গোলোক পুরের পরশ পাথর – অভীক দত্ত
ভূমিকা
ভুবনপুর।
শুনশান নিশুতি রাত। স্টেশনটা প্রত্যন্ত গ্রামের এক গুরুত্বহীন হল্ট স্টেশন। সারাদিনে দু একটা ট্রেন এসে দাঁড়ায়।
টিমটিমে আলো জ্বলছে প্ল্যাটফর্মের এক কোণে। বাকি স্টেশন একবারে অন্ধকার।
ভোর চারটে বাজে। হঠাৎই স্টেশনের নিস্তব্ধতাকে চিরে একটা ট্রেন এসে দাঁড়াল।
এই ট্রেনের স্টেশন ভুবনপুর নয়।
এই মেল ট্রেনটা সিগনাল পায় নি। কোন যাত্রী নামার কথাও না।
মিনিট পাঁচেক দাঁড়িয়ে রইল ট্রেনটা।
সিগনাল সবুজ হতেই হুইসল দিল।
ট্রেন নড়তে শুরু করতেই মাঝের একটা কামরার দরজা খুলে গেল।
একটা লম্বা মত লোক ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্মে নামল।
তার পরনে জরির কাজ করা রাজপোষাক।
কুলি রামরিখ বেঞ্চিতে শুয়ে ছিল।
চোখ খুলে লোকটার হাতে কোন মাল পত্র নেই দেখে আবার চোখ বন্ধ করল।
পরক্ষণেই তার প্রবল একটা অস্বস্তি হল।
লোকটার মুখটা… আদৌ কি লোকটার কোন মুখ আছে?
রামরিখ চোখ খুলতে দেখতে পেল লোকটা হাঁটতে হাঁটতে স্টেশনের বাইরে যাচ্ছে।
তার বুক দুরুদুরু করছিল।
সে উঠে বসতে দেখতে পেল তার পায়ের কাছে কিছু একটা চকচক করছে।
ঝুঁকে পড়ে সেটা তুলে দেখল একটা মোহর!
সে কোনদিন এত সুন্দর জিনিস দেখে নি। এই অন্ধকারেও জিনিসটা কেমন চকচক করছে। চোখ ঝলসিয়ে দিচ্ছে, মন শান্ত করে দিচ্ছে। কী অদ্ভুত, কী সুন্দর এই মোহর!
রামরিখ অবাক বিস্ময়ে সেটার দিকে তাকিয়ে রইল।
লোকটার কথা আর তার মাথাতেই এলো না।
Leave a Reply