প্রথম আপত্তি

প্রথম আপত্তি।

এরূপ কতগুলি লোক আছেন যে বহুবিবাহপ্রথার দোষকীর্ত্তন বা নিবারণকথার উত্থাপন হইলে, তাঁহারা খড়গহস্ত হইয়া উঠেন। তাহাদের এরূপ সংস্কার আ ছে, বহুবিবাহকাণ্ড শাস্ত্রানুমত ও ধর্ম্মানুগত ব্যাপার। যাঁহারা এ বিষয়ে বিরাগ বা বিদ্বেষ প্রদর্শন করেন, তাঁহাদের মতে তাদৃশ ব্যক্তি সকল শাস্ত্রদ্রোহী ধর্মদ্বেষী নাস্তিক ও নরাধম বলিয়া পরিগণিত। তাঁহারা সিদ্ধান্ত করিয়া রাখিয়াছেন, বহুবিবাহপ্রথা নিবারিত হইলে, শাস্ত্রের অবমাননা ও ধর্ম্মলোপ ঘটিবেক। তাঁহারা শাস্ত্র ও ধর্ম্মের দোহাই দিয়া বিবাদ ও বাদানুবাদ করিয়া থাকেন, কিন্তু, এ বিষয়ে শাস্ত্রেই বা কতদূর পর্যন্ত অনুমোদন আছে, এবং পুরুষজাতির উচ্ছল ব্যবহার দ্বারাই বা কতদূর পর্যন্ত অনার্য্য, আচরণ ঘটিয়া উঠিয়াছে, তাহা সবিশেষ অবগত নহেন। এ দেশে সকল ধর্ম্মই শাস্ত্রমুলক, শাস্ত্রে যে বিষয়ের বিধি আছে, তাহাই ধর্ম্মানুগত বলিয়া পরিগৃহীত, আর শাস্ত্রে যাহা প্রতিষিদ্ধ হইয়াছে, তাহাই ধর্ম্মবহির্ভুত বলিয়া পরিণিত হইয়া থাকে। সুতরাং, বিবাহবিষয়ে শাস্ত্রকারদিগের যে সমস্ত বিধি অথবা নিষেধ আছে, তৎসমুদয় পরীক্ষিত হইলেই, বহুবিবাহকাণ্ড শাস্ত্রানুমত ও ধর্ম্মা নুগত ব্যাপার কি না, এবং বহুবিবাহ প্রথা নিবারিত হইলে শাস্ত্রের অবমাননা ও ধর্ম্মলেপের শঙ্কা আছে কি না, অবধারিত হইতে পারিবেক।  দক্ষ কহিয়াছেন,

অনাশ্রমী ন তিষ্ঠেত্তু দিনমেকমপি দ্বিজঃ।
আশ্রমেণ বিনা তিষ্ঠন্ প্রায়শ্চিত্তীয়তে হি সঃ॥[১]

দ্বিজ, অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, এই তিন বর্ণ আশ্রমবিহীন হইয়া এক দিনও থাকিবে না; বিনা আশ্রমে অবস্থিত হইলে পাতকগ্রস্ত হয়।

এই শাস্ত্র অনুসারে, আশ্রমবিহীন হইয়া থাকা দ্বিজের পক্ষে নিষিদ্ধ ও পাতকজনক। দ্বিজপদ উপলক্ষণমাত্র, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র, চারি বর্ণের পক্ষেই এই ব্যবস্থা।

 বামনপুরাণে নির্দ্দিষ্ট আছে,

চত্বর আশ্রমাশ্চৈব ব্রাহ্মণস্য প্রকীর্ত্তিতাঃ।
ব্রহ্মশ্চর্য্যঞ্চ গ্রার্হস্থ্যং বানপ্রস্থঞ্চ ভিক্ষুকম্।
ক্ষত্রিয়স্যাপি কথিতা আশ্রমাস্ত্রয় এব হি।
ব্রহ্মশ্চর্য্যঞ্চ গার্হস্থ্যমাশ্রমদ্বিতয়ং বিশঃ।
গার্হস্থ্যমুচিতত্ত্বেকং শূদ্রস্য ক্ষণমাচরেৎ॥[২]

ব্রহ্মচর্য্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ, সন্ন্যাস, ব্রাহ্মণের এই চারি আশ্রম নিদিষ্ট আছে। ক্ষত্রিয়ের প্রথম তিন; বৈশ্যের প্রথম দুই, শূদ্রের গার্হস্থ্য মাত্র এক আশ্রম; সে হৃষ্ট চিত্তে তাহারই অনুষ্ঠান করিবে।

