ঋজুদা সমগ্ৰ ১ – বুদ্ধদেব গুহ
ঋজুদা সমগ্ৰ ১ – বুদ্ধদেব গুহ
প্রথম সংস্করণ জুন ১৯৯৩
ডঃ কৌশিক লাহিড়ী, কল্যাণীয়েষু
সবিনয় নিবেদন
বাংলা সাহিত্যে “দাদা”দের এক বিশেষ স্থান আছে। ঠিক শিশু সাহিত্যে বলা যায় না, কিশোর সাহিত্যেই এই “দাদা”রা বহুদিন হলো আসর জাঁকিয়ে আছেন। যেমন, প্রেমেন্দ্ৰ মিত্রর “ঘনাদা” এবং নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “টেনিদা”। দাদা না হলেও সব দাদার বড় দাদা, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশ বক্সী।
এই সব দাদারা যে অসামান্য দাদা তা আমরা আমাদের শৈশব এবং কৈশোরের দিন থেকেই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে স্বীকার করে আসছি। পরিণত বয়সে পৌঁছেও আজও তাঁদের ভুলতে পারিনি। সেই দাদারা সত্যিই অমরত্ব লাভ করেছেন। তাঁদের তুলনাতে এখনকার অন্য দাদারা বেশ নিস্প্রভই বলা চলে।
“ঋজুদা” বাংলা সাহিত্যে প্রথম আসে এপ্রিল, উনিশশো তিয়াত্তরে। অর্থাৎ ঠিক কুড়ি বছর আগে। আমি যতদূর জানি, যদি ভ্রম হয়, তবে মনোযোগী পাঠক আমার ত্রুটি সংশোধন করে দিলে বাধিত হব; সত্যজিৎ রায়ের “ফেলুদা”, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের “সন্তু ও কাকাবাবু”, সমরেশ বসুর “গোগোল” এবং কিশোর সাহিত্যের আরও অনেক স্থায়ী দাদা কাকা বা ভাইয়েরাই “ঋজুদা”র চেয়ে বয়সে অবশ্যই ছোট।
গুণপনায় হয়ত ঋজুদা খাটো কিন্তু সিনিয়রিটিতে নয়। বাংলা সাহিত্যে ‘ঋজুদার পদার্পণ এই বিখ্যাত দাদা এবং গোয়েন্দাদের পরে। ‘ঋজুদা গোয়েন্দাও বটে। সত্যজিৎ রায়ের “ফেলুদা” এবং ঋজুদা প্রায় সমসাময়িক। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কাকাবাবু ও সন্তু’, সমরেশ বসুর ‘গোগোল’ এবং বাংলা কিশোর সাহিত্যের আরও অনেক স্থায়ী দাদা কাকা বা ভায়েরাই “ঋজুদা”র চেয়ে বয়সে ছোট।
ঋজুদার প্রথম বই “ঋজুদার সঙ্গে জঙ্গলে” আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় উনিনশো তিয়াত্তরের বৈশাখে। দাম ছিল চার টাকা মাত্র। এবং আপাতত শেষ বই ‘ঋজুদার সঙ্গে সুষ্করে” বেরিয়েছে মাস ছয়েক আগে। ঋজুদার প্রত্যেকটি বইই আনন্দ পাবলিশার্স থেকেই প্রকাশিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও ঋজুদার যত বই লিখব তা এঁদেরই দেব এমন ইচ্ছা আছে কারণ ‘ঋজুদার অবস্থান একটি বাড়িতেই হওয়াটা বাঞ্ছনীয়।
“ঋজুদা” চরিত্রটি প্রথমে উদ্ভাবিত হয় বাংলা-ভাষা-ভাষী কিশোরদের মনে প্রকৃতি-প্রেম, পাখ-পাখালী, গাছ-গাছালি এবং আমাদের বিরাট, বৈচিত্রময় এবং সুন্দর এই দেশের সাধারণ গ্রামীণ এবং পাহাড়-বনে বসবাসকারী মানুষদের সম্বন্ধে উৎসাহ ও ভালোবাসা জাগাবার জন্যই। এই সব মানুষেরাই আসল ভারতীয়। শহর-বাসী ইংরিজি-শিক্ষিত, উচ্চমন্য, লোভী, ইতর আমরা সেই ভারতবর্ষের কেউই নই। নিজের দেশকে না জানলে, দেশের মানুষদের সুখ-দুঃখ আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে একাত্ম না হলে সেই কিশোরেরা বিদেশকেই পরম গন্তব্য বলে জানে। এবং মানেও। এই মানসিকতা নিয়ে কোনো দেশই প্রকৃতার্থে বড় হতে পারে না। আর কিশোররাই তো দেশের ভবিষ্যৎ!
