• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Bookmarks
  • My Account →
  • বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Bookmarks
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

সূচনা – সেলিনা হোসেন

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » গল্প » সূচনা – সেলিনা হোসেন

কয়েক দিন আগে ছেলেটি আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, সৌন্দর্য কী?
-বলেছিলাম, ব্যক্তিত্ব।
-তাহলে কি তোমাকে বলতে পারব না যে তুমি খুব সুন্দর?
-যদি শুধু চেহারা দেখে আমাকে সুন্দর বলতে চাও, তাহলে বোলো না।
ও অবাক হয়ে একটুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলেছিল, কেন?
-কারণ, যে সৌন্দর্যের ওপর আমার কোনো হাত নেই, সেই সৌন্দর্যে আমার কোনো বিশ্বাস নেই। নিজের ব্যক্তিত্ব বিকশিত করার সুযোগ আমার আছে।
আমার কাছে তা-ই সৌন্দর্য। আমি কি বুঝিয়ে বলতে পেরেছি?
-পেরেছ।
-তো? আমি ওর অবাক দৃষ্টি দেখি।
-তো আমি যাই। তোমার সঙ্গে আমার হলো না। কারণ, তুমি যা বলেছ, তা আমি মানতে পারছি না।
-তুমিও সৌন্দর্য বলতে একইভাবে শরীর বোঝ।
-সে বোঝাতে ভুল নেই বলে আমি মনে করছি।
-তাহলে তো ঠিক আছে।
-যাই। আবার হয়তো দেখা হবে।
ছেলেটি চলে গেল। ওর নাম সজীব। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার দুই বছরের সিনিয়র। সেদিন র‌্যাগ ডে ছিল। ও এসেছিল রং ছুড়তে, তারপর ওইটুকু কথা। তবে ওর ওইটুকু কথাতে আমি মুগ্ধ হই। সরাসরি প্রেম নিবেদন নয়। খুব সূক্ষ্মভাবে নিজের কথা বলেছে এবং খুব গুরুত্ব নিয়ে আমার কথা শুনেছে। তারপর সিদ্ধান্ত নিয়ে চলে গেছে। এমন কাউকেই তো আমি খুঁজেছিলাম। কিন্তু কোন মুখে ওকে আবার নিজের কথা বলব? সুতরাং একটুখানি কষ্ট মনে রেখে নিজেকে সামলে নিই। বুঝতে পারি যে ওর কাছে আমি অপরিচিত হয়ে গেছি।
কয়েক দিন পর ওর সঙ্গে আবার আজিজ সুপার মার্কেটে দেখা হয়। তাড়াহুড়ো করে একটি বইয়ের দোকান থেকে বের হচ্ছিল। হাতে একগাদা বই। আমাকে দেখে থমকে দাঁড়ায়। মৃদু হেসে বলে, বই কিনবে?
-হ্যাঁ। কী বই কিনলে?
-একগাদা উপন্যাস।
-একগাদা কেন?
-আগামীকাল দেশের বাইরে চলে যাচ্ছি। পিএইচডি করার জন্য।
-ও আচ্ছা।
-যাই।
ও যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে আমি আটকাই। বলি, একটা প্রশ্নের উত্তর দাও। ও ভ্রূ কুঁচকে তাকিয়ে থেকে বলে, বলো।
-ভালোবাসা কী?
-তোমার মতো কাউকে দেখে পাগল হয়ে যাওয়া। ও হাসতে থাকে।
আমি হাঁ করে তাকিয়ে থাকি।
-তাকিয়ে আছ যে?
-বড্ড অপরিচিত হয়ে গেলে সে জন্য।
-যাই। আবার কোথাও দেখা হবে।
ভাবলাম, আমার সঙ্গে ওর কোথাও না কোথাও দেখা হবে, এমন একটি ভাবনা ওর মাথায় আছে। আমি অকারণে খুশি হয়ে গেলাম। ওর সঙ্গে আমার দেখা হোক, এটা আমার ভেতরও কাজ করছে। ওর মতো এমন আর কে আছে যে এমন করে ভালোবাসার সংজ্ঞা দেবে! ঈশ্বর, আমাকে শক্তি দাও। আমি নিজেকে সামলাই। আজিজ সুপার মার্কেটের সামনের ফুটপাতে দাঁড়িয়ে জাতীয় জাদুঘরের দিকে তাকিয়ে ভাবি, ওই জাদুঘরের নানা বস্তুসামগ্রীর মধ্যে কত যে ভালোবাসার কাহিনী লুকিয়ে আছে! সজীবের হাত ধরে ওই জাদুঘরে ঢুকতে পারলেই বোধহয় ওকে আমার বোঝা হবে।
ওর সঙ্গে আবার আমার দেখা হয় সিঙ্গাপুর এয়ারপোর্টে দুই বছরের মাথায়। ট্রানজিট লাউঞ্জে চুপচাপ বসে ছিল। ওকে খুব বিবর্ণ দেখাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, যেন কতকাল ঘুমায়নি। আমাকে দেখে চমকে তাকায়।
তুমি? তোমার কী হয়েছে?
মা মারা গেছে, তাই দেশে যাচ্ছি।
কবে?
দুদিন হলো।
বসব তোমার কাছে একটু?
ও প্রবল বেগে মাথা নাড়িয়ে আমার দুই হাত জড়িয়ে ধরে বলল, বসো। একটু বসো।
তারপর আমার দুই হাতের তালুর মধ্যে নিজের মুখটা রেখে কাঁদল। যেন মনে হলো, এই আশ্রয়টুকু খুঁজে পাওয়ার জন্য ওর প্রবল তৃষ্ণা ছিল। আমি জানি, দেশে থাকলে ও চিৎকার করে কাঁদত। কষ্টটা লাঘব করার জন্য ওর আমার দুই হাতই দরকার ছিল। একসময় কেঁদেকেটে শান্ত হলো ও। বলল, খবরটা পাওয়ার পর থেকে আমি কাঁদতে পারিনি। এই প্রথম। তোমার স্পর্শ আমার বেদনা শুষে নিল যেন।
-শান্ত হও। পানি খাবে একটু? জুস?
-না। ও টিস্যু দিয়ে চোখ মুছল। পরিপূর্ণ দৃষ্টি মেলে আমার দিকে তাকাল। আমি মৃদুস্বরে জিজ্ঞেস করলাম, পিএইচডি শেষ হয়েছে?
-না। আরও এক বছর। মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি। তুমি কী করছ?
-ইউএনডিপিতে চাকরি করছি। জলবায়ু পরিবর্তন-
আমি আর কথা শেষ করি না। ওকে বলি, তোমার বোর্ডিংয়ের ঘোষণা হচ্ছে।
-যাই। ও উঠে দাঁড়ায়। পায়ের কাছে দুটো হাতব্যাগ ছিল, ওগুলো তুলে নেয়। যেতে শুরু করে। একবারও পেছন ফিরে তাকায় না। আমি জানি, ও তাকাবে না। মনে হচ্ছিল দৌড়ে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে বলি, তোমার মা হারানোর দুঃখ আমিও বুকে নিলাম। তোমার দুঃখ হালকা হোক।
আমার ভেতরটা তোলপাড় করে ওঠে। আমি চেয়ারে বসে পড়ি। আমার ফ্লাইটের এখনো দুই ঘণ্টা দেরি আছে।
মাঝে কতগুলো বছর পেরিয়ে গেল তার হিসাব রাখিনি। নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। বাবা মারা যাওয়ার পর দুটো ভাইবোনের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতে হয়েছিল। ওরা এখন যার যার মতো জীবন গুছিয়েছে। ছোট বোনটার একটা বাচ্চা হয়েছে। ফ্যামিলিতে দারুণ আনন্দের শিশু ও। ভাইটি একটি মেয়ের প্রেমে পড়েছে। ও বিয়ের কথা ভাবছে। মায়ের শরীর ভালো যাচ্ছে না। বয়সও হয়েছে। শুধু আমার দিকে বিষণ্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে, [&ৗ৬৫৫৩৩;]আমি মরে যাওয়ার আগে তোর একটা কিছু দেখে যেতে চাই।[&ৗ৬৫৫৩৩;]