এই ব্যবস্থা অনুসারে, সমুদয়ে ব্রহ্মচর্য্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ, সন্ন্যাস, এই চারি আশ্রম। কালভেদে ও অধিকারিভেদে মনুষ্যের পক্ষে এই আশ্রমচতুষ্টয়ের অন্যতম অবলম্বন আবশ্যক; নতুবা আশ্রমভ্রংশনিবন্ধন পাতকগ্রস্ত হইতে হয়। ব্রাহ্মণ চারি আশ্রমেই অধিকারী; ক্ষত্রিয় ব্রহ্মচর্য্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ এই তিন আশ্রমে; বৈশ্য ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য এই দুই আশ্রমে; শূদ্র একমাত্র গার্হস্থ্য আশ্রমে অধিকারী। উপনয়নসংস্কারান্তে, গুরুকুলে অবস্থিতিপূর্ব্বক, বিদ্যাভ্যাস ও সদাচাৱশিক্ষাকে ব্রহ্মচর্য্য বলে; ব্রহ্মচর্য্যসমাপনান্তে, বিবাহ করিয়া, সংসাৱষাত্রাসম্পাদনকে গার্হস্থ্য বলে; গার্হস্থ্যধর্ম্মপ্রতিপালনান্তে, যোগাভ্যাসার্থে বনবাস আশ্রয়কে বানপ্রস্থ বলে; বানপ্রস্থধর্ম্মসমাধানান্তে, সর্ব্ববিষয়পরিত্যাগকে সন্ন্যাস বলে।

 মনু কহিয়াছেন,

গুরুণানুমতঃ স্নাত্বা সমাবৃত্তো যথাবিধি।
উদ্বহেত দ্বিজো ভার্য্যাং সবর্ণাং লক্ষণান্বিতাম্॥ ৩। ৪।

দ্বিজ, গুরুর অনুজ্ঞালাভান্তে, যথাবিধানে স্নান ও সমাবর্ত্তন[৩] করিয়া সজাতীয় সুলক্ষণা ভার্য্যার পাণিগ্রহণ করিবেক।

বিবাহের এই প্রথম বিধি। এই বিধি অনুসারে, বিদ্যাভ্যাস ও সদাচারশিক্ষার পর, দারপরিগ্রহ করিয়া, মনুষ্য গৃহস্থাশ্রমে প্রবিষ্ট হয়।

ভার্য্যায়ৈ পূর্ব্বমারিণ্যৈ দত্ত্বাগ্নীনস্ত্যকর্ম্মণি।
পুনর্দারক্রিয়াং কুর্য্যাৎ পুনরাধানমেব চ॥ ৫। ১৬৮।[৪]

পূর্ব্বমৃতা স্ত্রীর যথাবিধি অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া নির্বাহ করিয়া, পুনরায় দারপরিগ্রহ ও পুনরায় অগ্ন্যাধান করিবেক।

বিবাহের এই দ্বিতীয় বিধি। এই বিধি অনুসারে, স্ত্রীবিয়োগ হইলে গৃহস্থ ব্যক্তির পুনরায় দারপরিগ্রহ আবশ্যক।

মদ্যপাসাধুবৃত্তা প্রতিকূলা চ যা ভবেৎ।
ব্যাধিতা বাধিবেত্তব্যা হিংস্রার্থগ্নী চ সর্ব্বদা। ৯। ৮০[৫]

যদি স্ত্রী সুরাপায়িণী, ব্যভিচারিণী, সতত স্বামীর অভিপ্রায়ের বিপরীতকারিণী, চিররোগিণী, অতিক্রূরস্বভারা, ও অর্থনাশিনী হয়, তৎসত্ত্বে অধিবেদন, অর্থাৎ পুনরায় দারপরিগ্রহ, করিবেক।

বন্ধ্যাষ্টমেহধিবেদ্যাব্দে দশমে তু মৃতপ্রজা।
একাদশে স্ত্রীজননী সদ্যস্তৃপ্রিয়বাদিনী। ৯। ৮১।[৬]

স্ত্রী বন্ধ্যা হইলে অষ্টম বর্ষে, মৃতপুত্রা হইলে দশম বর্ষে, কন্যামাত্র প্রসবিনী হইলে একাদশ-বর্ষে, ও অপ্রিয়বাদিনী[৭] হইলে কালাতিপাত ব্যতিরেকে, অধিবেদন করিবে।

বিবাহের এই তৃতীয় বিধি। এই বিধি অনুসারে, স্ত্রী বন্ধ্যা প্রভৃতি অবধারিত হইলে তাহার জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহ করা আবশ্যক।

সবর্ণাগ্রে দ্বিজাতীনাং প্রশস্তা দারকর্ম্মণি।
কামতস্তু প্রবৃত্তানামিমাঃ স্যুঃ ক্রমশো বরাঃ॥৩। ১২।
শূদ্রৈব ভার্য্যা শূদ্রস্য সা চ স্বা চ বিশঃ স্মৃতেঃ।
তে চ স্বা চৈব রাজ্ঞশ্চ তাশ্চ স্বা চাগ্রজন্মনঃ॥৩।১৩।[৮]

দ্বিজাতির পক্ষে অগ্রে সবর্ণাবিবাহই বিহিত। কিন্তু, যাহারা যদৃচ্ছাক্রমে বিবাহ করিতে প্রবৃত্ত হয়, তাহারা অনুলোমক্রমে বর্ণান্তরে বিবাহ করিবেক; অর্থাৎ ব্রাহ্মণের ব্রাহ্মণী, ক্ষত্রিয়া, বৈশ্যা, শূদ্রা; ক্ষত্রিয়ের ক্ষত্রিয়া, বৈশ্যা, শূদ্রা; বৈশ্যের বৈশ্যা, শূদ্রা; শূদ্রের একমাত্র শূদ্রা ভার্য্যা হইতে পারে।

বিবাহের এই চতুর্থ বিধি। এই বিধি অনুসারে, সবর্ণাবিবাহই ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এই তিন বর্ণের পক্ষে প্রশস্তকল্প। কিন্তু, যদি কোনও উৎকৃষ্ট বর্ণ, যথাবিধি সবর্ণাবিবাহ করিয়া, যদৃচ্ছাক্রমে পুনরায় বিবাহ করিতে অভিলাষী হয়, তবে সে আপন অপেক্ষা নিকৃষ্ট বর্ণে বিবাহ করিতে পারে।

 যে সমস্ত বিধি প্রদর্শিত হইল, তদনুসারে বিবাহ ত্রিবিধ নিত্য, নৈমিত্তিক, কাম্য। প্রথম বিধি অনুসারে যে বিবাহ করিতে হয়, তাহা নিত্য বিবাহ; এই বিবাহ না করিলে, মনুষ্য গৃহস্থাশ্রমে অধিকারী হইতে পারে না। দ্বিতীয় বিধির অনুযায়ী বিবাহও নিত্য বিবাহ; তাহা না করিলে, আশ্রমভ্রংশনিবন্ধন পাতকগ্রস্ত হইতে হয়[৯] তৃতীয় বিধির অনুযায়ী বিবাহ নৈমিত্তিক বিবাহ; কারণ, তাহা স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি নিমিত্ত বশতঃ করিতে হয়। চতুর্থ বিধির অনুযায়ী বিবাহ কাম্য বিবাহ। এই বিবাহ নিত্য ও নৈমিত্তিক বিবাহের ন্যায় অবশ্যকর্ত্তব্য নহে, উহা পুরুষের সম্পূর্ণ ইচ্ছাধীন, অর্থাৎ ইচ্ছা হইলে তাদৃশ বিবাহ করিতে পারে, এইমাত্র। কাম্য বিবাহে কেবল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এই বর্ণত্রয়ের অধিকার প্রদর্শিত হওয়াতে, শূদ্রের তাদৃশ বিবাহে অধিকার নাই।

 পুত্রলাভ ও ধর্ম্মকার্য্যসাধন গৃহস্থাশ্রমের উদ্দেশ্য। দারপরিগ্রহ ব্যতিরেকে এ উভয়ই সম্পন্ন হয় না; এই নিমিত্ত, প্রথম বিধিতে দারপরিগ্রহ গৃহস্থাশ্রমপ্রবেশের দ্বারস্বরূপ ও গৃহস্থাশ্রমসমাধানের অপরিহার্য্য উপায়স্বরূপ নির্দিষ্ট হইয়াছে। গহস্থাশ্রমসম্পাদনকালে, স্ত্রীবিয়োগ ঘটিলে যদি পুনরায় বিবাহ না করে, তবে সেই দারবিরহিত ব্যক্তি আশ্রমভ্রংশনিবন্ধন পাতকগ্রস্ত হয়; এজন্য, ঐ অবস্থায় গৃহস্থ ব্যক্তির পক্ষে পুনরায় দারপরিগ্রহের অবশ্যকর্ত্তব্যবোধনার্থে, শাস্ত্রকারেরা দ্বিতীয় বিধি প্রদান করিয়াছেন। স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব চিররোগিত্ব প্রভৃতি দোষ ঘটিলে, পুত্রলাভ ও ধর্ম্মকার্য্যসাধনের ব্যাঘাত ঘটে। এজন্য, শাস্ত্রকারেরা তাদৃশ স্থলে, স্ত্রীসত্ত্বে পুনরায় বিবাহ করিবার তৃতীয় বিধি দিয়াছেন। গৃহস্থাশ্রমসমাধানা শাস্ত্রোক্তবিধানানুসারে সবর্ণাপরিণয়ান্তে, যদি কোনও উৎকৃষ্ট বর্ণ যদৃচ্ছাক্রমে বিবাহে প্রবৃত্ত হয়, তাহার পক্ষে অসবর্ণবিবাহে অধিকারবোধনার্থ শাস্ত্রকারের চতুর্থ বিধি প্রদর্শন করিয়াছেন। বিবাহবিষয়ে এতদ্ব্যতিরিক্ত আর বিধি দেখিতে পাওয়া যায় না। সুতরাং, স্ত্রী বিদ্যমান থাকিতে, নির্দিষ্ট নিমিত্ত ব্যতিরেকে, যদৃচ্ছাক্রমে পুনরায় সবর্ণবিবাহ করা শাস্ত্রকারদিগের অনুমোদিত নহে। ফলতঃ, সবর্ণাবিবাহান্তর যদৃচ্ছাক্রমে বিবাহপ্রবৃত্ত ব্যক্তির পক্ষে অসবর্ণাবিবাহের বিধি প্রদর্শিত হওয়াতে, তাদৃশ ব্যক্তির তথাবিধ স্থলে সবর্ণাবিবাহ নিষিদ্ধকল্প হইতেছে।

 এরূপ বিধিকে পরিসংখ্যা বলে। পরিসংখ্যাবিধির নিয়ম এই, যে স্থল ধরিয়া বিধি দেওয়া যায়, তদ্ব্যতিরিক্ত স্থলে নিষেধ সিদ্ধ হয়। বিধি ত্রিবিধ অপূর্ব্ববিধি, নিয়মবিধি ও পরিসংখ্যাবিধি। বিধি ব্যতিরেকে যে স্থলে কোনও রূপে প্রবৃত্তি সম্ভবে না, তাহাকে অপূর্ব্ববিধি কহে; যেমন, “স্বর্গকামো যজেত”, স্বকামনায় যাগ করিবেক। এই বিধি থাকিলে, লোকে স্বর্গলাভবাসনায় কদাচ যাগে প্রবৃত্ত হইত না; কারণ, যাগ করিলে স্বর্গলাভ হয় ইহা প্রমাণান্তর দ্বারা প্রাপ্ত নহে। যে বিধি দ্বারা কোনও বিষয় নিয়মবদ্ধ করা যায়, তাহাকে নিয়মবিধি বলে; যেমন, “সমে যজেত”, সম দেশে যাগ করিবেক। লোকের পক্ষে যাগ করিবার বিধি আছে; সেই যাগ কোনও স্থানে অবস্থিত হইয়া করিতে হইবেক; লোকে ইচ্ছানুসারে সমান অসমান উভয়বিধ স্থানেই যাগ করিতে পারিত; কিন্তু “সমে যজেত”, এই বিধি দ্বারা সমান স্থানে যাগ করিবেক ইহা নিয়মবদ্ধ হইল। যে বিধি দ্বারা বিহিত বিষয়ের অতিরিক্ত স্থলে নিষেধ সিদ্ধ হয়, এবং বিহিত স্থলে বিধি অনুযায়ী কার্য্য করা সম্পূর্ণ ইচ্ছাধীন থাকে, তাহাকে পরিসংখ্যাবিধি বলে; যেমন, “পঞ্চ পঞ্চনখা ভক্ষ্যাঃ”, পাঁচটি পরুনখ ভক্ষণীয়। লোকে যদৃচ্ছাক্রমে যাবতীয় পঞ্চনখ জন্তু ভক্ষণ করিতে পারিত, কিন্তু “পঞ্চ পঞ্চনখা ভক্ষ্যাঃ”, এই বিধি দ্বারা বিহিত শশ প্রভৃতি পঞ্চ ব্যতিরিক্ত কুক্কুরাদি যাবতীয় পঞ্চনখ জন্তু ভক্ষণনিষেধ সিদ্ধ হইতেছে; অর্থাৎ লোকের পঞ্চনখ জন্তুর মাংসভক্ষণে প্রবৃত্তি হইলে, শশ প্রভৃতি পঞ্চ ব্যতিরিক্ত পঞ্চনথ জন্তুর মাংসভক্ষণ করিতে পারিবেক না; শশ প্রভৃতি পঞ্চানখ জন্তুর মাংসভক্ষণও লোকের সম্পূর্ণ ইচ্ছাধীন; ইচ্ছা হয় ভক্ষণ করিবেক, ইচ্ছা না হয় ভক্ষণ করিবেক না। সেইরূপ, যদৃচ্ছাক্রমে অধিক বিবাহে উদ্যত পুৰুষ সবর্ণা অসবর্ণা উভয়বিধ স্ত্রীরই পাণিগ্রহণ করিতে পারিত; কিন্তু, যদৃচ্ছাক্রমে বিবাহে প্রবৃত্তি হইলে অসবর্ণাবিবাহ করিবেক, এই বিধি প্রদর্শিত হওয়াতে, যদৃচ্ছাস্থলে অসবর্ণাব্যতিরিক্তস্ত্রীবিবাহনিষেধ সিদ্ধ হইতেছে। অসবর্ণাবিবাহও লোকের ইচ্ছাধীন, ইচ্ছা হয় তাদৃশ বিবাহ করিবেক, ইচ্ছা না হয় করিবেক না; কিন্তু যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত হইয়া বিবাহ করিতে হইলে, অসবর্ণাব্যতিরিক্ত বিবাহ করিতে পারিবেক না, ইহাই বিবাহবিষয়ক চতুর্থ বিধির উদ্দেশ্য। এই বিবাহবিধিকে অপূর্ব্ববিধি বলা যাইতে পারে না; কারণ, ঈদৃশ বিবাহ লোকের ইচ্ছাবশতঃ প্রাপ্ত হইতেছে; যাহা কোনও রূপে প্রাপ্ত নহে, তদ্বিষয়ক বিধিকেই অপূৰ্ববিধি বলে। এই বিবাহবিধিকে নিয়মবিধি বলা যাইতে পারে না; কারণ, ইহা দ্বারা অসবর্ণাবিবাহ অবশ্যকর্ত্তব্য বলিয়া নিয়মবদ্ধ হইতেছে না। সুতরাং, এই বিবাহবিধিকে অগত্যা পরিসংখ্যাবিধি বলিয়া অঙ্গীকার করিতে হইবেক।[১০]

