2 of 3

০৯।১ নবম কাণ্ড : প্রথম অনুবাক

অথর্ববেদসংহিতা নবম কাণ্ড
প্রথম অনুবাক
প্রথম সূক্ত : মধুবিদ্যা

[ঋষি : অথর্বা দেবতা : মধু, অশ্বিনদ্বয় ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, পংক্তি, অনুষ্টুপ, বৃহতী, উষ্ণিক, অষ্টি]

দিবম্পৃথিব্যা অন্তরিক্ষাৎ সমুদ্ৰাদগ্নেৰ্বাতন্মধুকশা হি জজ্ঞে। তাং চায়িত্বামৃতং বসানাং হৃত্তি প্রজাঃ প্রতি নন্দন্তি সর্বাঃ ॥১॥ মহৎ পয়ো বিশ্বরূপমস্যাঃ সমুদ্রস্য হোত রেত আহুঃ। যত ঐতি মধুকশা ররাণ তৎ প্রাণস্তদমৃতং নিবিষ্ট। ২৷৷ পশ্যন্ত্যস্যাশ্চরিতং পৃথিব্যা পৃথনরো বহুধা মীমাংসমানাঃ। অগ্নের্বাহাম্মধুকশা হি জজ্ঞে মরুতামুগ্রা নপ্তিঃ ॥ ৩॥ মাতাদিত্যানাং দুহিতা বসূনাং প্রাণঃ প্রজানামমৃতস্য নাভিঃ। হিরণ্যবর্ণা মধুকশা ঘৃতাচী মহান্ ভৰ্গশ্চরতি মর্ত্যে ৷৷ ৪৷ মধোঃ কশামজনয়ন্ত দেবাস্তস্যা গর্ভো অভব বিশ্বরূপঃ। তং জাতং তরুণং পিপর্তি মাতা স জাতে বিশ্বা ভুবনা বি চষ্টে। ৫৷৷ কন্তং প্র বেদ ক উ তং চিকেত যো অস্যা হৃদঃ কলশঃ সোমধানো অক্ষিতঃ। ব্রহ্মা সুমেধাঃ সো অস্মিন্ মদেত ॥ ৬৷৷ স তৌ প্র বেদ স উ তৌ চিকেত যাবস্যাঃ স্তনৌ সহস্রধারারক্ষিতৌ। : ঊর্জং দুহাতে অনপস্ফুরন্তৌ। ৭৷ হিরিক্ৰতী বৃহতী বয়োধা উচ্চৈঘাষাভ্যেতি যা ব্রত। ত্ৰী ঘর্মানভি বাবশানা মিমাতি মায়ুং পয়তে পয়োভিঃ ॥৮ যামাপীনামুপসীদন্ত্যাপঃ শাক্করা বৃষভা যে স্বরাজঃ। তে বর্ষন্তি তে বষয়ন্তি তদ্বিদে কামমূর্জমাপঃ ॥ ৯৷ স্তনয়িতুস্তে বা প্রজাপতে বৃষা শুষ্মং ক্ষিপসি ভূম্যামধি। অগ্নেৰ্বাতন্মধুকশা হি জজ্ঞে মরুতামুগ্রা নপ্তিঃ ॥ ১০৷৷ যথা সোমঃ প্রাতঃসবনে অশ্বিনোর্ভবতি প্রিয়। এবা মে অশ্বিনা বর্চ আত্মনি প্রিয়তাম। ১১ যথা সোমো দ্বিতীয়ে সবন ইন্দ্রাগ্ন্যোর্ভবতি প্রিয়। এবা ম ইন্দ্রাগ্নী বর্চ আত্মনি প্রিয়তাম। ১২ যথা সোমস্তৃতীয়ে সবন ঋভূণাং ভবতি প্রিয়। এবাম ঋভবো বর্চ আত্মনি প্রিয়তাম। ১৩৷৷ মধু জনিষীয় মধু বংশিষীয়। পয়স্বানগ্ন আগমং তং মা সং সৃজ বৰ্চসা ॥ ১৪ সং মাগ্নে বচসা সৃজ সং প্রজয়া সমায়ুষা। বিদ্যুর্মে অস্য দেবা ইন্দ্রো বিদ্যাৎ সহ ঋষিভিঃ ॥ ১৫৷ যথা মধু মধুকৃতঃ সম্ভরন্তি মধাবধি। এবা মে অশ্বিনা বর্চ আত্মনি প্রিয়তাম্ ॥ ১৬, যথা মক্ষা ইদং মধু ন্যঞ্জন্তি মধাবধি। এবা মে অশ্বিনা বর্চস্তোজো বলমোজশ্চ প্রিয়তা। ১৭ ৷৷ যদ গিরিষু পর্বতেষু গোম্বষেষু ষন্মধু। সুরায়াং সিচ্যমানায়াং যৎ তত্র মধু তন্ময়ি ॥ ১৮ অশ্বিনা সারঘেণ মা মধুনাক্তং শুভপ্সতী। যথা বৰ্চস্বতীং বাচমাবদানি জনা অনু৷ ১৯৷ স্তনয়িলুস্তে বা প্রজাপতে বৃষা শুষ্মং ক্ষিপসি ভূম্যাং দিবি। তাং পশব উপ জীবন্তি সর্বে তেনো সেষমূৰ্জং পিপর্তি। ২০৷৷ পৃথিবী দন্ডোহন্তরিক্ষং গর্ভো দ্যৌঃ কশা। বিদজৎ প্রকশো হিরণ্যয়ো বিন্দুঃ। ২১। যো বৈ কশায়াঃ সপ্ত মধূনি বেদ মধুমান ভবতি। ব্রাহ্মণশ্চ রাজা চ ধেনুশ্চানড্রংশ্চ ব্রীহি যবশ্চ মধু সপ্তমম্ ॥ ২২। মধুমান্ ভবতি মধুমদস্যাহাৰ্যং ভবতি। মধুমতো লোকান্ জয়তি য এবং বেদ। ২৩। যদ বীঘ্ৰে স্তনয়তি প্রজাপতিরেব তৎ প্রজাভ্যঃ প্রাদুর্ভবতি। তস্মাৎ প্রাচীনোপরীতস্তিষ্ঠে প্রজাপতেই মা বুধ্যস্বেতি। অন্বেনং প্রজা অনু প্রজাপতিবুধ্যতে য এবং বেদ। ২৪

বঙ্গানুবাদ— এই মধুকশা গাভী অন্তরিক্ষ, স্বর্গ, পৃথিবী, সমুদ্র ও অগ্নির দ্বারা উৎপন্ন। সেই অমৃত ধারণশালিনী গাভীকে পূজা করে সকল প্রজা প্রসন্ন হয়ে থাকে। এই পয়স্বতী গাভীর মহান দুগ্ধকেই সমুদ্র বলা হয়।…এর চরিত্র নানাভাবে ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে। কখনও একে মরুত্বর্গের প্রচণ্ড পুত্রী, অগ্নি ও বায়ুর দ্বারা উৎপন্ন বলা হয়। ..কখনও বলা হয়, একে দেবতাগণ উৎপন্ন করেছেন, বিশ্ব রূপ এর গর্ভ হয়েছে। …তার হৃদয়, সোম স্থাপিত করণের নিমিত্ত কলশ রূপ হয়ে থাকে, সেটি সদা অক্ষয় হয়ে থাকে, শোভন মতিশীল ব্রহ্মা তাতে আনন্দিত হয়ে থাকেন।…হবিঃ ধারণশালিনী, শব্দবতী গাভী, কর্মক্ষেত্রে আগতা হয়ে অগ্নি, চন্দ্র ও সূর্যের তেজের উপর অধিকার করে থাকে এবং দেবাশ্রয় প্রাপ্ত হওনশালীর শব্দকে আপন দুগ্ধের দ্বারা শক্তিযুক্ত করে থাকে।…হে প্রজাপতি! তুমি বৰ্ষক, তুমি পৃথিবীর উপর বল সিঞ্চন করে থাকে। বজ্র-সম গর্জনসমূহই তোমার বাণী।…অগ্নি ও বায়ুর দ্বারাই মরুৎ-গণের উগ্র পুত্রী মধুকশা উৎপন্ন। যেমন প্রাতঃসবনে এ  অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের প্রিয় হলো সোম, অশ্বিনীকুমারদ্বয় আমাতে তেজঃ স্থাপিত করুন। ইন্দ্র ও অগ্নির পক্ষে দ্বিতীয় সবনে যেমন সোম প্রিয় হয়, তেমনই ইন্দ্রাগ্নি আমাতে তেজঃ সংস্থাপিত করুন। ঋভুগণের নিকট তৃতীয় সবনে সোম যেমন প্রিয় হয়ে থাকে, তেমনই ঋভুগণ আমাতে তেজঃ স্থাপিত করুন। আমি অগ্নির সেবক, সকলে তা জ্ঞাত হোক। অগ্নি আমাতে অন্নের তেজঃ, সন্তান ও আয়ুর দ্বারা সমৃদ্ধ করুন।… সুন্দর আভূষণধারী হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা মক্ষিকার দ্বারা সঞ্চিত মধুর দ্বারা আমাকে যুক্ত করো।…কশার সাথে মধুসমূহের জ্ঞাতা, মধুমান হয়ে যায়। ব্রাহ্মণ, গাভী, অনড়বা (বৃষ), ধান্য, যব, মধু ও রাজা–এই হলো সপ্ত মধু।…যে আকাশে বিভিন্ন গ্রহ নক্ষত্র। ইত্যাদি প্রকাশমান, সেই আকাশে যে গর্জনসমূহ হয়ে থাকে, তা-ই প্রজাগণের নিমিত্ত অবতীর্ণ হওনশালী প্রজাপতি। অতএব যজ্ঞোপবীতধারী এই নিমিত্ত তৎপর হোন যে প্রজাপতি আমাকে জ্ঞাত হোন।

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –দিবসৃথিব্যাঃ ইতি চতুর্বিংশত্যাত্মকং। তত্র প্রথমাসু দশক্ষু মধুকশায়া গোরূপেণ বর্ণনং। দ্বিতীয়ে দশকে বৰ্চস আশংসনং অশ্বিভ্যাং সকাশাদ ইতরদেবেভ্যশ্চ। শিষ্টাসৃষ্ণু কশায়াঃ পুনরপি বর্ণনং। সাম্প্রদায়িকাস্তু এবং বিনিযুঞ্জন্তি। দিবসৃথিব্যাং ইত্যর্থসূক্তস্য মেধাজননকর্মনি বৰ্চস্য-কর্মণি চ বিনিয়োগ। এতবিস্তরঃ প্রাতরগ্নিং ইতি সূক্তে (৩/১৬) দ্রষ্টব্য। (৯কা, ১অ. ১সূ.)৷৷

টীকা— উপযুক্ত ২৪টি ঋক্সম্পন্ন সূক্তের প্রথম ১০টি ঋকে মধুকশার গোরূপের বর্ণনা এবং দ্বিতীয় ১০টিতে অশ্বিদ্বয় ও অন্যান্য দেবতাগণের নিকট হতে তেজ ইত্যাদির প্রার্থনা রয়েছে। অবশিষ্ট চারিটি ঋকে পুনরায় মধুকশার বর্ণনা রয়েছে। এই অর্থসূক্তের দ্বারা মেধাজনন কর্ম ও তেজকামনার নিমিত্ত বিনিয়োগ হয়ে থাকে। বিস্তারিত বিনিয়োগের নির্দেশ ৩য় কাণ্ডের ১৬শ সূক্তে দ্রষ্টব্য। উৎসর্জনকর্মে এই সূক্তের ১১শ থেকে ২৪শ ঋক্ আজ্যহোমে বিনিযুজ্য হয়। (কৌ. ১৪/৩)।…ইত্যাদি। (৯কা, ১অ. ১সূ.)।

.

 দ্বিতীয় সূক্ত : কামঃ

[ঋষি : অথর্বা দেবতা : কাম ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, জগতী, পংক্তি, অনুষ্টুপ]