কিশোরদের মনে অ্যাডভেঞ্চারের, সাহসের, শুভ-অশুভের, ন্যায়-অন্যায়ের বোধ, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়বার মতো মানসিকতা যাতে অনবধানেই গড়ে উঠতে পারে ঋজুদার।
ঋজুদার গল্প পড়ে পৃথিবীর বন-জঙ্গল, বন্য প্রাণী, ফুল-পাখি প্রজাপতিকে ভালবেসে থাকে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং মানুষের মন ও চরিত্রের উপর প্রকৃতির শুভ প্রভাব যে কতখানি হতে পারে সেই সম্বন্ধে একটুও অবহিত হয়ে থাকে; তবেই জানব যে আমার প্রয়াস অসফল হয়নি।
বহু দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করলেই কেউ “লেখক” হয়ে উঠতে পারেন না। “লেখক” হতে পায়ের তলায় সর্ষে নিয়ে প্রতি মাসে বিদেশ ভ্রমণ করারও কোনোই প্রয়োজন নেই। অলেখক তাতেও লেখক হয়ে ওঠেন না। উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি যে, আমাদের বাংলার একজন “সামান্য” “স্কুল শিক্ষক” বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, যে অসামান্য সাহিত্য রচনা করে গেছেন কিশোরদের জন্য, বাংলার ইছামতির পাশে ব্যারাকপুরে বসে, তার সঙ্গে তুলনীয় খুব বেশি সাহিত্য আছে বলে তো মনে হয় না।
আমি সশরীরে আফ্রিকাতে গেছি। আমি ছাড়াও সমসাময়িক লেখকদের মধ্যে আরো কেউ কেউও হয়তো গেছেন কিন্তু আমাদের মধ্যে কেউই কি “চাঁদের পাহাড়” অথবা “মরণের ডঙ্কা বাজে” লিখতে পারব? যিনি পারেন, তিনি আপনিই পারেন।
আফ্রিকার রুয়েজারী রেঞ্জে সত্যি সত্যি একটি পাহাড় আছে যার নাম “মাউন্টেইন অব দ্যা মুন”। “চাঁদের পাহাড়” নামে একটি শৃঙ্গ আছে। এই অধম যখন “মাউন্ট কিলিমানজারো” অথবা “মাউন্টেইন অব দ্যা মুন”-এর সামনে অপার বিস্ময় ও সম্ভ্রম নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছি, তখন মাথা নীচু করে মনে মনে প্রণাম করেছি অদেখা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। জেনেছি, “লেখা” কাকে বলে। জেনেছি, তাঁর তুলনায় আমার ক্ষুদ্রতার পরিমাপ।
একজন সামান্য লেখক হিসেবে আমি বিশ্বাস করি যে, প্রত্যেক লেখকের শিক্ষা, পারিবারিক ও সামাজিক পটভূমি, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন-দর্শন এবং মানসিকতা তাঁর পাঠকদের মধ্যে অনবধানে সঞ্চারিত হয়ে যায়ই! অভিনয়ের ক্ষেত্রে যেমন দেখা যায় একজন অভিনেতা উচ্চমানের অভিনয় করলে তাঁর সহ-অভিনেতার অভিনয়ের মানও সঙ্গে সঙ্গেই উন্নত হয়ে যায়, তেমনই লেখকের শিক্ষা, তাঁর প্রেক্ষিত, তাঁর ভাষা এবং তাঁর বক্তব্যর