হাসতে হাসতে বলি, আমার তো অনেক কিছু হয়েছে মা। আর কী দেখতে চাও?
-বিয়ে? সংসার লাগবে না? ছেলেপুলে লাগবে না? আমি মাকে জড়িয়ে ধরে বলি, আমি ছেলেপুলে ভালোবাসি। আমার নিজের কাউকে তো লাগবে মা। নাড়িছেঁড়া ধন তোমরা যাকে বলো।
-তো? আর কবে?
মা বিমর্ষ হয়ে থাকে। আমার তখন সজীবের কথা মনে হয়। ও কোথায় আছে আমি জানি না। ও কি আমার জন্য এখনো অপেক্ষায় আছে? ও কি আদৌ আমার জন্য অপেক্ষায় ছিল? আমি জানি না। আমিও তো ওর জন্য অপেক্ষা করিনি। নিজের কাজের ফাঁকে মনে করেছি কেবল।
এর বছরখানেক পর সজীবের সঙ্গে আমার দেখা হয় জেনেভা বিমানবন্দরে। লাগেজ ফ্লেইসের জায়গায় ট্রলি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। দূর থেকে আমাকে দেখে ট্রলি ফেলে ছুটে আসে।
-তুমি? কোথায় এসেছ?
আমি হেসে বলি, তোমার কাছে।
মানে?
মানে আর কী, চলো লাগেজ বেল্ট থেকে স্যুটকেস তুলে নিই।
ও বিমর্ষ হয়ে যায়। লাগেজ বেল্টের সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করি, পড়ালেখা শেষ করেছ?
-কবে শেষ করেছি! এখন আইএলওতে চাকরি করছি। ছুটিতে দেশে গিয়েছিলাম।
-বাবা কেমন আছে?
-বাবা ভালো আছে। ওই যে আমার স্যুটকেস। তোমারটা কোন বেল্টে আসবে?
-পাঁচ নম্বরে।
-যাই। ও ট্রলি ঠেলে এগোতে চায়। এবার আমি ওর হাত চেপে ধরি। বলি, আমার স্যুটকেস নেব না?
-চলো যাই। তোমার স্যুটকেস এতক্ষণে এসে গেছে। দুজন ট্রলি ঠেলে বাইরে আসি। আমরা পরস্পরের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসি। ও গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে, সৌন্দর্য মানে আমার কাছে দেখতে ভালো লাগা এবং ব্যক্তিত্ব, দুটোই। আমিও ওকে পূর্ণ দৃষ্টিতে দেখি। বলি, আর ভালোবাসা?
-শুধু তোমার জন্য পাগল হয়ে থাকা। ও আমার হাত ধরে চুমু খায়। আমি বাতাসের স্মিগ্ধতা অনুভব করি। একটি চমৎকার মনোরম বিকেল আমার ভেতরটা ভরিয়ে দেয়। ও আমার হাতে মৃদু চাপ দিয়ে বলে, চলো সূচনা।

সূত্রঃ প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৬, ২০০৮

Category: গল্প
পূর্ববর্তী:
« সুইসাইড – রফিকুর রশীদ
পরবর্তী:
স্বপ্নের মধ্যে কারাগারে – মারিও বেনেদেত্তি »

Reader Interactions

Comments

  1. md: shohag khan

    January 15, 2009 at 12:43 am

    you are walcome i like to your
    Histories Bats your regards

    Tanks
    shohag khan

    Reply
  2. Md. Rafiqul Islam

    July 30, 2009 at 7:12 am

    very fantastics

    Reply
  3. সোহেল আকন্দ

    January 7, 2010 at 4:23 pm

    খুবই চমৎকার লেখা!

    Reply
  4. Aline

    July 9, 2012 at 2:36 am

    Posts like this make the internet such a teraurse trove

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

My Account – FB – PDF

top↑