2 of 3

ভস্মে ঘি ঢালা

ভস্মে ঘি ঢালা

যে কাজে উপযুক্ত ফল লাভের আশা নেই এমন কাজে পরিশ্রম করা বা অর্থব্যয় করাকে ভস্মে ঘি ঢালা বলা হয়। পণ্ডশ্রমের সাথে প্রবাদটির তুলনা করা যেতে পারে। আমাদের দেশে একটি গল্প প্রচলিত আছে। সেটি নিম্নরূপ—

এক লোক কাজের তাগিদে কিছুদিনের জন্য দূরে গেছে। কাজ শেষে বাড়ি ফিরে সে তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করছে—সঞ্চয় করেছ? ঋণী করেছ? ভস্মে ঘি ঢেলেছ? এর অর্থ হলো অতিথিসেবা করে সে পুণ্যসঞ্চয় করেছে কিনা, পুত্রকে যথাযথভাবে খাইয়ে পরিয়ে ভবিষ্যতের জন্য তাকে ঋণী করেছে কিনা এবং কন্যার লালন-পালন করে ভস্মে ঘি ঢেলেছে কিনা?

কন্যাশিশুর চাইতে পুত্রকে বেশি আদরযত্ন করার রেওয়াজ এদেশে চিরকাল। তাই পূর্বোক্ত কথাটি বলা হলো। আসলে কন্যাসন্তান লালন- পালন করা যে ভস্মে ঘি ঢালা নয় তা আজকের যুগে অনেকটা প্রমাণিত। আগের দিনে বলা হতো—কন্যা নাম মহদ্দুঃখং ধিগহো মহতামপি। অর্থাৎ-কন্যা জন্মিলে মহৎ ব্যক্তিগণকেও অনেক দুঃখ ভোগ করতে হয়।

অতীতে মাঙ্গলিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যজ্ঞ করার বিধান ছিল। এখনো তার কিছু নমুনা আমরা দেখতে পাই। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যজ্ঞের আদলে পুরোহিতদের অনেকেই হোম করেন আগুন জ্বেলে। ঐ আগুনে মন্ত্রোচ্চারণ করে দেবতার উদ্দেশে আহুতি দেয়া হয় ঘি দিয়ে। এতে দাহ্য কাঠখড়ি বেশ ভালোভাবে পুড়তে পারে। দাহ্য পদার্থ পুড়ে ছাই হবার পর ঐ ছাইয়ের মধ্যে ঘি দেয়ার কোনো অর্থ হয় না কারণ সেটি কারো উদ্দেশ্য হতে পারে না।

কাজের সময় কাজ না করে কাজকে নষ্ট করে তার জন্য পরে পরিশ্রম ও অর্থব্যয় করার সার্থকতা নেই বলে সেটি ভস্মে ঘি ঢালার সঙ্গে তুলনীয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *