৮২. শ্রীরামচন্দ্র, ভরত ও শত্রুঘ্নের স্বর্গারোহন

৮২. শ্রীরামচন্দ্র, ভরত ও শত্রুঘ্নের স্বর্গারোহন

সুযাত্রা করিয়া রাম ছাড়েন সংসার।
রাম গেল পৃথিবী হইল অন্ধকার।।
অযোধ্যা হইতে রাম করেন গমন।
নারদ বশিষ্ঠ আদি সঙ্গে মুনিগণ।।
অবদূত সন্ন্যাসী চলিল সারি সারি।
ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য শূদ্র বর্ণ চারি।।
হাতে লড়ি করিয়া চলিল খোঁড়া কানা।
শ্রীরামের সঙ্গে যায় না মানিল মানা।।
স্থাবর জঙ্গম চলে শ্রীরামের সনে।
গাছে পক্ষী না রহে, না রহে পশু বনে।।
ভূত প্রেত পিশাচ চলিল অন্তরীক্ষে।
হরিষ হইয়া সবে যায় উত্তর মুখে।।
সংসার ছাড়িয়া রাজা যায় লক্ষ লক্ষ।
নপুংসক চলিল যে অন্তঃপুর-রক্ষ।।
চলিল সুগ্রীব রাজা শ্রীরামের মিত।
ছত্রিশ কোটি সেনাপতি চলিল ত্বরিত।।
ব্রহ্মা আনিলেন রথ রামকে লইতে।
বৈকুণ্ঠে আসিবে প্রভু জগৎ সহিতে।।
তিন কোটি রথ এল দোবলোক দেখে।
আকাশ যুড়িয়া রথ রহে অন্তরীক্ষে।।
জাহ্নবী সরযূ নদী এক ঠাই বহে।
গঙ্গা এড়ি রঘুনাথ সরযূতে রহে।।
মুক্ত পূর্ব্বপুরুষ যে সরযূর জলে।
গঙ্গা এড়ি রঘুনাথ সরযূতে উলে।।
সরযূত স্রোত বহে অতি খরশাণ।
স্রোতে নামি তিন ভাই ত্যাজিলেন প্রাণ।।
স্বর্গেতে দুন্দুভি বাজে পুষ্প বরিষণ।
সরযূতে তিন ভাই ত্যজেন জীবন।।
নরদেহ ছাড়িয়া গেলেন তিন জন।
বৈকুণ্ঠে শ্রীবিষ্ণু গিয়া দেন দরশন।।
শ্রীরাম ভরত আর শত্রুঘ্ন লক্ষ্মণ।
মিলি হইলেন এক দেহ নারায়ণ।।
সীতাদেবী আইলেন শ্রীরামের পাশে।
লক্ষ্মীরূপা হইলেন সীতা অবশেষে।।
অংশীভূত নারায়ণ হৈলা সুপ্রকাশ।
সমাপ্ত উত্তরকাণ্ড গাহে কৃত্তিবাস।।