সাঁচ্চা কিছুই নেই জগতে; দুষ্ট সবাই দোষে।
গোলাপ আপন বোঁটায় বোঁটায় তীক্ষ্ণ কাঁটা পোষে।
সন্দেহ হয় ঊর্ধ্বলোকে দেবতা থাকেন যত,
হয়ত তাঁরাও খাদে ভরা মর্ত্যবাসীর মত।
কিংশুকে, কই, সৌরভই নেই। বৃন্দাবনে তাপ।
গেরুয়া দিয়ে ঢাকেন সাধু মহাবিদ্যার ছাপ।
সীতা যদি গোসা ক’রে মার কাছে না যেত,
পঞ্চসতীর পুণ্য শ্লোকে তবেই সে ঠাঁই পেত।
শিখীর পেখম জবর হলেও,বীভৎস পা তার।
শকুন্তলা, কালিদাসের কাব্যকলার সার,
তার ভণিতাও সকল সময় সহ্য হবার নয়।
কাদম্বরীর বিপুল বহর স্বতই জাগায় ভয়।
ষণ্ড স্বয়ং শিবের বাহন, জানে না দেবভাষা।
বাচস্পতি শেখেননি তো বয়েৎ খাসা খাসা।
কোণারকের সুন্দরীদের পাছা বেজায় ভারী।
বাঙালীদের নাকের আবার নেই কো বাড়াবাড়ি।
ছন্দ যতই হোক না মধুর, খুঁত থেকে যায় মিলে।
মৌচাকে,হায়, বিষাক্ত হুল। গ্রাম্য বধুর পিলে।
ব্যাধের হাতে মারা গেলেন কৃষ্ণ ভগবান।
তানসেনও, সে কলমা প’ড়ে হল মুসলমান।
স্বর্গচারী, দীপ্ত তারা, সর্দি তাকেও ধরে;
তারও কবর ধূলার ধরায়; ঠান্ডাতে সেও মরে।
দুগ্ধে মিলে ঘাসের গন্ধ। সূর্যদেবের গায়
দাগ দেখা যায় শাদা চোখেও, সেই বোঝে, যে চায়।
তোমায়, দেবী, ভক্তি করি ; কিন্তু তোমার ত্রুটি
কত যে, তার হিসাব রাখি, কোথায় এমন ছুটি?
ডাগর চোখে, শুধাও কি দোষ? আছে কি তার শেষ?
ওই সমতল বুকের তলায় নেই হৃদয়ের লেশ!
–হাইন্রিখ্ হাইনে