মান যদি উঁচুমাপের হয় তবে নিজেদের অজানিতেই পাঠকদেরও মানসিকতার উন্নতি ঘটে, রুচি পরিশীলিত হয়; জীবন-দর্শনও অনবধানে পাল্টে যায়। উদাহরণ : রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ যদি পাঠকদের খুশি করার জন্য তাঁদের মানসিক সমতাতে তাঁর লেখালেখিকে নামিয়ে আনতেন তবে পুরো বাঙালি জাতির এইরকম সার্বিক আত্মিক উন্নতি হতো না।
“ঋজুদা সমগ্র”র প্রথম খণ্ডে চারটি উপন্যাস সংকলিত হয়েছে। “গুগুনোগুম্বারের দেশে”, “অ্যালবিনো” “রুআহা” এবং “নিনিকুমারীর বাঘ”।
“গুগুনোগুম্বার” আফ্রিকার একটি উপজাতির রূপকথায় বর্ণিত দেবতা। এই উপন্যাসের পটভূমি পূর্ব-আফ্রিকার পৃথিবী-বিখ্যাত “সেরেঙ্গেটি প্লেইনস”। এত বড় তৃণভূমি এবং “কুডু” আর “গরিলা” ছাড়া আফ্রিকার প্রায় সব জীবজন্তুরই এমন অবাধ বিচরণভূমি পৃথিবীতে নেই-ই বললে চলে। এই সেরেঙ্গেটি আমেরিকান লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের প্রিয় শিকার-ভূমি ছিল।
“গুগুনোগুম্বারের দেশে”-তে ঋজুদার আফ্রিকান সঙ্গী “ভুষুণ্ডা” বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁকে আর রুদ্রকে প্রায় মৃত্যুর মুখেই দিগন্তহীন, পথচিহ্নহীন সেরেঙ্গেটি প্লেইনস-এর মধ্যে পরিত্যাগ করে পালিয়ে যায়। রুদ্র কোনোক্রমে আহত ঋজুদাকে হায়নাদের হাত থেকে বাঁচায়। তারপর সারা দিন অপেক্ষমান রক্তমাংসলোলুপ এক ঝাঁক শকুনদের হাত থেকেও বাঁচায়, যারা জীবিতাবস্থাতেই ঋজুদার মাংস খুবলে খাবার চেষ্টাতে ছিল। তারপর গভীর রাতে, আহত, অজ্ঞান ঋজুদা ও ক্লান্তিজনিত ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন-দেখা রুদ্রকে ঘিরে ফেলে একদল সাত-ফিট লম্বা মাসাই যোদ্ধা, “ইলমোরান”রা। পরে এক মাসাই সর্দার, “নাইরোবী” সর্দারের দেওয়া হলুদ গোলাকৃতি পাথরটা রুদ্র তাদের দেখাতেই তারা ঋজুদাকে তাদের বর্শার সঙ্গে তাদের পরিধেয় লালরঙা, হাতে-বোনা কম্বল বেঁধে নিয়েস্ট্রেচার মতো করে তার উপরে ঋজুদাকে শুইয়ে নিয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলে তাকে কাঁধে নিয়ে তাদের “ক্রাল”-এ নিয়ে যায়।
ঋজুদা সুস্থ হবার পরে সেখান থেকে ফিরে আসে কলকাতাতে ঋজুদা—রুদ্র। রুদ্রই, বলতে গেলে, ঋজুদাকে বাঁচিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসে সেবারে আফ্রিকা থেকে।
