আমার দেখা নয়াচীন খাতার নোট
রেঙ্গুন, থাইল্যান্ড, ব্যাঙ্কক, অ্যারোড্রাম, শ্যামদেশ, হুয়েন সাং, ফা হিয়েন, সিংহুয়া সংবাদ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। হংকং, নাম ভিক্টোরিয়া কৌলুন হোটেল। কইতেক বিমানঘাটিতে নামলাম।
কাউহু স্টেশন—চীনের শেষ স্টেশন—মেনচুন কম্যুনিস্ট চীনের স্টেশন। ট্রেনে দুইটা ক্লাস শক্ত ও নরম।
ক্যান্টন শহরের মাঝে মাঝে পূর্ববাংলার মতো—পার্ল নদীর পাড়ে সাইচুং হোটেল।
ক্যান্টন থেকে পিকিং দেড় হাজার মাইল।
সত্যি যে চীনের সাথে কারো তুলনা হয় না।
ক্ষিতীশ বোস পিরোজপুরের লোক। ক্যান্টন শান্তি কমিটির সভা। ক্যান্টন শুয়োরের মাংস মাসলেকের মধ্যে।
১৯১২ সালে মাঞ্চু ম্রাটদের শেষ করে সান ইয়াৎ-সেন ক্ষমতা দখল করে প্রজাতন্ত্র কায়েম করেন।
২৪শে সেপ্টেম্বর। ক্যান্টন থেকে হুয়াং কাইও, চীনের সর্ববৃহৎ নদী ইয়াংসি নদীর পাড়।
কুয়েমিনসিং—সব ধ্বংস করে গেছে পালাবার সময়। পিকিং চীনের পুরানা শহর। ইংরেজ, আমেরিকা, জাপান, ফ্রান্স অনেকেই পিকিং আক্রমণ করেছে।
সাততলা অট্টালিকা পিকিং হোটেল। Forbidden City—আলাদা একটি শহর পিকিং শহরের ভিতরে। রাজারা থাকতেন তাঁর সামন্তদের নিয়ে। সৌন্দর্যে ভরা এই নিষিদ্ধ এলাকা। এর মধ্যে না আছে এমন কিছুই নাই। পার্ক, লেক—এখন শহরটা সকলের জন্য। এখানে লাইব্রেরি, মিউজিয়াম শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। হাজার হাজার লোক আসে এই শহরে আরাম করতে, হাওয়া খেতে। ‘Gate of heavenly Peace.’ চীনারা বলে তিয়েন আন মেন। এখানে দাঁড়িয়ে মাও সে তুং অভিবাদন গ্রহণ করেন।
১লা অক্টোবর ১৯৪৯ সালের এই দিনে মুক্তিবাহিনী চীনকে মুক্ত করেছিল। মাও, লিও, চ্যু তে, চৌ এন লাই এবং নেইবো। চীনা টাকার নাম ইয়ুয়ান, কেউ বলে ইয়েন। হংকংয়ে ২০ টাকা বদল করলাম যা পেলাম তা ঠিক বলতে পারব না। তবে এক বস্তা কাগজ পেয়েছিলাম কয়েক কোটি ইয়েন হবে। ইনফ্লেশন যাকে বলে।
Summer Palace গ্রীষ্ম প্রাসাদ
নানা রকমের জীব-জানোয়ারের মূর্তি। সকলের উঁচু জায়গায় বৌদ্ধমন্দির। পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রমোদনগরী এই জায়গা, ভিতরে বিরাট লেক। এখানে সকল কিছুই আছে পার্ক, বড় ছোট রাস্তা। লেকের মধ্য জায়গায় একটা দ্বীপ।
শান্তির কপোত
মণিমাণিক্য দিয়ে সাজানো বুদ্ধমূর্তি থেকে লুটপাট করে নিয়েছে বিদেশি শক্তি। ভারত-পাকিস্তানের মতো মেজর-জেনারেল, রেজা-মাহবুব-তৃতীয় লেবেলের একমাত্র বাঙালি কর্মচারী।
তুর্কি কবি নাজিম হিকমত—রাশিয়ার লেখক আইজ্যাক আসিমভ
মহাপ্রাচীর
ট্রেনে করে নিয়ে যাওয়া।
সপ্ত আশ্চর্যের একটি দেওয়াল। দেড় হাজার মাইল লম্বা প্রাচীর। বোধ হয় দুই হাজার বছরের বেশিদিন হবে নির্মাণ হয়েছে।
শান্তি হোটেল ও পিকিং হোটেল। সকল জিনিসের একদাম।
গলাবন্ধ কোট আর মোটা কাপড়ের প্যান্ট সকলেরই ড্রেস। ১০ই সেপ্টেম্বর ভারতীয়রা আমাদের খাবার দাওয়াত করলেন। না করার পরে ওদের খাওয়াইছিলাম।
১লা অক্টোবর বাঁ দিকের গ্যালারিতে আমাদের জায়গা—পতাকা ও জনগণের সমুদ্র। তৃতীয় উৎসব। ১০টায় আসবেন মাও সে তুং—সুন চিন লি; চ্যু তে পাশে আছেন।
সৈন্যরা অনেক মহড়া দেখালো জল, স্থল ও বিমান বাহিনীর। কৃষক মজদুর পায়োনিয়ার ফোর্স।
দাওয়াত খাবার দিন মাও সে তুংকে ভালোভাবে দেখতে হবে। ইউসুফ হাসান।
তাহিরা মাজহার। শান্তি সম্মেলনে সাঁইত্রিশটা দেশ যোগদান করেছে।
কপোত থাকা, শান্তির কপোত সকল দিকে। সাঁইত্রিশটা দেশের পতাকা। পাকিস্তানের সকলেই আমরা পাশাপাশি বসেছি। টেবিলে হেডফোন আছে। সিটে নাম লেখা রয়েছে। চারটা মূল ভাষায় বক্তৃতা শোনা যায়। মূল ভাষার বক্তৃতা করলে অন্য ভাষায় শোনা যায়। ইংরেজি, চীনা, রুশীয়, স্পেনিশ। হাই পার্ক দেখতে গেলাম এক রাতে।
ডা. ফরিদীর ডাক নাম কিসলু, মনোজ বসু গেলেন।
White Haired girl চীনা ছবি। প্রসিদ্ধ নাটক (সাদা চুলের মেয়ে)
ক্ষিতীশ বাবু বাংলা গানে মুগ্ধ করে দিয়েছে।
ধর্ম-কনফুসিয়ান বেশি, তারপর বৌদ্ধ, তারপর মুসলমান। মসজিদ আছে কয়েকটা, মুসলমানদের মাথায় গোলটুপি। খ্রিষ্টান আছে কিছু।
প্যাগোডা।
Temple of Heaven (স্বর্ণমন্দির) ফসল ফলানোর মন্দির; দেশে যাতে ভালো শস্য হয় তার জন্য পূজা করা হত। সূর্য, চন্দ্র, হাওয়া ও বুকীর পূজা বলা যায়।
৮৬ ছিয়াশি জন বক্তৃতা করে ১১ দিন সম্মেলন চললো।
১২ই থেকে আমরা। কনকনে শীত।
জমিদারি বাজেয়াপ্ত। চাষির মধ্যে জমি বিলি ব্যবস্থা। নানকিন, টিয়েন সিং, সাংহাই, হ্যাংচো (পশ্চিম হ্রদ) ক্যান্টন ১৯১১ সালে সান ইয়াৎ-সেনের দল আক্রমণ করে।
১৯৪১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর হক সাহেব জাতীয় মন্ত্রিত্ব গঠন করেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীকে সাথে নিয়ে। মুসলিম লীগ—নাটোর।
১৯৪৩-২৮শে মার্চ হক সাহেব পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। নাজিমুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৪৩ সালে। মুসলিম লীগ মন্ত্রিসভা ১৯৪৬ সালের সাধারণ নির্বাচনের পূর্বেই খাজা সাহেব পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
১৯৪৬ সালের ২২শে এপ্রিল সোহরাওয়ার্দী শপথ গ্রহণ করেন।