ইলেভেন মিনিটস – পাওলো কোয়েলহো
অনুবাদ : অনীশ দাস অপু
প্রথম প্রকাশ – জুন ২০০৭
প্রচ্ছদ – হাসান খুরশীদ রুমী
.
উৎসর্গ
২৯ মে ২০০২, আমি এ বইয়ের কাজটি শেষ করলাম। বোতলে বসন্ত থেকে কিছু অলৌকিক পানি ভরার জন্য আমি ফ্রান্সের লর্ডস-এর গ্রুটো গেলাম। শান্ত সৌম্য ব্যাসিলিকা আমাকে বললো, ‘তুমি কি জানো, তুমি দেখতে ঠিক পাওলো কোয়েলহোর মতো!’ আমি বললাম, ‘আমিই পাওলো কোয়েলহো। লোকটি আমার সাথে কোলাকুলি করল এবং আমাকে তার স্ত্রী ও নাতি-নাতনির সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। সে তার জীবন থেকে আমার বইয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে বলে চললো। অবশেষে বললো, ‘তারা আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছে।’ আমি প্রায়ই এ কথা আগেও শুনেছি এবং তারা সবসময় আমাকে মহান বলে ভাবে। যা হোক, এ মুহূর্তে আমি প্রকৃতপক্ষে ভয় অনুভব করছি। কারণ, আমি জানি এটা আমার প্রথম উপন্যাস ‘ইলেভেন মিনিটস’-এ তুলে ধরা হয়েছে কর্কশ, কঠিন, আঘাত- প্রবণভাবে। আমি বসন্তে সেখানে গেলাম বোতলগুলো ভরতে। আমি ফিরে এলাম, তারপর জিজ্ঞাসা করলাম সে কোথায় বাস করে (ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলে, বেলজিয়ামের নিকটে) এবং তা লিখে রাখলাম।
মার্সি গ্রাভেলাইন্স, এ বইটি তোমাকে উৎসর্গ করলাম। আমার কর্তব্য তোমার স্ত্রীর এবং নাতি-নাতনির সাথে কথা বলা এবং আমার পছন্দের কথা সব জানানো। কিছু বই আমাদের স্বপ্ন দেখায়, অন্যান্যরা আমাদেরকে বাস্তবের মুখোমুখি এনে দেয়। কিন্তু কোন্ বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে লেখকের সততা, যা এ বইয়ে লেখা হয়েছে।
.
অনুবাদকের উৎসর্গ
দীর্ঘদিন পরে আবারও রুমী ভাইকে
.
যেভাবে লেখা হলো ইলেভেন মিনিটস
সেক্স বা যৌনতার পবিত্র প্রকৃতি আবিষ্কার করতে আমার দীর্ঘ সময় লেগেছে। যৌবনে আমি ছিলাম খুবই স্বাধীন, যা ইচ্ছা তা-ই করে বেড়িয়েছি।
সত্তরের দশকে আরভিং ওয়ালেস আমেরিকার সেন্সরশিপ নিয়ে একটি বই লেখেন। বইয়ের নাম ‘দ্য সেভেন মিনিটস’ এ উপন্যাসে যৌনতার বিষয়টি খুব বেশি আসে নি।
১৯৯৭ সালে, ইতালির মানতুয়ায় একটি বক্তৃতা দান শেষে আমি ফিরে যাই আমার হোটেলে। দেখি কে একজন একটি পাণ্ডুলিপি রেখে গেছে রিসেপশনে। আমি অযাচিত কোনো পাণ্ডুলিপি পড়ি না। তবে এটি পড়লাম- একজন ব্রাজিলীয় পতিতার সত্যিকারের অ্যাডভেঞ্চার। ২০০০ সালে, আমি জুরিখ দিয়ে যাচ্ছি, আমার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল ওই পতিতার, পেশাদারভাবে সে সোনিয়া নামে পরিচিত। জানতে চাইল তার লেখা আমার পছন্দ হয়েছে কিনা। আমি বললাম লেখাটি আমার ব্রাজিলীয় প্রকাশকের কাছে পাঠিয়ে দিতে। তবে প্রকাশক শেষে সিদ্ধান্ত নেয় বইটি প্রকাশ করবে না। সোনিয়া ওই সময় ইটালি থাকত। জুরিখে এসেছিল আমার সঙ্গে দেখা করতে। সে আমাকে, আমার এক বন্ধু এবং ‘ব্লিক’ পত্রিকার এক মহিলা সাংবাদিককে (ইনি আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন) নিমন্ত্রণ জানাল ল্যাংস্ট্রাসে যাবার জন্য। এটা স্থানীয় পতিতালয়। আমি জানতাম না সোনিয়া ইতিমধ্যে তার সহকর্মীদের বলে দিয়েছে যে আমরা আসছি। আমি অবাক হয়ে গেলাম দেখে অনেক মেয়েই এলো আমার লেখা বই হাতে। তারা অটোগ্রাফ চাইছিল।
