তৃতীয় পরিচ্ছেদ
নারীহত্যা
পাহারাওয়ালাকে দেখিয়া, অতি উদ্বিগ্নভাবে উঠিয়া মোবারক অঙ্গুলি নির্দ্দেশ কহিল, “ইয়ে দেখ্যো, হিঁয়া এক জানানা পড়ি হৈ| ”
পাহারাওয়ালা বলিল, “ন্যহি ন্যহি, কোই মাতোয়ালী পড়ি হোগী|”
মোবারক কহিল “আরে ন্যহি, মাতোয়ালী ন্যহি হৈ, মেয়্নে দেখা ইস্কা বদন বহুৎ ঠাণ্ডা হৈ|”
শুনিয়া পাহারাওয়ালা ভীত হইল| মোবারক পাহারওয়ালার হাত হইতে লণ্ঠনটা কাড়িয়া লইয়া ভূতলাবলুণ্ঠিতা রমণীর সর্ব্বাঙ্গে আলোক সঞ্চালন করিতে করিতে ভাল করিয়া দেখিতে লাগিল| দেখিল, রমণী যুবতী, সুন্দরী, বয়স অষ্টাদশ বৎসরের বেশী হইবে না| মুখখানি সুন্দর| সুন্দর মুখখানির চারিদিকে রাশিকৃত কেশ বিস্তৃতভাবে ছড়াইয়া পড়িয়াছে| বিশালায়ত চোখ দুইটি উন্মীলিত ও বিস্ফারিত| মোবারক দেখিল, সেই চক্ষুঃ যেন তাহারই দিকে দৃষ্টি করিতেছে| হাত্দুইটি এখনও দৃঢ়রূপে মুষ্টিবদ্ধ হইয়া রহিয়াছে| দেহের কোন স্থানে আঘাতের চিহ্ণ নাই| রক্তপাতেরও কোন চিহ্ণ নাই| সুন্দর মুখখানি মৃত্যুবিবর্ণীকৃত, চম্পকের ন্যায় কোমল বর্ণ মৃত্যুচ্ছায়ান্ধকারম্লান| মুখবিবর ঈষদুন্মুক্ত, দন্তের উপরে বক্রভাবে জিহ্বার কিয়দংশ বাহির হইয়া পড়িয়াছে| পরিধানে নীলরঙের সিল্কের পার্শিসাড়ী, সাটীনের একটি জ্যাকেট, তাহাও নীলরঙের| খুব পাৎলা জাপানী সিল্কের একখানা ওড়না – তাহাও নীলরঙের| তাহাতে রেশমের ফুল-লতার কাজ|
“ঔর দেখ্নেকা কোই জরুরৎ ন্যহি হৈ – একদম্ ম্যর গয়ী|” বলিয়া পাহারাওয়ালা অভ্রভেদী কণ্ঠে ‘জুড়িদার ভেইয়াকে’ হাঁক পাড়িতে লাগিল| দুই-তিনদিক্ হইতে দুই-তিনজন ‘জুড়িদার ভেইয়া’ জবাব দিল| অনতিবিলম্বে দুইজন দেখাও দিল|
মোবারক বলিল, “মেরি সমঝ্মে ইয়ে হৈ কি, কিসীনে ইস্কী গলা দবায়কে খুন কিয়া হৈ, কেঁওকি ইস্কী চেহারা কালা হো গয়া হৈ| জীভ্ভি নিকল্ পড়ী হৈ, ঔর বদন্মে কোই তর্হকা ছোরা, চক্কুকা চোট্ভি ন্যহি হৈ|”
একজন পাহারাওয়ালা মৃতার গলদেশের নিকটে মুখ লইয়া ভাল করিয়া দেখিতে লাগিল| গলা টিপিয়া খুন করার কোন চিহ্ণ দেখিতে পাইল না| বলিল, “ও নেহিন্, ক্যায়া জানে কুছ্ সমঝ্মে আতা ন্যহি| অ্যবি হাঁসপাতালমে চালান্ করো, ডাঁক্ডর সাহেবকে দেখ্নেসে সব্ হাল্ মালুম পড়েগা !”
তখন পাহারাওয়ালা লাস্ হাঁসপাতালে চালান দিবার বন্দোবস্ত করিতে লাগিল; এবং মোবারকের ঠিকানা জানিয়া লইল| কাল প্রাতেই তাহাকে দরকার হইবে| মোবারকই প্রথমে লাস্ দেখিতে পাইয়াছে|
মোবারক-উদ্দীন পকেট হইতে একখানা কাগজ বাহির করিয়া নিজের নাম ঠিকানা লিখিয়া তাহাদিগের একজনের হাতে দিল| এবং তথা হইতে নিজের বাসার দিকে চলিয়া গেল|
যথা সময়ে মোবারক বাসায় আসিয়া উপস্থিত হইল| বারংবার সেই নীলবসনা সুন্দরীর মৃতদেহ তাহার মনে পড়িতে লাগিল| সেই ভীষণ দৃশ্যের কথা যতই তাহার মনে পড়িতে লাগিল – মনটা ততই খারাপ হইতে লাগিল|
ঘরে ব্র্যাণ্ডী ছিল, খানিকটা পান করিয়া শুইয়া পড়িলেন ; তথাপি শীঘ্র নিদ্রা আসিল না – নিদ্রিত হইলেও অনেকবার সেই নীলবসনা সুন্দরীর যন্ত্রণাবিকৃত মুখমণ্ডল স্বপ্নে দেখিল – ভীতিপ্রদ স্বপ্নে বারংবার তাহার নিদ্রাভঙ্গ হইতে লাগিল|
কে এ নীলবসনা সুন্দরী ?
Where is another part?
শীঘ্রই দেয়া হবে।
নীল বসনা সুন্দরী পুরো গল্পটা পড়তে চাই
এখানে পাবেন – https://goo.gl/Kf6EHd