হাদিস নম্বরঃ ২০১ | 201 | ۲۰۱
পরিচ্ছদঃ ৪৭. আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যাক্তি যে বস্তুদ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যাতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২০১। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি কোন ধারাল অস্ত্র দ্বারা আত্নহত্যা করবে, সে অস্ত্র তার হাতে থাকবে, জাহান্নামের মধ্যে সে অস্ত্র দ্বারা সে তার পেটে আঘাত করতে থাকবে, এভাবে সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর যে ব্যাক্তি বিষপানে আত্নহত্যা করবে, সে জাহান্নামের আগুনের মধ্যে অবস্থান করে উক্ত বিষ পান করতে থাকবে, এভাবে সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর যে ব্যাক্তি নিজকে পাহাড় থেকে নিক্ষেপ করে আত্নহত্যা করবে, সে ব্যাক্তি সর্বদা পাহাড় থেকে নিচে গড়িয়ে জাহান্নামের আগুনে পতিত হতে থাকবে, এভাবে সে ব্যাক্তি সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ২০২ | 202 | ۲۰۲
পরিচ্ছদঃ ৪৭. আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যাক্তি যে বস্তুদ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যাতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২০২। যুহায়র ইবনু হারব, সাঈদ ইবনু আমর আল আশ-আসী এবং ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব আল হারিসী (রহঃ) … তাঁরা সবাই উপরোক্ত সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। শু’বার বর্ণনায় সুলায়মানের সুত্রে বর্ণিত আছে, “আমি যাকওয়ানকে বলতে শুনেছি”।
হাদিস নম্বরঃ ২০৩ | 203 | ۲۰۳
পরিচ্ছদঃ ৪৭. আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যাক্তি যে বস্তুদ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যাতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২০৩। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … সাবিত ইবনু যাহহাক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি (হুদায়বিয়া প্রান্তরে) বৃক্ষের নিচে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে বায়অোত করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের উপর মিথ্যা শপথ করে, সে সেই দলভূক্ত বলে গণ্য হবে। আর যে ব্যাক্তি কোন বস্তু দ্বারা আত্নহত্যা করবে, কিয়ামত দিবসে উক্ত বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। যে ব্যাক্তি এমন বস্তুর মানত করে যার মালিক সে নয় তার মানত কার্যকরি নয়।
হাদিস নম্বরঃ ২০৪ | 204 | ۲۰٤
পরিচ্ছদঃ ৪৭. আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যাক্তি যে বস্তুদ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যাতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২০৪। আবূ গাসশান আল মিসমাঈ (রহঃ) … সাবিত ইবনু যাহহাক (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ সে বস্তুর মানত কার্যকরী নয়, যার মালিক সে নয়। মু’মিনকে অতিসম্পাত করা তাকে হত্যা করার শামিল। যে ব্যাক্তি দুনিয়াতে কোন বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করবে, কিয়ামত দিবসে উক্ত বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে। যে ব্যাক্তি সম্পদ বৃদ্ধির জন্য মিথ্যা দাবি করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য স্বল্পতরই বৃদ্ধি করবেন। আর যে ব্যাক্তি বিচারকের সামনে মিথ্যা শপথ করবে (তার অবস্থাও মিথ্যা দাবিদারদের অনুরুপ হবে)।
হাদিস নম্বরঃ ২০৫ | 205 | ۲۰۵
পরিচ্ছদঃ ৪৭. আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যাক্তি যে বস্তুদ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যাতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২০৫। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, ইসহাক ইবনু মানসুর, আবদুল ওয়ারিস ইবনু আবদুস সামাদ ও মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) … সাবিত ইবনু যাহহাক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সেচ্ছায় ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মের নামে মিথ্যা শপথ করবে, সে যেরুপ বলেছে সেরুপ হবে। আর যে ব্যাক্তি কোন বস্তু দ্বারা আত্নহত্যা করবে, তাকে আল্লাহ তা’আলা জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা শাস্তি দিবেন। এ হল রাবী সুফিয়ানের বর্ণনা।
আর রাবী শুবার বর্ণনা হল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মের নামে মিথ্যা শপথ করবে, সে যেরুপ বলেছে সেরুপই হবে। যে ব্যাক্তি কোন বস্তু দ্বারা নিজকে যবেহ করবে, কিয়ামত দিবসে উক্ত জিনিস দ্বারা তাকে যবেহ করা হবে।
হাদিস নম্বরঃ ২০৬ | 206 | ۲۰٦
পরিচ্ছদঃ ৪৭. আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যাক্তি যে বস্তুদ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যাতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২০৬। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে হুনায়নে উপস্তিত ছিলাম। তখন তিনি ইসলামের দাবিদার এক ব্যাক্তি সম্পর্কে বললেন যে, এ ব্যাক্তি জাহান্নামী। তারপর যুদ্ধ শুরু হল, উক্ত লোকটি ভীষণভাবে যুদ্ধ করল, পরে সে ক্ষতবিক্ষত হল। আরয করা হলঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনি এইমাত্র যে ব্যাক্তিকে জাহান্নামী বলেছেন, সে তো আজ খুব লড়েছে এবং মারা গিয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে জাহান্নামে গিয়েছে। ব্যাপারটি কিছুসংখ্যক মুসলিমের কাছে সন্দেহজনক লাগছিল।
ইত্যবসরে খবর ছড়িয়ে পড়ল যে, সে মরে নি, কিন্তু ভীষণভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। রাতের বেলায় সে ক্ষতের কষ্ট বরদাশত করতে পারছিল না। তাই সে নিজেই নিজেকে হত্যা করে ফেলল। এ খবর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে পৌছলে তিনি বলেনঃ আল্লাহ আকবার, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি তার বান্দা এবং তাঁর প্রেরিত রাসুল। তারপর বিলালকে ডেকে তিনি নির্দেশ দিলেন, লোকদের মাঝে ঘোষণা করে দাও যে, মুসলিম ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, আল্লাহ তায়ালা পাপী বান্দা দ্বারাও এ দ্বীনের (ইসলামের) শক্তি বাড়িয়ে দেন।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ২০৭ | 207 | ۲۰۷
পরিচ্ছদঃ ৪৭. আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যাক্তি যে বস্তুদ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যাতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২০৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ আল সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুশরিকরা পরস্পর মুখোমুখি হলেন এবং যুদ্ধ আরম্ভ হয়ে গেল। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সেনাবাহিনীর দিকে অগ্রসর হলেন এবং অপরপক্ষও তাদের সেনাবাহিনীর সাথে মিলিত হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গীদের মধ্যে সে সময় এমন এক ব্যাক্তি ছিল যে সেদিন বীরত্বের সাথে লড়েছিল। কোন কাফিরকে দেখামাত্র সে তার পিছনে লেগে যেত এবং তরবারি দ্বারা খতম করে দিত। লোকেরা তার বীরত্ব দেখে বলাবলি করছিল যে, অমুক ব্যাক্তি আজ যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে, আমাদের কেউ তা পারেনি। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ মনে রেখ, সে ব্যাক্তি জাহান্নামবাসী।
উপস্থিত লোকদের একজন বলল, আমি সর্বক্ষণ তার সাথে থাকব। তারপর সে ব্যাক্তি তার পিছনে থাকল। যেখানে সে থামত, সেও সেখানে থেমে যেত। যখন সে দ্রুতবেগে কোথাও যেত, সেও তার সাথে দ্রুতবেগে সেখানে গমন করত। শেষ পর্যন্ত সে ব্যাক্তি মারাত্মকভাবে যখম হল। তারপর ক্ষতের জ্বালার তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে ত্বরায় মৃত্যু কামনা করল। সে তার তরবারি যমীনে রেখে এর অগ্রভাগ তার উভয় স্তনের মাঝামাঝি ঠেকিয়ে তার উপর ঝুঁকে পড়ল এবং নিজেকে হত্যা করল।
তাকে অনুসরণকারী লোকটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে গেল এবং সাক্ষ্য প্রদান করল, নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রাসুল। তিনি বললেনঃ ব্যাপার কি? সে বলল, আপনি একটু আগে যে ব্যাক্তিকে জাহান্নামী বলেছিলেন এবং লোকেরা এতে আশ্চর্যানিত হয়েছিল; আমি বলেছিলাম, আমি তার সাথে থেকে তোমাদেরকে খবর পৌছাব। আমি অপেক্ষায় রইলাম। অবশেষে সে মারাত্মকভাবে আহত হলো এবং ত্বরায় মৃত্যুর জন্য নিজের তরবারি যমীনে রেখে এর অগ্রভাগ তার উভয় ন্তনের মাঝামাঝি ঠেকিয়ে দিল। তারপর এর উপর ঝুঁকে পড়ল এবং নিজেকে হত্যা করল। এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকের দৃষ্টিতে কোন ব্যাক্তি জান্নাতের কাজ করছে অথচ সে জাহান্নামী হয়। আবার লোকের দৃষ্টিতে কোন ব্যাক্তি জাহান্নামের কাজ করছে; অথচ সে জান্নাতবাসী হয়।
হাদিস নম্বরঃ ২০৮ | 208 | ۲۰۸
পরিচ্ছদঃ ৪৭. আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যাক্তি যে বস্তুদ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যাতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২০৮। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) … শায়বান (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমি হাসান (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তোমাদের আগের যুগের এক ব্যাক্তির ফোঁড়া হয়েছিল, ফোঁড়ার যন্ত্রনা অসহ্য হওয়ায় সে তার তূণ থেকে একটি তীর বের করল আর তা দিয়ে আঘাত করে ফোঁড়াটি চিরে ফেলল। তখন তা হতে সজোরে রক্তক্ষরণ শুরু হল, অবশেষে সে মারা গেল। তোমাদের প্রতিপালক বলেন, আমি তার উপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছি। তারপর হাসান আপন হাত মসজিদের দিকে প্রসারিত করে বললেন, আল্লাহর কসম, জুনদুব (ইবনু আবদুল্লাহ বাজালী) এ মসজিদেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি আমার কাছে বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ২০৯ | 209 | ۲۰۹
পরিচ্ছদঃ ৪৭. আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যাক্তি যে বস্তুদ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যাতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২০৯। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর আল মুকাদ্দামী (রহঃ) … হাসান (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, জুনদুব ইবনু আবদুল্লাহ বাজালী এ মসজিদে বসেই আমাদিগকে নসীহত করেছেন। তারপর আমরা তা ভুলে যাইনি। আর আমরা আশঙ্কা করি না যে, জুনদুব রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছেন। রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের পুর্ববর্তী উম্মতের মধ্যে এক ব্যাক্তির ফোঁড়া হয়েছিল … তারপরের অংশ উপরের বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ।
হাদিস নম্বরঃ ২১০ | 210 | ۲۱۰
পরিচ্ছদঃ ৪৮. গনীমতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম; ঈমানদার ব্যতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২১০। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন, খায়বারের যুদ্ধ শেষে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর একদল সাহাবী এসে বলতে লাগল, অমুক শহীদ, অমুক শহীদ। এভাবে কথাবার্তা চলছিল, অবশেষে এক ব্যাক্তি প্রসঙ্গে তাঁরা বললেন যে, সেও শহীদ হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কখনই না। এ আমি তাকে জাহান্নামে দেখেছি, সে চাঁদর বা জোব্বার কারণে (যা সে ব্যাক্তি গনীমতের মাল থেকে আত্মসাৎ করেছিল)। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে খাত্তাবের পুত্র! যাও লোকদের মাঝে ঘোষণা করে দাও যে, জান্নাতে কেবলমাত্র প্রকৃত মুমিন ব্যাক্তিরাই প্রবেশ করবে। উমর ইবনু খাত্তাব বলেন, তারপর আমি বের হলাম এবং ঘোষণা করে দিলাম, “সাবধান! শুধু প্রকৃত মুমিনরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
হাদিস নম্বরঃ ২১১ | 211 | ۲۱۱
পরিচ্ছদঃ ৪৮. গনীমতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম; ঈমানদার ব্যতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
২১১। আবূ তাহির ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে খায়বার প্রান্তরে গমন করলাম। আল্লাহ তাআলা আমাদিগকে বিজয়ী করলেন। গনীমতের মধ্যে আমরা স্বর্ণ, রৌপ্য পাইনি পেয়েছি আসবাবপত্র, খাদ্যশস্য ও কাপড়-চোপড়। তারপর আমরা সেখান থেকে একটি উপত্যকার দিকে রওয়ানা হলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে তার একটি গোলাম ছিল। জুযাম গোত্রের যুবায়ব শাখার রিফা’আ ইবনু যায়দ নামে এক ব্যাক্তি তাঁকে গোলামটি উপহার দিয়েছিল। আমরা সে উপত্যকায় উপনীত হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সে গোলামটি তার হাওদা খুলতে লাগল। এ সময় তার গায়ে একটি তীর এসে লাগল এবং তার মৃত্যু ঘটল। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তার শাহাদতের সৌভাগ্যের জন্য মূবারকবাদ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কখনো নয়, সে মহান সত্তার শপথ যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, যে চাঁদরখানা খায়বার যুদ্ধের গনীমত বনানের পূর্বেই সে নিয়ে গিয়েছিল, তা আগুন হয়ে তার উপর জ্বলতে থাকবে। রাবী বলেন, এতে লোকেরা ঘাবড়ে গেল। এক ব্যাক্তি জুতার একটি কিংবা দুঁটি ফিতা নিয়ে হাযির হলো। সে আরয করলো, হে আল্লাহর রাসুল! খায়বারের দিন আমি এটি পেয়েছিলাম। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ একটি আগুনের ফিতা; কিংবা বললেনঃ এ দু’টি আগুনের ফিতা।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ২১২ | 212 | ۲۱۲
পরিচ্ছদঃ ৪৯. আত্মহত্যাকারী কাফির হবে না তার প্রমান
২১২। আবূ বকর ইবনু শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তুফায়ল ইবনু আমর দাওসী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খেদমতে হাযির হলেন এবং আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কি চান যে, আপনার জন্য একটি মযবুত দুর্গ ও সেনাবাহিনী হোক? রাবী বলেন, দাওসী গোত্রের জাহিলিয়্যাহ যুগের একটি দুর্গ ছিল। (তিনি সেদিকে ইঙ্গিত করেন)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা কবুল করলেন না। কারণ আল্লাহ তাআলা আনসারদের জন্য এ সৌভাগ্য নির্ধারণ করে রেখেছিলেন। যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিযরত করলেন, তখন তুফায়ল ইবনু আমর এবং তার গোত্রের একজন লোকও তাঁর সঙ্গে মদিনায় হিজরত করেন। কিন্তু মদিনার আবহাওয়া তাদের অনুকুল হয়নি। তুফায়ল ইবনু আমর (রাঃ)-এর সাথে আগত লোকটি অসুস্থ হয়ে পড়ল। রোগযন্ত্রণা বরদাশত করতে না পেরে তীর নিয়ে তার হাতের আঙ্গুলগুলো কেটে ফেলল। এতে উভয় হাত থেকে রক্ত নির্গত হতে থাকে। অবশেষে সে মারা যায়।
তুফায়ল ইবনু আমর দাওসী (রাঃ) স্বপ্নে তাকে ভাল অবস্থায় দেখতে পেলেন, কিন্তু তিনি তার উভয় হাত আবৃত দেখে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার রব তোমার সাথে কিরুপ ব্যবহার করেছেন? সে বলল, আল্লাহর জন্য তাঁর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে হিজরত করার কারণে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। তুফায়ল (রাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি হয়েছে যে, আমি তোমার হাত দুটি আবৃত দেখছি? সে বলল, আমাকে বলা হয়েছে যে, আমি তা দুরস্ত করব না, তুমি স্বেচ্ছায় যা নষ্ট করেছ। তুফায়ল (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’আ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি তার হাত দুটিকেও ক্ষমা করে দিন।
হাদিস নম্বরঃ ২১৩ | 213 | ۲۱۳
পরিচ্ছদঃ ৫০. কিয়ামতের পূর্বে এক বাতাস প্রবাহিত হবে, সামান্য ঈমানও যার অন্তরে আছে তার রূহ সে বাতাস কব্য করে নিবে
২১৩। আহমাদ ইবনু আবদা আয যাব্বী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ আল্লাহ তা’লা কিয়ামতের আগে ইয়ামন থেকে এক বাতাস প্রবাহিত করবেন, যা হবে রেশম অপেক্ষাও নরম। যার অন্তরে দানা পরিমাণ ঈমান থাকবে, তার রুহ ঐ বাতাস কবয করে নিয়ে যাবে। আবূ আলকামাহ مِثْقَالُ حَبَّةٍ বলেছেন এবং রাবী আবদুল আযীয (রহঃ) তাঁর বর্ণনায় مِثْقَالُ حَبَّةٍ স্থলে مِثْقَالُ ذَرَّةٍ (অনু পরিমাণ) উল্লেখ করেছেন।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ২১৪ | 214 | ۲۱٤
পরিচ্ছদঃ ৫১. ফিতনা প্রকাশের পূর্বেই নেক আমলের প্রতি অগ্রসর হওয়ার জন্য উৎসাহ দান
২১৪। ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ অন্ধকার রাতের মত ফিতনা আসার আগেই তোমরা নেক আমলের প্রভি অগ্রসর হও। সে সময় সকালে একজন মুমিন হলে বিকালে কাফির হয়ে যাবে। বিকালে মুমিন হলে সকালে কাফির হয়ে যাবে। দুনিয়ার সামগ্রীর বিনিময়ে সে তার দ্বীন বিক্রি করে বসবে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ২১৫ | 215 | ۲۱۵
পরিচ্ছদঃ ৫২. আমল নষ্ট হওয়া সম্পর্কে মু’মিনের আশঙ্কা
২১৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ এ আয়াত নাযিল হলঃ (অর্থ) “হে মুমিনগণ, তোমরা নাবীর কণ্ঠের উপর নিজেদের কন্ঠ উচু করবে না! এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চস্বরে কথা বল তাঁর সাথে সেরুপ উচ্চস্বরে কথা বলবে না। এতে তোমাদের আমল বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে; অথচ তোমরা টেরও পাবে না।” (হুজরাতঃ ২) (উপরোক্ত আয়াত নাযিল হলে) সাবিত (রাঃ) নিজের ঘরে বসে গেলেন এবং বলতে নাগলেনঃ আমি একজন জাহান্নামী। এরপর থেকে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন।
একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবী সা’দ ইবনু মু’আযকে সাবিত (রাঃ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে বললেনঃ হে আবূ আমর, সাবিতের কি হল? সা’দ (রাঃ) বললেন, সে তো আমার প্রতিবেশী, তার কোন অসূখ হয়েছে বলে তো জানিনা। আনাস (রাঃ) বলেন, পরে সা’দ (রাঃ) সাবিতের কাছে গেলেন এবং তার সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বক্তব্য উল্লেখ করলেন। সাবিত (রাঃ) বললেন, এ আয়াত নাযিল হয়েছে। আর তোমরা জানো, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উপর আমার কন্ঠস্বর সবচেয়ে উচু হয়ে যায়। সূতরাং আমি তো জাহান্নামী। সা’দ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে সাবিতের কথা বললেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেনঃ না, বরং সে তো জান্নাতী।
হাদিস নম্বরঃ ২১৬ | 216 | ۲۱٦
পরিচ্ছদঃ ৫২. আমল নষ্ট হওয়া সম্পর্কে মু’মিনের আশঙ্কা
২১৬। কাতান ইবনু নুসায়র (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, সাবিত ইবনু কায়স ইবনু শাম্মাস ছিলেন আনসারদের খাতীব। এ আয়াত নাযিল হলোঃ (অর্থ) তোমরা নাবীর কণ্ঠের উপর নিজেদের কণ্ঠ উচু করো না। ” বাকি অংশ হাম্মাদ বর্ণিত উল্লেখিত রেওয়ায়েতের অনুরুপ। তবে এ রেওয়ায়েতে সা’দ ইবনু মু’আয-এর উল্লেখ নাই।
আহমাদ ইবনু সাঈদ ইবনু সাখর আদ দারিমী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যখন এ আয়াত নাযিল হলঃ (অর্থ) তোমরা নাবীর কণ্ঠের উপর নিজেদের কণ্ঠ উচু করো না।” এ বর্ণনায় সা’দ ইবনু মু’আয-এর উল্লেখ নাই।
হাদিস নম্বরঃ ২১৭ | 217 | ۲۱۷
পরিচ্ছদঃ ৫২. আমল নষ্ট হওয়া সম্পর্কে মু’মিনের আশঙ্কা
২১৭। হুরায়ম ইবনু আবদুল আলা আল আসা’দী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাযিল হালা…। এতেও সা’দ ইবনু মূআযের উল্লেখ নাই। তবে শেষে আছে, আমরা তাঁকে ভাবতাম, একজন জান্নাতী লোক আমাদের মাঝে বিচরন করছেন।
হাদিস নম্বরঃ ২১৮ | 218 | ۲۱۸
পরিচ্ছদঃ ৫৩. জাহেলী অবস্থার আমলেরও কি শাস্তি হবে?
২১৮। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, কিছু সংখ্যক লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে বললেন, জাহিলী যুগে আমরা যা করেছি, এর জন্যও কি আমাদের পাকড়াও করা হবে? তিনি বললেনঃ ইসলাম অবস্থায় যে ব্যাক্তি ভাল করবে, তার জন্য জাহিলী যুগের আমলের জন্য পাকড়াও হবে না। কিন্তু যে ব্যাক্তি ইসলাম গ্রহণের পরও মন্দ করবে, তাকে জাহিলী ও ইসলাম উভয় যুগের আমলের জন্য পাকড়াও করা হবে।
হাদিস নম্বরঃ ২১৯ | 219 | ۲۱۹
পরিচ্ছদঃ ৫৩. জাহেলী অবস্থার আমলেরও কি শাস্তি হবে?
২১৯। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা জাহেলী যুগে যা করেছি, এর জন্যও কি আমাদের পাকড়াও করা হবে? তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি ইসলাম অবস্থায় ভাল করবে, জাহেলী যুগে সে কি করেছে, তার জন্য পাকড়াও করা হবে না। আর ইসলাম। গ্রহনের পর যে মন্দ করে, তাকে প্রথম ও শেষ, সব আমলের জন্য পাকড়াও করা হবে।
হাদিস নম্বরঃ ২২০ | 220 | ۲۲۰
পরিচ্ছদঃ ৫৩. জাহেলী অবস্থার আমলেরও কি শাস্তি হবে?
২২০। মিনজাব ইবনু হারিস আত তামীমী (রহঃ) … আ’মাশ (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরুপ বর্ণিত আছে।
হাদিস নম্বরঃ ২২১ | 221 | ۲۲۱
পরিচ্ছদঃ ৫৪. ইসলাম গ্রহন, হিজরত ও হজ্জ দ্বারা পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যাবে
২২১। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না আল আনাযী, আবূ মাআন আল রাকাশী ও ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) … ইবনু শামাসা আল মাহরী (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমরা আমর ইবনু আস (রাঃ)-এর মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে দেখতে উপস্থিত হলাম। তখন তিনি দেয়ালের দিকে মুখ করে অনেকক্ষণ কাঁদছিলেন। তার পুত্র তাঁকে তাঁর সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত বিভিন্ন সুসংবাদের উল্লেখ পূর্বক প্রবোধ দিচ্ছে যে, আব্বা! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেননি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেননি? রাবী বলেন, তখন তিনি পুত্রের দিকে মুখ ফিরালেন এবং বললেন, আমার সর্বোৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে “লা ইলাহা ইল্লালাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” এ কালিমার সাক্ষ্য দেয়া। আর আমি অতিক্রম করেছি আমার জীবনের তিনটি পর্যায়।
এক সময় তো আমি এমন ছিলাম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বিরুদ্ধাচরণে আমার চেয়ে কঠোরতর আর কেউই ছিল না। আমি যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে কবজায় পেতাম আর হত্যা করতে পারতাম, এ ছিল আমার সবচেয়ে প্রিয় ভাবনা। যদি সে অবস্থায় আমার মৃত্যু হতো, তবে নিশ্চিত আমাকে জাহান্নামে যেতে হতো।
এরপর আল্লাহ যখন আমার অন্তরে ইসলামের অনুরাগ সৃষ্টি করে দিলেন, তখন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকটে উপস্থিত হয়ে অনুরোধ জানোানাম যে, আপনার ডান হাত বাড়িয়ে দিন, আমি বায়আত করতে চাই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন, তখন আমি আমার হাত টেনে নিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমর, কি ব্যাপার? বললাম, পূর্বে আমি শর্ত করে নিতে চাই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেনঃ কি শর্ত করবে? আমি উত্তর করলাম, আল্লাহ যেন আমার সব শোনাহ মাফ করে দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমর! তুমি কি জানো না যে, ইসলাম পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়। হিজরত পূর্বেকৃত শোনাহসমুহ মিটিয়ে দেয় এবং হাজ্জ (হজ্জ)ও পূর্বের সকল শোনাহ মিটিয়ে দেয়। আমর বলেন, এ পর্যায়ে আমার অন্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপেক্ষা বেশি প্রিয় আর কেউ ছিল না। আমার চোখে তিনি অপেক্ষা মহান আর কেউ ছিল না। অপরির্সীম শ্রদ্ধার কারণে আমি তার প্রতি চোখ ভরে তাকাতেও পারতাম না। আজ যদি আমাকে তাঁর দেহ আকৃতির বর্ণনা করতে বলা হয়, তবে আমার পক্ষে তা সম্ভব হয়ে উঠবে না। কারণ চোখভরে আমি কখনোই তাঁর প্রতি তাকাতে পারি নি। ঐ অবস্থায় যদি আমার মৃত্যু হতো তবে অবশ্যই আমি জান্নাতী হওয়ার আশাবাদী থাকতাম।
পরবর্তীকালে আমরা নানা বিষয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েছি, তাই জানিনা, এতে আমার অবস্থান কোথায়? সুতরাং আমি যখন মারা যাব, তখন যেন কোন বিলাপকারিনা অথবা আগুন যেন আমার জানাযার সাথে না থাকে। আমাকে যখন দাফন করবে তখন আমার উপর আস্তে আস্তে মাটি ফেলবে এবং দাফন সেরে একটি উট যবাই করে তার গোশত বল্টন করতে যে সময় লাগে, ততক্ষন আমার কবরের পাশে অবস্থান করবে। যেন তোমাদের উপস্থিতির কারণে আমি আতঙ্কমুক্ত অবস্থায় চিন্তা করতে পারি যে, আমার প্রতিপালকের দূতের কি জবাব দেব।
হাদিস নম্বরঃ ২২২ | 222 | ۲۲۲
পরিচ্ছদঃ ৫৪. ইসলাম গ্রহন, হিজরত ও হজ্জ দ্বারা পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যাবে
২২২। মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ইবনু মায়মূন ও ইবরাহীম ইবনু র্দ্বীনার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, মুশরিকদের কতিপয় লোক যারা ব্যাপকভাবে হত্যা ও ব্যাভিচারে লিপ্ত ছিল, তারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকটে এসে জিজ্ঞেস করল, আপনি যে দ্বীনের প্রতি মানুষদের আহবান জানোাচ্ছেন, এ তো অনেক উত্তম বিষয়। তবে আমাদের পূর্বকৃত গুনাহসমূহের প্রায়শ্চিত্ত সম্পর্কে আপনি যদি আমাদের নিশ্চিতভাবে কিছু অবহিত করতেন। তখন এ আয়াত নাযিল হয়ঃ (অর্থ) “এবং যারা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহকে ডাকে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে। (ফুরকানঃ ৬৮) আরো নাযিল হয়ঃ (অর্থ) বলুন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়ো না।” (যুমারঃ ৫৩)
হাদিস নম্বরঃ ২২৩ | 223 | ۲۲۳
পরিচ্ছদঃ ৫৫. ইসলাম গ্রহনের পূর্বেকার কুফরী জীবনের নেককাজসমূহের প্রতিদান প্রসঙ্গে
২২৩। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … হাকিম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, জাহিলী যুগে আমি যেসব নেক কাজ করতাম, আমি কি তার কোন প্রতিদান পাব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর করলেনঃ তোমার সৎকর্মের ফলেই তুমি ইসলাম গ্রহনের সৌভাগ্য লাভ করেছ। রাবী বলেন, হাদীসে উক্ত التَّحَنُّثُ শব্দটির অর্থ التَّعَبُّدُ ‘নির্জনে ইবাদত করা’।
হাদিস নম্বরঃ ২২৪ | 224 | ۲۲٤
পরিচ্ছদঃ ৫৫. ইসলাম গ্রহনের পূর্বেকার কুফরী জীবনের নেককাজসমূহের প্রতিদান প্রসঙ্গে
২২৪। হাসান আল হুলওয়ানী ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … হাকিম ইবনু হিযাম (রাঃ)- থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সা’দকা, দাসমুক্তি ও আত্নীয়-স্বজনদের সাথে সুসস্পর্ক রাখা ইত্যাদি যেসব নেক কাজ জাহির্লী যুগে আমি করতাম, আমি কি তার কোন প্রতিদান পাব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেনঃ তোমার পূর্বেকৃত সৎকর্মের ফলেই তুমি ইসলাম গ্রহণের সৌভাগ্য লাভ করেছ।
হাদিস নম্বরঃ ২২৫ | 225 | ۲۲۵
পরিচ্ছদঃ ৫৫. ইসলাম গ্রহনের পূর্বেকার কুফরী জীবনের নেককাজসমূহের প্রতিদান প্রসঙ্গে
২২৫। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! কিছু কিছু বিষয় যা আমি যাহিলী যুগে নেক কাজ হিসাবে করতাম, আমি কি তার কোন প্রতিদান পাব? তদুত্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেনঃ তোমার সেসব নেক কাজের ফলেই তুমি ইসলাম গ্রহনের সৌভাগ্য লাভ করেছ। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! জাহেলী যুগে যেসব নেক কাজ আমি করেছি, ইসলামী যিন্দেগীতেও আমি তা করে যাব।
হাদিস নম্বরঃ ২২৬ | 226 | ۲۲٦
পরিচ্ছদঃ ৫৫. ইসলাম গ্রহনের পূর্বেকার কুফরী জীবনের নেককাজসমূহের প্রতিদান প্রসঙ্গে
২২৬। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … উরওয়া ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, হাকীম ইবনু হীযাম (রাঃ) জাহিলী যুগে একশ’ ক্রীতদাস আযাদ করেছিলেন, মাল বোঝাই একশ’ উট দান করেছিলেন, ইসলাম গ্রহণ করার পরেও তিনি একশ’ ক্রীতদাস আযাদ করেন এবং মালামাল বোঝাই একশ উট সা’দকা করেন। পরে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকটে এসে প্রশ্ন করেন। এরপর বর্ণনাকারী উল্লেখিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।
হাদিস নম্বরঃ ২২৭ | 227 | ۲۲۷
পরিচ্ছদঃ ৫৬. ঈমানে সততা ও নিষ্ঠা
২২৭। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, (আল্লাহ তা’আলার বানী) ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুলুম দ্বারা কলুষিত করে নাই নিরাপত্তা তাদের জন্য, তারাই সৎ পথ প্রাপ্ত” (৬ঃ ৮২)। এ আয়াতটি অবতীর্ণ হলে বিষয়টি সাহাবীদের কাছে খুবই কঠিন মনে হল। তাঁরা বললেন, আমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে নিজের উপর আদৌ জুলুম করে নাই? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ তোমরা যা মনে করেছ বিষয়টি তা নয়, বরং লূকমান তাঁর পুত্রকে সম্মোধন করে যা বলেছিলেন এর মর্ম, হে বৎস! আল্লাহর সাথে কোন শরীক করো না, নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলুম।” (৩১ঃ ১৩)
হাদিস নম্বরঃ ২২৮ | 228 | ۲۲۸
পরিচ্ছদঃ ৫৬. ঈমানে সততা ও নিষ্ঠা
২২৮। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আলী ইবনু খাশরাম, মিনজাব ইবনু হারিস আত তামীমী এবং আবূ কুরায়ব (রহঃ) … আমাশ (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণনা করেছেন। আবূ কুরায়ব (রহঃ) বলেন, ইবনু ইদরীস (রহঃ) বলেছেন, প্রথমত আমার পিতা আমাকে আবান ইবনু তাগলিব থেকে আ’মাশ এ সূত্রে বর্ণনা করেছেন, পরবর্তীকালে আমি নিজেই আমাশ থেকে সরাসরি এ হাদীস শুনেছি।
হাদিস নম্বরঃ ২২৯ | 229 | ۲۲۹
পরিচ্ছদঃ ৫৭. মনের কল্পনা বা খটকা আল্লাহ্ তা’আলা মাফ করে দেন; যদি সে তাতে স্থির না হয়; মানুষের সামর্থ্যানুযায়ীই আল্লাহ্ তাকে দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং ভালো বা মন্দ কর্মের অভিপ্রায় প্রসঙ্গ
২২৯। মুহাম্মাদ ইবনু মিনহাল আয যারীর ও উমায়্যা ইবনু বিসতাম আল আয়শী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, (মহান আল্লাহর বানী) “আসমান ও যমীনে যত কিছু আছে, সমস্ত আল্লাহরই। তোমাদের মনের অভ্যন্তরে যা আছে তা প্রকাশ কর কিংবা গোপন রাখ, আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব গ্রহণ করবেন এবং যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। ” (২ঃ ২৮৪) এ আয়াত নাযিল হলে বিষয়টি সাহাবীদের কাছে খুবই কঠিন মনে হল। তাই সবাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে আসলেন এবং হাটু গেড়ে বসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সালাত (নামায/নামাজ), রোযা, জিহাদ, সা’দকা প্রভৃতি যে সমস্ত আমল আমাদের সামর্থ্যানুযায়ী ছিল এ যাবত আমাদেরকে সেগুলোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে এ আয়াত নাযিল হয়েছে। এ বিষয়টি তো আমাদের ক্ষমতার বাইরে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আহলে কিতাব- ইহুদি ও খৃষ্টানের মত তোমরাও কি এমন কথা বলবে যে, শুনলাম কিন্তু মাননাম না! বরং তোমরা বলো; শুনলাম ও মানলাম। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর তুমিই আমাদের শেষ প্রত্যাবর্তন স্থল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর এ নির্দেশ শুনে সাহাবা কিরাম বললেন, আমরা শুনেছি ও মেনেছি, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি, তুমিই আমাদের শেষ প্রত্যাবর্তন স্থল।
রাবী বলেন, সাহাবীদের সকলে এ আয়াত পাঠ করলেন এবং বিনয়াপূত হয়ে মনেপ্রাণে তা গ্রহণ করে নিলেন। অনন্তর আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেনঃ রাসুল, তাঁর প্রতি তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ হতে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে তিনি ঈমান আনয়ন করেছেন এবং মুমিনগণও। তাদের সকলে আল্লাহতে, তার ফেরেশতাগণে, তাঁর কিতাবসমুহে এবং তাঁর রাসুলগনে ঈমান আনয়ন করেছেন তারা বলে, আমরা তাঁর রাসুলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না। আর তাঁরা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম! হে আমাদের রব! আমরা তোমার কাছে ক্ষমা চাই আর তোমারই কাছে আমাদের প্রত্যাবর্তন স্থল। (২ঃ ২৮৪)
যখন তাঁরা সর্বতোভাবে আনুগত্য জ্ঞাপন করলেন তখন আল্লাহ তা’আলা উক্ত আয়াতের হুকুম রহিত করে নাযিল করলেনঃ “আল্লাহ কারো উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়-দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার জন্য সাধ্যাতীত। সে ভাল যা উপার্জন করে তা তারই এবং মন্দ যা উপার্জন করে তাও তারই। হে আমাদের রব! যদি আমরা বিম্মৃত হই কিংবা ভুল করে ফেলি তবে তুমি আমাদিগকে পাকড়াও করো না।” আল্লাহ্ বললেনঃ হ্যাঁ তাই হবে।
“হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর যেমন গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন, আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করো না।” আল্লাহ্ বললেনঃ হ্যাঁ, তাই হবে।
“হে আমাদের রব! এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করো না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আল্লাহ্ বললেনঃ হ্যাঁ, তাই হবে।
“আমাদের পাপ মোচন কর, আমাদেরকে মাফ কর, রহম কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদিগকে জয়যুক্ত কর।” আল্লাহ্ বললেন, হ্যাঁ, মঞ্জুর করা হল।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ২৩০ | 230 | ۲۳۰
পরিচ্ছদঃ ৫৭. মনের কল্পনা বা খটকা আল্লাহ্ তা’আলা মাফ করে দেন; যদি সে তাতে স্থির না হয়; মানুষের সামর্থ্যানুযায়ীই আল্লাহ্ তাকে দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং ভালো বা মন্দ কর্মের অভিপ্রায় প্রসঙ্গ
২৩০। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, (মহান আল্লাহর বানী) “তোমাদের মনে যা আছে, তা প্রকাশ কর কিংবা গোপন রাখ, আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব গ্রহণ করবেন।” (২ঃ ২৮৪) আয়াতটি নাযিল হলে সাহাবীগণ খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন। আর কোন বিষয়ে তারা এমন উদ্বিগ্ন হননি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেনঃ বরং তোমরা বলোঃ শুনলাম, আনুগত্য স্কীকার করলাম এবং মেনে নিলাম।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা তাঁদের অন্তরে ঈমান ঢেলে দিলেন। তিনি নাযিল করলেনঃ আল্লাহ তা’আলা কারুর উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না, যা তার সাধ্যাতীত। সে ভাল যা উপার্জন করে তা তারই, আর মন্দ যা উপার্জন করে, তাও তারই। হে আমাদের রব! যদি আমরা বিম্মৃত হই অথবা ভুল করে ফেলি তবে আমাদের পাকড়াও করো না। আল্লাহ্ বললেনঃ আমি গ্রহন করলাম।
“হে আমাদের রব! আমাদের -পূর্বতীগণের উপর যেমন গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছিলে, আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করো না।” আল্লাহ্ বললেনঃ আমি গ্রহন করলাম।
“আমাদের পাপ মোচন কর, আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের রব।” আল্লাহ্ বললেনঃ আমি তা করলাম।
হাদিস নম্বরঃ ২৩১ | 231 | ۲۳۱
পরিচ্ছদঃ ৫৭. মনের কল্পনা বা খটকা আল্লাহ্ তা’আলা মাফ করে দেন; যদি সে তাতে স্থির না হয়; মানুষের সামর্থ্যানুযায়ীই আল্লাহ্ তাকে দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং ভালো বা মন্দ কর্মের অভিপ্রায় প্রসঙ্গ
২৩১। সাঈদ ইবনু মানসুর, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু জুবায়দ আল-গুবারি (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ কথা বা কাজে পরিণত না করা পর্যন্ত আল্লাহ জন্য আমার উম্মতের মনের কল্পনাগুলো মাফ করে দিয়েছেন।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ২৩২ | 232 | ۲۳۲
পরিচ্ছদঃ ৫৭. মনের কল্পনা বা খটকা আল্লাহ্ তা’আলা মাফ করে দেন; যদি সে তাতে স্থির না হয়; মানুষের সামর্থ্যানুযায়ীই আল্লাহ্ তাকে দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং ভালো বা মন্দ কর্মের অভিপ্রায় প্রসঙ্গ
২৩২। আমর আবূ নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ আল্লাহ তা’আলা আমার উম্মতের ক্ষেত্রে কথা বা কাজে পরিণত না করা পর্যন্ত তাদের মনের কল্পনাগুলো মাফ করে দিয়েছেন।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ২৩৩ | 233 | ۲۳۳
পরিচ্ছদঃ ৫৭. মনের কল্পনা বা খটকা আল্লাহ্ তা’আলা মাফ করে দেন; যদি সে তাতে স্থির না হয়; মানুষের সামর্থ্যানুযায়ীই আল্লাহ্ তাকে দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং ভালো বা মন্দ কর্মের অভিপ্রায় প্রসঙ্গ
২৩৩। যুহায়র ইবনু হারব, ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … কাতাদা (রহঃ) সুত্রেও হাদীসটি অনুরুপভাবে বর্ণিত আছে।
হাদিস নম্বরঃ ২৩৪ | 234 | ۲۳٤
পরিচ্ছদঃ ৫৮. বান্দার সুচিন্তাগুলো লিখা হয় কিন্তু কুচিন্তাগুলো লিখা হয় না
২৩৪। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা (ফেরেশতাদেরকে) বলেছেনঃ আমার বান্দা কোন পাপ কর্মের কথা ভাবলেই তা লিখবে না; বরং সে যদি তা কার্যে পরিণত করে তবে একটি পাপ লিখবে। আর যদি সে কোন নেক কাজের নিয়ত করে কিন্তু তা সে কার্যে পরিণত না করে, তাহলেও এর জন্য প্রতিদানে তার জন্য একটি সাওয়াব লিখবে আর তা সম্পাদন করলে লিখবে দশটি সাওয়াব!
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ২৩৫ | 235 | ۲۳۵
পরিচ্ছদঃ ৫৮. বান্দার সুচিন্তাগুলো লিখা হয় কিন্তু কুচিন্তাগুলো লিখা হয় না
২৩৫। ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ আমার বান্দা যখন কোন সৎকর্মের সংকল্প গ্রহণ করে অথচ এখনও তা সম্পাদন করে নি তখন আমি তার জন্য একটি সাওয়াব লিখি; আর যদি কার্যত সম্পাদন করে তবে দশ থেকে সাতশ- গুন পর্যন্ত সাওয়াব লিখি। পক্ষান্তরে যদি অসৎ কর্মের ইচ্ছা করে অথচ এখনো সম্পাদন করে নি তবে এর জন্য কিছুই লিখি না। আর তা কার্যে পরিণত করলে একটি মাত্র পাপ লিখি।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ২৩৬ | 236 | ۲۳٦
পরিচ্ছদঃ ৫৮. বান্দার সুচিন্তাগুলো লিখা হয় কিন্তু কুচিন্তাগুলো লিখা হয় না
২৩৬। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ আমার বান্দা কোন নেক কাজ করবে বলে যদি মনে মনে ভাবে, তবে তা সস্পাদন করার পূর্বে আমি তার জন্য একটি সাওয়াব লিখে দেই। পরে যদি কার্যত তা সম্পাদন করে নেয় তবে তার দশগুন সাওয়াব লিখি। পক্ষান্তরে যদি কোন অসৎ কাজ করবে বলে মনে মনে ভাবে তবে তা কাজে পরিণত না করা পর্যন্ত মাফ করে দেই। কিন্তু তা সম্পাদন করলে তদনূরুপ একটি শোনাহ লিখি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ ফেরেশতাগণ আবেদন জানায়ঃ হে প্রতিপালক! এ তোমার বান্দা, পাপ কর্মের ইচ্ছা করছে। আল্লাহ তা’আলা উত্তর করেন অপেক্ষা করো, যদি সম্পাদন করে ফেলে, তবে সে অনুপাতে লিখবে, আর যদি তা পরিত্যাগ করে তবে সে স্থলে একটি সাওয়াব লিখে দিবে। কারণ আমার জন্যই সে তা পরিত্যাগ করেছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ তোমাদের মধ্যে যে তার ইসলামে নিষ্ঠাবান হয় তার কৃত প্রত্যেকটি নেক কাজের বিনিময়ে দশ থেকে সাতশ গুন পর্যন্ত সাওয়াব লেখা হয়। পক্ষান্তরে তার কৃত প্রত্যেকটি বদ কাজের বিনিময়ে তদনুরুপ লেখা হয়। (মৃত্যুর মাধ্যমে) আল্লাহর সাথে তার সাক্ষাৎ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে চলতে থাকবে।
হাদিস নম্বরঃ ২৩৭ | 237 | ۲۳۷
পরিচ্ছদঃ ৫৮. বান্দার সুচিন্তাগুলো লিখা হয় কিন্তু কুচিন্তাগুলো লিখা হয় না
২৩৭। আবূ কুরায়ব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যাক্তি নেক কাজের ইচ্ছা করে অথচ সস্পাদন করে নি, তার জন্য একটি সাওয়াব লেখা হয়। আর যে ইচ্ছা করার পর কার্যত সস্পাদন করে, তবে তার ক্ষেত্রে দশ থেকে সাতশ, গুন পর্যন্ত সাওয়াব লেখা হয়। পক্ষান্তরে যে কোন মন্দ কাজের ইচ্ছা করে আর তা না করে তবে কোন গুনাহ লেখা হয় না; আর তা করলে (একটি) গুনাহ লেখা হয়।
হাদিস নম্বরঃ ২৩৮ | 238 | ۲۳۸
পরিচ্ছদঃ ৫৮. বান্দার সুচিন্তাগুলো লিখা হয় কিন্তু কুচিন্তাগুলো লিখা হয় না
২৩৮। শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে হাদীসে কুদসীতে বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা সমুদয় সৎ ও অসৎ কর্মের হিসাব লেখেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটিকে আরও বিস্তূত করে বলেনঃ সুতরাং যে ব্যাক্তি নেক কাজের ইচ্ছা গ্রহণ করেছে অথচ তা সম্পাদন করে নি আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে তার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সাওয়াব লিখে দেন। তার ইচ্ছার পর কাজে পরিণত করলে আল্লাহ তায়ালা এর বিনিময়ে দশ থেকে সাতশ গুন পর্যন্ত সাওয়াব লিখে দেন। পক্ষান্তরে যদি কোন মন্দ কর্মের অভিপ্রায় করে এবং তা কাজে পরিণত না করে তবে আল্লাহ তা’আলা তার বিনিময়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সাওয়াব লিখে দেন। আর অভিপ্রায়ের পর তা সম্পাদন করে ফেললে তিনি একটি মাত্র গুনাহ লেখেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৩৯ | 239 | ۲۳۹
পরিচ্ছদঃ ৫৮. বান্দার সুচিন্তাগুলো লিখা হয় কিন্তু কুচিন্তাগুলো লিখা হয় না
২৩৯। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … জা’দ আবূ উসমান (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে আবদুল ওয়ারিস বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ রেওয়ায়েত করেন। তবে এ হাদীসের বর্ণনাকারী নিম্নের বাক্যটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, ‘আল্লাহ উক্ত গুনাহ মাফ করে দেন।’ আল্লাহর বিরুদ্ধে গিয়ে একমাত্র সে ধ্বংস হয়, যার ধ্বংস অনিবার্য।
হাদিস নম্বরঃ ২৪০ | 240 | ۲٤۰
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৪০। যুহায়ের ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কতিপয় সাহাবী তাঁর সমীপে এসে বললেন, আমাদের অন্তরে এমন কিছু সংশয়ের উদয় হয়, যা আমাদের কেউ মুখে উচ্চারণ করতেও মারাত্মক মনে করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেনঃ সত্যই তোমাদের তা হয়? তারা জবাব দিলেন, জ্বী, হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটই স্পষ্ট ঈমান। (কারণ ঈমান আছে বলেই সে সম্পর্কে ওয়াসওয়াসা ও সংশয়কে মারাত্মক মনে করা হয়।)
হাদিস নম্বরঃ ২৪১ | 241 | ۲٤۱
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৪১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার, মুহাম্মদ ইবনু আমর ইবনু জাবালা ইবনু আবূ রাওয়াদ ও আবূ বকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৪২ | 242 | ۲٤۲
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৪২। ইউসুফ ইবনু ইয়াকুব আল সাফফার (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ তা প্রকৃত ঈমান।
হাদিস নম্বরঃ ২৪৩ | 243 | ۲٤۳
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৪৩। হারুন ইবনু মা’রুফ ও মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ মানুষের মনে নানা প্রশ্নের উদয় হয়। এক পর্যায়ে এমন প্রশ্নেরও সৃষ্টি হয় যে, এ সৃষ্টি জগততো আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাহলে কে আল্লাহ কে সৃষ্টি করেছে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যার অন্তরে এমন প্রশ্নের উদয় হয়, সে যেন বলে, “আমি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি।”
হাদিস নম্বরঃ ২৪৪ | 244 | ۲٤٤
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৪৪। মাহমুদ ইবনু গায়লান (রহঃ) … হিশাম ইবনু উরওয়া (রহঃ) এর সুত্রে উক্ত সনদে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ শয়তান তোমাদের কাছে এসে বলে, আকাশ কে সৃষ্টি করেছেন? যমীন কে সৃষ্টি করেছেন? উত্তরে সে বলে, আল্লাহ। এরপর রাবী পূর্ব হাদীসটির অনুরুপ এ হাদীস বর্ণনা করেন। তবে তিনি এর সাথে وَرُسُلِهِ (এবং তার রাসুলগনের প্রতি) শব্দটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৪৫ | 245 | ۲٤۵
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৪৫। যুহায়র ইবনু হারব ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, , রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ শয়তান তোমাদের কারো কাছে আসে এবং বলে, এটা কে সৃষ্টি করেছে, ওটা কে সৃষ্টি করেছে? পরিশেষে এ প্রশ্নও করে, কে তোমার রবকে সৃষ্টি করেছে? এই পর্যায়ে পৌছলে, আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো এবং এ ধরনের ভাবনা থেকে বিরত হও।
হাদিস নম্বরঃ ২৪৬ | 246 | ۲٤٦
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৪৬। আবদুল মালিক ইবনু শু’আয়ব ইবনু লাইস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ শয়তান আল্লাহর বান্দার কাছে আসে এবং কুমন্ত্রণা দিয়ে বলে এটা কে সৃষ্টি করেছেন?… (বাকি অংশ) পূর্ববতী হাদীসের অনুরুপ।
হাদিস নম্বরঃ ২৪৭ | 247 | ۲٤۷
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৪৭। আবদুল ওয়ারিস ইবনু আবদস সামাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ মানুষ তোমাদেরকে জ্ঞানের বিষয়ে কথা জিজ্ঞেস করবে, এক পর্যায়ে তারা এ কথাও জিজ্ঞেস করে বসবে, আল্লাহ তো আমাদের সৃষ্টি করেছেন, তাহলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছেন? রাবী বলেন, তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) এক ব্যাক্তির হাত ধরা অবস্থায় ছিলেন। তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সত্যই বলেছেন। আমাকে দুই ব্যাক্তি এ ধরনের প্রশ্ন করেছে, আর এ হলো তৃতীয়জন। বর্ণনাকারী বলেন, অথবা তিনি বলেছেন, আমাকে এক ব্যাক্তি প্রশ্ন করেছে আর এ হল দ্বিতীয়জন।
যুহায়র ইবনু হারব ও ইয়াকুব আদ-দাওরাকী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, মানুষ সর্বদা … এরপর রাবী আবদুল ওয়ারিসের রেওয়ায়েতের মত বর্ণনা করেন। তবে তিনি এই সনদে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উল্লেখ করেননি। তবে হাদীসটির শেষে ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সত্যই বলেছেন’ কথাটি সংযুক্ত করেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৪৮ | 248 | ۲٤۸
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু রুমী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে একদিন বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা! মানুষ তোমাকে প্রশ্ন করতে থাকবে। এমন কি এ প্রশ্নও করবে, আল্লাহ সবকিছু সৃষ্টি করেছেন; তা হলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, পরবর্তীকালে একদিন আমি মসজিদে (নববীতে) উপস্থিত ছিলাম। ইত্যবসরে কতিপয় বেদুঈন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করতে লাগল, হে আবূ হুরায়রা! এ তো আল্লাহ তা’আলা। তা হলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? বর্ণনাকারী বলেন, তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) হাতে কিছু কংকর নিয়ে তাদের প্রতি তা নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও, আমার বন্ধু [রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)] সত্য কথা বলে গিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৪৯ | 249 | ۲٤۹
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৪৯। মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ অবশ্যই লোকেরা তোমাদিগকে সব বিষয়ে জিজ্ঞেস করবে। এমনকি তারা বলবে, আল্লাহ তো সব কিছু সৃষ্টি করেছেন, তাকে কে সৃষ্টি করেছে?
হাদিস নম্বরঃ ২৫০ | 250 | ۲۵۰
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৫০। আবদুল্লাহ ইবনু আমির ইবনু যুরারা আল হাযরামী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ আপনার উম্মাত সর্বদা এটা কে সৃষ্টি করল, ওটা কে সৃষ্টি করল এ ধরনের প্রশ্ন করতে থাকবে। এমনকি এ প্রশ্নও জিজ্ঞেস করবে যে, সকল সৃষ্টই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাহলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে?
হাদিস নম্বরঃ ২৫১ | 251 | ۲۵۱
পরিচ্ছদঃ ৫৯. ঈমান সম্পর্কে ওয়াসওয়াসার (সংশয়) সৃষ্ট হওয়া এবং কারো অন্তরে যদি তা সৃষ্টি হয় তবে সে কি বলবে
২৫১। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রাঃ) … আনাস (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উল্লেখিত হাদীসের অনুরুপ রেওয়ায়েত করেছেন। তবে রাবী ইসহাক তার রেওয়ায়েতে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, আপনার উম্মাত … এ কথাটি উল্লেখ করেন নি।
হাদিস নম্বরঃ ২৫২ | 252 | ۲۵۲
পরিচ্ছদঃ ৬০. মিথ্যা কসমের মাধ্যমে কোন মুসলমানের হক তসরুপকারীর (বিনষ্টকারী) প্রতি জাহান্নামের হুমকি
২৫২। ইয়াহইয়া ইবনু আইয়ুব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) … আবূ উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যাক্তি কসমের মাধ্যমে কোন মুসলমানের হক বিনষ্ট করে তার জন্য আল্লাহ জাহান্নাম অবধারিত করে রেখেছেন এবং জান্নাত হারাম করে রেখেছেন। তখন জনৈক ব্যাক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! অতি সামান্য বস্তু হলেও? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আরাক (বাবলা গাছের মত এক ধরনের কাঁটাযুক্ত গাছের) গাছের ডাল হলেও এ শাস্তি দেয়া হবে।
হাদিস নম্বরঃ ২৫৩ | 253 | ۲۵۳
পরিচ্ছদঃ ৬০. মিথ্যা কসমের মাধ্যমে কোন মুসলমানের হক তসরুপকারীর (বিনষ্টকারী) প্রতি জাহান্নামের হুমকি
২৫৩। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও হারুন ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ উমামা আল হারিসী (রাঃ) থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৫৪ | 254 | ۲۵٤
পরিচ্ছদঃ ৬০. মিথ্যা কসমের মাধ্যমে কোন মুসলমানের হক তসরুপকারীর (বিনষ্টকারী) প্রতি জাহান্নামের হুমকি
২৫৪। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নুমায়র এবং ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল হানযালী (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যাক্তি তার উপর অর্পিত চুড়ান্ত কসমের মাধ্যমে কোন মুসলমানের সম্পদ গ্রাস করে অথচ সে মিথ্যাবাদী, এমন অবস্থায় আল্লাহর সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটবে যে, তিনি তার প্রতি ক্রোধাম্বিত থাকবেন। রাবী বলেন, আশ‘আস ইবনু কায়স সেখানে প্রবেশ করলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, আবূ আবদুর রহমান (আবদুল্লাহ) তোমাদেরকে কি বর্ণনা করলেন? তদুত্তরে সকলে উক্ত হাদীসটির কথা বললেন। তিনি বললেন, আবূ আবদুর রহমান সত্যই বর্ণনা করেছেন, ঘটনাটি আমাকে কেন্দ্র করেই ঘটেছিল।
ব্যাপার হলো, ইয়ামনে জনৈক ব্যাক্তির সাথে আমারও এক খন্ড ভূমি ছিল। এর মীমাংসা করার নিমিত্ত আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে উপস্থিত হই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার দাবির স্বপক্ষে তোমার কাছে কোন প্রমাণ আছে কি? আমি বললাম, না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা হলে বিবাদীর কসম লওয়া হবে। আমি বললাম, এ ব্যাক্তি তো কসম করবেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যাক্তি তার উপর অর্পিত চুড়ান্ত কসমের মাধ্যমে কোন মুসলমানের সম্পদ গ্রাস করে অথচ সে মিথ্যাবাদী, আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় তার সাক্ষাৎ ঘটবে যে, আল্লাহ তার প্রতি ক্রোধানিত থাকবেন।
এরপর এই আয়াত নাযিল হয়ঃ “যারা আল্লাহর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মুল্যে বিক্রি করে, পরকালে তাদের কোন অংশ নেই। কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পরিশুদ্ব করবেন না; তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।” (৩ঃ ৭৭)
হাদিস নম্বরঃ ২৫৫ | 255 | ۲۵۵
পরিচ্ছদঃ ৬০. মিথ্যা কসমের মাধ্যমে কোন মুসলমানের হক তসরুপকারীর (বিনষ্টকারী) প্রতি জাহান্নামের হুমকি
২৫৫। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিঁনি বলেন, যে ব্যাক্তি মিথ্যা কসমের মাধ্যমে কোন সম্পদ গ্রাস করে, এমন অবস্থায় আল্লাহর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ ঘটবে যে, তার প্রতি ক্রোধান্বিত থাকবেন। পরে বর্ণনাকারী আ’মাশ বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি (ইয়ামনের ভূমির স্থলে) বলেন, জনৈক ব্যাক্তির সাথে আমার একটি কুপ নিয়ে বিরোধ ছিল। আমরা এর মীমাংসার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হই। তখন তিনি বললেনঃ তোমার দু-জন সাক্ষী লাগবে অথবা বিবাদী থেকে কসম নেওয়া হবে।
হাদিস নম্বরঃ ২৫৬ | 256 | ۲۵٦
পরিচ্ছদঃ ৬০. মিথ্যা কসমের মাধ্যমে কোন মুসলমানের হক তসরুপকারীর (বিনষ্টকারী) প্রতি জাহান্নামের হুমকি
২৫৬। ইবনু আবূ উমর আল মাক্কী (রহঃ) ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি কোন মুসলিমের সম্পদ গ্রাসের জন্য মিথ্যা কসম করবে, এমন অবস্থায় আল্লাহর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ ঘটবে যে, তিনি তার প্রতি ক্রোধানিত থাকবেন। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রমাণ হিসাবে এ আয়াত পাঠ করেনঃ ‘যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রতি এবং নিজেদের শপথ তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে, পরকালে তাদের কোন অংশ নেই। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন না; তাদের জন্য মর্মন্তুদ শান্তি রয়েছে।” (৩ঃ ৭৭)
হাদিস নম্বরঃ ২৫৭ | 257 | ۲۵۷
পরিচ্ছদঃ ৬০. মিথ্যা কসমের মাধ্যমে কোন মুসলমানের হক তসরুপকারীর (বিনষ্টকারী) প্রতি জাহান্নামের হুমকি
২৫৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, হান্নাদ ইবনু সারী এবং আবূ আসিম আল হানাফী (রহঃ) … ওয়াইল (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। ওয়াইল (রাঃ) বলেন, হাযরামাউতের জনৈক ব্যাক্তি কিনদার এক ব্যাক্তিকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হয়। হাযরামাউতবাসী লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এ ব্যাক্তি আমার পৈতৃক ভূমি জবরদখল করে নিয়েছে। কিনদী বলে উঠল, না, এতো আমারই সম্পত্তি এবং আমারই দখলে আছে। এতে আমি চাষাবাদ করি, এতে কারো কোন অধিকার নেই। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাযরামাউতবাসীকে বললেনঃ তোমার কোন সাক্ষী আছে? সে উত্তর করল, না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা হলে এ বিষয়ে বিবাদী কসম করবে।
হাযরামাউতবাসী বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এ তো অসৎ লোক, কসম করার বিষয়ে তার আদৌ পরোয়া নেই। আর সে কোন কিছুরই বাছবিচার করে না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তার কাছ থেকে তোমার এতটুকু প্রাপ্য। এরপর হাযরামাউতবাসী শপথ করতে উদ্যোগ নিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেনঃ যদি সে (কিনদী) অন্যায়ভাবে সম্পদ গ্রাস করার জন্য শপথ করে থাকে, তবে সে অবশ্যই আল্লাহর কাছে এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন অর্থাৎ তিনি তার উপর ক্রোধাম্বিত থাকবেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৫৮ | 258 | ۲۵۸
পরিচ্ছদঃ ৬০. মিথ্যা কসমের মাধ্যমে কোন মুসলমানের হক তসরুপকারীর (বিনষ্টকারী) প্রতি জাহান্নামের হুমকি
২৫৮। যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। ইত্যবসরে দু’ব্যাক্তি তাঁর কাছে এসে একটি ভূমি সম্পর্কে বিচার প্রার্থনা করে। তন্মধ্যে একজন বলল, হে আল্লাহর রাসুল! জাহিলিয়্যাত যুগে এ ব্যাক্তি আমার ভূমি জবরদখল করে নিয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, বিচার প্রার্থনাকারী ছিল ইমরাউল কায়স ইবনু আবিস আল কিনদী আর তার বিবাদী ছিল রাবীআ ইবনু আবদান। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার সাক্ষী পেশ কর। লোকটি বলল, আমার কোন সাক্ষী নাই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে বিবাদী থেকে কসম নেয়া হবে। লোকটি বলল, তবে তো সে মিথ্যা কসম করে সম্পতি গ্রাস করে ফেলবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তার কাছ থেকে তোমার এতটুকু প্রাপ্য। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর বাদী যখন শপথ করার জন্য প্রস্তুত হলো, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যাক্তি অন্যায়ভাবে সম্পতি গ্রাস করবে, সে আল্লাহর কাছে এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তিনি তার প্রতি ক্রোধান্বিত থাকবেন। রাবী ইসহাক তার বর্ণনায় عيدان এর স্থলে رَبِيعَةُ بْنُ عَيْدَانَ উল্লেখ করেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৫৯ | 259 | ۲۵۹
পরিচ্ছদঃ ৬১. যুলিম করে কারো সম্পদ গ্রাস করতে চাইলে প্রতিরোধে যালিমকে হত্যা করা অন্যায় নয় এবং সে জাহান্নামী; আর যে ব্যাক্তি স্বীয় সম্পদ রক্ষায় নিহত হয়, সে শহীদ
২৫৯। আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থের্কে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! যদি কেউ আমার সম্পদ ছিনিয়ে নিতে উদ্যত হয়, তবে আমি কি করব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তাকে তোমার সম্পদ নিতে দিবে না। লোকটি বলল, যদি সে আমার সাথে এ নিয়ে লড়াই করে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তার মুকাবিলায় লড়বে। লোকটি বলল, আপনার কি অভিমত যদি সে আমাকে হত্যা করে বসে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা হলে তুমি শহীদ বলে গণ্য হবে। লোকটি বলল, আপনি কি মনে করেন, যদি আমি তাকে হত্যা করি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে জাহান্নামী।
হাদিস নম্বরঃ ২৬০ | 260 | ۲٦۰
পরিচ্ছদঃ ৬১. যুলিম করে কারো সম্পদ গ্রাস করতে চাইলে প্রতিরোধে যালিমকে হত্যা করা অন্যায় নয় এবং সে জাহান্নামী; আর যে ব্যাক্তি স্বীয় সম্পদ রক্ষায় নিহত হয়, সে শহীদ
২৬০। আল হাসান ইবনু আলী আল হুলওয়ানী, ইসহাক ইবনু মানসুর ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) … উমর ইবনু আবদুর রহমানের আযাদকৃত গোলাম সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু আমর ও আমবাসা ইবনু আবূ সুফিয়ানের মধ্যে কিছু সম্পদ নিয়ে বিবাদ দেখা দেয়। আর তারা উভয়ে লড়াইয়ের জন্য উদ্যত হয়ে পড়ে। তখন খালিদ ইবনু আস আবদুল্লাহ ইবনু আমরের কাছে গেলেন এবং বোঝাতে চেষ্টা করলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু আমর বললেন, তুমি কি জানো না রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি তার সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হয় সে শহীদ।
মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও আহমাদ ইবনু উসমান নাওফালী (রহঃ) … ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে অনুরুপ রেওয়ায়াত করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৬১ | 261 | ۲٦۱
পরিচ্ছদঃ ৬২. জনগনের সঙ্গে খিয়ানতকারী শাসক জাহান্নামের যোগ্য
২৬১। শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) … হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, মাকিল ইবনু ইয়াসারের মৃত্যু শয্যায় উবায়দুল্লাহ ইবনু যিয়াদ তার সাক্ষাতে যান। মাকিল তাকে বললেন, আজ তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শোনা এমন একটি হাদীস শোনাব যা আমি আরো বেঁচে থাকব বলে জানলে তা কিছুতেই শোনাতাম না। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা’আলা যে বান্দাকে জনগণের দায়িত্ব দিয়েছেন, কিন্তু তাদের সঙ্গে খেয়ানতকারীরুপে যদি তার মৃত্যু হয় তবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৬২ | 262 | ۲٦۲
পরিচ্ছদঃ ৬২. জনগনের সঙ্গে খিয়ানতকারী শাসক জাহান্নামের যোগ্য
২৬২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, মাকিল ইবনু ইয়াসারের অসুস্থ অবস্হায় উবায়দুল্লাহ ইবনু যিয়াদ তার সাক্ষাতে গেলেন এবং কিছু জানতে চাইলেন। তখন মা’কিল (রাঃ) বলেন, আজ তোমাকে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করব, যা আমি আগে তোমাকে বর্ণনা করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যে বান্দাকে জনগণের শাসনভার প্রদান করেন আর সে যদি তাদের সঙ্গে খেয়ানতকারীরুপে মৃত্যুবরণ করে, তবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন। উবায়দুল্লাহ বললেন, আপনি কি আজ পর্যন্ত এ হাদীস আমাকে বর্ণনা করেননি? তিনি বললেন, না কখনো বর্ণনা করি নাই। অথবা রাবী এ কথা বলেছেন, বর্ণনা করতে ইচ্ছুক ছিলাম না।
হাদিস নম্বরঃ ২৬৩ | 263 | ۲٦۳
পরিচ্ছদঃ ৬২. জনগনের সঙ্গে খিয়ানতকারী শাসক জাহান্নামের যোগ্য
২৬৩। আল কাসিম ইবনু যাকারিয়্যা (রহঃ) … হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আমরা মা’কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) এর অসুস্থতাকালে তাঁর কুশলাদি জানতে গিয়েছিলাম। ইত্যবসরে উবায়দুল্লাহ ইবনু যিয়াদ (রাঃ) সেখানে উপস্থিত হন। মা’কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) তাকে বললেন, আজ তোমাকে একটি হাদীস শোনাব, যা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রবণ করেছি…। পরে তিনি উল্লেখিত হাদীসদ্বয়ের অর্থের অনুরুপ বর্ণনা করেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৬৪ | 264 | ۲٦٤
পরিচ্ছদঃ ৬২. জনগনের সঙ্গে খিয়ানতকারী শাসক জাহান্নামের যোগ্য
২৬৪। আবূ গাসসান আল মিসমাঈ মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না এবং ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূল মালীহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, উবায়দুল্লাহ মা’কিল ইবনু ইয়াসার-এর অসুস্থকালে তার কাছে এসেছিলেন। তিনি বলেন, আজ আমি তোমাকে একটি হাদীস বলব আমি মূত্যুশয্যায় না থাকলে তা বর্ণনা করতাম না। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, মুসলিমদের দায়িত্বে নিযূক্ত কোন আমীর (শাসক) যদি তাদের কল্যাণ কামনা না করে এবং তাদের সার্থ রক্ষায় সর্বাত্মক প্রয়াস না চালায়, তবে সে মুসলিমদের সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।
হাদিস নম্বরঃ ২৬৫ | 265 | ۲٦۵
পরিচ্ছদঃ ৬৩. কতকের অন্তর থেকে ঈমান ও আমানতদারী উঠিয়ে নেয়া এবং অন্তরে ফিতনার সৃষ্টি হওয়া
২৬৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে দুটি কথা বলেছিলেন, সে দুটির একটি তো আমি স্বচোখেই দেখেছি আর অপরটির জন্য অপেক্ষা করছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানব হৃদয়ের মূলে আমানত নাযিল হয়, তারপর কুরআন অবতীর্ণ হয়। অনন্তর তারা কুরআন শিখেছে এবং সুন্নাহর জ্ঞান লাভ করেছেন তারপর তিনি আমাদেরকে আমানত উঠিয়ে নেওয়ার বর্ণনা দিলেন। বললেনঃ মানুষ ঘুমাবে আর তখন তার অন্তর হতে আমানত ভুলে নেয়া হবে। ফলে তার চিহ্ন থেকে যাবে একটি নুকতার মত। এরপর আবার সে ঘূমায় তখন তার অন্তর থেকে আমানত তুলে নেয়া হবে। ফলে তার চিহ্ন থেকে যাবে ফোস্কার মত যেন একটি অঙ্গার, তা তুমি তোমার পায়ে রগড়ে দিলে। তখন তাতে ফোস্কা পড়ে যায় এবং তুমি তা ফোলা দেখতে পাও অথচ তাতে (পুঁজ-পানি ব্যতীত) কিছু নেই।
তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকটি কাকর নিয়ে তার পায়ে ঘষলেন এবং বললেনঃ যখন এমন অবস্থা হয়ে যাবে, তখন মানুষ বেচাকেনা করবে কিন্তু কেউ আমানত শোধ করবে না। (আমানতদার ব্যাক্তি এত কমে যাবে যে) এমনকি বলা হবে যে, অমুক বংশে একজন আমানতদার আছেন। এমন অবস্থা হবে যে, কাউকে বলা হবে সে কতই না বাহাদুর, কতই না হুশিয়ার, বড়ই বুদ্ধিমান অথচ তার অন্তরে দানা পরিমাণ ঈমান নেই।
হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, এমন এক যুগও গেছে যখন যে কারো সাথে লেনদেন করতে দ্বিধা করতাম না। কারণ সে যদি মুসলমান হতো তবে তার দ্বীনদারীই তাকে আমার হক পরিশোধ করতে বাধ্য করত। আর যদি সে খৃষ্টান বা ইহুদী হতো তবে তার প্রশাসক তা শোধ করতে তাকে বাধ্য করত্য কিন্তু বর্তমানে আমার অমুক অমুক ব্যতীত কারোর সাথে লেনদেন করার নই।
হাদিস নম্বরঃ ২৬৬ | 266 | ۲٦٦
পরিচ্ছদঃ ৬৩. কতকের অন্তর থেকে ঈমান ও আমানতদারী উঠিয়ে নেয়া এবং অন্তরে ফিতনার সৃষ্টি হওয়া
২৬৬। ইবনু নুমায়র ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আমাশ (রহঃ) এর সূত্রে পূর্ব বর্ণিত সনদের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৬৭ | 267 | ۲٦۷
পরিচ্ছদঃ ৬৩. কতকের অন্তর থেকে ঈমান ও আমানতদারী উঠিয়ে নেয়া এবং অন্তরে ফিতনার সৃষ্টি হওয়া
২৬৭ মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, একদিন আমরা উমর (রাঃ)-এর কাছে ছিলাম। তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ফিতনা সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছ? উপস্থিত একদল বললেন, আমরা শুনেছি। উমর (রাঃ) বললেন, তোমরা হয়ত একজনের পরিবার ও প্রতিবেশীর ফিতনার কথা মনে করেছ। তারা বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বললেন, সালাত (নামায/নামাজ), রোযা ও সা’দকার মাধ্যমে এগুলোর কাফফারা হয়ে যায়। উমর (রাঃ) বললেন, না, আমি জানতে চেয়েছি, তোমাদের কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সে বৃহৎ ফিতনার কথা আলোচনা করতে শুনেছে, যা সমুদ্র তরঙের মত ধেয়ে আসবে।
হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, প্রশ্ন শুনে সবাই চুপ হয়ে গেল। আমি বললাম, আমি (শুনেছি)। উমর (রাঃ) বললেন, তুমি শুনেছ, মা-শা আল্লাহ। হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, চাটাই বুননের মত এক এক করে ফিতনা মানুষের অন্তরে আসতে থাকে। যে অন্তরে তা গেঁথে যায়, তাতে একটি করে কাল দাগ পড়ে। আর যে অন্তর তা প্রত্যাখ্যান করবে, তাতে একটি করে শুভ্রোজ্জ্বল চিহ্ন পড়বে। এমনি করে দুটি অন্তর দুধরনের হয়ে যায়। একটি শ্বেত পাথরের মত; আসমান ও যমীন যতদিন থাকবে ততদিন কোন ফিতনা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর অপরটি হযে যায় উল্টানো কাল কলসির মত, প্রবৃত্তি তার মধ্যে যা সেঁধে দিয়েছে তা ছাড়া ভালমন্দ বলতে সে কিছুই সে চিনে না।
হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, উমর (রাঃ) কে আমি আরো বললাম, আপনি এবং সে ফিতনার মধ্যে একটি বন্ধ দরজা রয়েছে। অচিরেই সেটি ভেঙ্গে ফেলা হবে। উমর (রাঃ) বললেন, সর্বনাশ! তা ভেঙে ফেলা হবে? যদি ভেঙে ফেলা না হতো, তাহলে হয়ত পূনরায় বন্ধ করা যেত। হুযায়ফা (রাঃ) উত্তর করলেন, না ভেঙে ফেলাই হবে। হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, আমি উমর (রাঃ) কে এ কথাও শুনিয়েছি, সে দরজাটি হল একজন মানুষ; সে নিহত হবে কিংবা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করবে। এটি কোন গল্প নয় বরং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাদীস। বর্ণনাকারী আবূ খালিদ বলেন, আমি সা’দকে জিজ্ঞেস করলাম, أَسْوَدُ مُرْبَادًّا এর অর্থ কি? উত্তরে তিনি বললেন, ‘কালো-সাদায় মিশ্রিত রং-। আমি বললাম, الْكُوزُ مُجَخِّيًا এর অর্থ কি? তিনি বললেন ‘উল্টানো কলসি’।
হাদিস নম্বরঃ ২৬৮ | 268 | ۲٦۸
পরিচ্ছদঃ ৬৩. কতকের অন্তর থেকে ঈমান ও আমানতদারী উঠিয়ে নেয়া এবং অন্তরে ফিতনার সৃষ্টি হওয়া
২৬৮। ইবনু আবূ উমর (রহঃ) … রিবঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, হুযায়ফা (রাঃ) উমর (রাঃ)-এর কাছ থেকে ফিরে এসে আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করছিলেন। তিনি বললেন, গতকাল যখন আমি আমীরুল মুমিনীন উমর (রাঃ) এর কাছে বসা ছিলাম, তখন তাঁর সঙ্গীদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমাদের মধ্যে কার ফিতনা সষ্পকীয় হাদীস স্মরণ আছে …। এরপর রাবী আবূ খালিদ বর্ণিত পূর্বের হাদীসটির মত বর্ণনা করেন। তবে তিনি مُجَخِّيًا ও مُرْبَادًّا এর আবূ মালিক বর্ণিত ব্যাখ্যার উল্লেখ করেননি।
হাদিস নম্বরঃ ২৬৯ | 269 | ۲٦۹
পরিচ্ছদঃ ৬৩. কতকের অন্তর থেকে ঈমান ও আমানতদারী উঠিয়ে নেয়া এবং অন্তরে ফিতনার সৃষ্টি হওয়া
২৬৯। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না, আমর ইবনু আলী ও উকবা ইবনু মুকরাম আল আাম্মী (রহঃ) … রিবঈ ইবনু হিরাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, একদিন উমর (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিতনা সম্পর্কে কি ইরশাদ করেছেন এ সম্পর্কে তোমাদের কেউ আমাকে হাদীস বর্ণনা করতে পারবে? তখন হুযায়ফা (রাঃ)-ও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেন, আমি পারব …। এরপর রিবঈ এর সুত্রে বর্ণিত আবূ মালিকের রেওয়ায়েতের অনুরুপ বর্ণনা করেন। তবে বর্ণনাকারী এ হাদীসে এও উল্লেখ করেন যে, হুযায়ফা (রাঃ) বলেছেন, আমি উমর (রাঃ) কে যে হাদীস বর্ণনা করেছি, তা কোন বানোয়াট কথা নয় বরং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেই তা বর্ণনা করেছি।
হাদিস নম্বরঃ ২৭০ | 270 | ۲۷۰
পরিচ্ছদঃ ৬৪. শুরুতে ইসলাম ছিল অপরিচিত; অচিরেই আবার তা অপরিচিতের মত হয়ে যাবে এবং তা দুই মসজিদ (মাসজিদুল হারাম ও মাসজিদুন নববী) এর মাঝে আশ্রয় নিবে
২৭০। মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ ও ইবনু আবূ উমর (রাঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ ইসলাম শুরুতে অপরিচিত ছিল, অচিরেই তা আবার শুরুর মত অপরিচিত হয়ে যাবে। সূতরাং এরুপ অপরিচিত অবস্থায়ও যারা ইসলামের উপর কায়েম থাকবে, তাদের জন্য মুবারকবাদ।
হাদিস নম্বরঃ ২৭১ | 271 | ۲۷۱
পরিচ্ছদঃ ৬৪. শুরুতে ইসলাম ছিল অপরিচিত; অচিরেই আবার তা অপরিচিতের মত হয়ে যাবে এবং তা দুই মসজিদ (মাসজিদুল হারাম ও মাসজিদুন নববী) এর মাঝে আশ্রয় নিবে
২৭১। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আল ফাযল ইবনু সাহল আল আরাজ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি ইরশাদ করেনঃ অপরিচিতের বেশে ইসলাম শুরু হয়েছিল, অচিরেই তা আবার অপরিচিত অবস্থায় ফিরে যাবে। সাপ যেমন সংকুচিত হয়ে তার গর্তে প্রবেশ করে তদ্রুপ ইসলামও দুই মসজিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে।
হাদিস নম্বরঃ ২৭২ | 272 | ۲۷۲
পরিচ্ছদঃ ৬৪. শুরুতে ইসলাম ছিল অপরিচিত; অচিরেই আবার তা অপরিচিতের মত হয়ে যাবে এবং তা দুই মসজিদ (মাসজিদুল হারাম ও মাসজিদুন নববী) এর মাঝে আশ্রয় নিবে
২৭২। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু নূমায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ সাপ যেমন সঙ্কুচিত হয়ে আপন গর্তে আশ্রয় নেয়, তদ্রুপ ইসলামও (সঙ্কুচিত হয়ে) মদিনায় আশ্রয় নেবে।
হাদিস নম্বরঃ ২৭৩ | 273 | ۲۷۳
পরিচ্ছদঃ ৬৫. শেষ যুগে ঈমান বিদায় নেবে
২৭৩। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ পৃথিবীর বুকে ‘আল্লাহ আল্লাহ’ বলার মত লোক অবশিষ্ট থাকবে না, যতক্ষন পর্যন্ত এরুপ অবস্থার সৃষ্টি না হবে, ততক্ষন পর্যন্ত কিয়ামত হবে না।
হাদিস নম্বরঃ ২৭৪ | 274 | ۲۷٤
পরিচ্ছদঃ ৬৫. শেষ যুগে ঈমান বিদায় নেবে
২৭৪। আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ আল্লাহ আল্লাহ বলার মত একটি মানুষ অবশিষ্ট থাকতেও কিয়ামত হবে না।
হাদিস নম্বরঃ ২৭৫ | 275 | ۲۷۵
পরিচ্ছদঃ ৬৬. ভয়-ভীতির কারণে ঈমান গোপন রাখার বৈধতা
২৭৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমরা একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আমাদেরকে বললেনঃ গণনা কর তো, কতজন মানুষ ইসলামের কথা স্বীকার করে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কি আমাদের ব্যাপারে আশঙ্কা করেছেন? আমরা তো প্রায় ছয়শত থেকে সাতশ” লোক আছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা জানো না, অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলা হবে। সাহাবী বলেন, পরবর্তীকালে সত্যই আমরা পরীক্ষার সম্মুখীন হই, এমন কি আমাদের কোন কোন ব্যাক্তিকে গোপনে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে হতো।
হাদিস নম্বরঃ ২৭৬ | 276 | ۲۷٦
পরিচ্ছদঃ ৬৭. ঈমানের দুর্বলতার কারণে যার সম্পর্ক ধর্মত্যাগের আশঙ্কা হয়, তার অন্তরে জয়ের উদ্দেশ্যে বিশেষ সৌজন্য প্রদর্শন এবং অকাট্য প্রমান ব্যাতিরেকে কাউকে নিশ্চিত মু’মিন বলে আখ্যায়িত করা থেকে বিরত থাকা
২৭৬। ইবনু আবূ উমর (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার কিছু মাল বন্টন করছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! অমুককে কিছু দিন, কেননা সে নিশ্চয়ই একজন মুমিন ব্যাক্তি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং বল যে, সে একজন মুসলিম। সাহাবী বললেন, আমি কথাটি তিনবার পূনরাবৃত্তি করেছি, তিনিও তিনবারই আমাকে ঐ একই উত্তর দিয়েছেন এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ অপরজন আমার কাছে অধিক প্রিয় হওয়া সত্ত্বেও আমি কাউকে এ কারণে (মাল) দিয়ে থাকি যে, আল্লাহ তা’আলা যেন তাকে উপূড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ না করেন।*
* জাহান্নামী হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে রক্ষার জন্য তার হৃদয় জয়ের উদ্দেশ্যে তাকে আমি মাল দিয়ে থাকি।
হাদিস নম্বরঃ ২৭৭ | 277 | ۲۷۷
পরিচ্ছদঃ ৬৭. ঈমানের দুর্বলতার কারণে যার সম্পর্ক ধর্মত্যাগের আশঙ্কা হয়, তার অন্তরে জয়ের উদ্দেশ্যে বিশেষ সৌজন্য প্রদর্শন এবং অকাট্য প্রমান ব্যাতিরেকে কাউকে নিশ্চিত মু’মিন বলে আখ্যায়িত করা থেকে বিরত থাকা
২৭৭। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতিপয় লোককে কিছু মাল দিলেন। তখন সা’দ (রাঃ) তাদের মধ্যে বসা ছিলেন। সা’দ (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের মধ্যে এক ব্যাক্তিকে কিছু দিলেন না; অথচ আমার দৃষ্টিতে সে ছিল পাওয়ার বেশি উপযুক্ত। তাই আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! অমুককে না দেওয়ার কারণ কি? আল্লাহর কসম, অবশ্যই আমি তাকে তো মুমিন বলে জানি! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং বল সে মুসলিম। আমি কিছুক্ষণ র্নীরব থাকলাম। তার সম্পর্কে আমি যা জানি তা আমার কাছে প্রবল হয়ে উঠল, তাই আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! অমুককে না দেওয়ার কারণ কি? আল্লাহর কসম, আমি তো তাকে অবশ্যই মুমিন বলে ধারনা করি! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং বল, সে মুসলিম। আমি কিছুক্ষণ চুপ রইলাম। পূনঃ তার সম্পর্কে আমি যা জানি, তা প্রবল হয়ে উঠল, তাই আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! অমুককে না দেয়ার কারণ কি? আল্লাহর কসম, আমি তো তাকে অবশ্যই মুমিন বলে জানি! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং বল, সে মুসলিম। অন্যজন আমার কাছে অধিক প্রিয় হওয়হ সত্ত্বেও আমি কাউকে এ আশঙ্কায় কিছু দান করে থাকি যে, সে যেন নিম্নমুখী হয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ্ত না হয়।
হাদিস নম্বরঃ ২৭৮ | 278 | ۲۷۸
পরিচ্ছদঃ ৬৭. ঈমানের দুর্বলতার কারণে যার সম্পর্ক ধর্মত্যাগের আশঙ্কা হয়, তার অন্তরে জয়ের উদ্দেশ্যে বিশেষ সৌজন্য প্রদর্শন এবং অকাট্য প্রমান ব্যাতিরেকে কাউকে নিশ্চিত মু’মিন বলে আখ্যায়িত করা থেকে বিরত থাকা
২৭৮। আল হাসান ইবনু আলী আল হুলওয়ানী ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতিপয় লোককে কিছু দিলেন। তখন আমি তাদের মধ্যে বসা ছিলাম। এভাবে বর্ণনাকারী পূর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি এতটুকু বর্ণনা করেছেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম এবং চুপে চুপে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! অমুককে না দেওয়ার কারণ কি?
হাদিস নম্বরঃ ২৭৯ | 279 | ۲۷۹
পরিচ্ছদঃ ৬৭. ঈমানের দুর্বলতার কারণে যার সম্পর্ক ধর্মত্যাগের আশঙ্কা হয়, তার অন্তরে জয়ের উদ্দেশ্যে বিশেষ সৌজন্য প্রদর্শন এবং অকাট্য প্রমান ব্যাতিরেকে কাউকে নিশ্চিত মু’মিন বলে আখ্যায়িত করা থেকে বিরত থাকা
২৭৯। আল হাসান আল হুলওয়ানী (রহঃ) … ইসমাঈল ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি মুহাম্মদ ইবনু সা’দকে এ হাদীস বর্ননা করতে শুনেছি। তবে তিনি তাঁর বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ করেন যে, সা’দ (রাঃ) বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার গ্রীবা ও কাঁধের মাঝখানে সজোরে হাত রেখে বললেনঃ হে সা’দ তুমি কি এজন্য বিতর্ক করতে চাও? আমি কাউকে দান করি …।
হাদিস নম্বরঃ ২৮০ | 280 | ۲۸۰
পরিচ্ছদঃ ৬৮. প্রকাশ্য প্রমানের দ্বারা হৃদয়ের প্রশান্তি বৃদ্ধি পায়
২৮০। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর তূলনায় আমাদের মনে অধিক সন্দেহ জাগতে পারো তিনি বলেছিলেন, “হে আমার প্রতিপালক! কিভাবে আপনি মৃতকে জীবিত করেন, আমাকে দেখান। আল্লাহ বললেনঃ তবে কি তুমি বিশ্বাস কর নি? তিনি উত্তরে বললেন, কেন করব না? তবে তা কেবল আমার চিত্ত প্রশান্তির জন্য। (২ঃ ২৬০)। আল্লাহ তা’আলা লূত (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উপর রহমত বর্ষণ করুন, তিনি কোন শক্তিশালী জনগোষ্ঠীর আশ্রয় গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। ইউসুফের দীর্ঘ কারাবরণের মত আমাকেও যদি কারাগারে অবস্থান করতে হতো, তবে আমি রাজদুতের- আহবানে সাড়া দিতাম।
আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ ইবনু আসমা আয যুবাঈ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রেও ইউনুস … যুহুরি (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে। তবে মালিক (রহঃ) এর হাদিসে আছে, তা কেবল আমার চিত্ত প্রশান্তির জন্য। তারপর তিনি এ আয়াতটি শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৮১ | 281 | ۲۸۱
পরিচ্ছদঃ ৬৮. প্রকাশ্য প্রমানের দ্বারা হৃদয়ের প্রশান্তি বৃদ্ধি পায়
২৮১। আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … যুহরী (রহঃ) থেকে মালিকের সুত্রে বর্নিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়াতটি শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৮২ | 282 | ۲۸۲
পরিচ্ছদঃ ৬৯. আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সকল মানুষের জন্য প্রেরিত হয়েছেন এবং অন্য সকল দীন ও ধর্ম তার দীনের মাধ্যমে রহিত হয়ে গেছে, এ কথার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য
২৮২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ প্রত্যেক নাবী কে এমন মুজিযা দেয়া হয়েছে, যে মুজিযা অনুযায়ী মানুষ তাঁর প্রতি ঈমান এনেছে। পক্ষান্তরে আমাকে যে মুজিযা প্রদান করা হয়েছে, তা হচ্ছে আল্লাহ প্রেরিত ওহী। সূতরাং কিয়ামতের দিন আমার অনুসারীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হবে বলে আমি আশা রাখিি।
হাদিস নম্বরঃ ২৮৩ | 283 | ۲۸۳
পরিচ্ছদঃ ৬৯. আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সকল মানুষের জন্য প্রেরিত হয়েছেন এবং অন্য সকল দীন ও ধর্ম তার দীনের মাধ্যমে রহিত হয়ে গেছে, এ কথার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য
২৮৩। ইউনূস ইবনু আবদুল আ’লা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ সে সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, ইহুদি হোক আর খৃষ্টান হোক, যে ব্যাক্তই আমার এ আহবান শুনেছে, অথচ আমার রিসালাতের উপর ঈমান না এনে মৃত্যুবরণ করেছে, অবশ্যই সে জাহান্নামী হবে।
হাদিস নম্বরঃ ২৮৪ | 284 | ۲۸٤
পরিচ্ছদঃ ৬৯. আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সকল মানুষের জন্য প্রেরিত হয়েছেন এবং অন্য সকল দীন ও ধর্ম তার দীনের মাধ্যমে রহিত হয়ে গেছে, এ কথার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য
২৮৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … সালিহ ইবনু সালিহ আল হামদানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, ইমাম শাবীর কাছে এসে জনৈক খুরাসানী ব্যাক্তিকে প্রশ্ন করতে দেখলাম। সে বলল, হে আবূ আমর! আমাদের অঞ্চলে কতিপয় খুরাসানীর মতামত হল, যে-ব্যাক্তি নিজের দাসীকে আযাদ করে দিয়ে তাকে বিয়ে করল, সে যেন নিজ কুরবানীর উটের উপর সাওয়ার হলো (অর্থাৎ তারা তা নিন্দনীয় কাজ মনে করে)। শা’বী উত্তরে বললেন, আমাকে আবূ বুরদা (রাঃ) তাঁর পিতার সুত্রে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তিন ধরনের লোককে দ্বিগুন সাওয়াব দান করা হবে। (তারা হলঃ) (১) যে আহলে কিতাব তার নাবীর প্রতি ঈমান এনেছে এবং পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে পেয়ে তার প্রতিও বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তাঁকে সত্য বলে মেনে নিয়েছে এবং তাঁর অনুসরণ করেছে সে দ্বিগুন সাওয়াব পাবে। (২) যে দাস আল্লাহ তা’আলার হক আদায় করেছে এবং তার মালিকের হুকুমও আদায় করেছে, সেও দ্বিগুন সাওয়াব লাভ করবে। (৩) যে ব্যাক্তি তার দাসীকে উত্তম খাবার দিয়েছে, উত্তমরুপে আদব কায়দা শিখিয়েছে, তারপর তাকে আযাদ করে বিয়ে করেছে; সেও দ্বিগুন সাওয়াবের অধিকারী হবে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর শা’বী উক্ত খুরাসানীকে বললেন, কোন বিনিময় ছাড়াই তুমি এ হাদীস নিয়ে যাও; অথচ এর চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ হাদীসের জন্যও এক সময় মদিনা পর্যন্ত লোকেরা সফর করত।
হাদিস নম্বরঃ ২৮৫ | 285 | ۲۸۵
পরিচ্ছদঃ ৬৯. আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সকল মানুষের জন্য প্রেরিত হয়েছেন এবং অন্য সকল দীন ও ধর্ম তার দীনের মাধ্যমে রহিত হয়ে গেছে, এ কথার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য
২৮৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু আবূ উমর ও ইবনু উবায়দুল্লাহ ইবনু মুয়ায (রহঃ) … সালিহ (রহঃ) থেকে পূর্বোল্লিখিত সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৮৬ | 286 | ۲۸٦
পরিচ্ছদঃ ৭০. আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শরীআত অনুসারী প্রশাসক হিসেবে ঈসা ইবন মারইয়াম (আঃ) এর অবতরন করা, আল্লাহ্ কর্তৃক এ উম্মাতকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা, এ দীন রহিত না হওয়া এবং কিয়ামত পর্যন্ত এ উম্মাতের একদল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকার প্রমান
২৮৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ সে সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, শীঘ্রই তোমাদের মাঝে ঈসা ইবনু মারইয়াম (আলাইহিস সালাম) কে একজন ন্যায়পরায়ণ প্রশাসক হিসেবে অবতীর্ন করা হবে। তখন তিনি ক্রুশ (চিহ্ন) ধ্বংস করবেন, শুকর হত্যা করবেন এবং জিযিয়া রহিত করবেন। তখন সম্পদের এত প্রাচুর্য হবে যে, তা গ্রহণ করার কেউ থাকবে না।
হাদিস নম্বরঃ ২৮৭ | 287 | ۲۸۷
পরিচ্ছদঃ ৭০. আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শরীআত অনুসারী প্রশাসক হিসেবে ঈসা ইবন মারইয়াম (আঃ) এর অবতরন করা, আল্লাহ্ কর্তৃক এ উম্মাতকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা, এ দীন রহিত না হওয়া এবং কিয়ামত পর্যন্ত এ উম্মাতের একদল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকার প্রমান
২৮৭ আবদুল আলা ইবনু হাম্মাদ, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, যূহায়র ইবনু হারব হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া, হাসান আল হুলওয়ানী ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … যুহুরি (রহঃ) থেকে পূর্ব বর্ণিত সনদের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। (তবে প্রত্যেক রেওয়ায়েতে কিছু শব্দের হেরফের বিদ্যমান, যেমন) ইবনু উআয়না তার রেওয়ায়েতে إِمَامًا مُقْسِطًا وَحَكَمًا عَدْلاً কথাটির উল্লেখ করেন। ইউনুস তার রেওয়ায়েতে حَكَمًا عَادِلاً এর উল্লেখ করেছেন إِمَامًا مُقْسِطًا উল্লেখ করেননি।
সালিহ তাঁর রেওয়ায়েতে লাইস বর্নিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তাঁর বর্ণনায় আরও রয়েছে, সে সময় এক একটি সিজদা পৃথিবী ও পৃথিবীর সমুদয় সম্পদ অপেক্ষা অধিক শ্রেয় বলে বিবেচিত হবে। এরপর আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ ইচ্ছা করলে তোমরা এ আয়াতটি পড়তে পারঃ (অর্থ) “আহলে কিতাব-এর মধ্যে প্রত্যেকে তার মৃত্যুর পূর্বে তাঁকে ঈসা (আলাইহিস সালাম) কে বিশ্বাস করবেই এবং কিয়ামতের দিন তিনি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবেন।” (৪ঃ ১৫৯)
হাদিস নম্বরঃ ২৮৮ | 288 | ۲۸۸
পরিচ্ছদঃ ৭০. আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শরীআত অনুসারী প্রশাসক হিসেবে ঈসা ইবন মারইয়াম (আঃ) এর অবতরন করা, আল্লাহ্ কর্তৃক এ উম্মাতকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা, এ দীন রহিত না হওয়া এবং কিয়ামত পর্যন্ত এ উম্মাতের একদল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকার প্রমান
২৮৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ আল্লাহর কসম! ইবনু মারইয়াম (আলাইহিস সালাম) অবশ্যই ন্যায়পরায়ণ প্রশাসকরুপে অবতীর্ণ হবেন এবং ক্রশ চুর্ণ করবেন, শুকর হত্যা করবেন, জিযিয়া রহিত করবেন। মোটাতাজা উটগুলো বন্ধনমুক্ত করে দেয়া হবে; কিন্তু তা নেবার জন্য কেউ চেষ্টা করবে না। পরস্পর হিংসা, বিদ্বেষ, শক্রতা বিদায় নিবে এবং সস্পদ গ্রহণের জন্য মানুষকে আহবান করা হবে; কিন্তু তা কেউ গ্রহণ করবে না।
হাদিস নম্বরঃ ২৮৯ | 289 | ۲۸۹
পরিচ্ছদঃ ৭০. আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শরীআত অনুসারী প্রশাসক হিসেবে ঈসা ইবন মারইয়াম (আঃ) এর অবতরন করা, আল্লাহ্ কর্তৃক এ উম্মাতকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা, এ দীন রহিত না হওয়া এবং কিয়ামত পর্যন্ত এ উম্মাতের একদল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকার প্রমান
২৮৯। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদের জীবন কতই না ধন্য হবে, যখন ইবনু মারইয়াম (আলাইহিস সালাম) তোমাদের মাঝে অবতরণ করবেন এবং তোমাদেরই একজন তোমাদের ইমাম হবেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৯০ | 290 | ۲۹۰
পরিচ্ছদঃ ৭০. আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শরীআত অনুসারী প্রশাসক হিসেবে ঈসা ইবন মারইয়াম (আঃ) এর অবতরন করা, আল্লাহ্ কর্তৃক এ উম্মাতকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা, এ দীন রহিত না হওয়া এবং কিয়ামত পর্যন্ত এ উম্মাতের একদল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকার প্রমান
২৯০। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম ইবনু মায়মূন (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ তোমাদের জীবন কতই না ধন্য হবে, যে সময়ে ইবনু মারইয়াম (আলাইহিস সালাম) কে তোমাদের মাঝে প্রেরণ করা হবে আর তিনি তোমাদের নেতৃত্ব প্রদান করবেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৯১ | 291 | ۲۹۱
পরিচ্ছদঃ ৭০. আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শরীআত অনুসারী প্রশাসক হিসেবে ঈসা ইবন মারইয়াম (আঃ) এর অবতরন করা, আল্লাহ্ কর্তৃক এ উম্মাতকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা, এ দীন রহিত না হওয়া এবং কিয়ামত পর্যন্ত এ উম্মাতের একদল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকার প্রমান
২৯১। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তোমরা কতই না ধন্য হবে, যে সময়ে ইবনু মারইয়াম (আলাইহিস সালাম) অবতীর্ণ হবেন এবং তোমাদেরই একজন তোমাদের নেতৃত্ব প্রদান করবেন। ওয়ালীদ বলেন, আমি ইবনু আবূ যিবকে জিজ্ঞেস করলাম, আওযায়ী … আবূ হুরায়রা (রাঃ) এ সুত্রে আমাদেরকে إِمَامُكُمْ مِنْكُمْ শব্দে হাদীস বর্ণনা করছেন। তদুত্তরে তিনি বললেন, إِمَامُكُمْ مِنْكُمْ কথাটির মর্ম জানো কি? আমি বললাম, বলুন। তিনি বললেন, অর্থাৎ তোমাদের প্রতিপালক প্রেরিত কিতাব ও তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসৃত আদর্শ অবলম্বনে তিনি তোমাদের নেতৃত্ব প্রদান করবেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৯২ | 292 | ۲۹۲
পরিচ্ছদঃ ৭০. আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শরীআত অনুসারী প্রশাসক হিসেবে ঈসা ইবন মারইয়াম (আঃ) এর অবতরন করা, আল্লাহ্ কর্তৃক এ উম্মাতকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা, এ দীন রহিত না হওয়া এবং কিয়ামত পর্যন্ত এ উম্মাতের একদল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকার প্রমান
২৯২। আল ওয়ালীদ ইবনু শুজা, হারুন ইবনু আবদুল্লাহ ও হাজ্জাজ ইবনু শাইর (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, কিয়ামত পর্যন্ত আমার উম্মাতের একদল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকবে এবং অবশেষে ঈসা (আলাইহিস সালাম) অবতরণ করবেন। মুসলমানদের আমীর বলবেন, আসুন। সালাত (নামায/নামাজ) আমাদের ইমামত করুন। তিনি উত্তর দিবেনঃ না, আপনাদেরই একজন অন্যদের জন্য ইমাম নিযুক্ত হবেন। এ হল আল্লাহ তা’আলা প্রদত্ত এ উম্মাতের সম্মান।
হাদিস নম্বরঃ ২৯৩ | 293 | ۲۹۳
পরিচ্ছদঃ ৭১. যে সময়ে ঈমান কবুল হবে না
২৯৩। ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পশ্চিমাকাশে সুর্যোদয়ের পূর্বে কিয়ামত সংঘটিত হবে না, আর যখন পশ্চিম গগনে সূর্য উদিত হবে, তখন সকল মানুষ একত্রে ঈমান আনবে। কিন্তু যে ইতিপূর্বে ঈমান আনে নাই অথবা যে ঈমান অনুযায়ী নেক কাজ করে নাই, সে সময়ে ঈমান আনায় তার কোন উপকার হবে না।
হাদিস নম্বরঃ ২৯৪ | 294 | ۲۹٤
পরিচ্ছদঃ ৭১. যে সময়ে ঈমান কবুল হবে না
২৯৪। আবূ বকর ইবনু শায়বা, ইবনু নুমায়র, আবূ কুরায়ব, যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে আলী (রাঃ) ও আবদুর রহমান (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৯৫ | 295 | ۲۹۵
পরিচ্ছদঃ ৭১. যে সময়ে ঈমান কবুল হবে না
২৯৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি বিষয় প্রকাশিত হলে ইতিপূর্বে বে ঈমান আনে নাই বা ঈমান অনুযায়ী নেক কাজ করে নাই, সে সময়ে ঈমান আনায় তার কোন উপকার হবে না, (সে তিনটি বিষয় হল)
১. পশ্চিামাকাশে সূর্যোদয়
২. দাজ্জাল ও
৩. দাব্বাতূল আরদ।
হাদিস নম্বরঃ ২৯৬ | 296 | ۲۹٦
পরিচ্ছদঃ ৭১. যে সময়ে ঈমান কবুল হবে না
২৯৬। ইয়াহইয়া ইবনু আইউব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি জানো, এ সূর্য কোথায় যায়? সাহাবীগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ এ সূর্য চলতে থাকে এবং (আল্লাহ তা’আলার) আরশের নিচে অবস্থিত তার অবস্থানস্থলে যায়। সেখানে সে সিজদাবনত হয়ে পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয়, ওঠ এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও! অনন্তর সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়স্থল দিয়েই উদিত হয়। তা আবার চলতে থাকে এবং আরশের নিচে অবস্থিত তার অবস্থানস্থলে যায়। সেখানে সে সিজদাবনত অবস্থায় পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয়, ওঠ এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও। তখন সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়লে হয়েই উদিত হয়।
সে আবার চলতে থাকে এবং আরশের নিচে অবস্থিত তার অবস্থান স্থলে যায়। সেখানে সে সিজদাবনত অবস্থায় পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয়, ওঠ এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও। তখন সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়স্থল হয়েই সে উদিত হয়। এমনিভাবে চলতে থাকবে; মানুষ তার থেকে অস্বাভাবিক কিছু হতে দেখবে না। শেষে একদিন সূর্য যথার্রীতি আরশের নিচে তার নিদৃষ্টস্থলে যাবে। তাকে বলা হবে, ওঠ এবং অস্তাচল থেকে উদিত হও। অনন্তর সেদিন সূর্য পশ্চিম গগনে উদিত হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কোন দিন সে অবস্থা হবে তোমরা জানো? সে দিন ঐ ব্যাক্তির ঈমান কোন কাজে আসবে না, যে ব্যাক্তি পুর্বে ঈমান আনে নাই কিংবা যে ব্যাক্তি ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করে নাই।
হাদিস নম্বরঃ ২৯৭ | 297 | ۲۹۷
পরিচ্ছদঃ ৭১. যে সময়ে ঈমান কবুল হবে না
২৯৭। আবদুল হামীদ ইবনু বায়ান আল ওয়াসিতী (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা আমাদেরকে লক্ষ করে বললেনঃ তোমরা কি জানো, এ সুর্য কোথায় গমন করে?… এরপর রাবী ইবনু উলায়্যা বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৯৮ | 298 | ۲۹۸
পরিচ্ছদঃ ৭১. যে সময়ে ঈমান কবুল হবে না
২৯৮। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি মসজিদে নববীতে প্রবেশ করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তথায় উপবিষ্ট ছিলেন। সূর্য অন্তমিত হলে তিনি বললেনঃ হে আবূ যার! জানো, এ সূর্য কোথায় যায়? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে তার গন্তব্য স্থলে যায় এবং আল্লাহর কাছে সিজদার অনুমতি চায়। তখন তাকে অনুমতি দেয়া হয়। পরে একদিন যখন তাকে বলা হবে যেদিক থেকে এসেছো সেদিকে ফিরে যাও। অনন্তর তা অস্থাচল থেকে উদিত হবে। এরপর তিনি আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদের কিরাআত অনুসারে তিলাওয়াত করেনঃ ذَلِكَ مُسْتَقَرٌّ لَهَا এ তার গন্তব্যস্থল
হাদিস নম্বরঃ ২৯৯ | 299 | ۲۹۹
পরিচ্ছদঃ ৭১. যে সময়ে ঈমান কবুল হবে না
২৯৯। আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আামরা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَهَا “এবং সূর্য ভ্রমণ করে উহার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিবে” (৩৬ঃ ৩৮) এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ আরশের নিচে তার গন্তব্য স্থল।
হাদিস নম্বরঃ ৩০০ | 300 | ۳۰۰
পরিচ্ছদঃ ৭২. রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি অহীর সুচনা
৩০০। আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু সারহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ওহীর সূচনা হয়েছিল সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে। আর তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন, তা প্রভাত জ্যোতির মত সুষ্পষ্টরুপে সত্যে পরিণত হতো। তাঁর কাছে একাকী থাকা প্রিয় হয়ে পড়ে এবং তারপর তিনি হেরা গুহায় নির্জনে কাটাতে থাকেন। আপন পরিবারের কাছে ফিরে আসার পুর্ব পর্যন্ত সেখানে তিনি একাধারে বেশ কয়েক রাত ইবাদতে মগ্ন থাকতেন এবং এর জন্য কিছু খাদ্য-সামগ্রী সঙ্গে নিয়ে যেতেন। তারপর তিনি খাদীজার কাছে ফিরে যেতেন এবং আরও কয়েকদিনের জন্য অনুরুপ খাদ্য-সামগ্রী সঙ্গে নিয়ে আসতেন। তিনি হেরা গুহায় যখন ইবাদতে রত ছিলেন, তঁখন তাঁর কাছে ফেরেশতা আসলেন। বললেনঃ পড়ুন! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আমি তো পড়তে জানিনা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তখন ফেরেশতা আমাকে জড়িয়ে ধরে এমন চাপ দিলেন যে, আমার খুবই কষ্ট হয়।
তারপর আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেনঃ পড়ুন! -আমি বললাম, আমি তো পড়তে সক্ষম নই। তারপর আমাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং দ্বিতীয়বারও এমন জোরে চাপ দিলেন যে, আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে। পরে ছেড়ে দিয়ে বললেনঃ পড়ুন! আমি বললাম আমি তো পড়তে পারি না। এরপর আবার আমাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং তৃতীয়বারও এমন জোরে চাপ দিলেন যে, আমার খুবই কষ্ট হল। এরপর আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেনঃ পড়ুন! আপনার প্রতিপালকের নামে, করেছেন; সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক হতে। পড়ুন! আর আপনার প্রতিপালক মহিমান্বিত, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।” (৯৬ঃ ১-৫)।
এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ওহী নিয়ে ফিরে এলেন। তার স্কন্ধের পেশিগুলো কাপছিল। খাদীজা (রাঃ)-এর কাছে এসে বললেনঃ তোমরা আমাকে চাঁদরাবৃত কর, তোমরা আমাকে চাদরাবৃত -কর, তোমরা আমাকে চাদরাবৃত কর। তাঁরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে চাদর দিয়ে ঢেকে দিলেন। অবশেষে তার ভীতি দূর হল। এরপর খাদীজা (রাঃ) কে সকল ঘটনা উল্লেখ করে বললেনঃ খাদীজা, আমার কি হল? আমি আমার নিজের উপর আশঙ্কা করছি। খাদীজা (রাঃ) বললেন না, কখনো তা হবে না; বরং সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আল্লাহর কসম! তিনি কখনো আপনাকে অপমানিত করবেন না। আল্লাহর কসম! আপনি স্বজনদের খোজখবর রাখেন, সত্য কথা বলেন, দুঃখীদের দুঃখ নিবারণ করেন, দরিদ্রদের বাঁচার ব্যবস্থা করেন, অতিথির সেবা করেন এবং প্রকৃতি দুর্দশাগ্রস্তদের সাহায্য করেন।
এরপর খাদীজা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে ওরাকা ইবনু নাওফাল ইবনু আসা’দ ইবনু আবদুল উযযা-এর কাছে নিয়ে আসেন। ওরাকা হলেন খাদীজা (রাঃ)-এর চাচাত ভাই। ইনি জাহিলিয়াতের যুগে খৃষ্টানধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরবী লিখতে জানতেন এবং ইনজীল কিতাবের আরবী অনুবাদ করতেন। তিনি ছিলেন বৃদ্ধ এবং দূষ্টিশক্তিহীন হয়ে পড়েছিলেন। খাদীজা (রাঃ) তাঁকে বললেনঃ চাচা, (সম্মানার্থে চাচা বলে সম্মোধন করেছিলেন। অন্য রেওয়ায়েতে ‘হে চাচাত ভাই’ এ কথার উল্লেখ রয়েছে) আপনার ভ্রাতুষ্পূত্র কি বলছে শুনুন তো! ওরাকা ইবনু নাওফাল বললেন, হে ভ্রাতুষ্পূত্র! কি দেখেছিলেন? রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা দেখেছিলেন, সবকিছু বিবৃত করলেন।
ওরাকা বললেন, এ তো সে সংবাদবাহক যাকে আল্লাহ মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে প্রেরণ করেছিলেন। হায়! আমি যদি সে সময় যুবক থাকতাম, হায়! আমি যদি সে সময় জীবিত থাকতাম, যখন আপনার জাতিগোষ্ঠী আপনাকে দেশ থেকে বের করে দিবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সত্যি কি আমাকে তারা বের করে দিবে? ওরাকা বললেন, হ্যাঁ। যে ব্যাক্তিই আপনার মত কিছু (নবুওয়াত ও রিসালাত নিয়ে আগমন করেছে, তাঁর সঙ্গেই এরুপ দুশমনী করা হয়েছে। আর আমি যদি আপনার সে যুগ পাই, তবে আপনাকে অবশ্যই পূর্ণ সহযোগিতা করব।