১ অতীতে ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে ভণ্ড ভাববাদীরা ছিল। একইভাবে তোমাদের দলের মধ্যে কিছু কিছু ভণ্ড শিক্ষক প্রবেশ করবে। তারা ভুল শিক্ষা দেবে; য়ে শিক্ষা গ্রহণ করলে লোকেদের সর্বনাশ হবে। সেই ভণ্ড শিক্ষকরা এমন কৌশলে তোমাদের শিক্ষা দেবে যাতে তারা য়ে ভ্রান্ত শিক্ষা দিচ্ছে এ তোমরা ধরতে পারবে না। তারা, এমন কি, প্রভু যিনি মুক্তি এনে দিয়েছেন তাঁকে পর্যন্ত অস্বীকার করবে। তাই তাদের নিজেদের ধ্বংস তারা সত্বর ডেকে আনবে।
২ তারা য়ে সমস্ত মন্দ বিষয়ে লিপ্ত, বহুলোক সেই বিষয়গুলিতে তাদের অনুসরণ করবে। ঐ লোকদের প্ররোচনায় বহুলোক সত্যের পথের বিষয়ে নিন্দা করবে।
৩ এই ভণ্ড শিক্ষকরা তোমাদের কাছ থেকে কেবল অর্থলাভ করতে চাইবে। তাই তারা অসত্য কল্পিত কাহিনী বানিয়ে বলবে। অনেকদিন ধরেই ঐ ভণ্ড শিক্ষকদের জন্য শাস্তি অপেক্ষা করছে আর তারা ঈশ্বরের হাত এড়িয়ে য়েতে পারবে না; তিনি তাদের ধ্বংস করবেন।
৪ যাঁরা পাপ করেছিল সেই স্বর্গদূতদেরও ঈশ্বর ছাড়েন নি; তিনি তাদের নরকে পাঠিয়েছিলেন। ঈশ্বর বিচারের দিন পর্যন্ত অন্ধকারময় গ্ব্বরে তাদের ফেলে রাখলেন।
৫ ঈশ্বর প্রাচীন জগতকে ছেড়ে কথা বলেন নি। ঈশ্বরবিরোধী লোকদের জন্য ঈশ্বর জগতে জলপ্লাবন আনলেন। তিনি কেবলমাত্র নোহ এবং তার সঙ্গে অন্য সাতজনকে রক্ষা করেছিলেন। এই নোহ ঠিক পথে চলবার জন্য মানুষকে শিক্ষা দিয়েছিলেন।
৬ সদোম ও ঘমোরা নগরকে ঈশ্বর দণ্ডিত করেছিলেন। ঈশ্বর সেই দুটি নগরকে ধ্বংস করে যাঁরা তাঁর বিরোধিতা করে তাদের জন্য শেষ ফলের এক উদাহরণ হিসেবে তা স্থাপন করেছিলেন।
৭ ঐ ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরী থেকে ঈশ্বর লোটকে উদ্ধার করেছিলেন। লোট ভাল লোক ছিলেন এবং ঐ নগরের দুষ্ট লোকদের অনৈতিক চালচলনে তিনি পীড়িত হতেন।
৮ সেই নীতিপরায়ণ মানুষ ঐ দুষ্ট লোকদের মধ্যে দিনের পর দিন বাস করতেন। তাঁর ধার্মিক আত্মা এই সকল লোকদের বেআইনী কাজকর্ম দেখে এবং এগুলির কথা শুনে যন্ত্রণা ভোগ করতেন।
৯ হ্যাঁ, ঈশ্বরই এই সকল কার্য় সাধন করলেন। তাই প্রভু ঈশ্বর জানেন যাঁরা তাঁর সেবা করে, তাদের কিভাবে উদ্ধার করতে হয়। তিনি তাদের সমস্ত কষ্টের সময়ে তাদের উদ্ধার করেন। প্রভু এও জানেন কিভাবে দুষ্ট লোকদের সেই বিচারের দিনে শাস্তি দিতে হয়।
১০ ঐ দণ্ড বিশেষভাবে তাদের জন্য, যাঁরা দুর্নীতিপরায়ণ ও কামাতুর, অধার্মিক স্বভাবের অনুসারী এবং যাঁরা প্রভুর কর্তৃত্ত্বকে সম্মান করে না।এই সকল ভণ্ড শিক্ষকরা দুঃসাহসী ও একগুঁয়ে এবং মহিমান্বিত স্বর্গদূতের বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলতে ভয় পায় না।
১১ ঐ সব ভণ্ড শিক্ষকদের চেয়ে স্বর্গদূতরা শক্তিতে ও পরাক্রমে বড় হয়েও প্রভুর কাছে তাদের বিষয়ে কুত্সাজনক অভিযোগ আনেন না।
১২ এই ভণ্ড শিক্ষকরা বিচার বুদ্ধিহীন পশুর মতো, যাঁরা তাদের সহজাত প্রবৃত্তির বশে কাজ করে। এরা জন্মেছে ধরা পড়তে ও নিহত হবার জন্য। বন্য পশুদের মতোই এই শিক্ষকরা ধ্বংস হয়ে যাবে।
১৩ এই ভণ্ড শিক্ষকরা বহুলোকের ক্ষতি করেছে, তাই তারাও কষ্টভোগ করবে, তাদের কুকাজের জন্য প্রাপ্তিস্বরূপ সেই হবে তাদের বেতন। এই ভণ্ড শিক্ষকরা প্রকাশ্যে মন্দ কাজ করতে ভালবাসে যাতে সমস্ত লোক তা দেখতে পায়। তারা তোমাদের মধ্যে নোংরা দাগ ও কলঙ্কের মত। য়েসব মন্দ কাজ তাদের খুশী করে, সেগুলি করে তারা তা উপভোগ করে। যখন তারা তোমাদের সঙ্গে পান ভোজন করে তখন তোমাদের পক্ষে তা লজ্জাজনক হয়।
১৪ কোন নারীকে দেখলে এই শিক্ষকরা তার প্রতি কামাসক্ত হয়। এরা এইভাবে পাপ করেই চলেছে। যাঁরা বিশ্বাসে দুর্বল তাদের তারা পাপের ফাঁদে ফেলে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। তাদের অন্তঃকরণ লোভে অভ্য়স্ত, তারা অভিশপ্ত।
১৫ এই ভণ্ড শিক্ষকরা সোজা পথ ছেড়ে ভুল পথে ভ্রমণ করছে। তারা বিযোরের পুত্র বিলিয়মকে অনুসরণ করে, যিনি মন্দ কাজের পারিশ্রমিক পেলে আনন্দ পেতেন।
১৬ কিন্তু একটি গাধা বিলিয়মকে বলেছিল য়ে সে ভুল কাজ করেছে। গাধা পশু বলে কথা বলতে পারে না; কিন্তু এই গাধা মানুষের গলায় কথা বলে ভাববাদীকে মুর্খের মত কাজ করতে দেয় নি।
১৭ এই ভণ্ড শিক্ষকরা জলবিহীন ঝরণার মতো। ঝোড়ো হাওয়ায় বয়ে যাওয়া মেঘের মতো। এক ঘোর অন্ধকার কূপ এই ভণ্ড শিক্ষকদের জন্য সংরক্ষিত আছে।
১৮ এরা শূন্যগর্ভ বড় বড় কথা বলে নিজেদের নিয়ে গর্ব করে। যাঁরা সম্প্রতি ভুল পথে চলা লোকদের সংসর্গ থেকে বেরিয়ে এসেছে তাদের দৈহিক আকর্ষণ ও বাসনায় প্রলুদ্ধ করে। এইসব লোকদের তারা পাপের ফাঁদে ফেলে।
১৯ এরা তাদের স্বাধীনতার প্রলোভন দেখায়; কিন্তু নিজেরা সেইসব মন্দের দাস য়েগুলি ধ্বংসের পথগামী, কারণ মানুষ তারই দাস যা তাকে চালনা করে।
২০ যাঁরা আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে সংসারের অশুচি বিষয়গুলি থেকে মুক্ত হয়েছিল, তারা যদি তাদের পুরানো পাপের জীবনে ফিরে যায় তবে তাদের পরের অবস্থা আগের অবস্থা থেকে আরো খারাপ হবে।
২১ য়ে পবিত্র শিক্ষা তারা লাভ করেছিল, তারা যদি সেই পবিত্র শিক্ষা থেকে সরে যায় তবে তাদের পক্ষে সেই সত্য পথ না জানাই ভাল ছিল।
২২ একটি প্রবাদ আছে যা তাদের ক্ষেত্রে খাটে, ‘কুকুর ফেরে নিজের বমির দিকে,’এবং ‘শুযোরকে স্নান করালেও সে আবার যায় কাদায় গড়াগড়ি দিতে।’