• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

চুপি চুপি গাঢ় রাত্রে শুয়ে – মুস্তাফা জামান আব্বাসী

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » বিশেষ রচনা » চুপি চুপি গাঢ় রাত্রে শুয়ে – মুস্তাফা জামান আব্বাসী

কাগজে কাগজে রোমাঞ্চক ও প্রাণোদ্দীপক বচন। শত কথার আবরণে দয়িতাকে কাছে নিয়ে আসার প্রাণান্ত প্রয়াস। সকাল দুপুর সন্ধ্যা মধ্যরাত্রে ‘টুং’ করে বাজলেই বান্দা হাজির। এ যেন এখন আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ। রমণী বলছেন, ‘যতই কাছে থাকুন, দূরত্ব বজায় রাখুন…’, তরুণ বলছেন, ‘দূরে থেকো, শুধু মনটি চাই…।’
ভালোবাসার ফুল ফোটানোর জন্য বসন্ত উত্সব, বৈশাখী উত্সব এসবের প্রয়োজন ম্লান হয়ে এসেছে। ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে যৌবনের বারতা। বারো না পেরোতেই হাতে শোভা পায় মুঠোফোন। এক মুঠোতেই আবদ্ধ যত কবিতা ও গান, সব কথার সেরা কথা, ‘তোমাকে ভালোবাসি। তুমি বাসো তো?’
মুঠোফোনের আবিষ্কারক কে আমি জানি না। মুঠোফোন কথাটি যিনি আমাদের মুখে তুলে দিয়েছেন তাঁর কবিতামন্ত্র পড়ে আছে টেবিলে, তিনি নির্মলেন্দু গুণ। এখন দেখতে পাচ্ছি মুঠোফোন ধরে বসে আছেন নিবারণ চক্রবর্তী। শেষের কবিতার রবীন্দ্রনাথ। তাঁদের লেখা কাব্যগাথা দূরাগত বংশীধ্বনি। কে কবিতা পড়ছে? পাঠক নিজেই সংলাপ রচনা করছেন দেখুন:
—শেষের কবিতায় রবীন্দ্রনাথ বলছেন, ‘অল্প বিদ্যার মেয়েরা যখন কর্তৃত্ব পাবে তখন তা হবে ভয়ঙ্কর।’ তুমি কি বিশ্বাস করো?
—না করে উপায় কী? চারদিকে আক্রমণ ও গ্রাস।
—ভীতুর ডিম। আমি কাছে এলেই সব ভয়ের দৈত্য আঁকড়ে ধরতে থাকে তোমাকে। ভালোবাসায় ভয় কী? ‘যব পেয়ার কেয়া তো ডরনা কেয়া’, শোনোনি মধুবালার কণ্ঠে? সেলিমের বাবা আকবরের উদ্দেশে গাইছেন এই গান, মুঘলই আজম ছবিতে? তোমার কণ্ঠের বিন্যাস, হুতাশন, আধফোটা গানের কলি আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাওয়া। সারাক্ষণ প্রতীক্ষায় থাকি, কখন তোমার বাঁশি বাজবে।
—আমি বুঝতে পারছি তোমার সংলাপ এখন কোন দিকে ছুটেছে। রাত যত গভীর হবে, ততই তুমি কাছে আসতে চাইবে। তোমার ঘুম নেই, ক্লান্তি নেই? এটা কি তোমার আক্রমণ নয়? কানে কানে কথা বলার ছলে আসতে চাও চরম বিন্দুতে?
সংলাপ আরও ছিল। এখানে কেটে দিলাম।

আড়ি পাতিনি, তবু শুনেছি রমনা পার্কে, যেখানে আমার ভুবন ৫০ বছর। পার্কে গিয়ে যখন সুগভীর উচ্চারণে শুনছি: ‘তুমি আমার মনের কথা জেনে ফেলেছ, ওইখানে তোমার জিত। আমি তোমার মনের কথা জানতে পারলাম কই?’ প্রমথনাথ বিশীর কবিতাটি যে উচ্চারণ করছে গাঢ় কণ্ঠে, মোবাইলের অপর পাশে কোনো তরুণী, তখন না শুনে উপায় কী? তাকে কল্পনা করতেও অসুবিধা হয়নি। ছিপছিপে হালকা গড়ন, ফর্সা, মাথায় দুবেণি, চঞ্চল ঝরনা, হরিণী নয়নাই হবে সে। এ যে আমার বহু চেনা।
পরের উত্তর—তুমি যত কবিতা উচ্চারণ করেছ, তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ এটি। দিনে দিনে আমার এ কী হলো? কেন আমি জড়িয়ে পড়ছি কবিতার ফাঁদে? কবিতা কি তাহলে ফাঁদ? তুমি কি কবি? নাকি ফাঁদ বসানোর কারিগর?
—সবকিছুই ফাঁদ। মোবাইল তো তাই। ইন্টারনেট তাই। ফেইসবুক তাই। যার মন আছে জবাব দেবে। যে নিরুত্তর সে মৃত। মৃতের সঙ্গে সংলাপ নেই। জীবন্ত হলে ফাঁদে পা দেবে। ফাঁদে পা দিয়ে আটকে পড়বে। দুজন আরও কাছাকাছি হব। তারপর সুখের সাগরে ভাসব।
—তোমার এই সুখের সাগরে ভাসার সঙ্গে জগতের কোনো বিরোধ নেই। আমি নারী, আমি সুখের সাগরে ভাষার আগে ভাবব, দুঃখের নদীটি কত দূরে?
—প্রশ্নগুলো পুরুষদের কাছে আসে তাদের প্রবঞ্চক জ্ঞান করে। সব পুরুষই প্রবঞ্চক নয়, কেউ কেউ। কবিতা আওড়ায় যারা, তাদের সবাই কবি নয়, পাঠক মাত্র। ‘সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি।’ এবার বলতে হবে তোমাকে। কবে দেখা দেবে সশরীরে, বকুলগাছের তলায়? আগামীকাল, ঠিক ১০টায়। ঠিক হ্যায়?
—দূরত্বে থাক। আসব, কারও পছন্দের নীল শাড়ি পরে। যত কাছেই থাকো, দূরত্ব বজায় রেখো, তাহলেই পাবে আমাকে।
এত সংলাপ কোথায় লুকিয়ে ছিল এত দিন? কত কথা এসে জমা পড়ল বিনা তারের সংলাপে। কান পেতে শোনো, কানে কানে।

ট্রেনে যাচ্ছি রাজশাহী। কী সুন্দর যমুনার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে ট্রেনতরী। বাদ সাধল কবিতার দুটি চরণ। আমার খুব প্রিয়—
‘অতন্দ্রিলা, ঘুমোও নি জানি
তাই চুপি চুপি গাঢ় রাত্রে শুয়ে
বলি শোনো…’
ছেলেটি ফোন করছে মোবাইলে যার উদ্দেশে ‘রি-অ্যাকশন’ জানার জন্য অস্থির লেখকমন। অমিয় চক্রবর্তীকে সে চেনে?
মেয়েটি বলছে রাগত স্বরে, ‘হ্যাইডা কার কবিতা পড়লা? এখন কয়টা বাজে খেয়াল আছে? ফোনটা রাইখ্যা দাও।’

১০ মিনিটের জন্য মসজিদে গেছি। মোবাইল ফোন বেজে উঠেছে চারদিকে। এর মধ্যেও গান। আমার বন্ধুর ঢোকানো, ‘ফেলে যাওয়া হে অতীত, আমারে যে পিছু টানে…।’ ইমাম বললেন সংযত স্বরে, ইংরেজিতে: ‘বিধাতার কাছে যেতে চাও? পৃথিবীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এসো।’

ফোর্ট লডারডেল থেকে নিউইয়র্ক তিন ঘণ্টার ফ্লাইট। নতুন প্লেন। সুবেশ সুঠাম ১২৫ জন যাত্রী, যাঁর যাঁর মোবাইল ফোন ‘সুইচ অফ’ করে পত্রিকায় মনোনিবেশ করেছেন। আমার পাশে অবস্থান নিলেন বয়স্ক মহিলা, ওবামার সমবর্ণী, ঠোঁটে দিয়েছেন গাঢ় লিপস্টিক। কথা বলেই চলেছেন বোকারাটনে বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে। কথা যেন শেষ হয় না। কী করে হবে? প্রেমের কি বয়স থাকতে হয়?
সুইচ অফ করার আগে শেষ সংলাপ তাঁর মেয়ের সঙ্গে নিউইয়র্কে: বলেছি তো তিনটা ৪৩ মিনিটে ঠিক কারপোরচে গাড়ি পৌঁছাতে হবে। নিউইয়র্কে প্লেন থামামাত্রই মেয়েকে আবার বকুনি। প্লেন ১০ মিনিট আগে পৌঁছেছে, গাড়ি পাঠাও তিনটা ৩৩ মিনিটে। গতবারের মতো যেন দেরি না হয়। সত্তরোর্ধ্ব মহিলা পাশের যাত্রীর দিকে একবারও তাকাননি। এবার শেষ মুহূর্তে আড়চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, দেখুন তো, মেয়ে আমার মোটে ২২, অথচ সারা দিন বয়ফ্রেন্ড নিয়ে টো টো করে ফিরছে। মোবাইল ফোনে তাকে পাওয়া অসম্ভব।
তাঁর দিকে তাকালাম। নতুন আমেরিকা। সম্পর্কের নতুন দিগন্তের কি উন্মোচন হয়েছে ফেইসবুক, মোবাইল ও ইন্টারনেট ক্যামেরায়। সুদূর ফ্লোরিডায় এই বয়সেও নতুন বন্ধু সংগ্রহ করেছেন মহিলা। ডিয়ারফিল্ড বিচে দুই রাত তিন দিন কাটিয়ে ফিরে যাচ্ছেন আপন বলয়ে। অপরজনের সঙ্গে পরিচয় ফেইসবুকে। কত অন্তরঙ্গতায় মাখানো পরিচয়ের এই নতুন ভুবন, তবু তা ‘কানাকানি’র পর্যায়ে ‘সেল’কে ছাড়িয়ে নয়। শেষ দেখলাম তাঁকে, যখন তাঁর মেয়ের গাড়ি তিনটা ৩৩ মিনিটে তাঁকে নিতে এসেছিল। ফুল নিয়ে উপস্থিত তাঁর অপরূপ সুন্দরী মেয়ে। ‘কালো? তা সে যতই কালো হোক, দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ।’ পুরো নিউইয়র্ক শহর তাঁর পেছনে ধরনা দিলেও আর সব মোবাইল ফোন একসঙ্গে বেজে উঠলেও বা আপত্তি কী? যেমনটি আশা করেছিলাম, তেমনই দেখতে। তার মোবাইল নম্বর থাকলে কবিতাভক্ত আবৃত্তি করত নিবারণ চক্রবর্তী—
‘আজি মাঝে মাঝে আমার ছায়াতে
দুলায়ে খেলায়ো তারই একধারে,
সে ছায়ারই সাথে হাসিয়া মিলায়ো
কলধ্বনি—
দিয়ো তারে বাণী, যে বাণী তোমার
চিরন্তনী।’
আরও ঘটনা আছে। ওই রাতেই এত বড় নিউইয়র্ক শহরে তাঁর সঙ্গে আবার দেখা হবে, এটা অসম্ভব ও অভাবিত। আন্তর্জাতিক লোকসংগীত সম্মেলনে কয়েক হাজার লোক, তার মধ্যে গান গাইছে ‘নিগ্রো স্পিরিচুয়ালস’ একটি মেয়ে। মুগ্ধ শ্রোতা আমি। শত বছর কালোদের দাসত্বের ইতিহাস একটি গানে মূর্ত হয়েছে। খাসা মেয়েটির গলা। তার সঙ্গে সামনাসামনি দেখা হয়নি, কথাও হয়নি। তাতে কী? সেলফোন তো আছে। কিন্তু নম্বর যে নেওয়া হয়নি। কী বলতাম?
‘তোর সাথে চেনা
সহজে হবে না
কানে কানে মৃদুকণ্ঠে নয়
করে নেবো জয়
সংশয়কুণ্ঠিত তোর বাণী।’
দেহকে জয় করলেই স্বপ্ন শেষ। দেহে নেই মিলনের পরিপূর্তি। মোবাইল ফোন ডাক দিয়ে যায়, স্বপ্নের ইশারা সে।

মুস্তাফা জামান আব্বাসী
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৪, ২০০৯

Category: বিশেষ রচনা
Previous Post:বিষাক্ত উত্সবরেণু
Next Post:ছাপাখানায় একটা ভূত থাকে – আনিসুল হক

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