 বিবাহবিষয়ক বিধিচতুষ্টয়ের স্থূল তাৎপর্য্য এই, প্রথম বিধি অনুসারে গৃহস্থ ব্যক্তির সবর্ণাবিবাহ অবশ্য কর্তব্য; গৃহস্থ অবস্থায় স্ত্রীবিয়োগ হইলে, দ্বিতীয় বিধি অনুসারে সবর্ণাবিবাহ অবশ্য কর্তব্য; স্ত্রী বন্ধ্যা প্রভৃতি স্থির হইবে, তৃতীয় বিধি অনুসারে সবর্ণাবিবাহ অবশ্য কর্তব্য; সবর্ণাবিবাহ করিয়া যদৃচ্ছাক্রমে বিবাহপ্রবৃত্ত হইলে, ইচ্ছা হয় চতুর্থ বিধি অনুসারে অসবর্ণা বিবাহ করিবেক, অসবর্ণাব্যতিরিক্ত বিবাহ করিতে পারিবেক না। কলিযুগে অসবর্ণাবিবাহব্যবহার রহিত হইয়াছে, সুতরাং যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বিবাহের আর স্থল নাই।

 এক্ষণে ইহা বিলক্ষণ প্রতিপন্ন হইতেছে যে ইদানীন্তন যদৃচ্ছা প্রবৃত্ত বহুবিবাহকাণ্ড কেবল শাস্ত্রকারদিগের অনুমোদিত নয় এরূপ নহে, উহা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হইতেছে। সুতরাং যাঁহারা যদৃচ্ছাক্রমে বহু বিবাহ করিতেছেন, তাঁহারা নিষিদ্ধ কর্ম্মের অনুষ্ঠানজন্য পাতকগ্রস্ত হইতেছেন। যাজ্ঞবল্ক্য কহিয়াছেন,

বিহিতস্যাননুষ্ঠানান্নিন্দিতস্য চ সেবনাৎ।
অনিগ্রহাচ্চেন্দ্রিয়াণাং নরঃ পতনমূচ্ছতি॥৩।২১৯।

বিহিত বিষয়ের অবহেলন ও নিষিদ্ধ বিষয়ের অনুষ্ঠান করিলে, এবং ইন্দ্রিয়বশীকরণ করিতে না পারিলে, মনুষ্য পাতকগ্রস্ত হয়।

 কোনও কোনও মুনিবচনে এক ব্যক্তির অনেক স্ত্রী বিদ্যমান থাকা নির্দিষ্ট আছে, তদ্দর্শনে কেহ কেহ কহিয়া থাকেন, যখন শাস্ত্রে এক ব্যক্তির যুগপৎ বহু স্ত্রী বিদ্যমান থাকার স্পষ্ট উল্লেখ দৃষ্টিগোচর হইতেছে, তখন যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহু বিবাহ শাস্ত্রকাৱদিগের অনুমোদিত কার্য্য নহে, ইহা কি রূপে পরিগৃহীত হইতে পারে। তাঁহাদের অভিপ্রেত শাস্ত্র সকল এই,—

