ধর লক্ষ্মণ
লক্ষ্মণ ছিলেন রামের একান্ত অনুগত ভাই। বাম ও সীতার সাথে তিনিও স্বেচ্ছায় বনবাসী হয়েছিলেন। প্রচলিত একটি গল্প এরকম—
বনবাসকালে রাম প্রতিদিন লক্ষ্মণকে ‘ধর’ বলে ফল খেতে দিতেন। ফল খেতে দিলেও ধরো অর্থাৎ নাও-এ ধরনের কথায় লক্ষ্মণ ফল নিতেন হাত পেতে কিন্তু তা আবার সযত্নে তুলে রাখতেন না খেয়ে। বনবাস থেকে ফিরে আসার পর লক্ষ্মণ একদিন তার সংগৃহীত সমস্ত ফল রামের সামনে হাজির করলেন। বিস্মিত রামচন্দ্র লক্ষ্মণের দিকে তাকিয়ে বললেন-”তুমি আমার দেয়া ফলগুলি না খেয়ে এভাবে জমা করে রেখেছো কেন?’
উত্তরে লক্ষ্মণ বিনীতভাবে রামকে বললেন— ‘আপনি আমাকে ফল দিয়েছেন ধরতে। খাবার কথা তো বলেননি। আমিও ধরে রেখেছি এবং খাবার অনুমতি না থাকায় তা জমা করে রেখে দিয়েছি।’
গল্পটি রামের স্থানে সীতা হিসেবেও বলা হয়ে থাকে আমাদের সমাজে। অতি অনুগত মানুষকে পুরো বিষয় বুঝিয়ে না দিলে যা হবার, লক্ষ্মণের ক্ষেত্রে তাই হতে দেখি আমরা। যে কাজ করতে বলা হয়নি অথচ করাটা যুক্তিযুক্ত এবং অভিপ্রেত সে কাজ না করলে মানুষ ধর লক্ষ্মণ—এই প্রবাদ ব্যবহার করে। অতি অনুগত এবং বোকারা কর্তার ইঙ্গিত, উদ্দেশ্য ও অভিপ্রায় বুঝে না অথবা পরিপূর্ণভাবে পরিষ্কার নির্দেশ ছাড়া কোনো কাজে হাত দেয় না। এরা ধর লক্ষ্মণ পর্যায়ের বিবেচনাসম্পন্ন মানুষ।