২২. দ্য আনএক্সপেকটেড টাস্ক

২২. দ্য আনএক্সপেকটেড টাস্ক

পটার! উইসলি! তোমরা কী মনোযোগ দিয়ে শুনবে? বৃহস্পতিবার ট্রান্সফিগারেশন ক্লাসে ওদের গল্পরত দেখে রেগে গিয়ে প্রফেসর ম্যাকগোনাগল বললেন। তার কথা শুনেই হ্যারি ও রন সোজা হয়ে বসলো।

লেসনের শেষদিন; ওরা কাজও শেষ করেছে, গিনি–ফাউলকে ওরা গিনিপিগ এ পরিবর্তন করে বড় খাঁচাতে বন্ধ করে ম্যাকগোনাগলের ডেস্কের ওপর রেখেছে। (নেভিলের গিনিপিগের গায়ে তখনো পালক রয়েছে) ব্ল্যাক বোর্ড থেকে তারা তাদের হোমওয়ার্ক কপি করে রেখেছে ইতোমধ্যে (উদাহরণ দিয়ে বল প্রজাতি পরিবর্তন করার সময় ট্রান্সফরমিং জাদুমন্ত্র অবশ্যই কোন কোন পথ অবলম্বন করতে হবে)। ক্লাস শেষ হবার ঘন্টা যে কোনও সময় বাজতে পারে। কিছুক্ষণ আগে ক্লাসের পেছনে ওরা ফ্রেড–জর্জের সঙ্গে জাদু দণ্ড দিয়ে তলোয়ার যুদ্ধ করেছে।

–রনের হাতে একটা টিনের টিয়া পাখি, হ্যারির হাতে রবারের সামুদ্রিক কড মাছ। ক্লাসের অন্যরা পেছনে ফিরে ওদের যুদ্ধ দেখছে।

–পটার ও রন তোমরা কী ছেলেমুনাষী করছো! প্রফেসর ম্যাকগোনাগল রাগী রাগী চোখে ওদের দিকে তাকালেন। হ্যারি কড মাছ আর রন টিয়া পাখি মেঝেতে ফেলে দিল। আমি তোমাদের কিছু বলতে চাই।

–ক্রিস্টমাস আসতে আর দেরি নেই–ট্ৰিই–উইজার্ড টুর্নামেন্ট আমাদের বিদেশী বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশার সূবর্ণ সুযোগ করে দেয়। সামনের ক্রিস্টমাস উদযাপনের বল নাচে যোগদান করবে ফোর্থ ইয়ারের ও তার উপরের ক্লাসের ছাত্র ছাত্রীরা, তোমরা চাইলে অবশ্য নিচের ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের বল নাচে অংশগ্রহণের জন্য ডাকতে পার।

ঘোষণাটি শুনে ল্যাভেন্ডার ব্রাউন মুচকি হাসি দিল। পার্বতী পাতিল ওর দুহাত ভাঁজ করে মুখ–চোখ এমনভাবে ঢেকে থাকলো যে দেখে মনে হচ্ছে–হাসি চাপার জোর চেষ্টা করছে। ওরা দুজনেই হ্যারির দিকে তাকাল। প্রফেসর ম্যাকগোনাগল এসব ভ্রুক্ষেপ করলেন না। হ্যারির মনে হল যা এইমাত্র ম্যাকগোনাগল হ্যারি ও রনকে বকবেন কিন্তু এই হাসির জন্য তিনি কিছুই বললেন না।

ম্যাকগোনাগল বললেন, যথারীতি রোব পরবে। ক্রিস্টমাস ডেতে বলড্যান্স সকাল আটটায় গ্রেট হলে শুরু হবে… মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে। প্রফেসর ম্যাকগোনাগল সব ছাত্রছাত্রীদের দিকে তাকিয়ে হাসলেন।

–মনে হয় এই সময় মেয়েরা কেউ চুল বাঁধবে না, চুল ভোলা রাখার এই দিনটিতেই সুযোগ। কথা শুনে মনে হয় চুল বেঁধে রাখা তার মনো :পুত নয়।

ল্যাভেন্ডার ওর ফিকফিক হাসির শব্দ যাতে প্রফেসরের কানে না যায় তাই মুখ চেপে রইল। প্রফেসর ম্যাগগোনাগলের চুলের দিকে তাকিয়ে হ্যারির মনে হল তার শক্ত করে বাঁধা চুল কিছুতেই খুলবেন না।

–কিন্তু তার মানে এই নয়, প্রফেসর ম্যাকগোনাগল বলে চললেন হোগার্টের ছাত্র–ছাত্রীরা তাদের চিরাচরিত দ্র ব্যবহার মেনে চলবে না। আমি দ্বিধাহীন কণ্ঠে জানিয়ে দিতে চাই, আমি খুবই অখুশি হব, যদি গ্রিফিন্ডরের ছাত্র ছাত্ৰী সকলকে কোনওভাবে বিব্রত করে।

ক্লাস শেষ হবার ঘণ্টা বাজতেই ছাত্রছাত্রী বই খাতাপত্র ব্যাগের মধ্যে পুরে গুঞ্জন করতে করতে ক্লাস ছেড়ে চলে গেল।

প্রফেসর ম্যাকগোনাগল সেই কলরবের মধ্যে উচ্চ কণ্ঠে বললেন,–পটার তুমি যাবে না, তোমার সঙ্গে কিছু কথা আছে। প্লিজ, একটু অপেক্ষা কর।

হয়ত, ওর মুণ্ডহীন রবারের তিমিমাছ সম্বন্ধে কিছু বলবেন, সেই ভেবে হ্যারি মুখ গোমড়া করে টিচার ডেস্কের দিকে গেল।

প্রফেসর ম্যাকগোনাগল সব ছাত্র–ছাত্রী ক্লাস ছেড়ে না যাওয়া পর্যন্ত চুপ করে রইলেন। তারপর বললেন–পটার, চ্যাম্পিয়নরা ও তাদের পার্টনার…।

–পার্টনার? হ্যারি বিস্ময়ে বলল।

প্রফেসর ম্যাকগোনাগল এমন ভাবে ওর দিকে তাকালেন যেন ও সব জেনেও ও বোকা সাজছে।

–তোমার পার্টনার মানে ইউল বলে, ম্যাকগোনাল নিপ্ৰভ কণ্ঠে বললেন, মানে তোমার নাচের পার্টনার…।

হ্যারির শরীরের ভেতরটা কুঁকড়ে গেল–নাচের পার্টনার?… আমি তো বল ড্যান্স জানি না, ম্যাডাম।

–হ্যাঁ, তোমাকে নাচতে হবে, প্রফেসর ম্যাকগোনাগল বিরক্তিমাখা মুখে বললেন, আর এ কারণে তো কিছু কথা তোমাকে বলতে চাই। প্রথাগতভাবে চ্যাম্পিয়ন আর তাদের পার্টনারেরা বল নাচ ওপেন করে।

হ্যারি মনে মনে নিজেকে কল্পনা করে নেয়–ল্যাজওয়ালা লম্বা হাট–তার সঙ্গে একটি মেয়ে আন্টি পেটুনিয়ার মতো ফ্রিল দেওয়া পোশাক। আক্কেল–আন্টকে দেখেছে কোনও পার্টিতে গেলে ওই রকম পোষাক পরেন।

–আমি নাচে যোগ দেবো না।

–দিতেই হবে এই প্রথা বাধ্যতামূলক। প্রফেসর ম্যাকগোনাগল দৃঢ়ভাবে বললেন। মনে রেখ, তুমি হোগার্টের চ্যাম্পিয়ন, স্কুলের প্রতিনিধি হিসেবে তোমাকে যোগ দিতেই হবে। অতএব পার্টনার তুমি যোগাড় করে নাও পটার। স্কুলে অনেক ছাত্রী আছে… তারা বল নাচে যেতে।

–কিন্তু আমি যে নাচতে জানি না, জীবনে কখনো নাচিনি।

–তুমি আমার কথা বোধহয় শোননি পটার। এমনভাবে বললেন যেন শোন নি কথাটা আদেশ।

***

এক সপ্তাহ আগে, নাচের জন্য পার্টনারের কথা হ্যারিকে কেউ বললেই হাঙ্গেরিয়ন হর্নটেলের চেয়ে তেঁতো মনে হতো। এখন তো আর সেই অবস্থা নেই–হর্নটেলের কাজ শেষ… এখন একটি মেয়ে যোগাড় করার চেয়ে মনে হল হনটেলের সঙ্গে আর এক রাউন্ড লড়ে যাওয়া অনেক সহজ ব্যাপার।

ক্রিস্টমাসের ছুটিতে কেউ বাড়ি না যেয়ে হোগার্টে থাকতে চাইবে এর আগে কখনো দেখিনি। আর ওর বিষয়টা আলাদা, ও ছুটিতে যেতে চেতো না প্রিভেট ড্রাইভে যেতে হবে বলে। কিন্তু তখন তো সে বড় হয়নি। এই বছর চিত্রটি ভিন্ন, ফোর্থ ইয়ার বা তার ওপরের ছাত্র–ছাত্রীরা ক্রিস্টমাসের জন্য হোগার্টে থেকে যাবে। মেয়েদের সম্বন্ধে হ্যারির কোনো আগ্রহ–উৎসাহ নেই। করিডলর দিয়ে যেতে গেলে ওদের ও দেখে, ওরা হাসে… হয়ত ভাব জমাতে চায়… হ্যারির কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। ছেলে–মেয়েদের কথা অবশ্য ওর কানে আসে। নাচের কথা, ড্রেসের কথা… ক্রিস্টমাস নাইটে হই–হুঁল্লোড় করার কথা। হ্যারি আগ্রহী নয়। হারমিওন এবং রনও তাই।

হ্যারি রনকে জিজ্ঞেস করল–আচ্ছা ওদের বুঝি জোড়ায় জোড়ায় না নাচলে চলে না? কেমন করে পার্টনার হতে বলা যায় বলত?

রন হেসে বলল–তাইতো একজনকে দরকার? মাথায় কারও নাম তোমার এসেছে?

হ্যারি সে কথার জবাব দেয় না। মনে মনে অবশ্য একজনকে ইতিমধ্যে ঠিক করে ফেলেছে। কিন্তু সাহস হয় না প্রকাশ করতে।… চো অবশ্য ও এক বছরের সিনিয়র… দেখতে খুবই সুশ্রী, ভাল কিডি প্লেয়ার… তাছাড়া হ্যারির মতো মুখ লুকিয়ে বসে থাকে না। ছেলেদের কাছে… বিশেষ।

রনের মনে হল হ্যারির মাথায় কার নাম খুব পাক খাচ্ছে।

বলল–শোন তোমার কোনও অসুবিধে নেই। তুমি একজন চ্যাম্পিয়ন শুধু নয় প্রথম টাস্কে হর্নটেলকে হারিয়েছ সব মেয়ে, তোমার সঙ্গে নাচতে পারলে খুশিতে ডগমগ হবে। লাইন দিয়ে বসে আছে তোমার ডাকের অপেক্ষায়। নতুন করে বন্ধুত্ব হবার পর রন খুব স্বাভাবিক হয়ে গেছে। পুরনো তিক্ততা মনে ঠাঁই দেয় না।

তৃতীয় বর্ষের হাফলপাফের একটি মেয়ে সরাসরি ওর সঙ্গে নাচার প্রস্তাব রাখল। হ্যারি ওর প্রস্তাব শুনে খুব অবাক হয়ে গেল। কোনও রকম ভাবনা–চিন্তা না করেই সরাসরি বলল–না। মেয়েটি হতাশ হয়ে চলে গেল।… পরদিন দুটি মেয়ে হ্যারির কাছে প্রস্তাব করল। একজন সেকেন্ড ইয়ারের (হ্যারির ভাবতেই ভয় হয়) অন্যজন ফিফথ ইয়ারের। এমন এক মুখের ভাব করে পার্টনার হবার কথা বলল যে হ্যারি প্রত্যাখান করলে মাথা ভেঙ্গে দেবে!

হাসি থামিয়ে রন বলল–মেয়েটা বেশ… মোটামুটি ভালই দেখতে।

হ্যারি বলল–আমার চেয়ে এক ফুট বেশি লম্বা, ভেবে দেখ ওর সামনে দাঁড়ালে কেমন লাগবে! নাচা তো দূরের কথা।

ক্রামের সঙ্গে হারমিওনের পার্টনার হয়ে নাচার কথা হ্যারির কানে আসতে লাগল–ও খুব বিখ্যাত এখন তাই সকলে চায় ওকে। হ্যারির মনে হয় একমাত্র ও স্কুল চ্যাম্পিয় না–হলে কোনও মেয়েই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ওর পার্টনার হতে চাইতো না। তারপর ভাবে, চো যদি নিজে থেকে ওর পাটনার হতে চায়–তাহলে?

নাচ, নাচের পার্টনার এ–সব কথা বাদ দিলে হ্যারির মনে হয় স্কুল–চ্যাম্পিয়ন ও প্রথম টাস্কে ভালভাবে উত্রানোর পর থেকে ওর জীবনের ধারা যেন অন্যখাতে বইছে। নতুন এক জীবন! এখন আর করিডলর দিয়ে যাবার সময় অপ্রীতিকর কথা শুনতে হয় না। সন্দেহ নেই আবহাওয়া পরিবর্তনে সেডরিকের যথেষ্ট হাত আছে। ড্রাগন সম্বন্ধে হ্যারি ওকে আগাম খবর দেয়ায় সেডরিক ওর কাছে খুবই কৃতজ্ঞ। এখন আর সাপোর্ট সেডরিক ডিগরি ব্যাজ তেমন দেখতে পাওয়া যায় না। ড্র্যাকো ম্যালফয় অবশ্য একটুও বদলায়নি। দেখা হলেই রিটা স্কীটারের ডেইলি ফেটের লেখা সম্বন্ধে নানা মন্তব্য করে। সব সময় সুযোগ খোঁজে। রিটা স্কীটার হ্যাগ্রিডকে নিয়ে কোনও লেখা ডেইলি ফেটে তখনও কিছু লেখেনি।

হ্যাগ্রিডের কাছে রিটা ডেইলি ফেটে লেখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে বলেন ও ম্যাজিক্যাল ক্রিয়েচার সম্বন্ধে খুব সম্ভব আগ্রহী নয়।… হ্যারি তোমার সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে চেয়েছিল আমি কিছু বলিনি। শুধু বলেছি ডার্সলে পরিবারে যেদিন থেকে আমি ওকে রেখে এসেছিলাম। তখন থেকে ও আমার বন্ধু। রিটা অনাবশ্যক অনেক ব্যক্তিগত খবর জানতে চেয়েছিল। কিন্তু হ্যারি তো আমার বন্ধু ভুলি কেমন করে।… জিজ্ঞেস করে–চার বছরের মধ্যে একদিনও আপনার সঙ্গে বচসা করেনি? ক্লাসের কাজ ঠিকমত করে গেছে?

রন স্যালা মেন্ডার ডিমের খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে বলল–হ্যাগ্রিড আপনি স্বচ্ছন্দে বলতে পারতেন হ্যারি এক নম্বরের বখাটে ছেলে, মন দিয়ে ক্লাস করে না, হোমওয়ার্ক করে না, ফাঁকিবাজ।

হ্যাগ্রিড বললেন–তা কেমন করে বলি। মনে হল রনের কথা শুনে দুঃখ পেয়েছেন।

হ্যারি গম্ভীর হয়ে বলল–রিটা স্কীটারের স্নেইপকে ইন্টারভিউ করেছে। ও আমার সম্বন্ধে যা মনে আসে তাই বলেছে হয়ত। পটার কবে থেকে স্কুলে এসেছে স্কুলের নিয়ম–কানুন মানে না, যা ইচ্ছে তাই করে।

হ্যাগ্রিড বললেন, স্নেইপ তাই বলেছে? কথাটা শুনে রন–হারমিওন জোরে জোরে হেসে উঠল।–হ্যাঁ হয়ত দু একবার করেছে… তোমরাও কি করনি?

হ্যারি হাসতে হাসতে বলল–হ্যাগ্রিড, চিয়ার্স!

রন বলল–হ্যাগ্রিড, আপনি ক্রিস্টমাস বল নাচে আসছেন তো?

–হয়ত… আমি আসতে পারি, হ্যাগ্রিড বললেন–মনে হয় জমজমাট হবে। ও হ্যাঁ হ্যারি, তোমার নাচের পার্টনায় কে হচ্ছে?

হ্যারি বলল-এখনও ঠিক হয়নি। কথাটা বলেই আবার ওর মুখ লাল হয়ে গেল। হ্যাগ্রিড নাচের ব্যাপারে আর আলোচনা করলেন না।

টার্মসের শেষের কটা দিন অসম্ভব হৈ চৈ হতে লাগল। ইউল বলের নানারকম গুজব রটতে লাগল, হ্যারি অবশ্য একটাও বিশ্বাস করে না। যেমন ডাম্বলডোর সেদিনের জন আটশ ব্যারেল মালড মেড মাদাম রোজমের্টার কাছ থেকে আনাচ্ছেন। অবশ্য এটা সত্যি যে তিনি ওয়েয়ার্ড বোনদের বুক করেছেন। তবে সত্যি বলতে কি তারা কে বা কি করে হ্যারি জানে না। তাছাড়া জাদুকরদের বেতার শোনার সুযোগ ওর নেই। তা হলেও WWN (উইজর্ডিং ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক)

শুনতে শুনতে যারা বড় হয়েছে, তারা জানে ওটা বিখ্যাত মিউজিক্যাল গ্রুপ।

কিছু কিছু শিক্ষক যেমন লিটিল প্রফেসর ফ্লিট উইক বুধবারে তার ক্লাসে যখন দেখেন ছাত্রদের একদম পড়ায় মন নেই তখন তাদের লেসন শেখার বদলে মাঠে খেলতে যেতে বলেন। আর হ্যারির সঙ্গে সামঅনিং চার্মস সম্বন্ধে আলাপ আলোচনা করেন, ফার্স্ট টাস্কের সময় কেমন করে ও ওটা ব্যবহার করেছিল। তবে সকলেই এরকম নয়, ছাত্রদের কোনো ছাড় দেন না, যেমন প্রফেসর বিনস। গবলিন বিদ্রোহের নোট নিয়ে ব্যস্ত। ক্রিস্টমাস নিয়ে তার মাথা–ব্যথা নেই। নেই কোনো উত্তেজনা।

সব ছাত্র–ছাত্রী টিচাররা আসন্ন ক্রিস্টমাসের অপেক্ষায়। হোমওয়ার্ক, দৈনন্দিন পড়াশুনাতে তেমন চাপ নেই। ঠাণ্ডাও পড়েছে জবরদস্ত।

হারমিওন কিন্তু ওর কাজ করে যায়। হোমওয়ার্ক ফাঁকি দেয় না হারমিওন পোসন নোট নিয়ে ব্যস্ত। রনকে তাসের ঘর বানাতে দেখে বলল–রন তুমি কিন্তু খুব ফাঁকি দিচ্ছে। পড়াশুনা ছেড়ে তাসের ঘর করছ!

হ্যারি বলল–বাদ দাও হারমিওন, এখন ক্রিস্টমাস, ও ফ্লাইং উইথ দ্য ক্যাননস পড়ছে। এইবার নিয়ে দশবার পড়া হবে।–আজেবাজে হোমওয়ার্ক করার চেয়ে ফায়ার প্লেসের কাছে আর্মচেয়ার টেনে নিয়ে গল্পের বই পড়া অনেক আনন্দের!

হারমিওন হ্যারির দিকেও কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আমি সব সময় ভাবি তুমি কিছু না কিছু গঠনমূলক কাজ–কর্ম করবে। হ্যারি তোমার কী পোসানের অ্যান্টিডোট করার ইচ্ছে নেই?

–কী বললে? হ্যারি বলল।

 হারমিওন বলল–সেই ডিম সম্বন্ধে।

–ওহো হারমিওন, এখনও অনেক সময় আছে, ফেব্রুয়ারির চব্বিশ পর্যন্ত। হ্যারি বলল।

ও সোনার ডিমটা ওপরের ঘরে ওর ট্রাঙ্কে রেখেছে। প্রথম টাস্কের উৎসব পার্টির পর দ্বিতীয়বার ওটার মুখ খোলেনি। এখনও পাক্কা আড়াই মাস সময় আছে। এখনও ওর মাথায় আসছে না পেঁচার তীব্র ডাকের মানে।

হারমিওন বলল–বেশ কয়েক সপ্তাহ তো সময় লাগবে জানতে! ঠিকমতো বোঝার, কি করতে হবে জানার। পরের টাস্কে তোমায় কি করতে হবে, তুমি যদি না জানো তাহলে তোমাকে একটি ইডিয়টের মতো দেখাবে, সকলেই বলবে পরের টাস্ক সম্বন্ধে তুমি কিছুই জানো না।

–ওকে ছেড়ে দাও হারমিওন, ওর একটু ছুটির দরকার, রন বলল। বলার সাথে সাথে ওর তাসের ক্যাসেল হাওয়া এসে ভেঙে গেল। ও ভীষণ রেগে ভুরু কোঁচকাল।

–দারুণ দেখাচ্ছে তোমায় রন। যাও এবার তোমার আলখেল্লা পরে এস। তাহলেই হবে।

কথাটা বলল ফ্রেড–জর্জ। ওরা হ্যারি রন আর হারমিওনের টেবিলের সামনে বসেছিল। তাদের ক্যাসেল ভেঙে পড়ার জন্য রনের খুব মন খারাপ। সব শেষ একটা কার্ড রাখতে গিয়ে হাওয়া এসে ভেঙ্গে দিল।

জর্জ বলল–রন তোমার পিগকে আমায় ধার দেবে?

–ও এখন একটা চিঠি ডেলিভারি দিতে গেছে। কেন তোমার কী দরকার? রন বলল। ওর মেজাজ খারাপ।

ফ্রেড ব্যঙ্গ করে বলল–কারণ জর্জ ওকে বল ড্যান্সে নিমন্ত্রণ করতে চায়।

জর্জ বলল–স্টুপিড। আমরা একটা চিঠি পাঠাতে চাই–বোকার মতো বকবক করবে না।

রন বলল–তোমরা কাকে চিঠি পাঠাবে শুনি!

–চুপ করে থাক রন, না চুপ থাকলে তোমার পিগকে পুড়িয়ে ছাই করে দেব… মনে হয় এখনও তোমরা পার্টনার পাওনি। তাড়াতাড়ি কর… দেরি করলে ভাল ভাল মেয়ে হাত ছাড়া হয়ে যাবে। ফ্রেড বলল।

রন বলল–তোমার সঙ্গে কে নাচবে?

–অ্যাঞ্জেলিনা, ফ্রেড খোলাখুলিভাবে বলল।

–কী বললে? রন বলল অবাক হয়ে।–তুমি ওকে বলেছ?

–বেশ বলেছ, ফ্রেড বলল। কথাটা বলার পর এধারে–ওধার তাকিয়ে ডাকল অ্যাঞ্জেলিনা।

অ্যাঞ্জেলিনা তখন অ্যালিসিয়া স্পিনেটের সঙ্গে ফায়ার প্লেসের ধারে আড্ডা দিচ্ছিল।

–কী? ও ওখান থেকেই জবাব দিল।

–আমার সঙ্গে বল ড্যান্স করবে?

অ্যাঞ্জেলিনা সম্মতিসূচক দৃষ্টিতে ফ্রেডের দিকে তাকাল।

–ঠিক আছে তাহলে, ও বলল। তারপর আ্যালিসার সঙ্গে কথা বলতে লাগল।

ফ্রেড, হ্যারি আর রনের দিকে তাকিয়ে বলল–কিছু কেক এনে দাও।

তারপর চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে হাইতুলতে তুলতে ফ্রেড বলল–না যদি দাও, তাহলে আমরা স্কুলের পাঁচা পাঠাব। জর্জ চল।

ওরা চলে গেল রন ওর ভাঙা ক্যাসেলের দিকে হতাশ হয়ে তাকিয়ে রইল।

–আমাদেরও যেতে হবে, আমাদের এক জোড়া গবলিনের কথা ভেবে সময় নষ্ট করলে চলবে না।

হারমিওন ঢেকুর তুলে বলল-এক জোড়া কী?

