• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

১১. অগ্রদূত কালবৈশাখীর

লাইব্রেরি » তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় » চৈতালী-ঘূর্ণি (১৯৩১) » ১১. অগ্রদূত কালবৈশাখীর

উত্তেজনার প্রবাহে অসন্তোষের বহ্নিদাহ কলের পর কলে ছড়াইয়া পড়ে; সব বুকের মাঝে যেন বিস্ফোরক পুঞ্জীভূত হইয়া ছিল, আজ অগ্নিসংযোগে ফাটিয়া পড়িল, দলে দলে মজুর সব ধর্মঘট করিয়া বসিল।

কলগুলার চিমনিতে চিমনিতে আর ধোঁয়া ওঠে না, দুরন্ত যন্ত্রগুলা অসাড় নিস্পন্দ; দুয়ারে দুয়ারে গুর্খা পাহারা, নিষ্ঠুরতা মুখে মাখা, সমস্ত দেহখানা কর্কশ, কঠোর, কোমরে বাঁকা কুকরি, দিনের আলোয় শাণিত অস্ত্ৰটা চকচক করে, সারা অঙ্গ ব্যাপিয়া হিংস্ৰ তীক্ষতা শোণিততৃষ্ণায় লকলক করে।

মজুরের দল প্রথম উত্তেজনায় নিষ্ফল আক্ৰোশে দাঁতে দাতে ঘষে, জয়ের জন্য জীবন পর্যন্ত পণ করে।

কিন্তু অন্ন, অন্ন!

অনাহারে যে দুর্বল করিয়া দেয়; দীনের সম্বল,নাই, নাই আর নাই। দোকানে ধার দেয় না; বলে, জলে যা পড়েছে, তা পড়েছে, আর না বাবা, ফেল কড়ি মাখ তেল, আমি কি তোমার পর!

শিক-দেওয়া ঘেরা দোকানের দুয়ার বন্ধ করিয়া ভিতর হইতে কথা কয়। জ্ঞান যতক্ষণ থাকে মানের দায়ে পেটের দাহ সয়।

অগ্নিগর্ভ আগ্নেয়গিরির মত উদরে সমস্ত অন্ত্রপাতি লাভা-স্রোতের মত টগবগ করিয়া ফোটে যেন।

কিন্তু অজ্ঞান শিশুর দল ক্ষুধার তাড়নায় চিৎকার করে, মায়ের বুকের দুধ রসহীন গাঢ় জমাট হইয়া ওঠে, উহা বুঝি ক্ষীর নয়, মায়ের বুকের লহু শিশুর মুখে বিস্বাদ ঠেকে, কচি গলায় পার হয় না।

শিবকালী সুরেন নানা স্থান হইতে ভিক্ষা করিয়া আনে।

আপন সঞ্চয়ের ভাণ্ডার খুলিয়া দেয় বড় মিস্ত্রি, সুবল দেয় আপন দোকান, ছোট মিস্ত্রি আপনার সেই সাধের ঘড়িটা দেয়।

বুড়া ড্রাইভার চাঁদা দেয়, জমাদার দেয়, সবাই কিছু কিছু দেয়; দিতে পারে না গোষ্ঠ, একটু তাহার বুকে বাজে, দামিনী কোন গুপ্ত স্থান হইতে বাহির করে সেই জীর্ণ বালা দুইগাছা, বলে দিয়ে এস।

গোষ্ঠ মুখের পানে চায়।

দামিনী কহে, ওই ছেলেদের শুকনো গলায় আট আনার দুধ তো পড়বে; তাই আমার সে পাবে।

জ্বলন্ত শুষ্ক বুকের মাঝেও আজ যেন সেই সচ্ছল দিনের তরুণ গোষ্ঠটি ফিরিয়া আসে, অতি আদরে আজ দামিনীকে বুকে লয়; শুষ্ক পাংশু অধরে একটি চুম্বন আঁকিয়া দেয়, রুক্ষ চোখের পাতা ভিজিয়া ওঠে।

দামিনী একটু মিষ্ট হাসে।

 

এক সপ্তাহ। দুই সপ্তাহ। আরও পাঁচ দিন।

দুর্ভিক্ষ করাল গ্রাসে হা-হা করিয়া জাগে; হা-হ্যাঁ, অন্ন, অন্ন, একমুঠা অন্ন; এত কটি খুদ, হা-হা।

মুখের লালা আঠা বাঁধিয়া যায়, জিভ চটচট করে, আর রব বাহির হয় না, মা চেঁচায়, বাপ চেঁচায়, ছেলেগুলা চেঁচায় না, অতি কষ্টে ধুকধুক করিয়া বাঁচিয়া থাকে, ধরণীর মমতায় জীবন কঙ্কালের আশ্রয়টুকু ছাড়িতে পারে না।

প্রাণের চেয়ে মান বড়, এ দর্শনবাদ মানুষের আবিষ্কৃত, এ তাহার সষ্টার উপরে সৃষ্ট, মানুষের জন্মগত সংস্কার হইতেছে মরণ হইতে জীবনকে বাঁচানো—দুনিয়ার সর্ব ধর্ম সর্ব দ্রব্যের বিনিময়েও আপন অস্তিত্ব জীব বজায় রাখতে চায়, সৃষ্টি হইতে নগ্ন সত্যটাকে মানুষের ইতিহাস প্রমাণ করিয়া আসিয়াছে।

মানুষের আবিষ্কৃত এই দর্শনবাদ; এই সংস্কারের আধার মানবসভ্যতা।

সভ্যতায় বঞ্চিত শ্রমিকদের উদরের জ্বালা অসহ্য হইয়া ওঠে।

দরিদ্র-দলের জন কয় উদরের জ্বালায় আবার গিয়া ধনীর দুয়ারে লুটাইয়া পড়ে, কাজ দাও, কাজ দাও, খেতে দাও, এক মুঠো চাল, এক মুঠো খুদ।

উপর হইতে ম্যানেজার হাঁকে, ভাগো, ভাগে, নেহি মাংতা হ্যায়, চাই না, চাই না তোদের।

এরা তবুও চেঁচায়, কাজ দাও, দয়া কর মালিক, খেতে দাও।

গুর্থার দল কুকরি উঠাইয়া তাড়া দেয়।

গোষ্ঠ, ছোট মিস্ত্রি, কলের মিস্ত্রি, ফায়ারম্যান–এমনই জনকতক বিবরে রুদ্ধ সাপের মত গর্জায়, পেটের আগুনের শিখা অনশন-রুক্ষ চোখের শিখায় নাচে।

উন্মাদের মত বেইমানদের শাস্তি দিতে তাহারা বাহির হয়, হাতে কারও হ্যামার, কাহারও হাতে লোহার ডাণ্ডা, যেন শূলহস্তে রুদ্রের অনুচরের দল।

ধনীর প্রসাদভিক্ষু মজুর-দলের পথ আগলাইয়া ছোট মিস্ত্রি হাতুড়ি ঊচাইয়া কয়, কেন গিয়েছিলি তোরা ধরমঘট করে?

হাঁপানি-রোগী বাবুলাল টানিয়া টানিয়া কহে, কেন গিয়েছিলি, কেন গিয়েছিল। খেতে দিবি, দিবি? তোরাই তো এই করলি, দে, খেতে দে, দে দে।  উদরের জ্বালায় হিংস্র পশুর মত সে ঘোট মিস্ত্রির দিকে ছুটিয়া আসে। ছোট মিস্ত্রিরও সকল সঞ্চিত ব্যর্থ ক্রোধ গিয়া পড়ে ওই নিরীহের উপর, হাতের হ্যামারটা উন্মত্তের মত হানিয়া ছোট। মিস্ত্ৰি হকে, খবরদার!

বাস, ওই এক ঘায়েই শেষ, মাথার খুলিটা ডিমের খোলার মত ফাটিয়া রক্তে মজ্জায় সে এক বীভৎস দৃশ্য।

তবুও উহার ওই জীৰ্ণ পাঁজরা কয়খানার দোপে জীবনটা যেন ওই কয়খানা পঞ্জরের মমতা ছাড়িতে চায় না।

দুর্বলের দল চিৎকার করিয়া ওঠে, দেখিতে দেখিতে দুই দলেই লোক জুটিয়া যায়, তারপর একটা বিভীষণ, ঘৃণিত অধ্যায়।

পশুর মত এ উহার কুঁটি কামড়াইয়া ধরে, ও ইহার মাথা ফাটাইয়া দেয়; ইট, পাটকেল, লাঠি। প্রেতের মত তাণ্ডব নাচে সব। আর্তের চিৎকার, প্রেতের মত উল্লাস।

দেখিতে দেখিতে পুলিশ আসিয়া পড়ে, তখন সব পালায়; ছোট মিস্ত্রি পর্যন্ত।

স্থানটা খালি হইলে দেখা যায় রক্ত, মাংস, মজ্জায় স্থানটা বীভৎস হইয়া উঠিয়াছে, আর কয়টা দেহ, ভয়ার্ত শরণার্থীর দলের কয়টা—বাবুলাল আর দুই জন, উন্মাদের দলের দুইটা গোষ্ঠ আর একজন।

হাসপাতালে গোষ্ঠ মরিতে যায়, পাশে শিবকালী দাঁড়াইয়া। গোষ্ঠ অতি যাতনায় গোঙায়, তবু মাঝে মাঝে পেটের জ্বালার আক্ৰোশে চিৎকার করে, জান দেগা, লেকেন নেহি যায়গা। বলিয়া প্রলাপের ঘোরে উঠিতে গিয়া সহসা বিছানায় লুটাইয়া পড়ে।

ডাক্তার ওঘরে চলিয়া যায়।

কম্পাউন্ডার হাতে হাত রাখিয়া দাঁড়াইয়া থাকে, করুণায় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে, কহে, যে ফল হল, মরতে গরিবই মল।

অদূরে তখন রেললাইনের ধারে কয়টা কুলির ছেলে ধর্মঘটের খেলা খেলিতেছিল, মাটির কলের উপর লাঠি চালাইয়া একদল কহিতেছিল, তোড় দিয়া, তোড় দিয়া।

সেই দিক পানে চাহিয়া শিবকালী আপন মনেই বলে, চৈতালীর ক্ষীণ ঘূর্ণি, অগ্রদূত কালবৈশাখীর।

Category: চৈতালী-ঘূর্ণি (১৯৩১)
পূর্ববর্তী:
« ১০. দামিনী সেদিন শুইয়াই ছিল

Reader Interactions

Comments

  1. পর্দা করা ফরজ

    October 17, 2022 at 12:55 am

    খুবই দুঃখ পেয়েছি

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