জীব কোনোরূপ আঘাত পাইলে চকিত হয়। সেই সংকোচনই জীবনের সাড়া। জীবনের পরিপূর্ণ অবস্থায় সাড়া বৃহৎ হয়, অবসাদের সময় ক্ষীণ হয় এবং মৃত্যুর পর সাড়ার অবসান হয়। বৃক্ষও আহত হইলে ক্ষণিকের জন্য সংকুচিত হয়; কিন্তু সেই সংকোচন স্বল্প বলিয়া সচরাচর দেখিতে পাই না। কলের সাহায্যে সেই স্বল্প আকুঞ্চন বৃহদাকারে লিপিবদ্ধ হইতে পারে। ইহার বাধা এই যে, বৃক্ষের আকুঞ্চনশক্তি অতি ক্ষীণ এবং সাড়া লিখিত হইবার সময় লেখনীফলকের ঘর্ষণে থামিয়া যায়। এই বাধা দূর করিবার জন্য ‘সমতাল’ যন্ত্র আবিষ্কার করিতে সমর্থ হইয়াছিলাম। যদি দুই বিভিন্ন বেহালার তার একই সুরে বাঁধা যায় তাহা হইলে একটি তার বাজাইলে অন্য তারটি সমতালে ঝংকার দিয়া থাকে। তরুলিপিযন্ত্রে লেখনী লৌহতারে নির্মিত এবং এই তারটি বাহিরের অন্য তারের সহিত এক সুরে বাঁধা। মনে কর, দুইটি তারই প্রতি সেকেণ্ডে একশত বার কম্পিত হয়। বাহিরের তার বাজাইলে লেখনীও একশত বার স্পন্দিত হইবে এবং ফলকে একশত বিন্দু অঙ্কিত করিবে।
এইরূপে ফলকের সহিত ক্রমাগত ঘর্ষণের বাধা দূরীভূত হয়। ইহা ব্যতীত সাড়ালিপিতে সময়ের সূক্ষ্মাংশ পর্যন্ত নিরূপিত হয়; কারণ এক বিন্দু ও পরবর্তী বিন্দুর মধ্যে এক সেকেণ্ডের শতাংশের ব্যবধান।