এই ইদজ্জোহার চাঁদে যে পশু কোরবানি দেওয়ার কথা আল্লাহ্ বলেছেন – সে পশু কেমন কোরআন – মজিদের সুরা বকরায় অষ্টম রুকুতে তার ইঙ্গিত আছে। যে গোরু বা পশু উজ্জ্বল স্বর্ণবর্ণ, নিষ্কলঙ্ক, যে গোরু কখনও ভূমি কর্ষণ করে না, জল সেচন করে না –ইত্যাদি। এই পশু কোরবানি দিলে পুলসেরাত পার হয়ে আল্লাহের দিদার হয়। এই গো অর্থে ঐশ্বর্য, বিভূতি, জ্ঞান । এই দুনিয়ায় গো কোরবানি করে পুণ্য অর্জন হয়, কিন্তু আল্লাহের দিদার মেলে না। এই দুনিয়াতেই যাঁরা আল্লাহের দিদার চান, সেই সুফিরা জানেন, সুরা বকরার এই গো – সুফি বা সাধক যে যোগৈশ্বর্য পান, এবং তাঁর দেহে স্বর্ণ জ্যোতির আভাস ফুটে ওঠে, যে শক্তি-বলে তিনি বহু মাজেজা দেখাতে পারেন সেই জ্যোতি ও শক্তি বা বিভূতি– তাকেই আল্লাহের নামে উৎসর্গ করা হয় তা হলে পুলসেরাত বা সেরাতুল মোস্তাকিমের শেষ বাধা পার হয়ে আল্লাহের দিদার পাওয়া যায়। এই দুনিয়ার কাবায় হজ করার নিশ্চয়ই প্রয়োজন আছে, কারণ ইহা ফরজ্ কিন্তু – যেখানে গেলে আল্লাহ্র দিদার হয় – সেই আসল কাবা শরিফের ঊর্ধ্বতম দেশে – ব্রহ্মরন্ধ্রে ছয় লতিফার ঊর্ধ্বে! তার নাম ফানাফির রসুল, ফানাফিল্লাহ্।
(গান) ছয় লতিফার ঊর্ধ্বে আমার আরফাত ময়দান। তারই মাঝে কাবা – জানেন বুজর্গান॥ যবে হজরতের নাম জপি ভাই – হাজার হজের আনন্দ পাই, মোর জীবন মরণ দুই উটে ভাই দিই সেথা কোরবান॥ আমি তূর পাহাড়ে সুর শুনে ভাই প্রেমানন্দে গলি ফানাফির রসুলে আমি হেরার পথে চলি হজরতের কদম চুমি হিজরে আসওয়াদ ইব্রাহিমের কোলে চড়ে দেখি ঈদের চাঁদ। মোরে খোৎবা শোনান ইমাম হয়ে জিব্রিল কোরআন॥ যাদের সম্বল দেননি হজে যাবার – তাদের দীন আত্মা ভিখারিনির মতো আজ আল্লার না - দেখা কাবার দুয়ার ধরে যেন কাঁদছে –