২৫টি রোমাঞ্চকর কল্পবিজ্ঞান – সম্পাদনা : শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
ভূমিকা
কল্পবিজ্ঞানকে আমি বলি আধুনিক রূপকথা। সেকেলে রূপকথার দিন আর নেই। তার কারণ পৃথিবীতে আর অজানা দেশ নেই। রাক্ষসখোক্কস নেই, ডানাগুলোলো পক্ষীরাজ ঘোড়া নেই, রাজা বা রাজকন্যা বা রাজপুত্রদেরও আর সেই অবস্থান নেই। এ যুগের বাচ্চারা আর সেইসব রূপকথাকে তেমন উপভোগ করেনা। তার রূপকথাই যখন খোলনলচে পাল্টে, বিজ্ঞানের পোশাক পরে এসে হাজির হয় তখন আবার তার আকর্ষণ দুর্নিবার হয়ে ওঠে। টাইম ট্রাভেল বা সময়-প্রবাহ, প্রশান্তের ক্যাথলিক সভ্যতা কিংবা বর্তমানেরই কোনও মেকপ্রদ প্রযুক্তিমায়ার গল্প আমাদের যোগবিষ্ট করে রাখে। আমি নিজে কল্প-বিজ্ঞানের ভক্ত পাঠক।
বর্তমান সংকলনটি ‘পঁচিশটি রোমাঞ্চকর কল্পবিজ্ঞান’ বাংলা ভাষায় রচিত এই আধুনিক রূপকথা। এই সংকলনের অভিমুখ শুধু শিশু আর কিশোরই নয়, সব বয়সের পাঠক পাঠিকাই, এই ধরনের রচনায় যাঁরা সিদ্ধহস্ত তাঁদের লেখাতেই সংকলনটি সমৃদ্ধ হয়েছে।
ভরসা করি বইটি সকলের কাছে সমাদর পাবে।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
.
লেখক পরিচিতি
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
জন্ম ১৯৩৪ সালে। সাংবাদিকতার চাকরি করেছেন। ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক। বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও কবি। সাহিত্যের সব শাখাতেই তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা আছে। তাঁর সন্তু-কাকাবাবু চরিত্র ছোটোদের খুবই প্রিয়। উল্লেখযোগ্য বই : ভয়ংকর সন্দর, পাহাড় চূড়োয় আতঙ্ক, সবুজ দ্বীপের রাজা প্রভৃতি।
লীলা মজুমদার
জন্ম ১৯০৮ সালে। মৃত্যু ১৯৮৮ সালে। শিশুসাহিত্য রচনায় তাঁর সারাজীবন কেটেছে। ‘সন্দেশ’ পত্রিকার সম্পাদনাও করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : খেরোর খাতা, পদিপিসির বর্মী বাক্স, গুপিপানুর কীর্তিকলাপ প্রভৃতি।
জয়দীপ চক্রবর্তী
জন্ম ১৯৭৪ সালে। ইংরেজি সাহিত্যে এম.এ.। শিক্ষকতাই তাঁর পেশা। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ লেখেন। মজাদার গল্প লেখায় সিদ্ধহস্ত। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : নতুন স্কুলে গঙ্গাপদ, হিজিবিজির দেশে প্রভৃতি।
সংকর্ষণ রায়
জন্ম ১৯২৮ সালে। পেশায় ছিলেন ভূতাত্ত্বিক। তাঁর বিজ্ঞানধর্মী লেখা পাঠক মহলে আদৃত। উল্লেখযোগ্য বই : কালনাগিনীর আক্রোশ, ছোটোনাগপুরের জঙ্গলে, পাতালের ঐশ্বর্য প্রভৃতি।
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ
জন্ম ১৯৩০ সালে। ১৯৫০-১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ‘আলকাপ’ দলে গ্রাম গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সাংবাদিকতার চাকরি করেছেন। বড়োদের পাশাপাশি ছোটোদের জন্যেও অনেক লেখা লিখেছেন। তাঁর কর্নেল চরিত্রটি কিশোরদের কাছে খুবই প্রিয়। উল্লেখযোগ্য বই : কিশোর সাহিত্য, কর্ণেল সমগ্র প্রভৃতি।
প্রচেত গুপ্ত
জন্ম ১৯৬২ সালে। অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। সাংবাদিকতা তাঁর পেশা। বড়োদের গল্প-উপন্যাসের তাঁর ভক্ত-পাঠক অনেক। কিশোরদের লেখা তাঁর উপন্যাস এবং গল্প পাঠকমন জয় করেছে। উল্লেখযোগ্য বই : কাঞ্চনগড়ের কোকিল স্যার, নীল আলোর ফুল, ঝিলডাঙার কন্যা প্রভৃতি।
উল্লাস মল্লিক
জন্ম ১৯৭১ সালে। শিক্ষকতাই তাঁর পেশা। বড়োদের জন্যে গল্প-উপন্যাস লেখেন। পাশাপাশি ছোটোদের জন্যে গল্প লিখেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : বন্ধকনামা, তিন চাকা, বক্সের বাইরে প্রভৃতি।
ক্ষীতিন্দ্রনারায়ণ ভট্টাচার্য
জন্ম ১৯০৯ সালে। মৃত্যু ১৯৯০ সালে। অধ্যাপনা করেছেন। বিখ্যাত ছোটোদের পত্রিকা ‘রামধনু’র সম্পাদক। বিজ্ঞান রচনার পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক গল্প লিখেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : বিজ্ঞানের জয়যাত্রা, আকাশের গল্প, বিজ্ঞান বুড়ো প্রভৃতি।
প্রেমেন্দ্র মিত্র
জন্ম ১৯০৪ সালে। মৃত্যু ১৯৮৯ সালে। কবি এবং কথাসাহিত্যিক। বড়োদের পাশাপাশি ছোটোদের জন্যে তাঁর লেখা খুবই বিখ্যাত। তাঁর ঘনাদার গল্পগুলির পাঠক ছোটো-বড়ো সকলেই। উল্লেখযোগ্য বই : ড্রাগনের নিশ্বাস, তেল দেবেন ঘনাদা, ঘনাদার গল্প, আবার ঘনাদা প্রভৃতি।
সুকুমার রায়
জন্ম ১৯৮৭ সালে। মৃত্যু ১৯২৩ সালে। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর পুত্র এবং চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের বাবা, বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক। প্রধানত ছোটোদের জন্য লিখেছেন ছড়া, গল্প, নাটক। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : আবোলতাবোল, হযবরল, পাগলা দাশু, চলচিত্তচঞ্চরী প্রভৃতি।
পার্থসারথি চক্রবর্তী
জন্ম ১৯৪১ সালে। অধ্যাপনা করেছেন। ঊর্ধ্বতন পদে সরকারি চাকরিও করেছেন। বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানভিত্তিক অনেক লেখা আছে তাঁর। উল্লেখযোগ্য বই : কল্পবিজ্ঞানের গল্প, রিলেটিভিটির মজা, আজব দেশে নিকুঞ্জবিহারী প্রভৃতি।
অদ্রীশ বর্ধন
জন্ম ১৯৩২ সালে। কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা আশ্চর্য-র সম্পাদক। ফ্যানটাসটিক পত্রিকারও সম্পাদক তিনি। বিজ্ঞান ও কল্পবিজ্ঞান লেখায় সিদ্ধহস্ত। বিখ্যাত বই : মাকড়সা আতঙ্ক, প্রোফেসর নাটবল্টু চক্র প্রভৃতি।
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত
জন্ম ১৯৭৩ সালে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এম.এ.। এখন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত। বড়োদের পাশাপাশি ছোটোদের জন্যে অনেক ভালো উপন্যাস ও গল্প লিখেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : মানুষ-কুমির, কৃষ্ণলামার গুম্ফা, রানি হাটস্পেসুটের মমি প্রভৃতি।
সমরজিৎ কর
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির প্রোফেসর। তিনি বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানভিত্তিক রচনায় পারদর্শী। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : অগ্রজ বিজ্ঞানী, দুই দেশ: শক্তি ও মানুষ, ফেরা প্রভৃতি।
মেঘনাদ সাহা
জন্ম ১৮৯৩ সালে। মৃত্যু ১৯৫৬ সালে। পৃথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞানী। ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের প্রতিষ্ঠাতা। উল্লেখযোগ্য বই : ট্রিয়েটাইজ অন মডার্ন ফিজিক্স, দ্য প্রিন্সিপ্যাল অফ রিলেটিভিটি টিয়েটাইজ অন হিট প্রভৃতি।
সিদ্ধার্থ ঘোষ
জন্ম ১৯৪৮ সালে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাঁর আসল নাম অমিতাভ ঘোষ। অনুবাদ করেছেন, বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানভিত্তিক রচনা লেখায় পারদর্শী। বিখ্যাত বই : কলকাতা নীলকণ্ঠ, গ্যাবনে বিস্ফোরণ, কলের শহর কলকাতা প্রভৃতি।
সত্যজিৎ রায়
জন্ম ১৯২১ সালে। মৃত্যু ১৯৯২ সালে। বাংলা শিশু ও কিশোর সাহিত্যের জনপ্রিয় লেখক। পৃথিবীবিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক। অস্কার পুরস্কারে ভূষিত। তাঁর ফেলুদা ও প্রোফেসর শঙ্কু চরিত্র দুটি তাবৎ পাঠকের মন জয় করেছে। ‘সন্দেশ’ পত্রিকাটি দীর্ঘদিন সম্পাদনা করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : জয় বাবা ফেলুনাথ, কৈলাসে কেলেঙ্কারি, রয়েল বেঙ্গল রহস্য প্রভৃতি।
রাজেশ বসু
জন্ম ১৯৭১ সালে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্ট্যাটিসটিকসে স্নাতক। কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থমন্ত্রকে কর্মরত। বড়োদের পাশাপাশি ছোটোদের জন্যেও চমৎকার লেখেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : পরির দুঃখ, কে প্রভৃতি।
অনীশ দেব
জন্ম ১৯৫১ সালে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্সে এম.টেক.। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রোফেসর পদে চাকরি করেছেন বিখ্যাত গোয়েন্দা ও কল্পবিজ্ঞান লেখক। বড়োদের পাশাপাশি ছোটোদের জন্যেও লেখেন। উল্লেখযোগ্য বই : ভয়পাতাল, ভৌতিক অলৌকিক, মার্ডার ডট কম প্রভৃতি।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
জন্ম ১৯২৪ সালে। বিশিষ্ট কবি। বড়োদের জন্যেও রহস্য উপন্যাস লিখেছেন। দীর্ঘদিন আনন্দমেলা পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। উল্লেখযোগ্য বই : নীল নির্জন, উলঙ্গ রাজা, কলকাতার যীশু প্রভৃতি।
শ্যামল দত্তচৌধুরী
জন্ম ১৯৪৫ সালে। ইঞ্জিনিয়ার, স্টিম বোলিং মিল থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে পুরোদমে সাহিত্য রচনায় আছেন। বড়োদের চেয়ে কিশোররা তাঁর লেখার ভক্ত পাঠক। উল্লেখযোগ্য বই : বমাল গ্রেফতার, কেমন আছে ইয়েতিরা প্রভৃতি।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
জন্ম ১৯৩৫ সালে। স্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে জীবন শুরু করেছেন। পরে সাংবাদিকতায় আসেন। জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। বড়োদের মতো ছোটোদের জন্যেও অনেক ভালো লেখা লিখছেন। উল্লেখযোগ্য বই : ঘুণপোকা, মানবজমিন, মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি, গোঁসাইবাগানের ভূত প্রভৃতি।
রতনতনু ঘাটী
জন্ম ১৯৫৩ সালে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. পাস করে সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু। এখন ‘আনন্দমেলা’ পত্রিকার সহ সম্পাদক। বড়োদের পাশাপাশি শিশু ও কিশোরদের জন্যে কবিতা, গল্প, উপন্যাস লেখেন। উল্লেখযোগ্য বই : মামাদের পোষা পরি, তিতির বন্ধু, কমিকস দ্বীপে টিনটিন প্রভৃতি।
এণাক্ষী চট্টোপাধ্যায়
জন্ম ১৯৩৪ সালে। কিছুদিন শিক্ষকতা করার পর এখন পুরোপুরি সাহিত্য রচনায় আছেন। ছোটোদের ও বড়োদের, দু’ধরনের পাঠকের জন্যে লেখেন। বিজ্ঞানভিত্তিক লেখায় সিদ্ধহস্ত। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : দাদুর দোয়াতদানি । তাঁর স্বামী বিজ্ঞানী শান্তিময় চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে লিখেছেন ভারতীয় বিজ্ঞান উত্তরণের কাল, পরমাণু জিজ্ঞাসা প্রভৃতি।
জগদীশচন্দ্র বসু
জন্ম ১৮৫৮ সালে। মৃত্যু ১৯৩৭ সালে। পৃথিবীবিখ্যাত বিজ্ঞানী। গাছের প্রাণ আছে তিনিই আবিষ্কার করেন। বিনা তারে খবর পাঠানোর উপায় তিনি প্রথম বের করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : অব্যক্ত, পলাতক তুফান, নিরুদ্দেশের কাহিনি প্রভৃতি।
Leave a Reply