সপত্নহনমৃষভং ঘৃতেন কামং শিক্ষামি হবিষাজ্যেন। নীচৈঃ সপত্নান্ মম পাদয় ত্বমভিষ্ট্রতো মহতা বীর্যেণ ॥১॥ যন্মে মনসোন প্রিয়ং ন চক্ষুষো যন্মে বভস্তি নাভিনন্দতি। তদুষপ্ল্যং প্রতি মুঞ্চামি সপত্নে কামং স্তুহোদহং ভিদেয়। ২। দুম্বপ্নং. কাম দুরিতং চ কামাপ্রজন্তামগতামবর্তিম। উগ্র ঈশানঃ প্রতি মুঞ্চ তস্মিন্ যো অস্মভ্যমংহ্ররণা চিকিৎসাৎ ৷ ৩৷ নুদস্ব কাম প্রণুদ কামাবর্তিং যন্তু মম মে সপত্নঃ। তেষাং নুত্তানামধমা তমাংস্যগ্নে বাস্তুনি নিদহ ত্বম্ ৷৷ ৪৷ সা তে কাম দুহিতা ধেনুরুচ্যতে যামাহুৰ্বাচং কবয়ো বিরাজ। তয়া সপত্না পরি বৃদ্ধি যে মম পর্যেনান্ প্রাণঃ পশবো জীবনং বৃণ। ৫ কামস্যেন্দ্রস্য বরুণস্য রাজ্ঞো বিষ্ণোর্বলেন সবিতুঃ সবেন। অগ্নেহোত্রণ প্রণুদে সপত্নাংচুম্বীব নাবমুদকে ধীরঃ ৬৷৷ অধ্যক্ষো বাজী মম কাম উগ্রঃ কৃণোতু মহ্যমসপত্নমের। বিশ্বে দেবা মম নাথং ভবন্তু সর্বে দেবা হবমা যন্তু ম ইমম্ ॥ ৭৷ ইদমাজ্যং ঘৃতবৰ্জ্জুষাণাং কামজ্যেষ্ঠা ইহ মাদয়ধ্বম্। কৃঞ্চন্তো মহ্যমসপত্নমেব ॥ ৮ইন্দ্রাগ্নী কাম সরথং হি ভূত্বা নীচৈঃ সপত্নান মম পিদয়াথঃ। তেষাং পন্নানামধমা তমাংস্যগ্নে বাস্তুন্যমুনির্দহ হম ॥ ৯৷৷ জহি ত্বং কাম মম যে সপত্না অন্ধা তমাংসব পাদয়ৈনা। নিরিন্দ্রিয়া অরঃ সন্তু সর্বে মা তে জীবিষ্ণুঃ কমচ্চনাহঃ ॥ ১০৷ অবধীৎ কামো মম যে সপত্না উরুং নোকমকরন্মহমেধতুম। মহ্যং নমন্তা প্রদিশতম্রো মহ্যং ষীৰ্ঘতমা বহন্তু ॥ ১১৷ তেইধরাঞ্চঃ প্র প্লবন্তাং ছিন্না নৌরিব বন্ধনাৎ। ন সায়কপ্রণুত্তানাং পুনরস্তি নিবর্তন৷ ১২। অগ্নিব ইন্দ্রো যবঃ সোমো যবঃ। যবয়াবানো দেবা যাবয়নে৷ ১৩৷৷ অসর্ববীরশ্চরতু প্রণুত্তো দ্বেষ্যো মিত্রাণাং পরিবর্গঃ স্বনাম। উত পৃথিব্যামব স্যন্তি বিদজত উগ্রো বো দেবঃ প্র মৃণৎ সপত্না৷৷ ১৪৷ চ্যুতা চেয়ং বৃহত্যচ্যুত চ বিদজদ বিভর্তি স্তনয়িত্নংশ্চ সর্বান। উদ্যন্নাদিত্যো দ্রবিণেন তেজসা নীচৈঃ সপত্নান্ নুদতাং মে সহস্বা৷৷ ১৫৷৷ যৎ তে কাম শৰ্ম বিরূথমুণ্ডু ব্ৰহ্মবর্ম বিততমনতিব্যাখ্যং কৃতম্। তেন সপত্নান পরি বৃদ্ধি যে মম পর্যোন্ প্রাণঃ পশবো জীবনং বৃণ৷৷ ১৬ যেন দেবা অসুরা প্রাণুদন্ত যেনো দনধমং তমো নিনায়। তেন ত্বং কাম মম যে সপত্নাস্তানস্মাল্লোকাৎ প্রণুদস্ব দূর৷১৭৷৷ যথা দেবা অসুরা প্রাণুদন্ত যথেন্দ্রো দস্যুনধমং তমো ববাধে। তথা ত্বং কাম মম যে সপত্নস্তানস্মাল্লোকাৎ প্র দস্ব দূর৷৷ ১৮। কামো জজ্ঞে প্রতমো নৈনং দেবা আপুঃ পিতরো ন মর্তাঃ। ততত্ত্বমসি জ্যায়া বিশ্বহা মহাংস্তস্মৈ তে কাম নম ইৎ কৃপোমি৷৷ ১৯৷ যাবতী দ্যাবাপৃথিবী বরিণা যাবদাপঃ সিষ্যদুৰ্যাবদগ্নিঃ। ততত্ত্বমসি জ্যায়ান বিশ্বহা মহাংস্তস্মৈ তে কাম নন ইৎ কৃপোমি। ২০ যাবতীর্দিশঃ প্রদিপশা বিমূচীর্যাবতীরাশা অভিচক্ষণা দিবঃ। ততত্ত্বমসি জ্যায়ান বিশ্বহা মহাংস্তস্মৈ তে কাম নম ইৎ কুণোমি৷ যাবতীভৃঙ্গা জত্বঃ কুরূরবো যাবতীৰ্ঘা বৃক্ষসর্পো বভূবুঃ। ততমসি জ্যায়ান বিশ্বহা মহাংস্তস্মৈ তে কাম নম ইৎ কৃপোমি। ২২৷৷ জ্যায়া নিমিষতোহসি তিতো জায়ান্তসমুদ্ৰাদসি কাম মন্যো। ততত্ত্বমসি জ্যায়ান বিশ্বহা মহাংস্তস্মৈ তে কাম নম ইৎ কৃণোমি৷ ২৩৷৷ ন বৈ বাতশ্চন কামমাপরীতি নাগ্নিঃ সূর্যো নোত চন্দ্ৰমাঃ। ততত্ত্বমসি জ্যায়ান বিশ্বহা মহাংস্তস্মৈ তে কাম নম ইৎ কৃপোমি। ২৪ ৷৷ যাস্তে শিবাস্তৱঃ কাম ভদ্রা যাভিঃ সত্যং ভবতি যদ বৃণীষে। তাভিষ্ট্রম্ম অভিসংবিশস্বান্যত্র পাপীরপ বেশয়া ধিয়ঃ ৷৷ ২৫৷৷

বঙ্গানুবাদ –শরিনাশ করণশালী কাম বৃষভকে আমি হবিঃ সমর্পণ করছি, হে ঋষভ! আমার স্তুতি শ্রবণ করে আমার শত্রুগণকে নিপাতিত করো।…হে কামদেব! তুমি উগ্র হয়ে থাকো, তুমি স্বামী (প্রভু) হয়ে আছে। তুমি আপন দুঃস্বপ্নকে, নিৰ্ধনতাকে, প্রজাহীনতা ও দারিদ্র্যকে তার উপর প্রেরণ করো, যে আমাদের পরাজয়রূপ বিপত্তিতে পাতিত করতে চেষ্টা করছে।…হে অগ্নি! তুমি আমাদের শত্রুগণের গৃহের বস্তুসমূহকে নষ্ট (ভস্ম) করে ফেলে। সেই গৃহগুলি অন্ধকারে পূর্ণ হয়ে যাক….আমার এই যজ্ঞ আমার চক্ষের সম্মুখে ছবির দ্বারা সম্পন্ন হোক এবং আমাকে শত্রুশূন্য করে দিক। হে কামের প্রমুখতায় অবস্থানশীল দেবগণ! এই ঘৃত ইত্যাদির হবিকে ঘৃতের তুল্যই সেবন করে সুখী হও এবং আমাকে শত্রুরহিত করে দাও। হে কাম! হে ইন্দ্র! তোমরা তোমাদের রথে আরোহিত হয়ে রিপুগণকে নিপাতিত করো। হে অগ্নি! তুমি সেই শত্রুদের নিমিত্ত ঘোর অন্ধকার প্রকটিত করে তাদের গৃহ ও সমস্ত সম্পত্তিকে ভস্মীভূত করে ফেলল।…ইন্দ্র, অগ্নি, সোম, এরা সকলে, আমার শত্রুবর্গকে বিদূরিত করণে সমর্থ। এই নিমিত্ত তোমরা শত্ৰুদলকে দূর করে আমাদের রক্ষা করো।…এই মন্ত্রবলে প্রেরিত হয়ে আমাদের শত্রু পুত্র, পৌত্র ইত্যাদি এবং সকল যোদ্ধা হতে হীন (বিহীন) হয়ে যাক। তার আপন বান্ধবদের দ্বারাও ত্যাজ্য হোক। বিদ্যুৎ তাদের খণ্ড খণ্ড করে দিক। হে যজমানগণ! আপনাদের শত্রুদলকে উগ্র দেবতা মর্দিত করুক।…হে কামদেব! তুমি আপন ব্রহ্মময়, বিশাল কবচের দ্বারা আমার শত্রুদলকে সংহার করো। ঐ শত্রু প্রাণ, আয়ু ও পশু সকল হতে হীন (বিহীন) হয়ে যাক। যে বলের দ্বারা ইন্দ্রদেব রাক্ষসগণকে মৃত্যু রূপ ঘোর অন্ধকারে নিপতিত করে দিয়েছিলেন এবং যে বলের দ্বারা দেবগণ দৈত্যবর্গকে বিতাড়িত করে দিয়েছিলেন, সেই বলের দ্বারা তুমি এই জগৎ হতে আমার শত্রুসমূহকে দূরে নিক্ষিপ্ত করে দাও। …কামদেব প্রথমে উৎপন্ন হলে, দেবতা ও পিতৃগণও তার সাথে সমতা রক্ষা করতে পারেননি। সকল প্রাণীর দ্বারা গৃহীত হওয়ার কারণে কামদেব মহান্ (শ্রেষ্ঠ)।…কামদেব আকাশ, পৃথিবী, অগ্নি ও জলের বিস্তৃতি অপেক্ষাও বিশাল।… সকলের মধ্যে ব্যাপ্ত মহান্ কামদেবকে আমি নমস্কার করছি।…হে কামদেব! তোমার যে কল্যাণকারী দেহ আছে, তার দ্বারা তুমি যাকে বরণ সে-ই সত্য হয়ে যায়। তুমি আপন সেই শরীররূপী বুদ্ধিসমূহের দ্বারা আমাদের দেহে প্ৰবষ্ট হও এবং আপন পাপবুদ্ধিসমূহকে আমাদের নিকট হতে দূর করে শত্রুগণের মধ্যে প্রবিষ্ট করে দাও।

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –সপত্নহনংইতি সূক্তং কামদেবতাকং। কাম ইচ্ছারূপে দেবঃ। তৎ সম্বোধ্য সপত্নক্ষয়ং প্রার্থয়তে। তদ এবং। সপত্নহনং ইত্যর্থসূক্তেন অভিচারকর্মণি ঋষভং সম্পাতবন্তং কৃত্বা র দ্বেষ্যাভিমুখং বিসৃজতি। তথা তত্রৈব কর্মণি আশ্বথিঃ স্বয়ংপতিতা সমিধ আদধাতি। তথা চ সূত্রং।..তথা সোম্যগে অনুবন্ধ্যায়াং অপরাজিতায়াং তিষ্ঠ্যাং কামদেবনমস্কারে অস্য সূক্তস্য বিনিয়োগঃ। ত উক্তং বৈতানে (৩১৪)। (৯কা, ১অ. ২সূ.)। টীকা –সপত্ন শব্দের অর্থ–বিপক্ষ, শত্রু। শত্রু-হনন সম্পর্কিত উপযুক্ত সূক্তটিতে ইচ্ছারূপী কাম-দেবতার নিকট প্রার্থনা প্রসঙ্গে তার বিষয়ে স্তুতি রয়েছে। অভিচার কর্মে এই সূক্তের দ্বারা একটি ঋষভকে অভিমন্ত্রিত করে শত্রুর অভিমুখে প্রেরণ করণীয়। এই কর্মে সূত্রানুসারে অশ্বত্থ বৃক্ষের স্বয়ংপতিত যজ্ঞীয় কাষ্ঠ (সমিধ) গ্রহণীয়। তথা সোমযাগে কামদেবতার নমস্কারেও এই সূক্তের বিনিয়োগ হয়ে থাকে ॥ (৯কা, ১অ. ২সূ.)।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *