৫৯
আজাদের মা কিছুদিন থাকেন মগবাজারের বাসায়, এই সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে কাজী কামাল উদ্দিন, হাবিবুল আলম আসে, সাফিয়া বেগম তাদের যত্নআত্তি করেন, তাদের ভাত না খাইয়ে ছাড়তে চান না, ছেলেরাও কথা না বাড়িয়ে হাত ধুয়ে খেতে বসে যায়, কাজী কামাল ভাত খায়, সাফিয়া বেগম তার পাতে ভাত তুলে দেন, কাজী কামাল ভাত চিবোয়, আজাদের মা তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে চোয়ালের ওঠানামা দেখেন, হাবিবুল আলম তার বড় জুলফিওয়ালা গাল নেড়ে ভাত খেতে খেতে গল্প করে, সেন্ট্রাল জেল থেকে সে বের করেছে চুল্লু ভাইকে, সামাদ ভাইকে, আজাদের মা বলে, ‘আমার আজাদও বেঁচে আছে, কালকে বড় হুজুর স্বপ্ন দেখে আমাকে বলেছেন…’
জাহানারা ইমাম আসেন আজাদের মায়ের মালিবাগের ডেরায়৷ জাহানারা ইমাম খোঁজখবর নেন অন্য মায়েদের, জুয়েলের মা কোথায়, বদির মা কোথায়, বাকেরের মা কোথায়, এইসব৷ আজাদের মা সবাইকে বলেন, আজাদ অবশ্যই বেঁচে আছে৷ সে ফিরে আসবেই৷ এই বিশ্বাস তিনি পান জুরাইনের বড় হুজুরের কাছ থেকে, আর তখন নানা জনরব শোনা যেতে থাকে, একজন এসে বলে সে আজাদকে দেখেছে লন্ডনে, টিউব রেলে, তার পাশের আসনেই বসা; আজমির শরিফ থেকে একজন আত্মীয় ফিরে এসে বলেন, ওখানকার খাদেম বলেছে, আজাদ বেঁচে আছে, ফিরে আসবে… একজন পাওয়া যায় প্রত্যক্ষদর্শী, পেশোয়ারে আজাদকে দেখা গেছে…