আনন্দমঠ – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
আনন্দমঠ – উপন্যাস – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
উপক্রমণিকা
অতি বিস্তৃত অরণ্য। অরণ্যমধ্যে অধিকাংশ বৃক্ষই শাল, কিন্তু তদ্ভিন্ন আরও অনেকজাতীয় গাছ আছে। গাছের মাথায় মাথায় পাতায় পাতায় মিশামিশি হইয়া অনন্ত শ্রেণী চলিয়াছে। বিচ্ছেদশূন্য, ছিদ্রশূন্য, আলোকপ্রবেশের পথমাত্রশূন্য; এইরূপ পল্লবের অনন্ত সমুদ্র, ক্রোশের পর ক্রোশ, ক্রোশের পর ক্রোশ, পবনে তরঙ্গের উপরে তরঙ্গ বিক্ষিপ্ত করিয়া চলিয়াছে। নীচে ঘনান্ধকার। মধ্যাহ্নেও আলোক অস্ফূট, ভয়ানক! তাহার ভিতরে কখন মনুষ্য যায় না। পাতার অনন্ত মর্ম্মর এবং বন্য পশুপক্ষীর রব ভিন্ন অন্য শব্দ তাহার ভিতর শুনা যায় না।
একে এই বিস্তৃত অতি নিবিড় অন্ধতমোময় অরণ্য; তাহাতে রাত্রিকাল। রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর। রাত্রি অতিশয় অন্ধকার কাননের বাহিরেও অন্ধকার, কিছু দেখা যায় না। কাননের ভিতরে তমোরাশি ভূগর্ভস্থ অন্ধকারের ন্যায়।
পশুপক্ষী একেবারে নিস্তব্ধ। কত লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি পশু, পক্ষী, কীট, পতঙ্গ সেই অরণ্যমধ্যে বাস করে। কেহ কোন শব্দ করিতেছে না। বরং সে অন্ধকার অনুভব করা যায় – শব্দময়ী পৃথিবীর সে নিস্তব্ধভাব অনুভব করা যাইতে পারে না।
সেই অন্তশূন্য অরণ্যমধ্যে, সেই সূচীভেদ্য অন্ধকারময় নিশীথে, সেই অননুভবনীয় নিস্তব্ধ মধ্যে শব্দ হইল, “আমার মনস্কাম কি সিদ্ধ হইবে না?”
শব্দ হইয়া আবার সে অরণ্যানী নিস্তব্ধে ডুবিয়া গেল; তখন কে বলিবে যে, এ অরণ্যমধ্যে মনুষ্যশব্দ শুনা গিয়াছিল? কিছুকাল পরে আবার শব্দ হইল, আবার সেই নিস্তব্ধ মথিত করিয়া মনুষ্যকণ্ঠ ধ্বনিত হইল, “আমার মনস্কাম কি সিদ্ধ হইবে না?”
এইরূপ তিন বার সেই অন্ধকারসমুদ্র আলোড়িত হইল। তখন উত্তর হইল, “তোমার পণ কি?”
প্রত্যুত্তরে বলিল, “পণ আমার জীবনসর্ব্বস্ব।”
প্রতিশব্দ হইল, “জীবন তুচ্ছ; সকলেই ত্যাগ করিতে পারে।”
“আর কি আছে? আর কি দিব?”
তখন উত্তর হইল, “ভক্তি।”
অসংখ্য ধন্যবাদ
Darun upnas.
Satyajit Roy ebong Saradindu Bandopadhayer galpo pele khub khusi habo.
লেখক এক নাম্বার নিয়মটা না জারি করলেও পারতেন । শুধু শুধু কচিকাঁচা হিমু প্রেমিদের কষ্ট দেওয়ার কি প্রয়োজন ছিল ?
এই লাইব্রেরিকে ধন্যবাদ । হিমু রিমান্ডে আর তিতাস একটি নদীর নাম পুরো বইটি দেওয়া যাবে ?
ফারিহা, দুঃখ করো না । আমরা নিশ্চয়ই একদিন হিমু হবই ।