রন রাগ করে বলল–ভালভাবেই জানো। আমি একাই চলবো তবু ইলোইজ মিডজেনের সঙ্গে যাবো না।

–ওর ব্রন এখন কম… আমার তো মনে হয় খুব ভাল মেয়ে।

রন বলল, ওর নাকটা হাকা।

–ও তাই? হারমিওন রেগে গিয়ে বলল।… এক ফোঁটা নাচতে পারে না… ভাল দেখতে হলেই তোমার চলবে, ভাল!

রন বলল–ওহো শুনতে খুব ভাললাগে।

হারমিওন বলল–আমি চললাম, ঘুম পেয়েছে।

***

বক্সবেটন আর ডারমস্ট্রাংগদের মুগ্ধ করার জন্য হোগার্টের কর্মচারীরা সাজ–সজ্জা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছে। চতুর্দিকের সাজসজ্জা দেখে হ্যারির চোখ ধাধিয়ে গেল। এর আগে স্কুল এমনটি চোখে পড়েনি। সিঁড়ির ব্যানিস্টার মাৰ্বল সিঁড়ি, বারটি ক্রিস্টমাস ট্রি গ্রেটহলে… সবই ঝকঝকে তকতকে করে সজ্জিত।

এখনও হ্যারি চোকে নাচের পার্টনার হবার অনুরোধ জানাতে পারেনি। তবে হ্যারি রনকে বলেছে, আমি যদি পার্টনার না পাই। আর তুমিও না… তাহলে তোমার চেয়ে আমাকে বেশি বোকা মনে হবে।

রন বিমর্ষ হয়ে বলল–আমার মনে হয় যোনিং মীরটল মন্দ হবে না। মোনিং এক ভূত… সে মেয়েদের টয়লেটে হানা দিয়ে বেড়ায়।

–হ্যারি… এমনিভাবে ভেবে ভেবে বসে থাকলে চলবে না। চল বেরিয়ে পড়ি। যা কববার আজই রাতে করতে হবে।… রন এমনভাবে বলল যেন একটা দুর্ভেদ্য দূর্গ জয় করতে চলেছে।… আমাদের দুজনেরই নাচের পার্টনার যোগাড় হবে… আমার সঙ্গে একমত!

হ্যারি বলল–ঠিক আছে।

কিন্তু হ্যারি চো কে পার্টনার হতে বলবে কখন? লাঞ্চে বা হিস্ট্রি অব ম্যাজিকের ক্লাসে যাবার পথে… কোনো সময়ই ও চোকে একলা পায় না। সব সময় ওকে ঘিরে রয়েছে বন্ধু–বান্ধব।… বিরক্ত হয় হ্যারি, ওকি কখনও একালা হাঁটাহাঁটি করে না? বাথরুমে যাবার সময়ও না। যদি যায় তাহলে তো ওকে বলতে পারে মনের কথা। দুর্ভাগ্য! বাথরুমে যাবার সময়ও ও একলা যায় না। চার–পাঁচটি মেয়ে সঙ্গে থাকবেই। ওকে যদি এখন বলা না যায়, ওকে হয়ত কেউ পার্টনার করে নেবে।

ও স্নেইপের অ্যান্টিডোট পরীক্ষায় মন দিতে পারে না। প্রয়োজনীয় উপকরণ মেশাতে ভুলে যায় তাহলে তো পরীক্ষায় ও শূন্য পাবে! নম্বর পাওয়ার কথা ভাবে না, আশু প্রয়োজন নাচের পাটনার।

ভাবতে ভাবতে ক্লাশ শেষ হবার ঘণ্টা বেজে গেল। হ্যারি তল্পিতল্পা গুটিয়ে ডানজিয়ন দরজার দিকে চলল। বড় বেশি অন্ধকার মনে হল সেদিন।

হ্যারি, রন আর হারমিওনকে বলল–তোমাদের সঙ্গে ডিনারে দেখা হবে। কথাটা বলেই ও ওপর তলায় উঠতে লাগল।

ওকে গোপনে চোকে নাচের পার্টনার হবার কথা বলতেই হবে। সকলের সামনে নয়-একান্ত গোপনে।… ও ভিড়ে ঠাসা করিডলরে চোকে খুঁজতে লাগল।… হঠাৎ চোখে পড়ে গেল চো ডার্ক আর্টের প্রতিরোধ সম্বন্ধীয় লেখন শেষ করে ধীরে সুস্থে আসছে।

হ্যারি সুযোগ হারাতে চায় না।

–চো? তোমার সঙ্গে কিছু কথা বলতে পারি? চোকে ঘিরে যেসব মেয়েরা ছিল তারা হেসে উঠল।

–বেশ বল।… হ্যারির সঙ্গে বন্ধুদের নাকের ডগা দিয়ে চলল। হ্যারির ওর দিকে তাকিয়ে মনে হল ও যেন সিঁড়ি থেকে পা ফসকে পড়ে গেছে।

–হ্যাঁ, হ্যারি বলল।

ওকে কথাটা বলতেই হবে। না বললে চলবে না। চো, হ্যারির মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। কি কথা বলবে ঠিক বুঝতে পারলো না।

–ওয়াংগোবল ওয়াইম? (আমার বল ড্যান্সের পার্টনার হবে?)

–দুঃখিত, চো বলল–বুঝলাম না।

-এ বলছিলাম বল ড্যান্সে আমার পার্টনার হতে চাও? হ্যারি বলল (কথা বলার সময় ওর মুখ লাল হয়ে গেল… কিন্তু কেন?)

চো বলল–সত্যি হ্যারি আমি খুব দুঃখিত! (ওকে দেখে হ্যারিরও তাই মনে হল) আমি একজনকে কথা দিয়ে ফেলেছি।

হ্যারি বলল–তাই।

হ্যারির মনে হল ওর সমস্ত শরীরটা সাপের মতো কিলবিল করছে… ও যেন নিজের মধ্যে নেই।

–ঠিক আছে, হ্যারি বলল–কোনও অসুবিধে নেই।

–সত্যি আমি ভীষণ দুঃখিত। চো আবার বলল।

হ্যারি বলল–ঠিক আছে, তাতে কী হয়েছে।

দুজনে দুজনের দিকে বেশ খানিকটা সময় তাকিয়ে থাকার পর চো বলল ওয়েল। বাই।

চো চলে যাচ্ছিল, হ্যারি বাধা দিল–কার সঙ্গে তুমি নাচবে?

–সেডরিক, সেডরিক ডিগরি।

–খুব ভাল, হ্যারি বলল,

নিজেকে দৃঢ়ভাবে দাঁড় করল হ্যারি।

ডিনারের কথা সম্পূর্ণভাবে ভুলেগিয়ে হ্যারি গ্রিফিন্ডর টাওয়ারে এল, প্রতিটি পদক্ষেপ ওর কানে বাজতে লাগল চোর কণ্ঠস্বর… সেডরিক সেডরিক ডিগরি।

সেডরিক সম্বন্ধে অনেক কথা ভাবতে ভাবতে ওর মনে হল ও একটি অপদার্থ। ওর মগজে কিছু নেই।

ফ্যাট লেডির সামনে দাঁড়িয়ে পাসওয়ার্ড বলল, ফেয়ারি লাইটস, গতকাল থেকে পাসওয়ার্ড বদলে গেছে।

হ্যারি কমনরুমে ঢুকে দেখল ঘরের এক কোণে রন পাংশু মুখে বসে রয়েছে। ওর সঙ্গে জিন্নি বসে খুব চাপাগলায় কথা বলছে। মনে হয় সান্ত্বনা দিচ্ছে।

হ্যারি ওদের কাছে চেয়ার টেনে এনে বসে বলল–কী ব্যাপার রন?

রন মুখ তুলে হ্যারির দিকে তাকাল। মুখে যেন ভয় লুকিয়ে রয়েছে।

–ভীষণ বোকামি করলাম… কেন করলাম জানি না, রন এলোমেলোভাবে বলল।

–কী বললে? হ্যারি জিজ্ঞেস করল।

–আমি জানি না কেন আমি ওকে বলতে গেলাম। আমার নিশ্চয়ই মাথা খারাপ হয়েছিল… ছিঃ সে সময় অনেক লোক ওখানে ছিল। এনট্রেন্স হলে আমি তার পেছনেই ছিলাম, ও তখন ডিগরির সঙ্গে কথা বলছিল। আমি তার নিকটে আসতেই জিজ্ঞাসাটা করলাম।

রন কথাটা বলে দু হাতে মুখ ঢাকল। কথাটা শুনে ডেলাকৌর আমার মুখের দিকে এমনভাবে তাকাল যেন আমি একটা পোকামাকড় বা এই রকম কিছু। আমার কথার জবাবই দিলো না। জানি না, কেন আমি ওকে বলতে গেলাম। আমি লজ্জায় সেখানে এক মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে ছুটে পালিয়ে এলাম।

হ্যারি বলল–সে ভিলার মতো। তুমি ঠিক বলেছিলে, ওর গ্র্যান্ডমাদারও ওই রকমই। যাকগে ওর দেমাগ নিয়ে ওকে থাকতে দাও। ও বোধ হয় জানে না ডিগরি চো চ্যাংগের সঙ্গে নাচবে, অযথা সময় নষ্ট করছে।

রন মুখ তুলল।

–আমি এই মাত্র চোকে আমার সঙ্গে নাচতে বলেছিলাম… ও সেডরিকের কথা বলল।

জিন্নি হঠাৎ গম্ভীর হয়ে গেল হাসি থামিয়ে।

–আশ্চর্য। খুব সম্ভব আমরা ছাড়া সকলে বোধ হয় পার্টনার পেয়ে গেছে। ভাবা যায় না। ও হ্যাঁ, নেভিল ছাড়া। বল তো, ও আর কাকে বলেছে, হারমিওন!

