অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র ১ – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত
প্রথম প্রকাশ : ডিসেম্বর ২০১৫, অগ্রহায়ণ ১৪২২
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ : রঞ্জন দত্ত
.
উৎসর্গ
প্রয়াত পিতৃদেব শৈলেন্দ্রকিশোর দাশগুপ্তকে
— শৈশবে যিনি আমাকে প্রথম অজানা পৃথিবীর গল্প শুনিয়েছিলেন
.
আফ্রিকার গ্রেট রিফট্ উপত্যকার সিংহ আর বিষমাখানো তির হাতে পিগমি অধ্যুষিত বনাঞ্চল, ভয়ংকর কমোডো ড্রাগনের দ্বীপ, মিশরের জাদুকরী দেবী ‘থথ’-এর প্রাচীন মন্দির, অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রতলে অক্টোপাসের গুহা, আবার কখনো বা বোর্নিওর মৃত আগ্নেয়গিরির কন্দর! অদেখা পৃথিবী, অদেখা মানুষ, বিচিত্র প্রাণীর খোঁজে সুদীপ্ত-হেরম্যানের পাঁচটি রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস এক মলাটে সংকলিত।
.
ভূমিকা
বিপুলা, বিচিত্র এই পৃথিবী মানুষের-জীবজগতের রঙ্গমঞ্চ। এই ইন্টারনেট-স্যাটেলাইটের যুগেও কত অজানা রহস্যর আঁতুড়ঘর এই পৃথিবী! সভ্য পৃথিবীর মানুষ যার সব রহস্যভেদ এখনও করতে পারেনি। জীবনের, প্রকৃতির কত রহস্য এখনও লুকিয়ে আছে তুষারাবৃত দুর্গম পর্বতমালা কন্দরে, আদিম অরণ্যে অথবা সমুদ্রর অতল জলরাশির নীচে। বাঙালি যুবক সুদীপ্ত আর জার্মান প্রাণীবিদ হেরম্যান দুই বন্ধু খুঁজে বেড়ায় প্রকৃতির তেমন এক বিশেষ রহস্যকে। বিভিন্ন দেশের রূপকথায়, উপকথায় এমনকী ইতিহাসের পাতায় এমন অনেক প্রাণীর সন্ধান মেলে বর্তমান পৃথিবীতে যাদের উপস্থিতির অকাট্য প্রমাণ না মিললেও দীর্ঘদিন ধরে তাদের কথা শুনে আসছি আমরা। হিমালয়ের তুষারমানব ‘ইয়েতি’, আফ্রিকার সিংহ মানুষ’, স্কটল্যান্ডের ‘লেক নেসির জলদানব’, মাদাগাস্কারের ‘নরখাদক এমনকী বোর্নিওর জঙ্গলে ‘টেরোডাকটাইলের’ মতো প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীর উপস্থিতি আছে বলে আজও অনেকের ধারণা। এ সব গল্প-কথার উপকথার প্রাণীদের বলা হয় ‘ক্রিপটিড’। আর যারা তাদের খুঁজে বেড়ান তাদের বলে ‘ক্রিপ্টোজ্যুলজিস্ট’। একটা সময় ছিল যখন সভ্য পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা তাচ্ছিল্য করতেন ‘ক্রিপটিড’ নামের ‘আলেয়া’র পিছনে ছুটে বেড়ানো মানুষদের। কিন্তু তারাই একদিন পৃথিবীর সামনে হাজির করে ইন্দোনেশিয়ার দানব গিরগিটি ‘কমোডো ড্রাগন’ বা প্রশান্ত মহাসাগরের দানব অক্টোপাসকে। এখনও নিত্য নতুন তারা আবিষ্কার করে চলেছে কত বিচিত্র প্রাণী, উদ্ভিদ। সুদীপ্ত আর হেরম্যান খুঁজে ফেরে তাদেরকেই। কখনো তারা ইয়েতির মতো আর এক বিশাল দো-পেয়ে ‘সবুজ মানুষের’ খোঁজে হানা দেয় আফ্রিকার বুরুন্ডির পিগমি অধ্যুষিত গ্রেট রিফটে, কখনো ইন্দোনেশিয়ার সুন্দাদ্বীপমালায় হিংস্র সরীসৃপের বিচরণভূমিতে ‘সোনার ড্রাগনের’ খোঁজে, কখনো ইজিপ্টের হারিয়ে যাওয়া প্রাচীননগরীতে ‘সিংহ মানুষের’ সন্ধানে, কখনো আবার তাদের গন্তব্য অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রে ‘দানব অক্টোপাসের’ খোঁজে বা বোর্নিওর গভীর অরণ্যবেষ্টিত আগ্নেয় পাহাড়ে প্রাগৈতিহাসিক উড়ন্ত দানব ‘আহুলের’ খোঁজে। পাহাড়, মরুভূমি, অরণ্য গাছ
থেকে সাগরতল, সর্বত্র অভিযানে সামিল হয় তারা। কখনো প্রকৃতিক প্রতিকূলতা, কখনো আদিম জনগোষ্ঠীর হানা, হিংস্র শ্বাপদের আক্রমণ, আবার কখনো বা তারচেয়েও ভয়ংকর মুখোশধারী তথাকথিত সভ্য মানুষের চক্রান্ত-হিংস্রতাকে উপেক্ষা করে মৃত্যুকে পাশ কাটিয়ে বিচিত্র প্রাণীদের খুঁজে বেড়ায় সুদীপ্ত আর হেরম্যান। সুদীপ্ত হেরম্যানের সহযোগী নয়, বিপদসঙ্কুল অভিযানে তারা সহযোদ্ধা।
সুদীপ্ত হেরম্যানের অ্যাডভেঞ্চার কাহিনি প্রথম প্রকাশিত হতে শুরু করে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায়। পরবর্তীকালে প্রকাশিত হয় আনন্দমেলা, শুকতারা, বসুমতীসহ বিভিন্ন পত্রিকাতে। এই গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে প্রথম পর্যায়ে মোট পাঁচটি উপন্যাস—বুরুন্ডির সবুজ মানুষ, সুদাদ্বীপের সোনার ড্রাগন, শেবা মন্দিরের সিংহমানুষ, অক্টোপাসের লাল মুক্তো ও আহুল। অন্য কাহিনিগুলো স্থান পাবে পরবর্তী খণ্ডে। দীর্ঘদিন ধরে লেখকের ইচ্ছা ছিল এ কাহিনিগুলোকে এক মলাটে গাঁথার। ‘দে’জ পাবলিশিং’ সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন বলে তাঁদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। এই ‘উপন্যাস সমগ্র’ পাঠক-পাঠিকাদের কাছে সমাদর লাভ করলে পরিশ্রম সার্থক হয়েছে মনে করব।
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত
ডিসেম্বর ২০১৫
.
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত, জন্ম ১৯৭৩ কলকাতায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ। বর্তমান বাসস্থান কাঁচরাপাড়া। কিশোর সাহিত্যের নিয়মিত লেখক। সন্দেশ, আনন্দমেলা, কিশোর ভারতী, শুকতারা প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠিত শিশু-কিশোর পত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। বড়দের জন্যও লেখেন বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২০টি। তার সুদীপ্ত-হেরম্যানের উপন্যাস অনূদিত হয়েছে ইংরেজিতেও। জনপ্রিয় এফ.এম. চ্যানেলগুলোতে পরিবেশিত হয়েছে একাধিক গল্পর নাট্যরূপ। শখ-আড্ডা, ভ্রমণ।
S
Onek dhonnobad Sir apnader boi ti dewar jonno. Etar part 2,3,4
Upload korar anurodh rakhlam.
রাকিব হাসান
অনেক ধন্যবাদ সমগ্রটি দেয়ার জন্য। পারলে হারুকি মুরাকামির বইগুলোও দেয়ার চেষ্টা করবেন।