পেট্রল আর আগুনের কবিতা । নবারুণ ভট্টাচার্য
এক শালার সঙ্গে দেখা হল
সে কাশছে
তাকে বললাম—গুরু, চলবে?
সে বললে—না
লাস্ট টিপ মারিয়ে গ্যারেজে ফিরছি
দম নেই
এই বলে সে চলে গেল কাশতে কাশতে
সে একটা দোতলা বাস।
তারপর দেখলাম
দশতলা একটা বাড়ি
হাতে রাবারের দস্তানা পরে
বাচ্চা একটা রাস্তার
গলা টিপে ধরেছে
আর ল্যাম্পপোস্টগুলো
ঝটপট করে পালাতে চেষ্টা করছে।
ধারালো চাঁদ ঝলসায় রাতের গলায়
প্ল্যানেটেরিয়ামের ইলেকট্রনিক ঘড়িতে
তখন দারুণ জ্বর
অন্ধকার ফাঁকা ময়দানে
একটা ট্রাম টাল খায়
আচমকা চলে গেল পুলিশভ্যান
ঘুমন্ত কুকুরগুলোকে চমকে দিয়ে
রোজ চমকে দেয়।
আমি জানি
খুব ভালো লিখলেও
একটাও ফাঁসি
থামানো যাবে না
আমি জানি
গরিবদের ভয় দেখানোর জন্য
এই সব কিছু—
লাস্ট টিপ, কাশি, ভয় পাওয়া
ঝটপট করা, হল্লাগাড়ির ধমকে
চমকে ওঠা, টাল খেয়ে খেয়ে
মরা, জ্বরে ছাই হয়ে যাওয়া
এর একটাও
কবিতা লিখে থামানো যাবে না
ধুলোর ঝড়ের মধ্যে
চোখ বন্ধ করে
আমি হাঁটতে শিখিনি
একদিন পেট্রল দিয়ে
সব আগুন আমি নিভিয়ে দেব
সব আগুন আমি নিভিয়ে দেব
পেট্রল দিয়ে।