১ শিম্শোন তিম্না শহরের দিকে নেমে এল। সেখানে সে একজন পলেষ্টীয় নারীকে দেখতে পেল।
২ বাড়ি ফিরে শিম্শোন তার পিতামাতাকে বলল, “আমি তিম্নায একজন পলেষ্টীয় নারী দেখেছি। তোমরা তাকে আমার কাছে এনে দাও। আমি তাকে বিয়ে করতে চাই।”
৩ তার পিতামাতা বলল, “তুমি তো ইস্রায়েলের একজন মেয়েকে বিয়ে করতে পারো। পলেষ্টীয়দের মেয়েকে বিয়ে করতে তোমার এত ইচ্ছে কেন? এসব লোকদের এমনকি সুন্নত্ পর্য়ন্ত হয় নি।” শিম্শোন এসব কথা শুনল না।সে বলল, “ঐ মেয়েটিকেই আমার জন্য এনে দাও। তাকেই শুধু আমি চাই।”
৪ (শিম্শোনের পিতামাতা তো জানত না, এটাই ছিল প্রভুর অভিপ্রায়। তিনি কিভাবে পলেষ্টীয়দের শাযেস্তা করা যায় সেই রাস্তাই খুঁজছিলেন। সে সময় ইস্রায়েলে ওদেরই রাজত্ব ছিল।
৫ নিয়ে শিম্শোন তিম্না শহরে নেমে এল। শহরের কাছাকাছি দ্রাক্ষার ক্ষেত পর্য়ন্ত তারা চলে এল। সেখানে হঠাত্ একটা য়ুব সিংহ গর্জে উঠে শিম্শোনের উপর ঝাঁপিযে পড়ল।
৬ প্রভুর আত্মা মহাশক্তিতে শিম্শোনের উপর নেমে এল। খালি হাতেই শিম্শোন সিংহটাকে ছিঁড়ে দু-টুকরো করে ফেলল। অনায়াসেই সে এটা করে ফেলল। একটা কচি পাঁঠাকে চিরে ফেলার মতই কাজটা যেন সহজ হয়ে গেল শিম্শোনের কাছে। কিন্তু শিম্শোন ঘটনাটি পিতামাতার কাছে বলল না।
৭ শিম্শোন শহরে গিয়ে পলেষ্টীয় মেয়েটির সঙ্গে কথাবার্তা বলল। মেয়েটি তাকে খুশি করেছিল।
৮ কয়েকদিন পর শিম্শোন ফিরে এসে ঐ পলেষ্টীয় মেয়েকে বিয়ে করতে এলে পথে মৃত সিংহটিকে সে দেখল। মৃত সিংহটির গায়ে মৌমাছিরা ঝাঁকে ঝাঁকে বসে। কিছু মধুও হয়েছে।
৯ শিম্শোন হাতে কিছুটা মধু তুলে নিল। মধু খেতে খেতে সে হাঁটতে লাগল। পিতামাতার কাছে এসে সে তাদেরও একটু মধু দিল। তারা সেই মধু খেল। কিন্তু শিম্শোন বলল না, সেই মধু মরা সিংহের গা থেকে পাওয়া।
১০ শিম্শোনের পিতা পলেষ্টীয় মেয়েটিকে দেখতে গেল। এটাই ছিল প্রথা যে বর সে একটা ভোজসভা করবে। সেই অনুযায়ীশিম্শোন এই অনুষ্ঠানের আযোজন করতে গেল।
১১ পলেষ্টীয় যখন দেখল শিম্শোন এরকম একটা ভোজের ব্যবস্থা করছে তখন তারা ওর কাছে ৩০ জন পলেষ্টীয়কে পাঠাল।
১২ ঐ ৩০ জনকে শিম্শোন বলল, “আমি তোমাদের একটা ধাঁধা বলতে চাই। এই আনন্দ অনুষ্ঠান সাতদিন ধরে চলবে। এর মধ্যে তোমাদের এই ধাঁধার উত্তর দিতে হবে। উত্তর দিতে পারলে আমি তোমাদের ৩০টি জামা আর ৩০টি কাপড় দেবো।
১৩ কিন্তু উত্তর না দিতে পারলে তোমরা আমাকে ৩০টি জামা আর ৩০টি কাপড় দেবে।” ওরা বলল, “বল কি তোমার ধাঁধা, আমরা শুনব।”
১৪ শিম্শোন তখন এই ধাঁধাটা বলল:খাদকের মধ্য থেকে খাদ্য কিছু জোটে, বলবান হতে মিষ্টি কিছু ওঠে।৩০জন লোক তিনদিন ধরে মাথা ঘামাল, কিন্তু উত্তর দিতে পারল না।
১৫ চতুর্থ দিনে তারা শিম্শোনের স্ত্রীর কাছে এসে বলল, “তোমরা কি আমাদের নিঃস্ব করার জন্য নেমন্তন্ন করেছ? তোমার স্বামীর কাছ থেকে কাযদা করে ধাঁধার উত্তরটা জেনে নাও। যদি উত্তর না বের করতে পার তাহলে আমরা তোমাকে আর তোমার বাপের বাড়ির সবাইকে পুড়িয়ে মেরে ফেলবো।”
১৬ আর কোন উপায় না পেয়ে সে শিম্শোনের কাছে গিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। সে বলল, “তুমি তো আমায় শুধু ঘৃণাই করো! তুমি আমায় একটুও ভালবাস না! তুমি আমার দেশের লোকদের কাছে ধাঁধা বলেছ, কিন্তু কই আমাকে তো তুমি সেই ধাঁধার উত্তরটা বলো নি।” শিম্শোন উত্তর দিল, “আমার মাতাপিতাকেও যখন উত্তরটা বলি নি, তোমাকে বলতে যাব কেন?”
১৭ অনুষ্ঠানের বাকি দিনগুলোয শিম্শোনের স্ত্রী কেঁদেই চলল। শেষ পর্য়ন্ত সপ্তম দিনে শিম্শোন ধাঁধার উত্তরটি স্ত্রীকে বলেই ফেলল কারণ তার স্ত্রী এই নিয়ে তাকে বিরক্ত করছিল। তারপর তার স্ত্রী দেশের লোকদের কাছে সেই উত্তরটি বলে দিল।
১৮ সুতরাং সাত দিনের দিন সূর্য়াস্তের আগে পলেষ্টীয়রা উত্তরটা পেয়ে গেল। শিম্শোনকে গিয়ে তারা বলল: “মধুর চেয়ে মিষ্ট কি আছে? সিংহের চেয়ে বেশী শক্তিশালী কে?”তখন শিম্শোন বলল: “যদি তোমরা আমার গরু সঙ্গে নিয়ে না চাষ করতে তোমরা আমার ধাঁধার সমাধান করতেই পারতে না।”
১৯ শিম্শোন খুব রেগে গিয়েছিল। প্রভুর আত্মা প্রবল শক্তির সাথে তার ওপর নেমে এল। সে অস্কিলোন শহরে চলে গেল। সেখানে সে ৩০ জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করল। তাদের মৃতদেহ থেকে সে সমস্ত পোশাক তুলে নিল, ধন দৌলত সরিয়ে নিল। তারপর যারা তার ধাঁধার উত্তর দিয়েছিল, তাদের সে সব বিলিযে দিল। এরপর সে পিতার বাড়িতে চলে গেল।
২০ স্ত্রীকে সে নিল না। বিয়ের জন্য একজন সেরা পাত্র তাকে ঘরে তুলেছিল।
পূর্ববর্তী:
« বিচারকচরিত ১৩
« বিচারকচরিত ১৩
পরবর্তী:
বিচারকচরিত ১৫ »
বিচারকচরিত ১৫ »
Leave a Reply