রাখাল
কৃষ্ণ যদি ছন্দ হতো কবি তাকে রাখতেন রাখাল
দিতেন পাঁচন হাতে, সে ধেনু চরাতে যেতো বনে
বালিকার হাতে কবি দুপুরের ভাত পাঠাতেন
লাগিয়ে দিতেন তাকে ভারী ভারী ব্রজাঙ্গনাদের
পিছনে, বিরক্ত করতে, জ্বালিয়ে মারতে সারাবেলা
বৃষ্টি ক’রে কবি তাকে ঝরাতেন ক্ষণে ক্ষণে আয়ান ঘোষের গৃহিণীর
কেশে, বেশে, এখানে, সেখানে—তার হাতে ধরাতেন
ফ্লুট—তাকে বলতেন ‘যা, গিয়ে যাত্রার দল খোল্।
সিরিয়াল তৈরি কর, শ্রীকৃষ্ণ প্রেজেন্টস, যুগে যুগে
তুই তো সম্ভব, তবে
মা আমি মাখন খাইনি মা আমি মাখন খাইনি বলে,
পর্দায় নিজের কণ্ঠে গান গাইলেই হয়! পাবলিক মোহিত হয়ে যাবে⋯
হতো, যদি ছন্দ হতো, কবি তাকে রাখতেন রাখাল, কবি, সকালবিকাল
প্রেমে পড়াতেন আর পাড়ায় পাড়ায় তাকে বহুরূপে অবতীর্ণ ক’রে
কালো কালো মেয়েগুলোর কিছু একটা গতি ক’রে দিতে বলতেন—
‘তুই কিছু ব্যবস্থা কর, বরপক্ষ এত চাইছে পেরে উঠবো না,
আজ কিংবা কাল
তোকে তো আসতেই হবে, তুই এসে ব্যাটাদের খিঁচে দিবি খাল,
সবাই তাকিয়ে আছে তোর দিকে, কবির রাখাল!’
অথচ মুশকিল হচ্ছে, এখন কৃষ্ণের মুখে চাপ দাড়ি, গালে কাটা দাগ
লাল গেঞ্জি, ঝাঁকড়া চুল, কৃষ্ণ বসে চুল্লুর আড্ডায়
গোপের বালক নিয়ে একবার এ দলে ঢোকে, একবার ও দলে
মাঝে মাঝে চলে যায় অতিথি ভবন—
ছাড়া পায়, ফিরে আসে, আবার শেল্টার নেয়—(কবি কি তাহলে
কৃষ্ণের জামিন নিতে টিকি বেঁধে রাখবেন খুঁটিতে?)
এখন কৃষ্ণের লক্ষ্য; সুদামার লাশ ফেলে দেওয়া
সুদামাও কম যায় না, তার কাছেও খবর আছে, সঙ্গীসাথী নিয়ে
সেও ঠিক, সন্ধে থেকে, তৈরি আছে ব্রীজের তলায়
দুইদলই ধর্মপক্ষ, দুইদলই নারায়ণী সেনা
দুদলেই আপাতত পাঁচজন পাঁচজন⋯
ঘুমন্ত জি আর পি থানা, লাল আলো, ইয়ার্ডের ঘটাং ঘটাং
লাইনের এপার—আর—লাইনের ওপার
মাঝখানে নিয়তি প্রস্তুত। মাঝখানে ঘটনঅঘটন
সবার নিঃশ্বাস বন্ধ, বিড়ি জ্বলছে:এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ
এবার এ লাইন দিয়ে পাস হবে মালগাড়ি, চাল গম কয়লার ওয়াগন⋯