হ্যারি বলল–কী বললে? বাজে বকবে না, হতেই পারে না।

রন বলল–আমি জানি। কিন্তু, হারমিওন তো অন্য কথা বলে। নেভিলের সঙ্গে নাচার প্রশ্নই আসে না।

-এই, কথা থামাও, জিন্নি হারমিওনকে আসতে দেখে বলল।

হারমিওন পোট্রট হোল দিয়ে ঘরে ঢুকল।

-এই, তোমরা দুজনে ডিনার খেতে যাওনি কেন? ওদের কাছে এসে হারমিওন জিজ্ঞেস করল।

জিন্নি বলল–কারণ… কারণ ওরা দুজনের মন দারুণ খারাপ। কোনো মেয়ে ওদের সঙ্গে নাচতে চায় না!

জিনির কথায়, হ্যারি ও রন দুজনেই রেগে গেল। অনেক অনেক ধন্যবাদ জিন্নি! রন বলল।

–সব সুন্দর সুন্দর মেয়েরা অন্যদের কথা দিয়ে দিয়েছে রন, হারমিওন রনকে কোমল সুরে বলল। ইলজি সিডজেন তো বেশ ভাল দেখতে, তাই না?… থাকগে হতাশ হবে না, কাউকে না কাউকে পেয়ে যাবে।

হারমিওনের মুখে দিকে তাকিয়ে রন আশার আলো দেখতে পেল।

–হারমিওন, নেভিল ঠিক কথা বলেছে… যাইহোক তুমি একটি মেয়ে। হারমিওন তিক্ত কণ্ঠে বলল–বাঃ ঠিক ধরেছ।

–তুমি কিন্তু আমাদের একজনের সঙ্গে নাচতে পার! হারমিওন তৎক্ষণাৎ বলল–আমি তোমাদের সঙ্গে মোটেই নাচবো না। অন্য একজনের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার।

–আরে বাদ দাও, বাদ দাও… এখন আমাদের পার্টনার দরকার। সত্যি সকলেই পার্টনার যোগাড় করল আর আমরা দুজন ভ্যাবাগঙ্গারামের মতো বসে রয়েছি।

–বললাম তো আমি একজনকে কথা দিয়েছি।

–বাজে কথা বলছ, তুমি কাউকে কথা দাওনি। নেভিলকে তুমি ওকে চাও না তা-ই এ কথা বলেছিলে।

হারমিওন বলল–বাঃ আমি তাই বলেছি?… আমাকে একটি মেয়ে ভাবতে তোমার তিন তিনটে বছর লেগেছে। রন এ–কথা ভেব না তোমরা আমাকে মেয়ে মনে করোনি বলে, অন্য কেউ করবে না!

কথাটা বলে ঝড়ের মতো হারমিওন মেয়েদের ডরমেটরিতে চলে গেল।

রন বলল–ও আগাগোড়া মিথ্যে কথা বলছে।… যাকগে জিন্নি তুমি তো হ্যারির পার্টনার হতে পার।

–অবশ্যই না। আমি নেভিলকে কথা দিয়েছি। যাক এবার আমাকে ডিনার খেতে যেতে হবে। কথাটা বলে হারমিওনের মতো পোট্রট হোল দিয়ে চলে গেল।

রন হ্যারির দিকে তাকিয়ে হাসল।

সে সময় পোট্রট হোল দিয়ে পার্বতী, ল্যাভেন্ডর ঘরে ঢুকল, আর সময় নেই। যা করার এখনই করতে হবে।

-এখানে দাঁড়াও, হ্যারি রনকে বলল। তারপর চেয়ার থেকে উঠে সোজা পার্বতীর সামনে দাঁড়িয়ে বলল–পার্বতী বলনাচে আমার পার্টনার হতে তোমার কি আপত্তি আছে?

পার্বতী খিলখিলিয়ে হেসে উঠল। হ্যারি আলখেল্লার পকেটে হাতপুরে ওর হাসি থামার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রইল।

–ঠিক আছে, তারপর, পার্বতীর মুখ লাল হয়ে উঠল। হ্যারি বলল, ধন্যবাদ। পার্বতীর সম্মতিতে ও দারুণ খুশি। ল্যাভেন্ডরের দিকে তাকাল–রনের সঙ্গে তুমি নাচবে?

পার্বতী বলল,–ও তো সিমাসের সঙ্গে কথা বলেছে। পার্বতী ও ল্যাভেন্ডর দুজনেই হি হি হি করে হেসে উঠল।

হ্যারি দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল।

-এমন একজনের নাম বল যে রনের সঙ্গে নাচতে রাজি আছে।

–তোমরা হারমিওন গ্রেঞ্জারের কথা ভেবেছে; পার্বতী বলল।

–ওর একই অবস্থা…।

পার্বতী বেশ আশ্চর্য হল।

–তে কার সঙ্গে…? পার্বতী কৌতূহলী হয়ে বলল। হ্যারি স্রাগ করল, জানিনা। রনের কথা তোমায় তো বললাম। পার্বতী–বলল–ঠিক আছে, আমার বোন পদ্মাকে বলে দেখি। ও র‍্যাভেন ক্লতে আছে। তোমাদের কোনও আপত্তি নেই তো?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *