5 of 11

২০.২১ সরলতা ও সত্যকথা

একাদশ পরিচ্ছেদ

১৮৮৪, ৩রা ফেব্রুয়ারি

সরলতা ও সত্যকথা

পরদিন রবিবার, ৩রা ফেব্রুয়ারি ১৮৮৪ খ্রীষ্টাব্দ, ২১শে মাঘ, ১২৯০ সাল। মাঘ শুক্লা সপ্তমী। মধ্যাহ্নে সেবার পর ঠাকুর নিজাসনে বসিয়া আছেন। কলিকাতা হইতে রাম, সুরেন্দ্র প্রভৃতি ভক্তেরা তাঁহার অসুখ শুনিয়া চিন্তিত হইয়া আসিয়াছেন। মাস্টারও কাছে বসিয়া আছেন। ঠাকুরের হাতে বাড় বাঁধা, ভক্তদের সহিত কথা কহিতেছেন।

[পূর্বকথা — উন্মাদ, জানবাজারে বাস — সরলতা ও সত্যকথা ]

শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি) — এমনি অবস্থায় মা রেখেছেন যে ঢাকাঢাকি করবার জো নাই। বালকের অবস্থা!

“রাখাল আমার অবস্থা বোঝে না। পাছে কেউ দেখতে পায়, নিন্দা করে, গায়ে কাপড় দিয়ে ভাঙা হাত ঢেকে দেয়। মধু ডাক্তারকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে সব কথা বলছিল। তখন চেঁচিয়ে বললাম — ‘কোথা গো মধুসূদন, দেখবে এস, আমার হাত ভেঙে গেছে!’

“সেজোবাবু আর সেজোগিন্নি যে ঘরে শুতো সেই ঘরে আমিও শুতাম! তারা ঠিক ছেলেটির মতন আমায় যত্ন করত। তখন আমার উন্মাদ অবস্থা। সেজোবাবু বলত, ‘বাবা, তুমি আমাদের কথাবার্তা শুনতে পাও?’ আমি বলতাম, ‘পাই’।

“সেজোগিন্নি সেজোবাবুকে সন্দেহ করে বলেছিল, যদি কোথাও যাও — ভট্‌চার্জি মশায় তোমার সঙ্গে যাবেন। এক জায়গায় গেল — আমায় নিচে বসালে। তারপর আধঘন্টা পরে এসে বললে, ‘চল বাবা, চল বাবা। গাড়িতে উঠবে চল।’ সেজোগিন্নি জিজ্ঞাসা কললে, আমি ঠিক ওই সব কথা বললুম। আমি বললুম, ‘দেখগা, একটা বাড়িতে আমরা গেলুম, — উনি নিচে বসালে — উপরে আপনি গেল, — আধঘন্টা পরে এসে বললে, ‘চল বাবা চল।’ সেজোগিন্নি যা হয় বুঝে নিলে।

“মাড়েদের এক শরিক এখানকার গাছের ফল, কপি গাড়ি করে বাড়িতে চালান করে দিত। অন্য শরিকরা জিজ্ঞাসা করাতে আমি ঠিক তাই বললুম।”

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *