১৬. যুবকদের ধর্মজীবন
যুবকদের ধর্মজীবন বলে কিছু নেই। যখন যৌবনের উত্তেজনা তার শিরায় শিরায় নৃত্য করে, তখন উচ্ছৃঙ্খলতা, সৎ নিয়মের অবমাননাই হয় তার জীবনের শ্রেষ্ঠ বিষয়। যে। যৌবন ঈশ্বরের আরাধনায় নিবেদিত হল না, বৃথাই সে যৌবন। যা কিছু শ্রেষ্ঠ ও সুন্দর সাধনা–তার শ্রেষ্ঠ সময়ই যৌবনকাল। এই সময় যদি কদর্য শয়তানী প্রভাবে আত্মা অধঃপতিত হয়, তবে আর সে জীবনের উদ্ধারের আশা নেই। যৌবনের রক্তই আল্লাহ্ চান। আল্লাহর পূজা জানে, না করতে পারে?
সমস্ত রিপুকে দমন করে, যৌবনের তাবৎ সৌন্দর্য প্রভুর পাদপদ্মে নিবেদন কর। কে কবে ছিন্ন কুসুম দিয়ে দেবতার পূজা করে? যে জীবন দুর্বল, বার্ধক্যভারগ্রস্ত, জরাজীর্ণ, বলহীন সে জীবন কি আল্লাহর আরাধনার যোগ্য? তপস্যার প্রকৃষ্ট সময়ই যৌবন–হায়, এই যৌবনকালে যে প্রভুর এবাদত ত্যাগ করে বিফলে কাটিয়ে দিল–আক্ষেপ তার জন্যে!
বুড়াকালে আপনাআপনি খোদার নাম পড়বে। বুড়াকালে বেশ্যাও ধার্মিক হয়। যদি যৌবনে আল্লাহর ফকির হতে পার, সেই হয় শ্লাঘার বিষয়।
মহিলা ঋষি রাবেয়া তার যৌবনই নিবেদন করেছিলেন আল্লাহর পায়ে। যৌবনেই তার ফকিরি হাসেল হয়েছিল, তার নির্মল শুভ্র, প্রেমময় আত্মার ভক্তি বাণীর তুলনা কোথায়? যৌবনের অমন মহৎ আত্মোৎসর্গ কোথায় দেখা যায়? কী সুন্দর! কী সুন্দর! তিনি আজীবন অবিবাহিতা ছিলেন। যে প্রেমের স্বাদ পেয়েছে বিবাহ সংসার বন্ধন কি তার আর ভালো লাগে? সংসার কী?–এ কেবল ভস্ম মাটি আর আবর্জনা। যুবকেরা একেই পরম উপাদেয়, পরম সুন্দর পদার্থ বলে জানে। যার চোখের ঘুম ভেঙ্গেছে–সেই বুঝেছে, প্রভু কী?–সংসার কী?
কি নিয়ে মানুষ ডুবে থাকে সংসারে? সংসারের কি দেখে ছেলেরা সংসারের জন্যে এতো পাগল হয়। প্রভুর মহিমাময় প্রেমময় আহ্বান নিত্য যৌবনের কাছে থাকে, সে তা উপেক্ষা করে ছোটে বিপরীত দিকে কীসের লোভে, কিসের মায়ায়, কিসের আকর্ষণে?
একটি যুবক একদিন বলেছিল, নারীই অমর ঈশ্বর! পাঁচ বছর পরে তার ভিতর আর সে ভক্তি দেখা গেল না। কোথায় গেল তার মাদকতা, এত আকর্ষণ নারীর জন্যে?
নিত্য মারামারি, কলহ, শৃগাল-কুকুরের মতো কাড়াকাড়ি দ্বেষ-হিংসা, ঘৃণিত সাংসারিক বিষয়ে প্রতিযোগিতা, আড়াআড়ি, অর্থলোভ, স্বার্থপরতা, সম্পত্তি, অট্রালিকা এই-ই কি মানব-জীবনের শ্রেষ্ঠ আকর্ষণের বস্তু? কয়দিন এগুলি ভোগ করতে পারবে? শেষকালে কোথায় যাবে?
.
১৭. জীবনে ফকরামি ও চালবাজী
দুই একটি যুবক এত ধাপ্পাবাজ, মিথ্যাবাদী, তা আর বলা যায় না। এসব ধাপ্পাবাজী করে তাদের লাভ হয় না, তবু তারাও না করে পারে না। নিজের একটুখানি সুবিধার জন্যে, শত মিথ্যা বলতে একটু লজ্জা এদের নেই।
কোনো কোনো যুবক শঠামিতে বেশি বিশ্বাসী। সত্যে কিছু মাত্র শ্রদ্ধাশীল নয়। মিথ্যা বলতে একটুও লজ্জা নেই। সর্বদা নিজের লাভের লোভে জোড়াতালি দিয়ে, অসরলভাবে কথা বলে। কথায় এদের বিন্দুমাত্র সরলতা নেই।
বিপদে পড়লে এরা কুকুরের মতো নত হয়। একটু শক্তি লাভ করলে পুনরায় আপন শঠতাপূর্ণ পথ গ্রহণ করে। দয়া, মনুষ্যত্ব, ত্যাগস্বীকার, পরোপকার–এদের কাছে স্বপ্ন, জীবনের খেয়াল মাত্র। এরা কখনও ধর্ম কথা শুনতে চায় না–ওসব বিশ্বাসও করে না। এদের ভয়াবহ জীবনের স্পর্শে যারা আসে তারাই বিপদে পড়ে।
এরা বেশ মিষ্টি কথা বলে–এদের মন্দ বলে ধরবার কোনো উপায় নেই। শুধু একটু ব্যবহার করলেই বোঝা যায়–এদের প্রকৃতি। এদের বিষ কোথায় লুকানো থাকে, তা প্রথমাবস্থায় মোটেই বুঝতে পারা যায় না। শেষকালে এদের পতন অপরিহার্য। আপন জালে আপনি আবদ্ধ হয়ে এরা শোচনীয় দুর্গতি লাভ করে। সত্য ও ধর্ম পথই একমাত্র। মানুষের জীবন ও কল্যাণের পথ। সত্যপন্থী হেরেও শেষ কালে জয়ী হয়।
.
১৮. প্রভু ভৃত্য
আজকাল দেখা যায় যুবকেরা প্রভুর অধীন কার্য করে প্রভুর অন্নে প্রতিপালিত হয়; কিন্তু মনে মনে প্রভুর প্রতি ষোল আনা অকৃতজ্ঞ থাকে। যিনি অন্ন দিয়ে পালন করেন, তিনি পিতার তুল্য। তার নিকট কৃতজ্ঞ থাকা সর্বতোভাবে কর্তব্য।
প্রভুকে অমান্য করা, তার নিন্দা করা, তার কার্য ষোলআনা না করা, ভৃত্যের উচিত নহে। প্রভুর মঙ্গল সর্ব প্রকারে অন্বেষণ কর–তাই প্রকৃত ধার্মিক ভুত্যের কাজ।
কোনো কোনো যুবক বলেন, অপরের দাসত্ব করা আমার পক্ষে শোভা পায় না। এ উদ্ধত শয়তানের ভাব ছাড়া কিছু নহে। অতি শ্রেষ্ঠ লোককেও সময় অবস্থাচক্রে কারও দাস হতে হয়, তাতে লজ্জার কিছু নেই। আলস্য করে জীবন নষ্ট করা পাপ। হয় নিজের কাজ, না হয় পরের কাজ কর। শক্তি ও জীবন ব্যর্থ কর না। সেবা ও দাসত্ব ছাড়া জগৎ চলে না। যতক্ষণ অপরের দাসত্ব কর, ততক্ষণ প্রভুর কাছে অহঙ্কারের পরিচয় দিও না। প্রভুর কাছে সর্ব প্রকারে নত হও–তুমি যতই পণ্ডিত ও শ্রেষ্ঠ হও যার কাছে দাসত্ব স্বীকার করেছ, তিনি মূর্খ ও ছোট হলেও তোমার প্রভু তিনি। প্রভুর মঙ্গল কামনা করাই ভৃত্যের ধর্ম। কারও সেবা করায় মানুষের অপমান হয় না, যদি পরিপূর্ণ সেবা দ্বারা প্রভুর সন্তুষ্টি সাধন করতে পার তাতেই মনুষ্যত্ব ও মহত্ত্ব প্রকাশ পাবে। প্রভু হয়েও মানুষ মনুষ্যত্বে এবং কর্তব্য পালনে আপন ভৃত্যের কাছে ছোট হতে পারেন। ছোট ও বড় হও,–যিনি জীবনে আপন কর্তব্য পূর্ণভাবে পালন করতে পারেন, তিনিই মহৎ। রেলের একজন কুলিও মহৎ ব্যক্তি হতে পারে। একজন ডেপুটির আদালিও মনুষ্যত্বে ডেপুটির চাইতে শ্রেষ্ঠ হতে পারে। যে নমস্কার পায়, সেই শ্ৰেষ্ঠতা বলা যায় না। যে নত হয়ে প্রভুকে নমস্কার করে সেই মনুষ্যত্বে হয়তো প্রভু অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।
যে জীবনে আপন কর্তব্য পূর্ণভাবে করতে পারে সেই বড়। যে বিশ্বাস-ঘাতক, আলস্যপরায়ণ, উচ্চাসনে বসে থাকলেও সে ছোট।
নমস্কার করতে কখনও লজ্জাবোধ করো না। নমস্কার করলে মানুষ ছোট হয় না সে বড়ও হতে পারে। প্রভুর কাছে যত ছোট ও নত হও ততই ভালো। প্রভুকে যত প্রকার সেবা করতে পার, কর। আজকাল অকৃতজ্ঞতা, অবাধ্যতা ও ঔদ্ধত্যের যুগ পড়েছে। মন্দতায় মানুষ উৎসাহশীল, মন্দতায় মানুষ মানুষকে প্রশংসা করে। মানুষ যেন একেবারে ধর্মহীন হয়েছে। অধর্মের যুগ পড়েছে। তাই মানুষও মানুষকে প্রেম করে না। আজ পুত্র পিতার কাছে নত হয় না, প্রজা রাজাকে শ্রদ্ধা করে না, স্ত্রী স্বামীকে অপদস্ত করে, ভৃত্য প্রভুকে মান্য করে না। ফলে মানুষের যথার্থ উন্নতি হয় না। প্রত্যেকে প্রত্যেককে অবিশ্বাস করে–ফলে কাউকে কেউ ভালোবাসে না। শিক্ষা মানুষকে যেন পশু করেছে। যেন চড়াছড়ি, মারামারি, খুনোখুনি দ্বারাই জগৎ চলবে। প্রেম, সেবা, মনুষ্যত্ব, দয়া, ভালোবাসার প্রভাব যেন মানব সমাজে আর নেই। রাস্তার ভিক্ষুক রাস্তাতেই মরতে থাকবে। এই হচ্ছে এখনকার মানুষের কথা। কেউ কারো দিকে তাকাবে না।
কিন্তু এটি ঠিক পথ নয়। যা শয়তানি ভাব তা কখনও শান্তির পথ নয়। জগতে একটি সাংঘাতিক উলট পালট আসবে, তারপর মানুষ এক নূতন ধর্মের সন্ধান পাবে। সহজে মানুষের চৈতন্য হয় না।
.
১৯. Honourable ব্যবহার
যে ব্যবহার গলদশূন্য তাকেই Honourable ব্যবহার বলে। দোষশূন্য মহৎ ব্যবহার ভদ্রলোকের জীবনের ভূষণ। জনৈক পুলিশ ইনস্পেক্টর জীবন ভরে একটি নির্দোষ ব্যক্তিকে ক্রোধের বসে দুঃখ দিয়াছিলেন, শেষকালে একদিন অতিশয় বিপন্ন হয়ে এই ব্যক্তির হাতে পড়েন। ভদ্রলোক ইচ্ছা করলে পুলিশ কর্মচারীকে যারপরনাই অপদস্থ করতে পারতেন। কিন্তু সে কথা একবর্ণও না তুলে তিনি তাকে অতিশয় সমাদরের সঙ্গে গ্রহণ করলেন, তাকে আহার করালেন, তার জীবন রক্ষা করলেন। এবং যথাসময়ে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিলেন। পরের দিনই কর্মচারী কর্মত্যাগ করে তার জীবনব্যাপী পাপের প্রায়শ্চিত্ত করলেন। সেই ভদ্রলোকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, বালকের মতো তার সম্মুখে অশ্রু বিসর্জন করলেন।
যা উন্নত, মহৎ, দোষশূন্য ব্যবহার–তার সম্মুখে অতি দূরাচার ব্যক্তিও লজ্জায় মাথা নত করে। উন্নত মহৎ ব্যবহার সর্বদা ক্ষমাশীল প্রতিহিংসা বর্জিত, এবং পিতার স্নেহের মতো গভীর, সহিষ্ণু এবং …। বিবাহের রাত্রে এক যুবক অন্যায় করে এক যুবতী নারীকে অসতী বলে বিবাহ ভেঙ্গে দিলেন। বিবাহ মজলিস ভেঙ্গে গেল। এ জীবনে আর তার বিবাহ হল না। একবার এই যুবকের নিউমোনিয়া হল। এই যুবতী নারী যুবকের বিছানা পার্শ্বে তিন মাস বসে থেকে, তার সেবা করে তাকে রোগ মুক্ত করলেন। ভালো হয়ে যুবক চেয়ে দেখলেন, যে নারী–জীবনকে তিনি অন্ধকার করে দিয়েছেন, সেই তাকে বাঁচিয়েছে। যুবক মা বলে প্রৌঢ়ার (এখন তিনি প্রৌঢ়া) পা ধরে ক্ষমা ভিক্ষা করলেন। নারী বল্লেন–আমি সেকথা ভুলে গেছি ভাই, অনেক দিন।
এক পীড়িত ভ্রাতাকে তার দুই কনিষ্ঠ ভ্রাতা সর্বস্ব বঞ্চিত করেছিলো। পীড়াকালের অনেক সময় অনেকদিন পীড়িত ভ্রাতার পরিবারবর্গ উপবাস করে থাকতেন, দুই কনিষ্ঠ ভ্রাতা স্বচ্ছল অবস্থায় থেকে সে দিকে ফিরেও তাকাতো না। ভ্রাতা যখন সুস্থ হয়ে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হলেন, সেই সময় দুই কনিষ্ঠ ভ্রাতার দুর্গতির সীমা রইল না, তখন জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা উভয় ভ্রাতার ছেলেমেয়েদের ভার গ্রহণ করলেন। গত জীবনের কথা একটিবারও উচ্চারণ করলেন না। এরই নাম নিষ্কলঙ্ক, দোষশূন্য, মহৎ ব্যবহার–যা রাজার মুকুটের মতো গৌরবের ভূষণ।
কোনো এক জমিদার মৃত্যুকালে তার দ্বিতীয় পত্নীর প্ররোচনায় পূর্ব স্বামী-জাত ও প্রবাসী তার পুত্রকে সমস্ত সম্পত্তি দান করে যান। তার মৃত্যুর পর তাঁর প্রথমা পত্নীর জ্যেষ্ঠ পুত্র কিছু সন্দেহ না করে পিতার বিশাল সম্পত্তি যেন উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়ে থেকে পিতার সম্পত্তি চালাতে লাগলেন! তিন বৎসর পরে হঠাৎ বিমাতার পুত্র এসে বললো–এ সম্পত্তিতে আপনার কোনো অধিকার নেই। ভদ্রলোক কোনো প্রকার রোষ প্রকাশ না করে। তৎক্ষণাৎ হাসিমুখে জমিদারি ত্যাগ করে দরিদ্রের জীবন যাপন করতে লাগলেন। বিমাতার। পুত্র কিছুমাত্র বিবেচনা করলেন না। সে জন্য তিনি কোনো দিন অনুযোগ করেন না।
বহু বছর পর হঠাৎ বিমাতার পুত্র এই যুবক মারা গেলেন। তার ছোট যিনি তিনিও সুন্দরবনে ব্যাগ্র শিকার করতে যেয়ে মারা গেলেন। তখন বাধ্য হয়ে পিতার প্রথম জ্যেষষ্ঠপুত্র আবার স্ব-সম্পত্তির গদিতে বসলেন। সুখ-দুঃখে, সৌজন্যে দারিদ্র্যে তাঁর সমান ভাব। মুখে অহঙ্কার, আস্ফালন, দারিদ্র-দুঃখে দীর্ঘনিশ্বাস, অনুযোগ, মারামারি, কুৎসা রটনা কিছুই নেই। এরাই honourable motive-এর লোক।
.
২০. যুবকদের পড়াশুনা
সারা বৎসর বসে থেকে পরীক্ষার পূর্বে চোখে অন্ধকার দেখা, কোনো কোনো সময় পড়া ছেড়ে দেওয়া, পালিয়ে যাওয়া, আত্মহত্যা করা কোনো কোনো যুবকের স্বভাব। যুবক, হতাশ হয়ো না! বিশ্বাস করো, সহিষ্ণু হয়ে পড়তে শুরু করো। পাহাড় বলে যা মনে হচ্ছে তা মিষ্টি হালুয়া বলে মনে হবে। যা ভুল হয়েছে, তা হয়েছে–যে সময়ই থাক সহিষ্ণু হয়ে। পড়া শুরু কর–দেখতে পাবে কয়েকদিনেই অনেকটা এগিয়ে গেছ। বসে বসে ভাবলে, কিছু লাভ হবে না–ওতে যা পারতে তাও পারবে না। যে তোমার চাইতে ভালো জানে, সে আপন সহপাঠী হলেও অহঙ্কার ত্যাগ করে, তার কাছে বুঝে নাও তাতে কোনো লজ্জা নেই। অহঙ্কার করলেই ঠকবে। যে বেশি জানে, তার কাছে যেয়ে নত হয়ে পড়াশুনা নেওয়া খুব ভালো। মেধাবী ছেলে শিক্ষকের মতো সহপাঠীকে পড়িয়ে দিতে পারে। অহঙ্কার করে আজ তার কাছে যাচ্ছ না, কাল সে তোমাকে ছেড়ে উচ্চ শ্রেণীতে চলে যাবে। তুমি প্রকাশ্যভাবে যেখানে আছ সেখানেই পড়ে থেকে অর্থ সম্মান দুই হারাবে।
অনেক যুবক ভাবে, আমি খুব জানি। এই ধারণাও সর্বনাশের মূল। কুকুর বেশি দৌড়াতে পারলেও অনেক সময় কচ্ছপের কাছে হেরে যায়।
বৎসরের প্রথম থেকেই প্রত্যেক দিনকার পড়া প্রত্যেকদিন করবে-কখনও আলস্য করে ফেলে রেখো না। তাতে মাথায় পাহাড় চাপবে। একদা হযরত মুছা আদিষ্ট হলেন, কাল প্রাতে প্রথমেই মাঠে যা দেখতে পাবে তাই আহার করবে। প্রাতঃকালে মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখলেন–একটা বিরাট পাহাড়। পাহাড় দেখে মুছা ভীত হলেন, কিন্তু খোদার আদেশ অমান্য করা চলে না, তিনি অগ্রসর হতে লাগলেন। যতই নিকটবর্তী হতে লাগলেন। ততই বৃহৎদর্শন পাহাড় ছোট হতে লাগলো। নিকটে যেয়ে দেখলেন–পাহাড় নয়, এক টুকরা হালুয়া। পরম আনন্দে মুখে ফেলে দিয়ে সুস্বাদু হালুয়াটুকু খেয়ে ফেল্লেন।–এর। শিক্ষা হচ্ছে দূর থেকে কাজকে কঠিন বলে মনে হয়–চেষ্টা করলে কাজ অতি সহজ হয়ে ওঠে। কাজ দেখে কখনও ভয় পেয়ো না–একটু একটু করে চেষ্টা কর।
যেসব যুবক অনর্থ অত্যধিক শুক্র ব্যয় করে, তারা পাঠে মন সংযোগ করতে পারে। পড়াও তাদের হয় না। অতএব ছাত্রাবস্থায় ব্রহ্মচর্য অবলম্বন করবে, মন্দ সংস্পর্শ ত্যাগ করবে। মন্দ গান, মন্দ পুস্তক, অশ্লীল আলাপ, নারী সংশ্রব ত্যাগ করবে। নইলে কখনও লেখাপড়া হবে না।