5 of 11

২১.০৩ শ্রীরাধাকৃষ্ণ ও গোপীপ্রেম

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

১৮৮৪, ১৫ই জুন

শ্রীরাধাকৃষ্ণ ও গোপীপ্রেম

ঠাকুর পশ্চিমের কামরায় দু-চারজন ভক্তের সহিত কথাবার্তা কহিতেছেন। সেই ঘরে টেবিল-চেয়ার কয়েকখানা জড় করা ছিল।

ঠাকুর টেবিলে ভর দিয়া অর্ধেক দাঁড়িয়েছেন, অর্ধেক বসেছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি) — আহা, গোপীদের কি অনুরাগ! তমাল দেখে একেবারে প্রেমোন্মাদ! শ্রীমতীর এরূপ বিরহানল যে চক্ষের জল সে আগুনের ঝাঁযে শুকিয়ে যেত — জল হতে হতে বাষ্প হয়ে উড়ে যেত। কখনও কখনও তাঁর ভাব কেউ টের পেত না। সায়ের দীঘিতে হাতি নামলে কেউ টের পায় না।

মাস্টার — আজ্ঞে হাঁ, গৌরাঙ্গেরও ওইরকম হয়েছিল। বন দেখে বৃন্দাবন ভেবেছিলেন, সমুদ্র দেখে যমুনা ভেবেছিলেন —

শ্রীরামকৃষ্ণ — আহা, সেই প্রেমের যদি একবিন্দু কারু হয়! কি অনুরাগ! কি ভালবাসা! শুধু ষোল আনা অনুরাগ নয়, পাঁচ সিকা পাঁচ আনা! এরই নাম প্রেমোন্মাদ। কথাটা এই তাঁকে ভালবাসতে হবে। তাঁর জন্য ব্যাকুল হতে হবে। তা তুমি যে পথেই থাক, সাকারেই বিশ্বাস কর বা নিরাকারেই বিশ্বাস কর, — ভগবান মানুষ হয়ে অবতার হন, এ-কথা বিশ্বাস কর আর না কর; — তাঁতে অনুরাগ থাকলেই হল। তখন তিনি যে কেমন, নিজেই জানিয়ে দেবেন।

“যদি পাগল হতে হয়, সংসারের জিনিস লয়ে কেন পাগল হবে? যদি পাগল হতে হয়, তবে ঈশ্বরের জন্য পাগল হও!”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *