2 of 3

ধন্বন্তরি

ধন্বন্তরি

দেবতাদের চিকিৎসক বা দৈববৈদ্য হিসেবে ধন্বন্তরির পরিচয়। রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ে অতুলনীয় চিকিৎসক কিংবা আরোগ্য করার অব্যর্থ ওষুধকে আমরা ধন্বন্তরি বলে উল্লেখ করে থাকি অনেক সময়।

দেবতা ও অসুরদের সম্মিলিত আয়োজনে সমুদ্রমন্থন করার সময় অমৃতভাণ্ড হাতে উত্থিত হন ধন্বন্তরি। সূর্যের ঔরসে অশ্বিনীরূপা সংজ্ঞার গর্ভজাত সন্তান অশ্বিনী ও রেবন্ত অশ্বিনীকুমারদ্বয় নামে পরিচিত। তারা হলেন প্রধান স্বর্গবৈদ্য। তারা আয়ুর্বেদের জনক এবং চিকিৎসা সারতন্ত্র-প্রণেতা।

বলা হয়ে থাকে যে, প্রথমে ব্রহ্মা সহস্র অধ্যায় ও লক্ষ শ্লোকযুক্ত আয়ুর্বেদ প্রকাশ করেন। তার কাছে এই বিদ্যা শিক্ষা করেন প্রজাপতি। প্রজাপতির কাছে শিক্ষা করেন অশ্বিনীকুমারদ্বয়। তাদের কাছে ইন্দ্ৰ এবং ইন্দ্রের কাছে ধন্বন্তরি চিকিৎসাবিজ্ঞান লাভ করেন। অবশ্য কোথাও কোথাও আছে যে, ধন্বন্তরি ছিলেন শঙ্কর ও গরুড়ের শিষ্য এবং তিনি ভাস্করের কাছে আয়ুর্বেদ শিক্ষা করেন। তার প্রণীত গ্রন্থ হচ্ছে—চিকিৎসাতত্ত্ব-বিজ্ঞান। ব্রহ্মার নির্দেশে ধন্বন্তরি আয়ুর্বেদকে আটভাগে বিভক্ত করেন। যথা— শল্যতন্ত্র, শালাকাতন্ত্র, কায়চিকিৎসাতন্ত্র, ভূতবিদ্যাতন্ত্র, কৌমারভূত্যতন্ত্র, অগদতন্ত্র, রসায়নতন্ত্র ও বাজীকরণতন্ত্র।

বিশ্বামিত্রের পুত্র সুশ্রুত ধন্বন্তরির কাছে আয়ুর্বেদ শিক্ষা করেন ও মানুষের মঙ্গলের জন্য তা প্রকাশ করেন। ধন্বন্তরি জন্মান্তরে কাশীর রাজা দিবোদাসরূপে আবির্ভূত হন এবং তার কাছে নাকি সুশ্রুত এই চিকিৎসাবিজ্ঞান লাভ করেন। সুশ্রুত-সংহিতা সুশ্রুতের লেখা আয়ুর্বেদশাস্ত্র। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা পরিহার করা হলো।

যাহোক, আমরা দেখি পুরাকালেও এই উপমহাদেশে চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠিত ছিল। ধন্বন্তরি নামে এক বা বহু চিকিৎসক ছিলেন। ধন্বন্তরি ওঝা বা উপাধ্যায়ের কথাও আমরা জানি। সুতরাং আজ চৌকস এবং রোগনির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে দক্ষ ডাক্তারকে বা অব্যর্থ ওষুধকে আমরা অবলীলায় সাক্ষাৎ ধন্বন্তরি নামে অভিহিত করে থাকি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *