১৩. বালির সৎকার

শ্রীরাম বলেন মিত্র না কর বিষাদ।
কারো দোষ নাই, দৈব পাড়িল প্রমাদ।।
সম্বরহ শোক তুমি বানরের রাজ।
ত্বরা করি করহ বালির অগ্নিকাজ।।
শুষ্ক কাষ্ঠ আন মিত্র, অগুরু চন্দন।
রাজ-আভরণ আন বসন ভূষণ।।
বৃহৎ শরীর তার করিতে বহন।
বাছিয়া কটক আন বাহির বাহন।।
লক্ষ্মণ বলেন, হনুমান হও স্থির।
সর্ব্ব আয়োজন তুমি আনহ বালির।।
হনুমান সান্ধাইল ভাণ্ডার ভিতরে।
নানা রত্ন আভরণ আনিল বাহিরে।।
রাজচতুর্দ্দোল আনে বিচিত্র বসন।
বিলাইতে আনে আরো বহুমূল্য ধন।।
রাজচতুর্দ্দোলে নিয়া তুলিল বালিরে।
সকলে লইয়া গেল পম্পানদী তীরে।।
চন্দনকাষ্ঠের চিতা করিল সে তীরে।
বালিরাজে শোয়াইল তাহার উপরে।।
রাজযোগ্য চিতা করে, নানা পুষ্প জাতি।
তারা মহাদেবী করে বৈশ্বানরে স্তুতি।।
অগ্নিকার্য্য বালির করিল বন্ধুগণ।
তাহার ক্রন্দন কত করিব বর্ণন।।
রামনাম স্মরণেতে পাপের বিনাশ।
রচিল কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড কবি কৃত্তিবাস।।
রাম না জন্মিতে ষাটি হাজার বৎসর।
অনাগত বাল্মীকি রচিল কবিবর।।
রামনাম স্মরিলে যমের দায় তরি।
শ্রীরামের প্রীতে ভাই মুখে বল হরি।।
বাল্মীকি বন্দিয়া কৃত্তিবাস বিচক্ষণ।
পাঁচালী প্রবন্ধে রচে বেদ রামায়ণ।।