• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

জগৎপারাবারের তীরে

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » জগৎপারাবারের তীরে

আমাদের সাবেকি কালীঘাট পাড়ার চুলকাটার সেলুনের বাইরের দরজায় লেখা ছিল, ‘চুল—১, (এক টাকা)
শিশু— (আট আনা)’
তখন আমাদের বাড়িতে কোনো শিশু ছিল না। আমার শ্রদ্ধেয় দাদা চুলকাটার দোকানের ওই বিজ্ঞপ্তি দেখে এবং সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে দেখে ওই সেলুন থেকে এক টাকা দিয়ে দুটো শিশু কেনার চেষ্টা করেছিলেন। দুঃখের বিষয় ক্ষৌরকার মহোদয় শিশু সরবরাহ করতে পারেননি, পারার কথাও নয়। কিন্তু তিনি আমার দাদাকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন যে ওই শিশু মানে হলো শিশুদের চুলকাটা। ফলে পথে-ঘাটে, সময়-অসময়ে যখনই ওই সেলুনওয়ালার সঙ্গে দাদার দেখা হতো, দাদা তাঁকে তাগিদ দিতেন, ‘ও মশায়, শিশু এল। আমাদের যে দুটো শিশু বড় দরকার।’
কবি বলেছেন, ‘জগত্পারাবারের তীরে শিশুরা করে খেলা’। শিশুরা যদি শুধু জগৎপারাবারের তীরেই খেলত তাহলে হয়তো তেমন আপত্তির কিছু ছিল না, কিন্তু তারা যে কোথায় খেলে আর কোথায় খেলে না, কেউই বলতে পারবে না, তারা নিজেরাও নয়। গাছের ডালে, পুকুরের জলে, বাবার লেখার টেবিলে, মায়ের রান্নাঘরে, ঠাকুমার পুজোর জায়গায় স্কুলের ক্লাসে, সিঁড়িতে, বারান্দায়, গাড়িতে এবং আরও এক হাজার এক জায়গায় তারা খেলে। খেতে খেতে খেলে, ঘুমোতে ঘুমোতে খেলে; কাঁদতে কাঁদতে, হাসতে হাসতে, পড়তে পড়তে, লিখতে লিখতে এমন কি খেলতে খেলতে খেলে।
তা খেলুক, যত খুশি খেলুক, সরল শিশুদের সরল খেলাধুলোয় বাদ সেধে লাভ নেই। তা ছাড়া আমরা সবাই তো বিলিতি ছড়ায় সেই সাহেব খোকা জিলের কথা পড়েছি; খেলা না করে শুধু কাজ করে যার খুব ক্ষতি হয়েছিল।
জিলের ছড়া যে-দেশের, সে-দেশের উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ নামক এক প্রবীণ কবির ভালো ভালো উক্তির দিকে খুব ঝোঁক ছিল, তিনিই বলেছিলেন, শিশুরাই হলো মানুষের বাবা। এর চেয়ে সুন্দর হলো একটি ফরাসি প্রবাদ, শিশুরা হলো দেবদূত, তারা যত বড় হতে থাকে তাদের পাখা তত ছোট হতে থাকে।
দেবদূত, কবিতা এবং প্রবাদবাক্য থেকে মর্ত্য-পৃথিবীর শিশুদের কাছে ফিরে আসা যাক। এক বড় রেস্তোরাঁয় একদা দেখেছিলাম এক দম্পতি তাদের শিশু কন্যাটিকে নিয়ে নৈশাহার করছেন। তাঁরা একটা আস্ত সেদ্ধ মাছ নিয়েছেন যার অর্ধেকও তাঁরা তিনজনে খেয়ে উঠতে পারেননি। বিল মেটানোর আগে কর্তা বেয়ারাকে বললেন, ‘মাছ যেটুকু আছে, একটা প্যাকেট করে দাও তো আমাদের বেড়ালটার জন্যে।’ শিশুকন্যাটি সঙ্গে সঙ্গে চোখ বড় বড় করে বলে ফেলল, ‘বাবা, তা হলে আমরা আজ থেকে একটা বেড়াল পুষব। কি ভালো, কি ভালো।’ পিতৃদেবের কর্ণমূল আরক্ত করে মেয়েটি হাততালি দিয়ে নেচে উঠল।
অন্য একটি বাচ্চা মেয়ের কথা বলি। কয়েক দিন আগে তার একটি ভাই হয়েছে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘খুকু, ভাই কেমন হয়েছে?’ সে ঠোঁট উল্টিয়ে বলল, ‘মন্দ না।’ আমি তার মুখভাব দেখে অবাক হলাম, বললাম, ‘সেকি, ভাই পেয়ে তুমি খুশি হওনি।’ খুকু জানাল, ‘ভাই না হয়ে বোন হলে অনেক ভালো হতো। আমি অনেক খুশি হতাম। বড় হলে তার সঙ্গে পুতুল খেলতে পারতাম।’ আমি রহস্য করে বললাম, ‘যাও না, যে হাসপাতাল থেকে মা ভাইকে নিয়ে এসেছে সেখানে গিয়ে ভাইকে বদলিয়ে মনের মতো একটা বোন নিয়ে এসো।’ খুকু বিজ্ঞের মতো গম্ভীর মুখে বলল, ‘সে তো প্রথমে হলে হতো। এখন সাত দিন ব্যবহার করা হয়ে গেছে, এখন কি আর ফেরত নেবে।’
শিশুনারী বড় পাকা হয়, শিশুনর সে তুলনায় সরল কিন্তু গোঁয়ার ও ডানপিটে। দুই ভাই মারামারি করছে। মা রান্নাঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে এসে বড়টিকে নিয়ে পড়লেন, ‘তুমি ভাইয়ের সঙ্গে মারামারি করলে ফের, তোমাকে বারণ করিনি?’ বড় ছেলে বলল, ‘ভাই আমাকে আগে মেরেছে।’ মা সে কথায় পাত্তা না দিয়ে বললেন, ‘তোমাকে বলিনি কখনো ভাইয়ের ওপর রাগ হলে এক থেকে ১৫ পর্যন্ত গুনবে। দেখবে গুনতে গুনতে রাগ পড়ে যাবে।’ এবার বড় ছেলে উত্তেজিত হয়ে গেল, সে চেঁচিয়ে বলল, ‘তুমি তো আমাকে ১৫ পর্যন্ত গুনতে বলেছ আর ওকে বলেছ রাগ হলে ১০ পর্যন্ত গুনতে। আমি যখন ১১-১২ গুনছি, তখনই তো ১০ গোনা শেষ করে ও আমার পেটে ঘুষি মারল।’
আরেকবার এক দাঁতের ডাক্তারের ওখানে দেখেছিলাম, শিশুপুত্র সঙ্গে এক ভদ্রমহিলা ডেন্টিস্টের সঙ্গে বাদানুবাদ করছেন, ‘আপনি বলেছিলেন খোকার পোকাখাওয়া দাঁতটা তুলে ফেলতে ১০ টাকা নেবেন আর এখন বলছেন ৪০ টাকা।’ ডেন্টিস্ট বললেন, ‘দেখুন ১০ টাকাই নিই, সেটাই নেওয়ার কথা। কিন্তু আপনার ছেলে দাঁত তুলতে গিয়ে এমন মারাত্মক চেঁচাল যে আমার বাকি তিনজন রোগী, যারা চেম্বারে বসে ছিল ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেছে। সে জন্য ওই তিনজনের ৩০ আর আপনার ছেলের ১০—সব মিলিয়ে মোট ৪০ টাকা চাইছি।’
শুধু দাঁত তোলা নয়, এমন শিশুকে জানি যার চুল কাটাও প্রাণান্তকর ব্যাপার। এক ভদ্রলোককে দেখেছিলাম, সেলুনের দরজায় দরজায় ছেলের হাত ধরে ঘুরছেন। সব ক্ষৌরকার সেই শিশুটিকে চেনেন। তাঁরা তাকে দেখেই আঁতকে উঠছেন, ‘সর্বনাশ! না, ওর চুল আমি কাটতে পারব না, আমাকে মাপ করবেন, দাদা।’
শিশুদের নিয়ে আমার সুদূর অতীতের শিক্ষক-জীবনের দুই-একটা তুচ্ছ ঘটনা আজও মনে আছে। একটি বাচ্চা ছেলে একবার আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘স্যার, কারোকে কি সে যা করেনি তার জন্য শাস্তি দেওয়া উচিত!’ আমি বললাম, ‘নিশ্চয়ই না।’ সে এবার খাপ খুলল, ‘তা হলে স্যার, অঙ্কের দিদিমণি আমি অঙ্ক করিনি বলে সাজা দিলেন কেন?’
আরেকবার আরেকটি ছাত্রকে বলেছিলাম, ‘রেফের নিচে দ্বিত্ব দেওয়ার দরকার নেই, পূর্ব বানানে রেফের নিচে একটা ব কেটে দাও।’ ছেলেটি অত্যন্ত সরলভাবে জিজ্ঞাসা করল, ‘স্যার, কোন ব কেটে দেব? ওপরের ব না নিচের ব?’
সবচেয়ে জব্দ হয়েছি এই সেদিন এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে তার ক্ষুদ্র পৌত্রীটিকে মুখে মুখে যোগ অঙ্ক শেখাতে গিয়ে। আমি তাকে বললাম, ‘আমি যদি আজ তোমাকে তিনটে বল দিই, কাল তোমাকে দুটো বল দিই আর পরশুদিন একটা বল দিই তাহলে তোমার সবসুদ্ধ কটা বল হবে?’
মেয়েটি একটু মনে মনে চিন্তা করল, তারপর বলল, ‘আটটা।’ আমি বললাম, ‘সেকি, আটটা কেন?’ সে বলল, ‘আমি আপনার কাছ থেকে পেলাম তিন দিনে সবসুদ্ধ ছয়টা। আর আমার তো নিজেরও দুটো আছে, তাই আটটা।’
পুনশ্চ: শিশু কাহিনিতে এ গল্পটা না লেখাই ভালো। তাই মূল অংশে গল্পটা এড়িয়ে গেছি। তবু মনে যখন এসেছে, পুনশ্চের পর্দার আড়ালে বলেই ফেলি।
বাড়ির ছোট শিশুটির জন্য কয়েক দিন হলো একজন নতুন দিদিমণি নিযুক্ত হয়েছেন। আজ সন্ধ্যায় যখন দিদিমণি পড়িয়ে ফিরছেন, শিশুটির মা পড়ার ঘরে এলেন। এসে শিশুটিকে বললেন, ‘সানি, দিদিমণি যাওয়ার আগে দিদিমণিকে একটু আদর করে দাও।’ সানি নামক শিশুটি সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করল, ‘না, দিদিমণিকে আদর করব না।’ মা বললেন, ‘কেন?’ ‘আদর করলে দিদিমণি আমাকে চড় মারবে।’ সরল শিশুটি জানাল। মা অবাক হলেন, ‘সে কি, তা কেন?’ সানি বলল, ‘কাল দিদিমণিকে বাবা আদর করতে গিয়েছিল, বাবাকে দিদিমণি চড় মেরেছে।’

তারাপদ রায়: জন্ম ১৯৩৬ সালে বাংলাদেশের টাঙ্গাইলে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সচিব হিসেবে অবসরগ্রহণ করেন। বিখ্যাত এই লেখকের উল্লেখযোগ্য বই: তোমার প্রতিমা, নীল দিগন্তে এখন ম্যাজিক, কোথায় যাচ্ছেন তারাপদ বাবু, রস ও রমণী ইত্যাদি। তিনি ২০০৭ সালের মৃত্যুবরণ করেন। এই লেখাটি তাঁর বিদ্যাবুদ্ধি গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ২২, ২০১০

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:ভাষারঙ্গ
Next Post:নিজের নাম সার্থক করতে রোমান্টিক গান গাই—হূদয় খান

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