল্লুকের মতো, গোরিলার মতো। তিনি ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছেন। আপনি এগোচ্ছেন ধীরে ধীরে। আপনার প্রেম নিয়ে, ভালোবাসা। নিয়ে, অবেগ নিয়ে। আপনি কিছুই জানেন না। জানার উপায়ও নেই। মনোজগতের ব্যাপার। সাব-কনসাস। আপনি আরও কাছে গিয়ে স্ত্রীর কাঁধে হাত রাখার জন্যে একটা হাত বাড়ালেন।

সঙ্গে সঙ্গে চিঙ্কার। চারপাশ থেকে সবাই ছুটে এল।’

‘না, চিৎকার করে না। সরে যায়। কেমন যেন একটা ঘৃণার ভাব। যেন পচা মাছের গন্ধ থেকে পালাতে চাইছে।’

‘হয়েছে কী! এরপর চিৎকার করবে। তারপর হাতের কাছে ধারালো কিছু পেলেই বসিয়ে দেবে গলায়। খুব সাবধান!’

‘কীভাবে সাবধান হব?’

‘কেন, শত হস্তেন। ত্রিসীমানায় যাবেন না।’

‘তা হলে বিয়ে করার মানেটা কী হল?’

‘ওরকম হয়। কারুর কারুর জীবনে এরকম হয়। কী করা যাবে?’

‘কী করা যাবে মানে? আমার স্ত্রীকে ধরে আচ্ছা করে দাওয়াই দিয়ে দিন।’

‘আমাকে ধমকালে কী হবে! ধমকান আপনার ভাগ্যকে। খুঁজে বের করুন সেই অপরাধীকে যে আপনার স্ত্রীকে রেপ করেছিল। ঠিক আপনার মতো চেহারার একটা লোক আছে।’

আমি মন খারাপ করে ফিরে এলুম আমার কর্মস্থলে। আমার মতো আর একটা লোক আছে, যে জোর করে আমার স্ত্রীকে ভোগ করেছিল। কে সেই রাসকেল? তাঁকে খুঁজে বের করতেই হবে। সে নিশ্চয় আমার শ্বশুরবাড়ির তরফের কেউ। সাহস করে আমার স্ত্রীকে জিগ্যেস করতেও পারছি না।

একদিন শ্বশুরবাড়ি গিয়ে কায়দা করে, দেওয়ালের ছবি, অ্যালবামের ছবি সব দেখলুম। নাঃ, কোথাও আমার মতো চেহারার কেউ নেই।

সেই দিন, সেই দিনের কথা আমি কোনওদিনও ভুলব না। সেদিন আমি মরিয়া। হয় এসপার না হয় ওসপার। আমার স্ত্রী শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিল। ঘরের দরজা ভেজানো ছিল। ঠেলে ঢুকলুম। কবজায় তেল কমেছে। সামান্য শব্দ হতেই ফিরে তাকাল। বিরক্ত হয়ে জিগ্যেস করল, ‘কী চাই?

‘তোমার কাছে আজ একটা সত্য জানতে চাই। বিয়ের আগে আমার মতো চেহারার কেউ একজন তোমাকে রেপ করেছিল। কে সে? আমি জানতে চাই কে সে?

ছোট্ট একটা উত্তর পেলুম ‘ছোটলোক। ইতর।’

পরের দিনই আমার স্ত্রী চলে গেল। চলে গেল বাপের বাড়ি। সে আর এখন আমার স্ত্রী নয়। কোনও সম্পর্ক নেই তার সঙ্গে। আমি কেবল খুঁজতে লাগলুম, কে সেই লোক! যে আমার আকৃতি নিয়ে আমারই সর্বনাশ করে গেল। মেয়েটাকে আমার বেশ পছন্দ হয়েছিল। বড় মিষ্টি ছিল সে।

আমি পাগলের মতো খুঁজতে লাগলুম। তাকে আমার চাই। সেই লোকটাই এখন আমার ধ্যানজ্ঞান। আমি কোথায় পাব তারে। সেদিন মাঝরাতে আমার নির্জন ঘরে তাকে পেয়ে গেলুম। আয়নার সামনে দাঁড়াতেই তাকে পেয়ে গেলুম। সেই বিশ্রী, কামুক লোকটা ফুলো চোখে বিষম বিপন্ন মুখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। চিৎকার করে বললুম, ‘রাসকেল।’

কোলনের শিশিটা ছুড়ে মারলুম তাকে। ঝনঝন শব্দ করে আয়নাটা ভেঙে পড়ল। লোকটা আর নেই! সারা ঘরে ভুরভুর করছে বিলিতি কোলনের গন্ধ। মারতে পেরেছি। যতক্ষণ না আর একটা আয়না আসছে ততক্ষণ সেই লোকটা মৃত। যে আমার স্ত্রীর ওপর অত্যাচার করেছিল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *