১১. বিশ্বকর্ম্মার লঙ্কাপুরী নির্ম্মাণ ও মালী প্রভৃতির লঙ্কায় রাজ্য প্রতিষ্ঠা

বিশ্বকর্ম্মার লঙ্কাপুরী নির্ম্মাণ ও মালী প্রভৃতির লঙ্কায় রাজ্য প্রতিষ্ঠা

ব্রহ্মার বরেতে তারা ত্রিভুবন জিনে।
হাতে গলে বান্ধিয়া বিশ্বকর্ম্মার আনে।।
নিশাচর বলে বিশ্বকর্ম্মা লহ পান।
রাক্ষসের পুরী তুমি করহ নির্ম্মাণ।।
এত শুনি বিশ্বকর্ম্মা হইল চিন্তিত।
পূর্ব্বের বৃত্তান্ত মনে পড়ে আচম্বিত।।
গরুড় পবনে যুদ্ধ হইল যেই কালে।
সুমেরুর শৃঙ্গ পড়ে সাগরের জলে।।
চিত্রকূট পর্ব্বতের প্রধান দুই চূড়া।
সত্তর যোজন পরিমাণ তার গোড়া।।
সত্তর যোজন ঊর্দ্ধে লেগেছে আকাশে।
সোণার প্রাচীর বেড়া ভিতর আওয়াসে।।
বাহির চৌয়ারি তার মনোহর অতি।
অতি ভয়ঙ্কর, নাহি পবনের গতি।।
দেব দানব যাইতে নারে গড়ের ভিতর।
বিশ্বকর্ম্মা নির্ম্মাইল পুরী মনোহর।।
কত শত পুষ্পবন কত সরোবর।
বৃন্দ কত শত মহাপদ্ম কোটি ঘর।।
সোণার কপাট খিল শোভে চারিদ্বারে।
ভয়ঙ্করী পুরী হেন নাহিক সংসারে।।
চারিদিকে বেষ্টিত সমুদ্র আছে ঘেরে।
ভুবনের শক্তিতে তা লঙ্ঘিতে না পারে।।
যাইতে দেবতা যক্ষ না করে সাহস।
নেতের পতাকা উড়ে সোণার কলস।।
স্বর্গ মর্ত্ত্য পাতালে এমন নাহি স্থান।
একমাসে বিশ্বকর্ম্মা করিল নির্ম্মাণ।।
পুরী দেখি রাক্ষসের আনন্দ হৈল অতি।
লঙ্কা নাম রাখি তাহে করিল বসতি।।
আগেতে করিল রাজ্য মালী ও সুমালী।
তার পরে ভূপতি কুবের মহাবলী।।
তাহার পশ্চাতে রাজ্য করিল রাবণ।
অবশেষে ভূপতি হইল বিভীষণ।।
অগস্ত্যের কথা শুনি শ্রীরামের হাস।
কহ কহ বলি রাম করিলা প্রকাশ।।