১। সবর্ণা বহুভার্য্যাসু বিদ্যমানাসু জ্যেষ্ঠয়া সহ ধর্ম্মকার্য্যং কারয়েৎ।[১১]

সজাতীয়া বহু ভার্য্যা বিদ্যমান থাকিলে জ্যেষ্ঠার সহিত-ধর্ম্ম-কার্য্যের অনুষ্ঠান করিবেক।

২। সর্ব্বাসামেকপত্নীমেকা চেৎ পুত্রিণী ভবেৎ।
সর্বাস্তানস্তেন পুত্রেণ প্রাহ পুত্রবতীর্মনুঃ॥৯।১৮৩[১২]

মনু কহিয়াছেন, সপত্নীদের মধ্যে যদি কেহ পুত্রবতী হয়, সেই সপত্নীপুত্র দ্বারা তাহারা সকলেই পুত্রবতী গণ্য হইবেক।

৩। ত্রিবিবাহং কৃতং যেন ন করোতি চতুর্থকম্।
কুলানি পাতয়েৎ সপ্ত ভ্রূণহত্যাব্রতং চরেৎ॥[১৩]

যে ব্যক্তি তিন বিবাহ করিয়া চতুর্থ বিবাহ না করে, সে সাত কুল পাতিত করে, তাহার ভ্রূণহত্যা প্রায়শ্চিত্ত করা আবশ্যক।

 এই সকল বচনে এরূপ কিছুই নির্দিষ্ট নাই যে তদ্দারা শাস্ত্রোক্ত নিমিত্ত ব্যতিরেকে পুরুষের ইচ্ছাধীন বহু বিবাহ প্রতিপন্ন হইতে প্রথম বচনে এক ব্যক্তির বহু ভার্য্যা বিদ্যমান থাকার উল্লেখ আছে; কিন্তু ঐ বহুভার্য্যাবিবাহ অধিবেদনের নির্দিষ্ট নিমিত্ত নিবন্ধন নহে, তাহার কোনও হেতু লক্ষিত হইতেছে না। দ্বিতীয় বচনে যে বহু বিবাহের উল্লেখ আছে, তাহা যে কেবল পূর্ব্ব পূর্ব্ব স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব নিবন্ধন ঘটিয়াছিল, তাহা স্পষ্ট প্রতীয়মান হইতেছে, কারণ, ঐ বচনে পুত্রহীন। সপত্নীদিগের বিষয়ে ব্যবস্থা প্রদত্ত হইয়াছে। তৃতীয় বচনে তিন বিবাহের পর বিবাহান্তরের অবশ্যকর্ত্তব্যতানির্দেশ আছে। কিন্তু এই বচন বহুবিবাহবিষয়ক নহে। ইহার স্থল এই,— যে ব্যক্তির ক্রমে দুই স্ত্রী গত হইয়াছে, সে পুনরায় বিবাহ করিলে, তাহার তিন বিবাহ হয়; চতুর্থ বিবাহ না করিলে, তাহার প্রত্যয় ঘটে। এই প্রত্যয়ের পরিহারার্থে ইদানীং এক আচার প্রচলিত হইয়াছে। সে আচার এই, বিবাহার্থী ব্যক্তি, প্রথমতঃ এক ফুল গাছকে স্ত্রী কল্পনা করিয়া, উহার সহিত তৃতীয় বিবাহ সম্পন্ন করে; তৎপরে যে বিবাহ হয়, তাহা চতুর্থ বিবাহস্থলে পরিগৃহীত হইয়া থাকে। এইরূপ তিন বিবাহ ও চারি বিবাহই এই বচনের উদ্দেশ্য। কেহ কেহ এই ব্যবস্থা করেন, যেখানে তিন স্ত্রী বর্ত্তমান আছে, সেই স্থলে এই বচন খাটিবেক।[১৪] যদি এই ব্যবস্থা আদরণীয় হয়, তাহা হইলে বর্ত্তমান তিন স্ত্রীর বিবাহ অধিবেদনের নির্দিষ্ট নিমিত্ত নিবন্ধন, আর চতুর্থ বিবাহ এতদচনোক্তদোষপরিহারস্বরূপ নিমিত্ত নিবন্ধন বলিতে হইবেক। অর্থাৎ, প্রথমতঃ স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি নিমিত্ত বশতঃ ক্রমে ক্রমে তিন বিবাহ ঘটিয়াছে; পরে, তিন স্ত্রী বিদ্যমান থাকিলে, এই বচনে যে চতুর্থ বিবাহের অবশ্যকর্ত্তব্য নির্দেশ আছে, তদনুসারে পুনরায় বিবাহ করা আবশ্যক হইতেছে। মনু- বচনে অধিবেদনের যে সমস্ত নিমিত্ত নির্দিষ্ট আছে, এতদ্বচনোক্তদোষ- পরিহার তদতিরিক্ত নিমিত্তান্তর বলিয়া পরিগণিত হইবেক। ফল কথা এই, যখন শাস্ত্রকারের কাম্যবিবাহস্থলে কেবল অসবর্ণা বিবাহের বিধি দিয়াছেন, যখন ঐ বিধি দ্বারা পূর্ব্বপরিণীতা স্ত্রীর জীবদ্দশায় যদৃচ্ছা- ক্রমে সবর্ণাবিবাহ করা সর্ব্বতোভাবে নিষিদ্ধ হইয়াছে, যখন উল্লিখিত বহুবিবাহ সকল অধিবেদনের নির্দিষ্ট নিমিত্তবশতঃ ঘটা সম্পূর্ণ সম্ভব হইতেছে, তখন যদৃচ্ছাক্রমে যত ইচ্ছা বিবাহ করা শাস্ত্রকারদিগের অনুমোদিত কার্য্য, ইহা কোনও মতে প্রতিপন্ন হইতে পারে না।

