• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

সীমান্ত-হীরা ০৩

লাইব্রেরি » শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় » ব্যোমকেশ সমগ্র (ব্যোমকেশ বক্সী) » ০৩. সীমান্ত-হীরা - ব্যোমকেশ বক্সী - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় » সীমান্ত-হীরা ০৩

কর্তার হাসি সহজে থামিল না, কড়ি বরগা কাঁপাইয়া প্রায় পাঁচ মিনিট ধরিয়া একাদিক্রমে চলিতে লাগিল। তারপর চক্ষু মুছিয়া আমার মৃয়মাণ মুখের দিকে দৃষ্টি করিয়া তিনি বলিলেন, “লজ্জিত হয়ো না। আমার কাছে ধরা পড়া তোমাদের পক্ষে কিছুমাত্র লজ্জার কথা নয়। কিন্তু বালক হয়ে তোমরা আমাকে ঠকাবে মনে করেছিলে, এতেই আমার ভারি আমোদ বোধ হচ্ছে।”
আমরা নির্বাক হইয়া রহিলাম। কর্তা ব্যোমকেশের মাথার দিকে কিছুক্ষণ চক্ষু রাখিয়া বলিলেন, “ব্যোমকেশবাবু, তোমার কাছ থেকে আমি এতটা নির্বুদ্ধিতা প্রত্যাশা করিনি। তুমি ছেলেমানুষ বটে, কিন্তু তোমার করোটির গঠন থেকে বুঝতে পারছি তোমার মাথায় বুদ্ধি আছে।”
ব্যোমকেশের মুণ্ডের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখিয়া কতকটা নিজ মনেই বলিতে লাগিলেন, “খুলির মধ্যে অন্তত পঞ্চান্ন আউন্স ব্রেন ম্যাটার আছে। তবে ব্রেন ম্যাটার থাকলেই শুধু হয় না, কনভল্যুশনের উপর সব নির্ভর করে। … হনু আর চোয়াল উঁচু মৃদঙ্গ মুখ, বাঁকা নাক, হুঁ। ত্বরিতকর্মা, কূতবুদ্ধি, একগুঁয়ে। ইনট্যুশন খুব বেশি; রিজনিং পাওয়ার মন্দ ডেভেলপড নয় কিন্তু এখনও ম্যাচিয়োর করে নি। তবে মোটের উপর বুদ্ধির বেশ শৃঙ্খলা আছে – বুদ্ধিমান বলা চলে।”

আমার মনে হইল, জীবন্ত ব্যোমকেশের শব ব্যবচ্ছেদ হইতেছে, তাহার মস্তিষ্ককে কাটিয়া চিরিয়া ওজন করিয়া তাহার মূল্য নির্ণয় করা হইতেছে এবং আমি দাঁড়াইয়া তাহাই দেখিতেছি।
স্বগত চিন্তা পরিত্যাগ করিয়া কর্তা বলিলেন, “আমার মাথায় কতখানি মস্তিষ্ক আছে জানো? ষাট আউন্স – তোমার চেয়ে পাঁচ আউন্স বেশি। অর্থাৎ বনমানুষে আর সাধারণ মানুষে বুদ্ধির যতখানি তফাত তোমার সঙ্গে আমার বুদ্ধির তফাত তার চেয়েও বেশি।”
ব্যোমকেশ নিশ্চল হইয়া বসিয়া হরিল, তাহার মুখে কোনও বিকার দেখা গেল না। কর্তা হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিলেন; তারপর হথাৎ গম্ভীর হইয়া বলিলেন, “খোকা তোমাকে পাঠিয়েছে একটা জিনিস চুরি করবার জন্য। কিন্তু তুমি পারবে বলে মনে হয়?”
এবারও ব্যোমকেশ কোনও উত্তর করিল না। তাহার নির্বিকার নীরবতা লক্ষ করিয়া কর্তা শ্লেষ করিয়া কহিলেন, “কি হে ব্যোমকেশবাবু, একেবারে ঠাণ্ডা হয়ে গেলে যে। বলি, এত বড় একটা কাজ হাতে নিয়েছ, পুরুত সেজে ঠাকুর চুরি করতে ঢুকেছ – তা কি রকম মনে হচ্ছে? পারবে চুরি করতে?”
ব্যোমকেশ শান্তস্বরে কহিল, “সাত দিনের মধ্যে কুমার বাহাদুরের জিনিস তাঁকে ফিরিয়ে দেব কথা দিয়ে এসেছি।”

কর্তার ভীষণ মুখ ভীষণতর আকার ধারণ করিল, ঘন রোমশ ভ্রুযুগল কপালের উপর যেন তাল পাকাইয়া গেল। তিনি বলিলেন, “বটে, বটে! তোমার সাহস তো কম নয় দেখছি। কিন্তু কি করে কাজ হাসিল করবে শুনি? এখনই তো তোমাদের ঘাড় ধরে বাড়ি থেকে বার করে দেব। তারপর?”
ব্যোমকেশ মৃদু হাসিয়া বলিল, “আপনার কথা থেকে একটা সংবাদ পাওয়া গেল, হীরাটা বাড়িতেই আছে।”
আরক্ত নেত্রে তাহার পানে চাহিয়া কর্তা বলিলেন, “হঁযা, আছে। কিন্তু তুমি পারবে খুঁজে নিতে? তোমার ঘটে সে বুদ্ধি আছে কি?”
ব্যোমকেশ কেবল একটু হাসিল।
মনে হইল, এইবার বুঝি ভয়ঙ্কর একটা কিছু ঘটিবে। কর্তার কপালের শিরাগুলো ফুলিয়া উঁচু হইয়া উঠিল, দুই চক্ষে অন্ধ জিঘাংসা জ্বলজ্বল করিতে লাগিল। হাতের কাছে অস্ত্রশস্ত্র কিছু থাকিলে ব্যোমকেশের একটা রিষ্টি উপস্থিত হইত সন্দেহ নাই। ভাগ্যক্রমে সেরূপ কিছু ছিল না। তাই, সিংহ যেমন করিয়া কেশর নাড়া দেয়, তেমনি ভাবে মাথা নাড়িয়া কর্তা কহিলেন, “দেখ ব্যোমকেশবাবু, তুমি মনে কর তোমার ভারি বুদ্ধি, না? তোমার মতো ডিটেকটিভ দুনিয়ায় আর নেই? তুমি বাংলাদেশের বার্তিল? বেশ। তোমাকে তাড়াব না। এই বাড়ির মধ্যে যাতায়াত করবার অবাধ অধিকার তোমায় দিলাম। যদি পার, খুঁজে বার কর সে জিনিস। সাত দিনের মধ্যে ফিরিয়ে দেবে কথা দিয়েছ না? তোমাকে সাত বছর সময় দিলাম, বার কর খুঁজে। এ্যাণ্ড বি ড্যামড।”
কর্তা উঠিয়া দাঁড়াইয়া গর্জন ছাড়িলেন, “উজরে সিং!”
উজরে সিং তৎক্ষণাৎ উপস্থিত হইল। কর্তা আমাদের নির্দেশ করিয়া কহিলেন, “এই বাবু দুটিকে চিনে রাখো। আমি বাড়িতে থাকি বা না থাকি এঁরা এ বাড়িতে যেখানে ইচ্ছে যেতে পরেন, বাধা দিও না, বুঝলে? যাও।”
উজরে সিং তাহার নির্বিকার নেপালি মুধ ও তীর্যক চক্ষু আমাদের দিকে একবার ফিরাইয়া “যো হুকুম’ বলিয়া প্রস্থান করিল।

কর্তা এবার রঘুবংশের কুম্ভোদর নামক সিংহের মতো হাস্য করিলেন, বলিলেন, “খুঁজি খুঁজি নারি, যে পায় তারি – বুঝলে হে ব্যোমকেশচন্দ্র?”
“আজ্ঞে শুধু ব্যোমকেশ – চন্দ্র নেই।”
“না থাক। কিন্তু বুড়ো হয়ে মরে যাবে, তবু সে জিনিস পাবে না, বুঝলে? দিগিন রায় যে জিনিস লুকিয়ে রাখে, সে জিনিস খুঁজে বার করা ব্যোমকেশ বক্সীর কর্ম নয়। – ভালো কথা, আমার লোহার সিন্দুক ইত্যাদির চাবি যখন দরকার হবে, চেয়ে নিও। তাতে অবশ্য অনেক দামি জিনিস আছে, কিন্তু তোমার ওপর আমার অবিশ্বাস নেই। আমি এখন আমার স্টুডিওতে চললাম – আমাকে আজ আর বিরক্ত করো না। – আর একটা বিষয়ে তোমাদের সাবধান করে দিই, – আমার বাড়িময় অনেক বহুমূল্য ছবি আর প্ল্যাস্টারের মূর্তি ছড়ানো আছে, হিরে খোঁজার আগ্রহে সেগুলো যদি কোনও রকমে ভেঙে নষ্ট কর, তাহলে সেই দণ্ডেই কান ধরে বার করে দেব। যে সুযোগ পেয়েছ, তাও হারাবে।”
এইরূপ সুমিষ্ট সম্ভাষণে পরিতুষ্ট করিয়া স্যর দিগিন্দ্র ঘর হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া গেলেন।

