সন্ধ্যাবেলা সেজবাবুর কাছ থেকে চিঠি নিয়ে লখাই এল কানু ভড়ের বাড়ি। বাড়িটা যেন ভুতুড়ে পোড় বাড়ির মতো নিস্তব্ধ খাঁ খাঁ করছে। মানুষ আছে কি-না বোঝবার উপায় নেই। অথচ এ বাড়িতে একদিন ছিল কত লোকের আনাগোনা। মহাজনরা এসেছে, পাইকারি বিক্রেতা এসেছে কানু ভড়ের বাপের, ছেলের নামকরা কাপড় নিতে। সবাই বসে গল্প করেছে, ধামা-ভরতি মুড়ি খেয়েছে, জল খেয়েছে, পান চিবিয়েছে, তামাক টেনেছে দু চোখ বুজে। বসে থেকে মাল নিয়ে গেছে। …আর আজ!
সুতো কেটে পেট চালাবে, তাও কানু ভড়ে বিধবা বউয়ের উপায় নেই। তুলো পাওয়া যায় না। জমিজমা এমন কিছু কোনওকালেই ছিল না। অনাদায়ে সে জমিও বেহাত হয়ে গেছে। আজ অবশিষ্ট শুধু এ ভিটেটুকু আর নিজের হাত-পা। ভিটে ধুয়ে জল খাওয়া যায় না। আর আছে একটি মেয়ে, বছর পনেরো-যোলো বয়েস। সে মেয়েও আজ প্রায় মাসাধিক শয্যাগত।
মজুমদারদের সেজকর্তা এক সময় লখাইয়ের মুখ থেকে এ দুর্দশার কথা শুনে বলেছিলেন, কলকাতার সংবাদপত্রে কানু ভড়ের বউ একখানি আবেদনপত্র ছাপতে দিক, যাতে কাটুনির জীবিকানির্বাহের মতো তুলোটুকু বিনামূল্যে সরকার সরবরাহ করেন ও সুতোর ক্রেতা হন। লখাই সেকথা বলেছিল কানু ভড়ের বউকে। বউ বলেছিল, তোমরা পড়শি লোকজন ছাড়া আমার তো কেউ নেই, যা করতে হয় করো। কোনও রকমে বেঁচেবর্তে মেয়েটার বে তো আমাকে দিতে হবে। তার পর মরি তাতে দুঃখ নেই। বলে ঘরের যে বাঁশটায় কানু ফাঁসি লটকে মরেছিল, সে বাঁশটার দিকে তাকিয়ে বলেছিল, কোম্পানি সব কেড়ে নিতে পারে, গঙ্গার জল তো নিতে পারে না।
লখাইরা বাগদী ছোট জাত, তবু কানু ভড়ের বউ তাকে মান্য করত। শুধু লখাই কেন, শ্যামের সঙ্গে তো কানুর বন্ধুত্ব কিছু কম ছিল না। আর লখাই স্বেচ্ছায় কানুর বউকে যতটুকু সম্ভব সাহায্য করার জন্য নিজেই এগিয়ে এসেছে। সাহায্যের জন্যই শুধু নয়, দায়িত্ব এবং বিচিত্র জ্বালাবোধেই কানুর বউয়ের জন্য সব কিছু করতে রাজি আছে সে।
পশ্চিমাকাশের লালিমা কালো হয়ে আসছে। পাখিরা ফিরে চলেছে দল বেঁধে।
লখাই দেখল সন্ধ্যার আবছায়াতে কানুর বউ ঘরের দরজার কাছে নিশ্চল পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে। বয়স বেশি নয়, গৌরবর্ণ কেমন যেন ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। ঘোমটা খসা, জট বাঁধা চুল খোলা, অপলক চোখের তারা স্থির। লখাইকে দেখেও ঘোমটা টানল মা।
লখাই বলল : সে চিঠি নে এসেছি কাটনিদিদি। বাবু যা লিখে দিয়েছেন, মোদ্দা এটু শুইনে যাই।
তবু কাটুনিবউ একটি কথা বলল না। কেবল যেন কিছুই বুঝতে পারেনি এমনি অর্থহীন শূন্য দৃষ্টিতে লখাইয়ের হাতের কাগজটার দিকে তাকিয়ে রইল।
লখাই দাওয়ায় উঠে এল। এদিক ওদিক দেখে বিস্মিত হয়ে বলল, বাতি জ্বালোনি দিদি এখনও, রোগা মেয়ে ঘরে শুয়ে আছে।
কাটুনিবউ হঠাৎ হাত বাড়িয়ে লখাইয়ের হাত থেকে কাগজটা নিয়ে লেখাগুলো দেখতে লাগল।
আরও তাজ্জব হয়ে লখাই জিজ্ঞেস করল, তুমি পড়তে পারো?
কাটুনিবউ অত্যন্ত নিচু গলায় যেন কত দূর থেকে আপনমনে বলতে লাগল : আমার শউড়কে হুগলির সাহেবরা একবার পিটেছেল, সেই থেকে আমাদের এত দুদ্দশা। এতদিনে তার শেষ হতে বসেছে। এ চিঠিতে কি সে সব কথা লেখা যাবে না?
বলে আবার তাড়াতাড়ি নিজেই বলল, থাক, তার দরকার নেই। সেজবাবুকে বলল আমার জবানি দে আর একখানা চিঠি লিখে দিতে যে, গায়ের জোরে যারা সব মিল তাদের কাছে দয়া মেগে কি কিছু পাওয়া যাবে?
বলে চিঠিটা ছিঁড়ে ফেলে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলল, এ চিঠি আমার মরা মেয়ের শিয়রে থাক, চিতায় পড়বে।
আচমকা লখাইয়ের বুকটা সাপের দংশনে, বিষের বেদনায় ও যন্ত্রণায় আড়ষ্ট হয়ে গেল। ঘরে ঢুকে দেখল মরা মেয়ে এলিয়ে পড়ে আছে। বোধ করি রোগের যন্ত্রণাতেই গায়ের কাপড় খোলা। হায় রে, মরা মেয়েরও এত পুষ্ট যৌবন ও রূপের বাহার থাকে। মনে হয়, জ্যৈষ্ঠ রাতের গরমে ঘরের মেয়ে কাপড় সরিয়ে ঘুমিয়ে আছে।
লখাই তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এল। পুড়ে যাচ্ছে তার বুকের মধ্যে। এক দানবীয় হিংস্রতায় হাত দুটো তার নিসপিস করছে। যেন খুঁজছে কার গলা টিপবে। মাথায় যেন আগুন জ্বলছে দাউদাউ করে।
বেরুবার মুখে কানাচে সে দেখল কে একজন হাঁটুতে মুখ গুঁজে বসে রয়েছে। সে ডাকল, কে?
মুখ তুললে দেখা গেল, মধু। মধুর চোখ লাল টকটকে, জল ভরা, রোরুদ্যমান, কান্নায় করুণ।
কী হয়েছে তোর মধু? লখাই কাছে এসে তাকে টেনে তুলল।
মধু সেই ঘরটার দিকে তাকিয়ে একবার কেবল বলল, ওর বাঁচবার বড় সাধ ছিল।
মধুর চোখ দেখে, গলা শুনে চমকে উঠল লখাই। হৃৎপিণ্ডটা তার যেন কেউ ছুরি দিয়ে বিশ্ব করেছে। ওহো। ওই মরা মেয়ে মধুর পিরিতের মেয়েমানুষ।..কী দিন আজ লখাইয়ের! কী দেখতে হচ্ছে তাকে, কী শুনতে হচ্ছে তাকে এ-সব!
বাইরে বেরিয়ে এল সে। মাথার মধ্যে তার কারা যেন তুমুল কলরব তুলেছে, কোম্পানি, সেপাই, গোরা, সেনকত্তা, সেজবাবু, কানু ভড়, আখড়া, মহারানী, চটকল, রেললাইন, ফোর্ট গ্নস্টার ফোর্ট গ্নস্টার।
বাড়িতে এল সে। তাকে দেখে কালীবউ চমকে উঠল। জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে গো?
সে এক মুহূর্ত শান্ত হয়ে খালি বলল, কানুর মেয়েটা মরে গেল।
কী বললে? তাড়াতাড়ি ছুটে বেরিয়ে গেল।
শ্যাম ঘর থেকে নেমে উঠোন পেরিয়ে যেতে যেতে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল। বাকরুদ্ধ, নিশ্চল। চুপচাপ কালীর পথের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে রইল, একটি কথাও বলল না!
কিন্তু লখাই চলে গেল। তাকে যেন পেছন থেকে কারা তাড়া করছে, জ্বলন্ত মশালের ঝাপটা মারছে গায়ে মথায়। কাঞ্চন কাঞ্চীবউ কোথায়।… কাঞ্চীবউকে কি এখন একটু পাওয়া যায় না।
অন্ধকার নামছে। লখাই ছুটেছে গঙ্গার ধার দিয়ে গারুলিয়ার দিকে। মানুষ, না, দানো ছুটছে বোঝা যায় না অন্ধকারে।
ভাঁটাপড়া গঙ্গা ছুটেছে দক্ষিণে সমুদ্রের দিকে। ছুটেছে আকাশের তারা তার সঙ্গে। ছুটেছে। লেখাইও, বোধ করি সে জলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে।
শেয়াল ডেকে উঠল জঙ্গলপীরের দহ থেকে, কালপ্যাঁচার ছলার ডাক শোনা যাচ্ছে হুম হুম হুম। চণ্ড গুলির ধোঁয়ার গন্ধ উঠছে পীরদহের খাল থেকে। নেশাখোরের কুৎসিত, গলার খ্যাখ্যাল হাসি এক বিচিত্র ক্লেদাক্ত রসে ভরে তুলছে হাওয়া।
ফরাসডাঙা সীমান্তের দ্বার বন্ধের প্রথম সঙ্কেতনাকাড়া বেজে উঠল ড্যাম ড্যাম ড্যাম…কালীবাড়ির। সন্ধ্যারাতির কাঁসর ঘণ্টা শেষ হয়নি তখনও…তবুও যেন মনে হল নাটমন্দিরে দেবপুতুলীর নৃত্যনাট্যের নুপুরধ্বনি শোনা যায়। না, নূপুরধ্বনি, নহবতখানায় সানাইয়ের সুরে বাজছে বেহাগ রাগিণী।
গঙ্গার বুকের উপর গুড়গুড়, ঘড়ঘড় করে চলেছে স্টিমার। গঙ্গার নৈঃশব্দকে ভেঙে শিঙা ফুকছে। সারেঙ। গাড়লিয়ার নীলকুটির ইমারত ভাঙা শুরু হয়ে গেছে। কাল হয় তো শেষ হবে। তারপর আখড়ার বাড়ি।
লখাই যখন আখড়ায় ঢুকল, তখন মুরলীদাস খোল বাজিয়ে পুনি ও সরিকে নিয়ে গান ধরেছে :
আমার চরণ পূজন শেষ হল না
ফিরে কেমনে যাব বল,
প্রভু, মানি লাজহীনা আমি, সাধনা আমার শেষ হল না,
সবটুকু না নিয়ে দিয়ে, ফিরে কেমনে যাব বল।
লখাইকে দেখেই তাদের গান বন্ধ হয়ে গেল। মুরলী দাস তার হাত ধরে দাওয়ায় উঠিয়ে বসিয়ে উৎকণ্ঠিত গলায় জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে তোমার কান্ত? তোমার চোখ এত জ্বলছে কেন, হাঁপাচ্ছ কেন?
লখাই বসে পড়ে চোখ বুজে বলল, কী হয়েছে তা যদি বলতে পারতাম মুরলীদাদা, তবে তো বাঁচতাম। শুধু মনে হয়, পান জ্বলে যাচ্ছে, জ্বলে যাচ্ছে।
মুরলী দাসের উৎকণ্ঠা বাড়ল। জিজ্ঞেস করল, আমার রাইকিশোরী—
লখাই বলল, ভাল আছে।
তবে—
তখন সে আজকের দিনের সব কথা ধীরে ধীরে বলে গেল। ফোর্ট গ্নস্টার, কানুতাঁতির বউয়ের সেই চিঠির কথা, মধুর কথা। বলে সে বলল, তোমরা গাও মুরলীদাদা, আমি শুনি এট্টু।
বলে সে চোখ মেলতেই দেখল সারদা অপলক ব্যাকুল চোখে অনেকখানি সামনে এসে তার দিকেই ঝুঁকে আছে। পুনি অর্থাৎ পুর্ণিমা খঞ্জনিজোড়া দুহাতে নিয়ে মুরলী দাসের পাশে বসে রয়েছে। মুরলী দাস তাকিয়ে আছে মন্দিরে তার যুগল মূর্তির দিকে।
মুরলী বলল, গান আমার আর জমবে না কান্ত। কাল থেকে সব গোছাতে হবে, আর মাত্র সাত দিন সময়। সবই তো ফেলে যেতে হবে, কেবল ওই যুগল ছাড়া। তাই ভাবি, হয়েছি বৈরাগী, কিন্তু এতদিনের স্ব ফেলে যেতে হবে ভাবলে বুকটা ভেঙে যায়।
বলতে বলতে সে উঠে পড়ল। পুর্ণিমাও চলে গেল। রইল শুধু সারদা।
সারদার মাথায় ঘোমটা নেই। আট করে খোপা বাঁধা, কপালে উজ্জ্বল রসকলি। ঝুঁকে পড়া শরীরের ভারে ঈষৎ উন্মুক্ত স্তনের সুডৌল রেখা যৌবন সুষমায় মনোহর। নিরাভরণ দুই নিটোল হাতে শরীরের ভার রেখে প্রশস্ত বাঁকিয়ে পেছনে পা জোড়া মুড়ে রেখেছে। এ সেই হাসিত্রাসে চঞ্চলা সারদা নয়, মেঘভরাতুর শরৎ আকাশের মতো গভীর অথচ বর্ষণের বেগে অস্থির তার চোখ।
লখাই এক মুহূর্ত তাকিয়ে চোখ নামিয়ে বলল, তা হলে, কেউ গাইবে না তোমরা?
সারদা বলল, আমি গাইব। তুমি আগে কিছু খাও, ঠাণ্ডা হয়ে বসো। গোঁসাই মন্দির বন্ধ করুক।
মুরলী দাস মন্দিরের দরজা বন্ধ করে বলল, কান্ত, আজ রাতে তোমার যাওয়া হতে পারে না। খাওয়া-দাওয়া করে গান শোনো, ও পাগলি যেদিন নিজেরই ইচ্ছায় গায়, সেদিন কখন থামবে তার ঠিক নেই। গান শুনে তুমি শুয়ে পড়ো। সরি তোমাকে ঘর দেখিয়ে দেবে। বলে লখাইয়ের হাত দুটি নিয়ে একটু চাপ দিয়ে চোখের ভাবে যেন কিছু মিনতি করল। তারপর বলল, আমি যাই।
সারদা দুধখই আর কয়েকটা কলা, কয়েক টুকরো ফুটি নিয়ে এসে লখাইয়ের সামনে এনে রাখল।
মুরলী ডাকল, সরি!
সারদা বলল, বলো।
এদিকে আয় একবার।
কান্তকে খাওয়াব না?
খাওয়াবি। একটুখানিক শুনে যা।
সারদা তাকাল লখাইয়ের দিকে। লখাইও তাকিয়েছিল।
সারদা বলল, একটু বসো। আমি আসছি।
একটু পরে সে এল। দুচোখ যেন তার ঈষৎ লাল, মুখোনি যেন জলে ধুয়ে এসেছে এইমাত্র। বলল, খাও।
লখাই বলল, খেতে মন নেই, তুমি গান গাও।
না, তুমি খাও আগে।
জোর করেই লখাই যা পারল তা খেল। এঁটো বাসন সরিয়ে হাত ধুয়ে বাইরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে এল সারদা। ফুঁ দিয়ে প্রদীপ নিভিয়ে বসল সে।
দপ করে প্রদীপটা নিভে যেতেই লখাই চমকে উঠল। অন্ধকারে একবার লক্ষ করে সারদাকে দেখল, তারপর চোখ বুজিয়ে রাখল জোর করে। জগৎ সংসারে ধন্দের ঘোর, ধন্দ লাগে সারদাকে দেখে। সারদা তার মিষ্টি গলায় গান ধরল :
সখা, জানি জানি কী মিনতি আছে তোমার বাঁশিতে।
ব্যাকুল
হৃদয়, আকুল শরীর
যাতনা গলিয়ে নয়নের নীর
সহে না সহে না ডাকিবে তবু, তোমাকে হয় না সহিতে।
বলি
এত যদি ডাকাডাকি
পাখা দিয়ে কেন কররানি পাখি।
গোপনে প্রেমের জ্বালা দিয়ে (হরি) রেখেছে শুধু দহিতে। বিরহের কান্নায় বিলম্বিত সে সুরে লখাইয়ের সব ধন্দ কেটে গিয়ে যেন এক ব্যথিত সান্ত্বনায় তার পীড়িত উদ্দীপ্ত মন অপরিসীম ক্লান্তিতে ঝিমিয়ে এল। প্রদীপ নেভানো ও সারদার নিরন্তর টান, অসহায় ও ক্ষুব্ধ প্রাণ ঢলে পড়ল অপরূপ বেদনার অতলে। তার দ্রুত নিশ্বাস হয়ে এল স্বাভাবিক, উষ্ণতা ঠাণ্ডা হল। হাত পা যেন শিথিল হয়ে এল। বুজে এল চোখের পাতা। গানের সুর শান্তি ও বেদনার বিচিত্র রসে কেমন যেন আচ্ছন্ন করে দেয়।
সারদার থামার নাম নেই। সে শুধু গেয়ে চলেছে একটার পর একটা, আর একটা। ক্লান্তি নেই। গায়ের কাপড় খসে গেছে, চোখে অশ্রুর ঢল নেমেছে, কখনও কান্নায় ভেঙে যাচ্ছে গলা। তবু থামবার নাম নেই। অবশেষে সে গাইল :
প্রণয়
প্রমোদবনে ভ্রমি হে কান্ত কেমনে,
বিচ্ছেদ কালো ভুজঙ্গ আছে সদা বিষ ঢালে প্রাণে।
গান শেষে সে নিচু গলায় ডাকল, কান্ত!
লখাই যেন তার অতলপার থেকে জবাব দিল, উঁ?
সারদা তার হাত ধরে বলল, শুতে যাবে না?
লখাই হঠাৎ চমকে উঠল। মুখের কাছেই সারদার মুখ, তার নিশ্বাস ছড়িয়ে পড়ছে লখাইয়ের চোখে মুখে। অন্ধকারে লখাই দেখল সারদার চোখ ব্যথিত ও ব্যাকুল।
একমুহূর্ত লখাই থমকে রইল। তারপর খপ করে সারদার হাত ধরে বলল, সই, এ জীবনের পোড়ানি কাটবার লয়, তুমি আমাকে শাস্তি দেও।
সারদা লখাইয়ের গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে সেখানেই ঘুম পাড়িয়ে সারারাত জেগে রইল। ভোরবেলা লখাইকে জাগিয়ে স্নানের উদ্দেশে বেরিয়ে গেল।