আমি রাত্রি, তুমি ফুল। যতক্ষণ ছিলে কুঁড়ি জাগিয়া চাহিয়া ছিনু আঁধার আকাশ জুড়ি সমস্ত নক্ষত্র নিয়ে, তোমারে লুকায়ে বুকে। যখন ফুটিলে তুমি সুন্দর-তরুণ-মুখে, তখনি প্রভাত এল, ফুরালো আমার কাল; আলোকে ভাঙিয়া গেল রজনীর অন্তরাল। এখন বিশ্বের তুমি; গুন্ গুন্ মধুকর চারি দিকে তুলিয়াছে বিস্ময়ব্যাকুল স্বর; গাহে পাখি, বহে বায়ু; প্রমোদহিল্লোলধারা নবস্ফুট জীবনেরে করিতেছে দিশাহারা। এত আলো, এত সুখ, এত গান, এত প্রাণ ছিল না আমার কাছে— আমি করেছিনু দান শুধু নিদ্রা, শুধু শান্তি, সযতন নীরবতা, শুধু চেয়ে-থাকা আঁখি, শুধু মনে মনে কথা। আর কি দিই নি কিছু? প্রলুব্ধ প্রভাত যবে চাহিল তোমার পানে, শত পাখি শত রবে ডাকিল তোমার নাম, তখন পড়িল ঝ’রে আমার নয়ন হতে তোমার নয়ন-’পরে একটি শিশিরকণা। চলে গেনু পরপার। সেই বিষাদের বিন্দু, বিদায়ের উপহার প্রখর প্রমোদ হতে রাখিবে শীতল ক’রে তোমার তরুণ মুখ; রজনীর অশ্রু-’পরে পড়ি প্রভাতের হাসি দিবে শোভা অনুপম, বিকচ সৌন্দর্য তব করিবে সুন্দরতম।
পূর্ববর্তী:
« শূন্য গৃহে
« শূন্য গৃহে
পরবর্তী:
শ্রান্তি »
শ্রান্তি »
Leave a Reply