ওই সময় সেক্স নিয়ে লেখার চিন্তা-ভাবনা চলছিল মাথায়। তবে প্লট বা মূল চরিত্রগুলো খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ল্যাংস্ট্রাসে গিয়ে মনে হলো সেক্স নিয়ে লিখতে হলে আসলে আগে জানা উচিত কেন সেক্স নিষিদ্ধ বস্তু।
‘সুইস ম্যাগাজিন L’llustree’র এক সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে আমি ল্যাংস্ট্রাসের অভিজ্ঞতার কথা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলছিলাম তাকে। সে এ নিয়ে দীর্ঘ একটি প্রতিবেদন রচনা করল
এর ফল যা হলো- জেনেভায় বহু পতিতা এলো আমার অটোগ্রাফ নিতে। এদের একজন আমার নজর কেড়ে নেয়। এই মেয়েটির সঙ্গে আমি বেশ কয়েকদিন বৈঠক করি। সঙ্গে ছিল আমার এজেন্ট এবং বান্ধবী মোনিকা আন্তন। ওই মেয়ের সঙ্গে বৈঠকের ফলে জন্ম নিয়েছে ইলেভেন মিনিটস।
আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার সুইশ প্রকাশক অ্যানা ভন প্লান্টাকে যিনি তার দেশের পতিতাবৃত্তি সম্পর্কে আমাকে প্রচুর তথ্যের যোগান দিয়েছেন। ধন্যবাদ দিতে চাই জুরিখের সোনিয়াকেও যার সঙ্গে মানতুয়ায় প্রথম দেখা আমার (হয়তো একদিন তোমার বইও প্রকাশ হবে!) ধন্যবাদ রইল মার্থা, আন্তেনোয়া এবং ইসাবেলাকে। আরও ধন্যবাদ থাকল জেনেভার এমি, লুসিয়া, আদ্রেই, ভ্যানেসা, প্যাট্রিক, থেরেস ও অ্যানা ক্রিস্টিনাকে।
সবশেষে ধন্যবাদ দিব আসল মারিয়াকে, যার অভিজ্ঞতা আমাকে এ বই লিখতে উদ্বুদ্ধ করেছে। এই মারিয়া বর্তমানে তার স্বামী এবং চমৎকার দুটি কন্যা সন্তান নিয়ে লুসানে বাস করছে।
পাওলো কোয়েলহো
.
ভূমিকা
রোদেলা’র তরুণ প্রকাশক রিয়াজের সঙ্গে বছরখানেক আগে বসুন্ধরা সিটির বর্ষার বইমেলায় পরিচয় করিয়ে দেন রুমী ভাই (প্রচ্ছদ শিল্পী এবং সায়েন্স ফিকশন সংকলন করে বিখ্যাত হাসান খুরশীদ রুমী।) রিয়াজ তখন প্রকাশনার জগতে পা দেয়ার তোড়জোড় করছেন। বললেন আমি যেন তাঁকে হিট কোনো লেখকের থ্রিলার অনুবাদ করে দিই। ‘দিব’-আশ্বাস দিয়েছিলাম তাঁকে। এরপর রিয়াজের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না আমার।
গত বইমেলায় তিনি চমৎকার প্রচ্ছদের একটি বই নিয়ে এসে হাজির। বললেন, ‘দাদা, আপনাকে এ বইটি অনুবাদ করে দিতে হবে। রুমী ভাই বলেছেন এ ধরণের বই আপনার চেয়ে ভালো কেউ অনুবাদ করতে পারবে না।’ কী ধরণের বই? বইয়ের নাম ইলেভেন মিনিটস, লেখক পাওলো কোয়েলহো। আমি এর আগে পাওলো কোয়েলহো’র নামই শুনি নি। (নাম না শোনারই কথা। কারণ আমার জগত থ্রিলার, হরর, সায়েন্স ফিকশন ও ক্ল্যাসিকস-এ সীমাবদ্ধ। কোয়েলহো’র জগত এ থেকে আলাদা।) রিয়াজ সোৎসাহে জানালেন কোয়েলহো নামকরা পর্তুগিজ লেখক, ব্রাজিলের হুমায়ূন আহমেদ। ইলেভেন মিনিটস তাঁর লেটেস্ট বই। এক পতিতাকে নিয়ে গল্প। রিয়াজ বইটি আরেকজনকে অনুবাদ করতে দিয়েছিলেন, (আমার কাছে ওই সময় আসেন নি কারণ তিনি জানতেন থ্রিলার বা হরর ছাড়া অন্য কিছুতে আমার তেমন উৎসাহ নেই।) সেই লোক নাকি বইটি কয়েকপাতা পড়েই রিয়াজকে ফেরত দেন ‘অশ্লীল’ বলে এবং পরামর্শ দেন এ বই প্রকাশ না করার জন্য। রিয়াজ তাঁর পরামর্শে চটে লাল হয়ে যান এবং উল্টো তাঁকে শুনিয়ে দেন, যার মধ্যে সৃজনশীলতা নেই তাঁর পক্ষে কোয়েলহো’র বই’র মর্ম উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। এরপর রিয়াজ রুমী ভাই’র কাছে পরামর্শ চাইতে যান কাকে দিয়ে ইলেভেন মিনিটস-এর গ্রহণযোগ্য অনুবাদ করানো সম্ভব। রিয়াজের ভাষ্য অনুযায়ী, রুমী ভাই তাৎক্ষণিকভাবে আমার নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘অনীশই এ ধরণের বই অনুবাদে সেরা।’
রিয়াজের কথা শুনে আমি মুচকি হাসি। এ ধরণের বই বলতে রুমী ভাই কী বোঝাতে চেয়েছেন তা তিনিই জানেন, তবে আমার মনে হয় সরাসরি তিনি যেটা বলেন নি তাহলো- বইতে যৌন বর্ণনা থাকলে তা সংক্ষেপিত করার পক্ষপাতি আমি নই। এটা আমি কখনো করি না। কিছু থ্রিলার বইতে প্রচুর সেক্স থাকে। আমি সে সব বর্ণনায় কখনো কাঁচি চালাই না। কারণ লেখক যদি যৌন বর্ণনায় উদার হতে পারেন, অনুবাদক হিসেবে আমি কেন সেন্সরশিপের মাতব্বরী করতে যাব? তাছাড়া এসব বইতে আমি পরিষ্কার উল্লেখ করে দিই এগুলো অপ্রাপ্তবয়স্কদের পড়া বারণ।
যাহোক, রিয়াজের উৎসাহেও আমি শুরুতে খুব একটা উৎসাহ বোধ করি নি। কারণ যেসব লেখক সম্পর্কে আমি অবগত নই তাদের বই না পড়ে অনুবাদে সম্মতি প্রদানের কাজটি কখনোই করি না। তবু রিয়াজের অনুরোধে বইটি আমি বাসায় নিয়ে আসি এবং প্রথম পৃষ্ঠাটি পড়তে গিয়েই চমকে যাই। কী সুন্দর একটা শুরু… এক দেশে ছিল এক পতিতা, নাম তার মারিয়া। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়তে থাকি। কোয়েলহো’র চমৎকার সহজ ভাষা, কাহিনীর গাঁথুনি কোথাও আটকায় না আমাকে, তরতর করে এগিয়ে যেতে থাকি।
অনুবাদের ক্ষেত্রে প্রকাশকদের চাপে এবং সময় স্বল্পতার জন্য অনেক সময়ই পুরো বইটা পড়া হয়ে ওঠে না আমার। তবে ইলেভেন মিনিটস এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করেছি আমি। এতই ভালো লেগেছে! আমার বোধগম্য হয় না রিয়াজের ওই অনুবাদক কী করে এতা চমৎকার একটি বইকে অশ্লীল আখ্যায়িত করলেন। বইটিতে কাহিনীর প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় অনিবার্যভাবে এসেছে সেক্স। তবে কোয়েলহো’র দারুণ লেখনীতে সেইসব যৌন বর্ণনা শিল্প বা আর্টের রূপ পেয়েছে, কোনোভাবেই একে অশ্লীলতার দোষে দুষ্ট করার অবকাশ নেই। পাঠক বইটি পড়লে আমার সঙ্গে একমত হবেন আশা করি।
ইলেভেন মিনিটস মারিয়া নামের এক ব্রাজিলীয় পতিতার চমৎকার মানবিক কাহিনী। বিদেশী এ কাহিনী পড়ার সময় আপনার কিন্তু মনে হবে না মারিয়া একজন বিদেশিনী, তাকে মনে হবে কাছের কেউ। তার জন্য আপনার মায়া লাগবে, কষ্ট হবে। বইটি পড়া শেষে একটি সুলিখিত উপন্যাস পাঠের তৃপ্তিতে সন্তুষ্ট হবেন। হয়তো পাওলো কোয়েলহো’র আরো বই পড়ার ইচ্ছে জাগবে আপনার। যেমনটি আমার জাগছে। ভাবছি রিয়াজকে বলব ব্রাজিলের হুমায়ূন আহমেদটির আরো বই আমাকে পড়তে দেওয়ার জন্য। উনি যদি আমাকে কোয়েলহো’র আর কোনো বই অনুবাদ করে দিতে বলেন, এবারে আমি কাজটা করে দিতে একপায়ে খাড়া!
