অন্তরভেদী অবলোকন
অন্তরভেদী অবলোকন কাল মৃত্যু হাত বাড়িয়েছিলো আমার ঘরে। জানলার ফাঁক দিয়ে সেই দীর্ঘ হাত অন্ধের অনুভব শক্তির মতো বিছানার ওপর একটু একটু …
Read Bengali Books Online @ FREE
আল মাহমুদ (জন্মঃ ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ) আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। তিনি একধারে একজন কবি, ঔপন্যাসিক এবং ছোটগল্প লেখক। ১৯৩০-এর কবিদের হাতে বাংলা কবিতায় যে আধুনিকতার ঊণ্মেষ, তার সাফল্যের ঝাণ্ডা আল মাহমুদ বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে অদ্যাবধি তুলনারহিত কৃতিত্বের সঙ্গে বহন ক’রে চলেছেন। রবীন্দ্র-বিরোধী তিরিশের কবিরা বাংলা কবিতার মাস্তুল পশ্চিমের দিকে ঘুরিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন;– আল মাহমুদ আধুনিক বাংলা কবিতাকে বাংলার ঐতিহ্যে প্রোথিত করেছেন মৌলিক কাব্যভাষার সহযোগে– তাঁর সহযাত্রী শামসুর রাহমান, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখের তুলনায় এইখানে তিনি ব্যতিক্রমী ও প্রাগ্রসর। নাগরিক চেতনায় আল মাহমুদ মাটিজ অনুভূতিতে গ্রামীণ শব্দপুঞ্জ, উপমা-উৎপ্রেক্ষা এবং চিত্রকল্প সংশ্লেষ করে আধুনিক বাংলা কবিতার নতুন দিগন্ত রেখায়িত করেছেন। একই সঙ্গে তিনি কথাসাহিত্যে তাঁর মৌলিক শৈলীর স্বাক্ষর রেখেছেন। ১৯৭১-এ বাংলাদেশ অভ্যূদয়ের পর তিনি দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৯০ দশক থেকে ব্যক্তি জীবনে ইসলামের অনুবর্তী হয়ে তিনি সমালোচনার শিকার হয়েছেন।
অন্তরভেদী অবলোকন কাল মৃত্যু হাত বাড়িয়েছিলো আমার ঘরে। জানলার ফাঁক দিয়ে সেই দীর্ঘ হাত অন্ধের অনুভব শক্তির মতো বিছানার ওপর একটু একটু …
অনড় অবশিষ্ট স্বপ্নে, কল্পনায় এবং মধ্যাহ্নের ভাতঘুমে যদি লিফটের শব্দের মত অকস্মাৎ তোমার ধারণা এসে দুয়ারে দাঁড়ায় জানালার পর্দা সবি …
অবগাহনের শব্দ জানি না কি ভাবে এই মধ্যযামে আমার সর্বস্ব নিয়ে আমি হয়ে যাই দুটি চোখ, যেন জোড়া যমজ ভ্রমর পাশাপাশি বসে আছে ঈষদুষ্ণ …
আঘ্রাণে আজ এই হেমন্তের জলদ বাতাসে আমার হৃদয় মন মানুষীর গন্ধে ভরে গেছে। রমণীর প্রেম আর লবণসৌরভে আমার অহংবোধ ব্যর্থ আত্মতুষ্টির ওপর …
আত্মীয়ের মুখ আহমেদুর রহমান স্মরণে কেউ কেউ আছেন মনে, যেন কোনো আত্মীয়ের মুখ বুকের ভেতর থেকে হেসে ওঠে, মৃদু শব্দে জিজ্ঞাসে কুশল আর …
আভূমি আনত হয়ে এ ঘুরে দাঁড়ানো নয়, শুধু আভূমি আনত হয়ে থাকা দৃশ্যের আঘাত থেকে মুদে রাখা চোখের প্রতিভা! চোখ বড়ো সাংঘাতিক রক্তের …
আমার অন্ধকারে আমি আমার জন্য দৃশ্যের মায়া ফুরিয়ে গেছে। অন্ধকার তো দেখার বিষয় নয়। অনুভব করার বিষয়। আমি তাই অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে বসে …
আমার চোখের তলদেশে একদা এমন ছিল যে, আমার চোখই ছিল সমস্ত দুঃখের আকর। এমন কি একটা করুণ উপন্যাসও পড়তে পারতাম না আমি। বুক ঠেলে কান্না …
আমার প্রাতরাশে সকালে দরজা খুলে এই রাজভিখারীর হাত যেমন সংবাদপত্রের মতো অস্থায়ী কচুর পাতায় খেতে চায় স্ফটিকশুভ্র স্বচ্ছ স্বাদ, আজ …
আমি আর আসবো না বলে আর আসবো না বলে দুধের ওপরে ভাসা সর চামোচে নিংড়ে নিয়ে চেয়ে আছি। বাইরে বৃষ্টির ধোঁয়া যেন শাদা স্বপ্নের চাদর …
আমিও রাস্তায় অসংখ্য চক্ষু যেন ঘিরে ফেলবে এখুনি আমাকে শস্যের সবুজ থেকে ক্রমাগত উঠে এসে গোসার গোঙানি করোগেটে ঢেউ তুলে চাবকে দেবে …
আসে না আর পাহাড়পুরের পাথর রেখে বামে পেরিয়ে খাল, পুরনো গড়খাই এগোলে কেউ আসে না আর ঘরে এই কথা তো জানতে, তবু কেন হাটের মাঝে আসতে …
ঈগল থাকবে ইতিহাস থাকবে না ১ ভাবো, ইতিহাসের গতি রুদ্ধ। মানুষের আর কোনো ইতিহাস থাকবে না। ফেরাউন থাকবে কিন্তু মুসা থাকবেন না। পুঁজি …
উল্টানো চোখ এইতো সেই অবসর, যখন কোনো দৃশ্যই আর গ্রাহ্য নয়। পলকহীন চোখ যেন উল্টে যাচ্ছে। যেখানে থরে থরে সাজানো আছে ঘটনার …
ট্রাক ! ট্রাক ! ট্রাক ! শুয়োরমুখো ট্রাক আসবে দুয়োর বেঁধে রাখ। কেন বাঁধবো দোর জানালা তুলবো কেন খিল ? আসাদ গেছে মিছিল নিয়ে ফিরবে সে …
এই সম্মোহনে তোমার জন্যে লোকালয় হেঁটে এসে আজো কড়া নাড়ি তোমার জন্যে করি জয় অভাবের ক্ষিপ্ত তরবারি। তুমি আছো এই সম্মোহনে খুলতে যাই …
এক গুঞ্জরিত কবির আত্মা দুনিয়াতে কেবল আমারই দাঁড়াবার জায়গা খুঁজে হয়রান হলাম। কত ঘাট আর বন্দর পেরুলাম। কত আন্তর্জাতিক উড়াল কেন্দ্রে …
এক নদী তোমার মুখ ভাবলে, এক নদী বুকে আমার জলের ধারা তোলে; সামনে দেখি ভরা ভাতের থালা ঝালের বাটি উপচে পড়ে ঝোলে। পিঠার মতো হলুদ মাখা …
একটি চশমা শুধু উড়িতেছে ডানা আমি গুটিয়েছি। উড়িতেছে চশমা আমার কানা চোখে থাকে না সে উড়ে যায় আকাশ ভেদিয়া মানচিত্র ছেড়ে গিয়ে খোজে তার …
ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ দুপুর বেলার অক্ত বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায় ? বরকতের রক্ত। হাজার যুগের সূর্যতাপে জ্বলবে এমন লাল যে, সেই …