দু’জনে মুখোমুখি কিছুক্ষণ বসিয়া রহিলাম।
বুড়ার সহিত সংঘর্ষে ব্যোমকেশও ভিতরে ভিতরে বেশ কাবু হইয়াছিল, তাই ফ্যাকাসে গোছের একটু হাসিয়া বলিল, “চল, বাসায় ফেরা যাক। আজ আর কিছু হবে না।”
অন্যকে ঠকাইতে গিয়া নিজে ঠকিয়া অপদস্থ হওয়ার লজ্জা অল্পই আছে। তাই পরাজয় ও লাঞ্ছনার গ্লানি বহিয়া নীরবে বাসায় পৌঁছিলাম। দু’পেয়ালা করিয়া চা গলাধঃকরণ করিবার পর মন কতকটা চাঙ্গা হইলে বলিলাম, “ব্যোমকেশ, আমার বোকামিতেই সব মাটি হল।”
ব্যোমকেশ বলিল, “বোকামি অবশ্য তোমার হয়েছে, কিন্তু সে জন্য ক্ষতি কিছু হয়নি। বুড়ো আগে থাকতেই সব জানতো। মনে আছে – ট্রেনের সেই ভদ্রলোকটি? যিনি পরের স্টেশনে নেমে যাবেন বলে পাশের গাড়িতে গিয়ে উঠেছিলেন? তিনি এরই গুপ্তচর। বুড়ো আমাদের নাড়ি নক্ষত্র সব জানে।”
“খুব বাঁদর বানিয়ে ছেড়ে দিলে যা হোক। এমনটা আর কখনও হয়নি।”
ব্যোমকেশ চুপ করিয়া রহিল; তারপর বলিল, “বুড়োর ঐ মারাত্মক দুর্বলতাটুকু ছিল বলেই রক্ষে, নইলে হয়তো হাল ছেড়ে দিয়ে হত।”
আমি সোজা হইয়া বসিয়া বলিলাম, “কি রকম? তোমার কি এখনও আশা আছে না কি?”
“বিলক্ষণ! আশা আছে বৈ কি। তবে বুড়ো যদি সত্যিই ঘাড় ধরে বার করে দিত তাহলে কি হত বলা যায় না। যা হোক, বুড়োর একটা দুর্বলতার সন্ধান যখন পাওয়া গেছে, তখন ঐ থেকেই কার্যসিদ্ধি করতে হবে।”
“কোন দুর্বলতার সন্ধান পেলে শুনি! আমি তো বাবা কোথাও এতটুকু ছিদ্র পেলুম না, একেবারে নিরেট নিভাঁজ, লোহার মতো শক্ত।”
“কিন্তু ছিদ্র আছে, বেশ বড় রকম ছিদ্র এবং সেই ছিদ্র পথেই আমরা বাড়িতে ঢুকে পড়েছি। কি জানি কেন, বড় লোকের মধ্যেই এই দুর্বলতা সব চেয়ে বেশি দেখা যা। যার যত বেশি বুদ্ধি, বুদ্ধির অহঙ্কার তার চতুর্গুণ। ফলে বুদ্ধি থেকেও কোন লাভ হয় না।”
“হেঁয়ালিতে কথা কইছো। একটু পরিষ্কার করে বলো।”
“বুড়োর প্রধান দুর্বলতা হচ্ছে বুদ্ধির অহঙ্কার। সেটা গোড়াতে বুঝে নিয়েছিলুম বলেই সেই অহঙ্কারে ঘা দিয়ে কাজ হাসিল করে নিয়েছি। বাড়িতে যখন ঢুকতে পেরেছি, তখন তো আট আনা কাজ হয়ে গেছে। এখন বাকি শুধু হিরেটা খুঁজে বার করা।”
“তুমি কি আবার ও বাড়িতে মাথা গলাবে না কি?”
“আলবত গলাব। বল কি,এত বড় সুযোগ ছেড়ে দেব?”
এবার গেলেই ঐ বেটা উজরে সিং পেটের মধ্যে কুকরি পুরে দেবে। যা হয় করো, আমি আর এর মধ্যে নেই।”
হাসিয়া ব্যোমকেশ বলিল, “তা কি হয়, তোমাকেও চাই এক যাত্রায় পৃথক ফল কি ভালো?”
পরদিন একটু সকাল সকাল স্যর দিগিন্দ্রের বাড়ি গিয়া উপস্থিত হইলাম। বিনা টিকিটে রেলে চড়িতে গেলে মনের অবস্থা যেরূপ হয়, সেই রকম ভয়ে ভয়ে বাড়ির সম্মুখীন হইলাম। কিন্তু দরোয়ানরা কেহ বাধা দিল না: উজরে সিং আজ আমাদের দেখিয়া যেন দেখিতে পাইল না। বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করিয়া ব্যোমকেশ একটা বেয়ারাকে জিজ্ঞসা করিয়া জানিতে পারিল যে, গৃহস্বামী স্টুডিওতে আছেন।

অতঃপর আমাদের রত্ন অনুসন্ধান আরম্ভ হইল। এত বড় বাড়ির মধ্যে সুপারির মতো একখণ্ড জিনিস খুঁজিয়া বাহির করিবার দুঃসাহস এক ব্যোমকেশেরই থাকিতে পারে, অন্য কেহ হইলে কোনকালে নিরুৎসাহ হইয়া হাল ছাড়িযা দিত। খড়ের গাদার মধ্য হইতে ছুঁচ খুঁজিয়া বাহির করাও বোধ করি ইহার তুলনায় সহজ। প্রথমত, মূল্যবান জিনিসপত্র লোক যেখানে রাখে অর্থাৎ আলমারি কি সিন্দুকে অনুসন্ধান করা বৃথা। বুড়া অতিশয় ধূর্ত – সে জিনিস সেখানে রাখিবে না। তবে কোথায় রাখিয়াছে? এডগার এয়ালেন পো’র একটা গল্প বহুদিন পূর্বে পড়িয়াছিলাম মনে পড়িল। তাহাতেও এমনই কি একটা দলিল খোঁজাখুঁজির ব্যাপার ছিল। শেষে বুঝি নিতান্ত প্রকাশ্য স্থান হইতে সেটা বাহির হইয়া পড়িল।

ব্যোমকেশ কিন্তু অলস কল্পনায় সময় কাটাইবার লোক নয়। সে রীতিমত খানাতল্লাস শুরু করিয়া দিল। দেয়ালে টোকা মারিয়া কোথাও ফাঁপা আছে কি না, পরীক্ষা করিয়া দেখিতে লাগিল। বড় বড় পুস্তকের আলমারি খুলিয়া প্রত্যেকটি বই নামাইয়া পরীক্ষা করিল। স্যর দিগিন্দ্রের বাড়িখানা চিত্র ও মূর্তির একটা কলা-ভবন (গ্যালারি) বলিলেই হয়, ঘরে ঘরে নানা প্রকার সুন্দর ছবি ও মূর্তি প্ল্যাস্টার কাস্ট সাজানো রহিয়াছে, অন্য আসবাব খুব কম। সুতরাং মোটামুটি অনুসন্ধান শেষ করিতে দুই ঘন্টার বেশি সময় লাগিল না। সর্বত্র বিফলমনোরথ হইয়া অবশেষে আমরা গৃহস্বামীর স্টুডিও ঘরে গিয়া হানা দিলাম।
দরজায় টোকা মারিতেই ভিতর হইতে গম্ভীর গর্জন হইল, “এসো।”

Category: ০৩. সীমান্ত-হীরা - ব্যোমকেশ বক্সী - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
পূর্ববর্তী:
« সীমান্ত-হীরা ০২
পরবর্তী:
সীমান্ত-হীরা ০৪ »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