অনীশ দাস অপু
.
হে মেরী, পাপ থেকে বিমুক্ত থাকো,
যে তোমাকে ফিরিয়ে এনেছে।
–অ্যামেন
আর নগরীর সেই পাপিনী যখন জানতে পারলো যে, প্যারিসি’র বাড়িতে সে অবস্থান করছে, তখন সে একটি অভিশাপের ছোঁয়া বয়ে আনলো।
তার পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে সে ফুঁপিয়ে কাঁদতে আরম্ভ করলো। অশ্রুতে তার পা ভিজে এলো। মাথার চুল এলোমেলো হয়ে গেল। সে তার পায়ে চুমো খেলো। ছোঁয়ায় সে উষ্ণ হলো।
আর প্যারিসি যখন তাকে নিষেধ করলো, সে দেখলো নিজেকে আর বললো, এই লোক, যদি সে মহামানব হয়ে থাকে, নারীর প্রতি তার নীতি ও ছোঁয়া, যে নারী একজন পাপিনী
যিশু উত্তর দিল, সিমন, তাকে আমার কিছু বলার আছে। সে অনুগত এবং এক প্রভু, একথা বলা যায়।
দুজনের এই বিশ্বাস যেন পাঁচশত পেন্সের সমান। আর অন্যদের জন্য পঞ্চাশ পেন্স।
যেখানে তাদের পরিশোধ করার কিছুই নাই, তারা উভয়ই তা ক্ষমা করে দেন। কেননা তারা ভালোবাসে তাদের খুব গভীরভাবে।
একথা শুনে সিমন উত্তর দিল এবং বললো, আমি মনে করি, সে তাকে ক্ষমা করেছে, আর তাকে বলেছে, এটা অবশ্যই সঠিক বিচার। ফিরে আসার মুহূর্তে মহিলাটি সিমনকে বললো, দেখে নাও এই নারীকে? সে প্রবেশ করেছে পাপের ঘরে, পায়ে ফেলেছে অশ্রু। এই অশ্রু ধুয়ে দিয়েছে তার পা, আর তার চুলে করেছে বিন্যস্ত।
সে আমাকে চুমেছে; যখনই আমি এসেছি। সে আমার পায়ের চুমোকে দীর্ঘায়িত করেছে।
আমার মাথায় তেল মেখেছে কিন্তু আঁচড় দেয় নি। কেবল পায়ে মালিশ মেখেছে।
শেষে আমি তাকে বলি, তার পাপ অনেক, আর তা ক্ষমা করা হয়েছে, তাকে অনেক ভালোবাসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ক্ষমা যেমন ক্ষুদ্র ভালোবাসাও তেমনি ক্ষুদ্ৰ।
লুক : ৭ : ৩৭-৪৯
.
প্রথম আর শেষের জন্য আমি
আমি হতাশ, আমি বিধ্বস্ত
আমি বেশ্যা, আমি পাপিনী
আমি বধূ, আমি কুমারি
আমি মা, আমি কন্যা
আমি আমার মায়ের একটি বাহু
আমি শিশুদের বাহক, সেই যারা আমারই
আমি বিবাহিতা নারী, আমি অশালীন
আমি নারী, জন্ম দেয় যে তাকে
যে কখনোই আটকে না
জন্মব্যথার শান্ত্বনা প্রাপ্ত আমি
আমি স্ত্রী, আমি স্বামী
আর যে ছিল আমার, যে সৃষ্টি করেছে আমাকে
আমি আমার পিতার একজন মা
আর স্বামীর একজন বোন আমি
বিচ্ছিন্ন হওয়া পুত্র সে আমার
শ্রদ্ধার সাথে সে আমার অস্তিত্ব সর্বদা,
এজন্য আমি লজ্জিতা আর ত্যাগিনীর একজন।
–আইসিসের প্রতি হেমন
খ্রিস্টপূর্ব ৩য় অথবা ৪র্থ শতাব্দী
নাগ হামাদি কর্তৃক আবিষ্কৃত
TArik
NA