শরীর সুস্থ হয়েছে যদিও কিন্তু কোথাও গিয়ে একটু হাওয়া বদলে আসা দরকার যখন ঠিক তখনই বিহারের হাজারীবাগের কাছেই “মুলিমালোঁয়া” যাওয়া হয়ে উঠলো ওদের। লালিটাওয়া আর গীমারিয়ার মাঝামাঝি জায়গাটি। যাওয়া হলো, মুলিমালোয়ার রাজা বিষেনদেও সিং-এর সনির্বন্ধ অনুরোধে। একটি “অ্যালবিনো” বাঘ বেরিয়েছিল তাঁরই জমিদারীতে। তাই সেই দুষ্প্রাপ্য, শ্বেতী-হওয়া অ্যালবিনো বাঘটিকে শিকার করার আমন্ত্রণ জানালেন তিনি ঋজুদাকে এবং সেই সুবাদেই ওদের মুলিমাঁলোয়াতে যাওয়া সেবারে। সেখানে গিয়ে রুদ্র আর ঋজুদা বুক-হিমকরা গা-ছমছম এক রহস্যর মধ্যে পড়ে গেলো। “অ্যালবিনো”র সেই রহস্য ভেদ নিয়েই “অ্যালবিনো” উপন্যাস।
“অ্যালবিনো”ই আমার দ্বিতীয় গোয়েন্দা উপন্যাস। প্রথমটি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের হনলুলুর পটভূমিতে বড়দের জন্য লেখা “ওয়াইকিকি”। হাওয়াই থেকে ফিরে আসার পরই লিখি ঐ উপন্যাস। আমার কলমে আদৌ গোয়েন্দা উপন্যাস আসে কিনা সে সম্বন্ধে কিশোরদের জন্য লেখা “অ্যালবিনো” এবং বড়দের জন্য লেখা (ওটি অ্যাডাল্টদের জন্য, ছোটদের জন্য আদৌ নয়) “ওয়াইকিকি” পড়ে পাঠক-পাঠিকারা যদি তাঁদের মতামত জানান তবে বাধিত হব। তবে এমন ইচ্ছা পোষণ করি যে, প্রতি বছরই পুজোর সময় বা বইমেলার আগে একটি করে ঋজুদা-উপাখ্যান সরাসরি লিখে কোনো প্রকাশকের মাধ্যমে প্রকাশ করব।
“মুলিমাঁলোয়া” থেকে ফিরে আসার পর ঋজুদার কাছে খবর এলো যে বিশ্বাসঘাতক ভুষুণ্ডাকে নাকি পূর্ব-আফ্রিকার তানজানিয়ার (আগের জার্মান ইস্ট-আফ্রিকা) আরুশা শহরে দেখা গেছে।
বদলা নেবার জন্য তানজানিয়াতে যাওয়া স্থির করলো ঋজুদা। ওখানে যাবার পরে ঘটনাপ্রবাহ তাদের নিয়ে পৌঁছে দিল “রুআহাতে”। “রুআহা” নামক একটি নদী আছে পূর্ব-আফ্রিকাতে এবং সেই নদীর নামেই একটি ন্যাশনাল-পার্কও আছে। সেই পার্কের মধ্যেই ভুষুণ্ডা এবং তাদের দলের সঙ্গে চললো ঋজুদারুদ্রদের চোর-পুলিশ খেলা। এবং তারপর রীতিমত যুদ্ধ।
এ পর্যন্ত ঋজুদার সব অ্যাডভেঞ্চারের সঙ্গী ছিল রুদ্র একাই। “বনবিবির বনেতে” অবশ্য সঙ্গে আরও অনেকে ছিলেন। ঋজুদার বহুদিনের খিদমদগার গদাধরদার বাবাকে যে মানুষখেকো বাঘে খেয়ে ফেলেছিল তাকেই মারতে ওরা সুন্দরবনে যায়। রুদ্রই মারে সেই বাঘটিকে।
কিন্তু এবারে তাদের সঙ্গী হলো একটি মেয়ে। তিতির। মডার্ন হাইস্কুলের ক্লাস নাইনের ছাত্রী। তুখোর মেয়ে। পড়াশুনোতে, বিতর্কে, উজ্জ্বল। আগ্নেয়াস্ত্র চালানোতে বিশেষ পারদর্শী।অনেক ভাষা-ভাষী তিতিরকে ঋজুদার গল্পে আনাতে আমার কিশোরী পাঠিকারা বেজায় খুশি হয়েছিলেন। তাঁদের কাছ থেকে অগণ্য চিঠি পাই।
“রুআহা” পর্বে ভুষুণ্ডা অ্যান্ড কোম্পানিকে শায়েস্তা করে ওরা তিনজনে ফিরে আসার কিছুদিন পরে ওড়িশা থেকে ডাক এলো ঋজুদার।
“সাম্বপানি” নামের একটি এককালীন দেশীয় করদ রাজ্যের ছোট রাজকুমারী, নিনিকুমারী; একটি বাঘকে গুলি করে আহত করেন। সেই বাঘ পরে এক বিভীষিকাময় নরখাদকে রূপান্তরিত হয়ে যায়। অগণ্য মানুষ খেতে থাকে সে বহুবছর ধরে। তাকে কোনো শিকারীই মারতে না পারায় কলকাতার ঋজু বোসের ডাক পড়ে। যেতে রাজী হয় ঋজুদা। কিন্তু এই অভিযানে তিতিরের সঙ্গে নতুন একজন সঙ্গী জুটলো রুদ্ররই বন্ধু মিস্টার ভটকাই। বিচিত্রবীর্য, উত্তর কলকাতার এক ফাজিল ছেলে ভটকাইকে একবার সঙ্গে নেওয়ার জন্য রুদ্র অবশ্য বহুদিন থেকেই উমেদারী করে যাচ্ছিলো ঋজুদার কাছে। এমনকি “রুআহা” অভিযানের রোমাঞ্চকর সমাপ্তির পরেই রুদ্র সেই পটভূমিতেই দাঁড়িয়ে ঋজুদাকে, যাকে এখনকার কিশোর-কিশোরীদের টার্মিনোলজিতে “সেন্টু” দেওয়া বলে, তাই দিয়ে বলেছিলো : “একটা কথা দাও ঋজুদা, প্রমিস; যে, এরপরের বার আমরা যখন কোথাও যাব তখন আমাদের সঙ্গে কিন্তু ভটকাইকেও নিয়ে যেতে হবে।
আফ্রিকার পটভূমিতে যেসব লেখা লিখেছি তাতে অফ্রিকান গন্ধ ও পরিবেশ যাতে সঠিকভাবে ফুটে ওঠে সেইজন্যে চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা ছাড়াও নানারকম পড়াশুনোও করতে হয়েছিল। সেই সঙ্গে সোয়াহিলি ভাষাটাও শিখতে হয়েছিলো একটু-আধটু। মাসাইদের ভাষা, যার নাম “মা-আ”–তারও অল্প-স্বল্প।
আফ্রিকার পটভূমিতে একটি ভ্রমণোপন্যাস লিখেছি, “পঞ্চম প্রবাস”। আর খুব উঁচু, ঠাণ্ডা, হিম-পাহাড়ে এবং বিস্তীর্ণ তৃণভূমিতে বসবাসকারী যাযাবর, গো-চারক, কাঁচা-রক্ত, কাঁচা-দুধ, এবং কাঁচা-মাংস খাওয়া দুঃসাহসী “মাসাই”রা আমাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছিল বলে তাদের সম্বন্ধেও অনেক পড়াশোনা করে একটি নৃতত্ত্বমূলক লেখা লিখেছিলাম, “ইলমোরাণদের দেশে”।
যদি কোনো পাঠক-পাঠিকার “ঋজুদা-সমগ্র” ভালো লাগে তবে তাঁরা আফ্রিকার পটভূমিতে লেখা “পঞ্চম প্রবাস” এবং “ইলমোরাণদের দেশে” পড়ে দেখতে পারেন। ঐ দুটি বইয়েরই প্রকাশক দে’জ পাবলিশিং।
আশা করি “ঋজুদা সমগ্র”র প্রথম খণ্ড আমার কিশোর-কিশোরী পাঠক-পাঠিকা এবং তাদের বাড়ির প্রত্যেকেরই ভালো লাগবে। এবং যদি লাগে, তবে এই লেখকের কাছে তাই হবে সবচেয়ে বড় পুরস্কার।
কোনো পাঠক-পাঠিকা যদি কোনো ব্যাপারে যোগাযোগ করতে চান বা তাঁদের ভালোলাগা-মন্দলাগা জানাতে চান তবে পোস্ট বক্স নং ১০২৭৬, কলকাতা-৭০০০১৯ এই ঠিকানাতে চিঠি লিখতে পারেন।
ইতি—বিনত লেখক
Leave a Reply