• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

১০. চাপা একটা গর্জন

লাইব্রেরি » মুহম্মদ জাফর ইকবাল » সায়েন্স ফিকশন সমগ্র » অবনীল » ১০. চাপা একটা গর্জন

চাপা একটা গর্জন করে মাটি থেকে মিটাবখানেক উপর দিয়ে বাইভার্বালটা উড়ে যাচ্ছে। বাইভার্বালের সামনে রেলিঙে হাত রেখে রিরা আর কুশান পাশাপাশি দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। গরম বাতাসের হলকায় তাদের চুল উড়ছে, গ্রহের সাদা বালিতে দুজনের চেহারাই ধূলি ধূসরিত। রিরা বলল, পুরো ব্যাপারটা একটা জুয়াখেলার মতো। তার মুখে অক্সিজেনের ছোট মাস্ক থাকার কারণে এবং বাতাসের শব্দে ভালো করে কথা শোনা যাচ্ছে না বলে প্রায় চিৎকার করে কথা বলতে হল।

কুশান প্রত্যুত্তরে প্রায় চিৎকার করে বলল, কেন? এটাকে তুমি জুয়াখেলা কেন বলছ?

যদি হঠাৎ করে গ্রহটা অন্ধকার না হয়ে যায়, তা হলে পুরো কাজটা পানির মতো সহজ! আমরা বাইভার্বালে করে যাব, ট্রান্সমিটারে নতুন ব্যাটারি লাগাব, ট্রান্সমিটারে প্রোগ্রাম লোড করব এবং ফিরে আসব। কিন্তু যদি এর মাঝে গ্রহটা আবার অন্ধকার হয়ে যায়, তখন আমাদের কী অবস্থা হবে কল্পনা করতে পার?

কিন্তু আমরা তো তার প্রস্তুতি নিয়েছি। বেশ অনেকগুলো ফ্লেয়ার নিয়েছি, সার্চলাইট নিয়েছি, অস্ত্র নিয়েছি।

কিন্তু তুমি খুব ভালো করে জান এগুলো সত্যিকারের নিরাপত্তা না! আমরা যদি এই খোলা গ্রহে কয়েক লক্ষ বীভৎস প্রাণীর মুখোমুখি হয়ে যাই, তা হলে কোনোভাবে বের হয়ে আসতে পারব?

কুশান বলল, পারব, নিশ্চয়ই পারব।

কুশানের কথা শুনে বিারা কোনো উত্তর না দিয়ে মুখ টিপে হাসল।

কুশান জিজ্ঞেস করল, তুমি হাসছ কেন?

তুমি আমার উপদেশ মেনে মিছিমিছি আশা দিতে শুরু করে দেখে।

কুশান বলল, যেখানে ঠিক উত্তর জানা নেই, সেখানে মিছিমিছি আশা করে থাকা খারাপ নয়।

রিরা বাইভার্বালটাকে একটা বিপজ্জনক বড় পাথরের পাশ কাটিয়ে নিয়ে বলল, মানুষের বসতিটা আর কতদূর হবে বলে মনে হয়?

আমরা নিশ্চয়ই খুব কাছাকাছি চলে আসছি। আমার পাওয়ার মিটারে হাই ফ্রিকোয়েন্সির সিগন্যালটা বেশ জোরালো হয়ে গেছে।

রিরা বাইভার্বালটাকে কয়েক মিটার উপরে নিয়ে বলল, কুশান, তোমার দৃষ্টিশক্তি ঈগল পাখির মতো তুমি খুঁজে দেখ, দেখা যায় কি না।

কুশান সামনে তাকিয়ে বলল, আমার মনে হয় দেখতে পেয়েছি। সোজা সামনের দিকে যাও। একটা বিধ্বস্ত দালানের মতো দেখছি উপরে একটা এন্টেনা দেখা যাচ্ছে। আলোতে চকচক করছে।

রিরা দেখার চেষ্টা করে বলল, আমি কিছু দেখছি না।

আরেকটু কাছে গেলেই দেখবে।

সত্যি সত্যি কয়েক মিনিট পরেই রিরা মানুষের বসতিটা দেখতে পেল। ধুলায় ঢাকা পড়ে আছে কিন্তু দেখে বোঝা যায় একসময় এটি নিশ্চয়ই বেশ বড় একটা আবাসস্থল ছিল। একপাশে বড় বড় ডোম, দূরে পাওয়ার স্টেশন, মানুষের থাকার আবাসস্থল, পানির ট্যাংক–সবকিছুই ধুলার নিচে আড়াল হয়ে যেতে শুরু করেছে। রিরা বাইভার্বালটি নিয়ে পুরো এলাকাটা একবার ঘুরে এসে বলল, আর কিছুদিন পার হলে তো পুরোটাই বালুর নিচে ড়ুবে যেত, আর খুঁজেই পেতাম না।

কুশান বলল, খালিচোখে খুঁজে বের করা কষ্ট হত—ঠিক যন্ত্রপাতি থাকলে বের করা কঠিন কোনো ব্যাপার নয়।

রিরা বাইভার্বালটি মূল কেন্দ্রের কাছাকাছি থামিয়ে বলল, হ্যাঁ, সেটা ঠিকই বলেছ। আমাদের মহাকাশযানটা বিধ্বস্ত হয়ে আমরা মোটামুটিভাবে অনাথ হয়ে গেছি।

দুজন বাইভার্বাল থেকে নেমে কেন্দ্রটির দিকে তাকাল—সবকিছু ভেঙেচুরে বিধ্বস্ত হয়ে আছে। এই গ্রহের প্রাণীগুলো নিশ্চয়ই অসংখ্যবার এই কেন্দ্রটিতে এসে হানা দিয়েছে। রিরা। স্পষ্ট দেখতে পায়—মানুষের জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে আর আলো জ্বালাতে পারছে না, অন্ধকার রাতে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মহাজাগতিক প্রাণী হিংস্র দাঁত নিয়ে ছুটে আসছে, মানুষকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলছে! কী ভয়ংকর একটি পরিণতি। রিরা একটা নিশ্বাস ফেলে বলল, চলো কুশান, ভেতরে যাই।

চলো। ভাঙা দেয়াল পার হয়ে তারা ভেতরে ঢুকল। ভেতরে আরো বেশি বিধ্বস্ত অবস্থা। ভাঙা যন্ত্রপাতি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে—নোংরা দেয়ালে পোড়া দাগ, ধসে যাওয়া ছাদ, দুমড়ে-মুচড়ে থাকা ধাতব টিউব—সব মিলিয়ে একটা ভয়ংকর পরিবেশ। রিরা নিচু গলায় বলল, এরকম একটা পরিবেশে ট্রান্সমিটারটা টিকে আছে কেমন করে? প্রাণীগুলো ট্রান্সমিটারটাকে নষ্ট করে নি কেন?

আমার মনে হয় কন্ট্রোল প্যানেলটি আলোকিত ছিল, আলো দেখে ভয় পেয়ে আসে

নি!

হ্যাঁ। তা-ই হবে নিশ্চয়ই। এখন এই জঞ্জালের ভেতরে খুঁজে পেলে হয়।

কুশান বলল, ভয় পেয়ো না। আমি খুঁজে বের করে ফেলব।

হ্যাঁ, কুশান। তুমি আর তোমার নীলমানবের দৃষ্টি এখন আমাদের একমাত্র ভরসা!

দুজনে মিলে খুঁজতে শুরু করে। বন্ধ ঘরের দরজা খুলে রিরা চিৎকার করে পেছনে। সরে আসে। ভেতরে একজন মানুষের মৃতদেহ পড়ে আছে কিছু কিছু অংশ ক্ষয়ে গেলেও চোখে-মুখে এখনো এক ধরনের অবর্ণনীয় আতঙ্ক। রিরা নিশ্বাস আটকে রেখে বলল, আমাদের যদি কেউ উদ্ধার করতে না আসে, তা হলে আমাদের এই অবস্থা হবে।

কুশান রিরাকে টেনে সরিয়ে নিয়ে এসে বলল, সেটা নিয়ে পরে দুশ্চিন্তা করা যাবে এখন যেটা করতে এসেছি, সেটা করা যাক।

ট্রান্সমিটারের কন্ট্রোল প্যানেলটা খুঁজতে গিয়ে তারা আরো কয়েকজন মানুষের মৃতদেহ এবং অনেকগুলো মৃতদেহের অংশবিশেষ খুঁজে পেল। এই গ্রহের প্রাণীগুলো এই মানুষগুলোকে তাদের ধারালো দাঁত দিয়ে ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছে। দেখে মনে হচ্ছে কেউ আত্মরক্ষার কোনো সুযোগ পায় নি।

ট্রান্সমিটারের কন্ট্রোল প্যানেলটি ছিল তিনতলার একটি ঘরে। কুশানের ধারণা সত্যি, প্যানেলটি আলোকিত বলে প্রাণীগুলো এটাকে কখনো স্পর্শ করে নি। দুজনে খুঁজে পুরোনো ব্যাটারিগুলো বের করে সেগুলো খুলে নতুন ব্যাটারি লাগিয়ে দিল। নতুন করে সুইচ অন করার সাথে সাথে কন্ট্রোল প্যানেলটি উজ্জ্বল আলোতে জ্বলে উঠল। রিরা হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বলল, চমৎকার! এখন এটাকে যদি উদ্ধার করার জন্য প্রোগ্রাম করতে পারি, তা হলেই আমাদের কাজ শেষ।

কুশান জিজ্ঞেস করল, তুমি পারবে?

পারার কথা, মহাকাশ একাডেমিতে আমাদের শিখিয়েছে।

এটা কিন্তু অনেক পুরোনো সিস্টেম।

তা হলেও ক্ষতি নেই। জরুরি অবস্থার কোড কখনো পরিবর্তন করা হয় না। আমাদেরকে সেটাই শিখিয়েছে।

কিছুক্ষণের মাঝেই রিরা আবিষ্কার করল তাদেরকে ভুল জিনিস শেখানো হয় নি। জরুরি অবস্থার কোড ব্যবহার করে সে সত্যি সত্যি কিছুক্ষণের মাঝে ট্রান্সমিটারটা প্রোগ্রাম করে ফেলল। প্রতি সেকেন্ডে একবার করে ট্রান্সমিটারটা মহাকাশে সবাইকে জানিয়ে দিতে লাগল—বিধ্বস্ত মহাকাশযানের মহাকাশচারী এই গ্রহে আটকা পড়ে আছে, তাদেরকে উদ্ধার করার জন্য এস। এই তথ্যটি কাছাকাছি সব মহাকাশযান থেকে রিলে করা হবে—এক-দুই দিনের ভেতরে মূল মহাকাশ কেন্দ্রে তথ্যটি পৌঁছে যাবে। তখন কেউ না কেউ তাকে উদ্ধার করতে আসবে। এটি এখন শুধু সময়ের ব্যাপার।

রিরা কন্ট্রোল প্যানেলে সিগন্যালের তীব্রতা নিশ্চিত করে ঘুরে কুশানের দিকে তাকিয়ে বলল, কাজ শেষ।

পুরোপুরি শেষ হয় নি। আমরা মহাকাশযানে ফিরে যাবার পর বলব, কাজ শেষ।

হ্যাঁ। রিরা মাথা নাড়ল, বলল, মহাকাশযানে গিয়ে আমরা আজকে সত্যিকারের তিতির পাখির মাংস আর যবের রুটি দিয়ে একটা ভোজ দেব। তার সাথে থাকবে আঙুরের

রস।

খাবার পর থাকবে বুনো স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি ফলের কাস্টার্ড।

হ্যাঁ, ফলের কাস্টার্ড। রিরা মাথা নেড়ে বলল, তারপর কিহিতার সপ্তদশ সিম্ফনি শুনতে শুনতে আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকব।

কুশান একটু হেসে বলল, আমার মনে হয় সেজন্য আমাদের সবচেয়ে প্রথম মহাকাশযানে ফিরে যেতে হবে। যত তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে পারব, তত তাড়াতাড়ি এই আনন্দোৎসব শুরু করা সম্ভব হবে।

তুমি ঠিকই বলেছ কুশান, আর দেরি করে লাভ নেই।

চলো যাই।

দূজনে বাইভার্বালে এসে ওঠে। শক্ত হাতে হ্যান্ডেল ধরে পা দিয়ে চাপ দিয়ে ইঞ্জিন চালু করে দিতেই বাইভার্বালটা একটা চাপা গর্জন করে মাটির উপরে ভেসে উঠল। রিয়া হ্যান্ডেলটা টেনে ধরতেই সেটা একটা ঝাকুনি দিয়ে ছুটে যেতে থাকে।

রির দিগন্তে ঝুলে থাকা অতিকায় উপগ্রহটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অন্যমনস্কভাবে বলল, মহাকাশে পৌঁছানোর আগে হঠাৎ যদি গ্রহটা অন্ধকার হয়ে যায়, তা হলে কী হবে কুশান?

কিছুই হবে না রিরা, আমরা তার জন্য প্রস্তুত হয়ে এসেছি।

আমাদের মহাকাশ একাডেমিতে কী শিখিয়েছিল জান?

কী?

একজন মানুষ কখনোই একটা বিপদের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হতে পারে না। সেটার জন্য প্রস্তুত হওয়া সম্ভব কখন, জান?

কুশান রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, কখন?

সেই বিপদটিতে পড়ে তার থেকে একবার উদ্ধার পেলে।

কুশান কোনো কথা না বলে দূরে উপগ্রহটির দিকে তাকিয়ে রইল। রিরা বলল, কী। হল কুশান, তুমি চুপ করে আছ কেন?

কুশান রিরার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলল, মহাকাশযানে পৌঁছতে আমাদের আর কতক্ষণ লাগবে রিরা?

এখনো কমপক্ষে আধাঘণ্টা। কেন?

আমার মনে হয় গ্রহটায় অন্ধকার নেমে আসতে শুরু করেছে।

রিরা ভয় পাওয়া গলায় বলল, তুমি কী বলছ কুশান?

হ্যাঁ। তাকিয়ে দেখ।

রিরা তাকিয়ে দেখল গাঢ় একটি অন্ধকার ছায়া উপগ্রহটি ঢেকে ফেলতে শুরু করেছে। অশুভ একটি অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে পুরো গ্রহটি। কোথা থেকে শীতল একটি বাতাস ভেসে এল, শিউরে উঠল রিরা, শীতে এবং আতঙ্কে।

কিছু বোঝার আগেই গাঢ় অন্ধকারে চারদিক ঢেকে গেল।

Category: অবনীল
পূর্ববর্তী:
« ০৯. ক্যাপ্টেনের ঘরে টেবিলের দুইপাশে
পরবর্তী:
১১. বাইভার্বালটি থামিয়ে রিরা বলল »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