 কেহ কেহ কহিয়া থাকেন, যখন পুরাণে ও ইতিহাসে- কোনও কোনও রাজার যুগপৎ বহু স্ত্রী বিদ্যমান থাকার নিদর্শন পাওয়া যাইতেছে, তখন পুরুষের বহু বিবাহ শাস্ত্রানুমত কর্ম্ম নহে, ইহা কিরূপে অঙ্গীকৃত হইতে পারে। ইহা যথার্থ বটে, পূর্ব্বকালীন কোনও কোনও রাজার বহু বিবাহের পরিচয় পাওয়া যায়; কিন্তু, সে সকল বিবাহ যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বিবাহ নহে। রামায়ণে উল্লিখিত আছে, রাজা দশরথের অনেক মহিলা ছিল। কিন্তু তিনি যে যদৃচ্ছাক্রমে সেই সমস্ত বিবাহ করিয়াছিলেন, কোনও ক্রমে এরূপ প্রতীতি জন্মে না। রামায়ণে যেরূপ নির্দিষ্ট আছে, তদনুসারে তিনি বৃদ্ধ বয়স পর্য্যন্ত পুত্র- মুখ নিরীক্ষণে অধিকারী হয়েন নাই। ইহা নিশ্চিত বোধ হইতেছে, তাঁহার প্রথমপরিণীতা স্ত্রী বন্ধ্যা বলিয়া পরিগণিত হইলে, তিনি দ্বিতীয় বার বিবাহ করেন; এবং সে স্ত্রীও পুত্র প্রসব না করাতে, তাঁহারও বন্ধ্যাত্ব বোধে, রাজা পুনরায় বিবাহ করিয়াছিলেন। এইরূপে ক্রমে ক্রমে তাঁহার অনেক বিবাহ ঘটে। অবশেষে, চরম বয়সে, কৌশল্যা, কেকয়ী, সুমিত্রা, এই তিন মহিষীর গর্ভে তাঁহার চারি সন্তান জন্মে। সুতরাং, রাজা দশরথের বহু বিবাহ পূর্ব্ব পূর্ব্ব স্ত্রীর বন্ধ্যাত্বশঙ্কা নিবন্ধন ঘটিয়াছিল, স্পষ্ট প্রতীয়মান হইতেছে। দশরথ যে কারণে বহু বিবাহ করিয়াছিলেন, অন্যান্য রাজারও সেই কারণে, অথবা শাস্ত্রোক্ত অন্য কোনও নিমিত্তবশতঃ, একাধিক বিবাহ করেন, তাহার সংশয় নাই। তবে, ইহাও লক্ষিত হইতে পারে, কোনও কোনও রাজা, যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত হইয়া, বহু বিবাহ করিয়াছিলেন। কিন্তু, সেই দৃষ্টান্ত দর্শনে বহুবিবাহকাণ্ড শাস্ত্রানুমত ব্যাপার বলিয়া প্রতিপন্ন হইতে পারে না। রাজার আচার সর্ব্বসাধারণ লোকের পক্ষে আদর্শস্বরূপে পরিগৃহীত হওয়া উচিত নহে। ভারতবর্ষীয় রাজাৱা স্ব স্ব অধিকারে এক প্রকার সর্ব্বশক্তিমান্ ছিলেন। প্রজারা ধর্ম্মশাস্ত্রের ব্যবস্থা অতিক্রম করিয়া চলিলে, রাজা দণ্ডবিধানপূর্ব্বক তাহাদিগকে ন্যায়পথে অবস্থাপিত করিতেন। কিন্তু, রাজারা উৎপথপ্রতিপন্ন হইলে, তাঁহাদিগকে ন্যায়পথে প্রবর্ত্তিত করিবার লোক ছিল না। বস্তুতঃ, রাজারা সর্ব্ব বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রেচ্ছ ছিলেন। সুতরাং, যদি কোনও রাজা, উচ্ছৃঙ্খল হইয়া, শাস্ত্রোক্ত নিমিত্ত ব্যতিরেকে, যদৃচ্ছাক্রমে বহু বিবাহ করিয়া থাকেন, সর্ব্বসাধারণ লোকে, সেই দৃষ্টান্তের অনুবর্ত্তী ছইয়া, বহু বিবাহ করিলে, তাহা কোনও ক্রমে বৈধ বলিয়া প্রতিপন্ন হইতে পারে না। মনু কছিরছেন,—

সোহগ্নির্ভবতি বায়ুশ্চ সোহর্কঃ সোমঃ স ধর্ম্মরাট্।
স কুবেরঃ স বরুণঃ স মহেন্দ্রঃ প্রভাবতঃ॥ ৭।৭।
বালোহপি নাবমন্তব্যো মনুষ্য ইতি ভূমিপঃ।
মহতী দেবতা হ্যেষা নররূপেণ তিষ্ঠতি॥ ৭।৮।

রাজা প্রভাবে সাক্ষাৎ, অগ্নি, বায়ু, সূর্য্য, চন্দ্র, যম, কুবের, বরুণ, ইন্দ্র। রাজা বালক হইলেও, তাঁহাকে সামান্য মনুষ্য জ্ঞান করা উচিত নহে। তিনি নিঃসন্দেহ মহতী দেবতা, নররূপে বিরাজ করিতেছেন।

রাজা প্রাকৃত মনুষ্য নহেন; শাস্ত্রকারেরা তাঁহাকে মহতী দেবতা বলিয়া গণ্য করিয়াছেন। অতএব, যেমন দেবতার চরিত্র মনুষ্যের অনুকরণীয় নহে; সেইরূপ, রাজার চরিত্রও মনুষ্যের পক্ষে অনুকরণীয় হইতে পারে না। এই নিমিত্ত, যাহা সর্ব্বসাধারণ লোকের পক্ষে সর্ব্বথা অবৈধ, তেজীয়ানের পক্ষে তাহা দোষাবহ নয় বলিয়া, শাস্ত্রকারেরা ব্যবস্থা দিয়াছেন।

ফলতঃ, যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহকাণ্ড যদৃচ্ছাপ্রবৃত্তব্যবহারমূলকমাত্র। এই অতিজঘন্য অতিনৃশংস ব্যাপার শাস্ত্রানুমত বা ধর্ম্মানুগত ব্যবহার নহে; এবং ইহা নিবারিত হইলে, শাস্ত্রের অবমাননা বা ধর্ম্মলোপের অণুমাত্র সম্ভাবনা নাই।


  1.  দক্ষ সংহিতা। প্রথম অধ্যায়
  2.  উদ্বাহতত্বধুত।
  3.  বেদাধ্যয়ন ও ব্রহ্মচর্য্যসমাপনের পর গৃহস্থাশ্রমপ্রবেশের পূর্ব্বে অনুষ্ঠীয়মান ক্রিয়াবিশেষ।
  4.  মনুসংহিতা।
  5.  মনুসংহিতা।
  6.  মনুসংহিতা।
  7.  যে সতত স্বামীর প্রতি দুঃশ্রব কটুক্তিপ্রয়োগ করে।
  8.  মনুসংহিত।
  9.  স্ত্রীবিয়োগরূপ নিমিত্তবশতঃ করিতে হয়, এ জন্য এই বিবাহের নৈমিত্তিকত্বও আছে।
  10.  বিনিযোগবিধিয়প্যবিধিনিয়মবিধিপরিসংখ্যাবিধিভেদাশ্রিবিধঃ বিধিং বিনা কখনপি যদর্থগোচরবৃত্তির্নোপপদ্যতে অসাবপূর্ব্ববিধিঃ নিয়ত- প্রবৃত্তিফলকো বিধির্নিয়মবিধিঃ স্ববিষয়াদন্যত্র প্রবৃত্তিবিরোধী বিধিঃ পরি- সংখ্যাবিধিঃ তদুক্তং বিধিরতাস্তম প্রাপ্তো নিয়মঃ পাক্ষিকে সতি। তত্রশ্চান্যত্র চ প্রাপ্তৌ পরিসংখ্যেতি গীয়তে। বিধিস্বরূপ।
  11.  বিষ্ণুসংহিতা। ২৬ অধ্যায়।
  12.  মনুসংহিতা।
  13.  উদ্বাহতত্ত্বধৃত।
  14.  এতদ্ববচনং বর্তমানস্মীত্রিকপরমিতি বদন্তি। উদ্বাহতত্ত্ব।
Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *